পিএইচডির জন্য অনেক সুযোগ

মো. আবদুল আজিজ 
আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২১, ১৮: ২৭
Thumbnail image

ছোট্ট, কিন্তু ছবির মতো সুন্দর দেশ নেদারল্যান্ডস বা হল্যান্ড। যাঁরা উচ্চশিক্ষার জন্য ইউরোপের দেশগুলোকে প্রাধান্য দেন, তাঁদের জন্য নেদারল্যান্ডস খুবই পছন্দের একটা জায়গা।

নেদারল্যান্ডসে শিক্ষার মান অনেক ভালো। প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে প্রধান ভাষা হিসেবে ইংরেজি ব্যবহার করে। সুতরাং, আন্তর্জাতিক ছাত্রদের জন্য দেশটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

বৃত্তি
এএমসি, ইরাসমাস ও নফিক স্কলারশিপ, অরেঞ্জ নলেজ প্রোগ্রামসহ ডাচ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত কিছু বৃত্তি রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ভেদেও ফলাফল দেখে বৃত্তি দেওয়া হয়।

টিউশন ফি
অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের তুলনায় নেদারল্যান্ডসে টিউশন ফি খুব কম এবং থাকার ব্যয়ও খুব সাশ্রয়ী। নেদারল্যান্ডসের বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের স্নাতক পড়াশোনার ফি বছর প্রতি ৬০০০-২০০০০ ইউরো। তবে আপনি যদি ডক্টরেট বা পোস্ট ডক্টরেট ডিগ্রির জন্য আসেন, তাহলে আপনার খরচ আরও কম হবে। এখানে খাওয়া, বাসাভাড়া, যাতায়াত এবং অন্যান্য খরচ মিলিয়ে মাসে ৮০০-১০০০ ইউরোর মতো খরচ হয়।

সুযোগ-সুবিধা
এখানে অপরাধ প্রবণতা খুবই কম। শিক্ষাব্যবস্থা অনেক উন্নত ও গবেষণাকেন্দ্রিক। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে ১৬ ঘণ্টা কাজের অনুমতি পাবেন। যদিও খণ্ডকালীন চাকরি পাওয়া বেশ কঠিন। আপনি যদি আপনার পড়াশোনা পরিচালনা করতে না পারেন এবং ব্যর্থ হন, তাহলে আপনার রেসিডেন্স পারমিটটি হারানোর আশঙ্কা রয়েছে। নেদারল্যান্ডসে পিএইচডির জন্য অনেক সুযোগ–সুবিধা রয়েছে। তাঁরা বেতনভোগী কর্মী হিসেবে একটি ওয়ার্ক পারমিট পান। যেখানে প্রতিমাসে বেতন ১৫০০-২০০০ ইউরো হয়ে থাকে। পড়াশোনা চলাকালীন তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক হিসেবে কাজ করতে পারেন, ফলে পিএইচডি ডিগ্রি সম্পন্ন হওয়ার পর একজন প্রভাষক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী ওয়ার্ক পারমিট পান। স্থায়ী চাকরি খোঁজার জন্য পড়াশোনা শেষ করার পর তারা আপনাকে এক বছরের ভিসা দেবে। আইটি, প্রকৌশল এবং প্রযুক্তিগত কোনো বিষয়ে পড়াশোনা থাকলে চাকরির ভালো বাজার রয়েছে। আর টানা ৫ বছর বৈধভাবে নেদারল্যান্ডসে থাকার পর স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

ভর্তি প্রক্রিয়া
ডাচ ইউনিভার্সিটিগুলোতে বছরে ২ সেশনে আবেদন করা যায়–উইন্টার ও সামার। এখানে ব্যাচেলর, মাস্টার্স, পিএইচডি ও বিভিন্ন শর্ট কোর্স অফার করে থাকে। ব্যাচেলর কোর্স (৩-৪ বছর মেয়াদি), মাস্টার্স কোর্স (১-২ বছর মেয়াদি), পিএইচডি/ডক্টোরাল কোর্সগুলো ৩-৫ বছর মেয়াদি হয়ে থাকে। আপনার কোর্সটি যদি ডাচ ভাষায় হয়, তাহলে অবশ্যই আপনাকে ডাচ ভাষা জানতে হবে। তার জন্য আপনাকে পিএটি ও এনটিটু পরীক্ষায় বসতে হবে। আর আপনি যদি ইংরেজিতে পড়াশোনা করেন, তবে আইইএলটিএস এবং টোয়েফল পরীক্ষা অবশ্যই দিতে হবে। টোয়েফলের জন্য প্রয়োজনীয় স্কোর কমপক্ষে ৫৫০ (কাগজভিত্তিক) বা ২১৩ (কম্পিউটারভিত্তিক)। আইইএলটিএসের জন্য কমপক্ষে ৬ স্কোর প্রয়োজন। আর মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য স্নাতক পর্যায়ে ভালো ফল ও জিম্যাটের ওপর ভিত্তি করে বৃত্তি প্রদান করা হয়।
অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন আবেদন পদ্ধতি অনুসরণ করে। তাই কাঙ্ক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গেলেই প্রয়োজনীয় সব তথ্যাদি পাওয়া যাবে।
শীর্ষ কয়েকটি ইউনিভার্সিটি হচ্ছে: ডেলফট ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি, ইউনিভার্সিটি অব আর্মস্টারডাম, এইন্ডোভেন ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি, লাইডেন ইউনিভার্সিটি, ইউট্রেট ইউনিভার্সিটি, গ্রোনিনগেন ইউনিভার্সিটি। আমি রোটারডাম ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লাইড সায়েন্স থেকে ইন্টারন্যাশনাল সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টে মাস্টার্স করছি। টিউশন ফি, এক বছরের থাকা-খাওয়ার খরচসহ ২২ লাখ টাকা দিতে হয়েছিল। তবে এখান থেকে এক বছর পর ১০ লাখ টাকা ইউনিভার্সিটি শিক্ষার্থীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ফেরত দিয়ে দেয়। মূলত পড়াশোনা ও চাকরি এবং উন্নত জীবনযাত্রার জন্যই এখানে পড়তে আসা।

মো. আবদুল আজিজ
শিক্ষার্থী, রোটারডাম ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লাইড সায়েন্স

অনুলিখন: মুসাররাত আবির

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভিসা জটিলতায় ভ্রমণকর হারাচ্ছে সরকার

বাংলাদেশ ঘুরে গেলেন পাকিস্তানের আইএসআই প্রধান, দাবি ভারতীয় গণমাধ্যমের

গাড়িচালককে মারধর: কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইসি সচিবের কক্ষের সামনে হট্টগোল

সরকারে ছাত্র প্রতিনিধি রেখে রাজনৈতিক দল করলে নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে

খোলাবাজারে বিক্রি বিনা মূল্যের দুই ট্রাক পাঠ্যবই উদ্ধার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত