মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী বাংলাদেশের মানুষের কাছে মজলুম জননেতা হিসেবে পরিচিত। তিনি দেশের ইতিহাসে অন্যতম একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। তিনি আওয়ামী মুসলিম লীগের (পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগ) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। বিসিএসসহ অন্যান্য সরকারি চাকরির পরীক্ষায় তাঁর সম্পর্কে প্রশ্ন আসাটা স্বাভাবিক। মজলুম নেতার সম্পর্কে প্রশ্নোত্তরে লিখেছেন এম এম মুজাহিদ উদ্দীন।
এম এম মুজাহিদ উদ্দীন
মওলানা ভাসানীর জন্ম ও শিক্ষাজীবন সম্পর্কে বলুন।
আবদুল হামিদ খান ভাসানী ১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের ধানগড়া পল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা হাজি শারাফত আলী। হাজি শারাফত আলী ও বেগম শারাফত আলীর একটি মেয়ে ও তিনটি ছেলের সবার ছোট মো. আব্দুল হামিদ খান। বাল্যকালেই তিনি পিতা-মাতাকে হারান। পিতৃহীন হামিদ প্রথমে কিছুদিন চাচা ইব্রাহিমের আশ্রয়ে থাকেন। ওই সময় ইরাকের এক আলেম ও ধর্মপ্রচারক নাসির উদ্দীন বোগদাদী সিরাজগঞ্জে আসেন। হামিদ তাঁর আশ্রয়ে কিছুদিন কাটান। এরপর স্থানীয় স্কুল ও মাদ্রাসায় কয়েক বছর অধ্যয়ন করেন। তিনি কর্মজীবন শুরু করেন টাঙ্গাইলের কাগমারিতে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে। পরে তিনি ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট এলাকার কালা গ্রামে একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন।
আবদুল হামিদ খানের নামের সঙ্গে ভাসানী শব্দ কীভাবে যুক্ত হয়?
মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী সব সময় উগ্র মতবাদ ও ঔপনিবেশিকতার বিরোধী ছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় ত্রিশের দশকের শেষ দিকে আসামের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে ভাসানচরে বন্যার কবল থেকে বাঙালি কৃষকদের রক্ষার জন্য স্বেচ্ছায় শ্রমের ভিত্তিতে একটি বাঁধ নির্মাণ করেন। আসামে প্রথম কৃষক-প্রজা আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটান। ১৯২৯ সালে আসামের ধুবড়ী জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের ভাসানচরে প্রথম কৃষক সম্মেলন আয়োজন করেন। ভাসানচরের মানুষ কৃতজ্ঞতাস্বরূপ মওলানা আবদুল হামিদ খানকে ‘ভাসানীর মওলানা’ উপাধি প্রদান করেন। এরপর থেকে তাঁর নামের শেষে ভাসানী শব্দ যুক্ত হয়।
মুক্তিযুদ্ধের সময় মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী কোথায় ছিলেন?
মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নামের ওপর ভিত্তি করেই স্বাধীনতার পথে অগ্রসর হয়েছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান। মুক্তিযুদ্ধের শুরুর দিকে মওলানা ভাসানী বাংলাদেশেই ছিলেন। নিজ বাড়ি ছেড়ে সে সময় তিনি উঠেছিলেন টাঙ্গাইলের বিন্যাফৈর নামের আরেকটি গ্রামে তাঁর এক অনুসারীর বাড়িতে। তিনি চেয়েছিলেন টাঙ্গাইলে থেকেই চীনের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। ততক্ষণে টাঙ্গাইলে পাকিস্তানী বাহিনী আক্রমণ শুরু করেছে এবং টাঙ্গাইল শহর দখল করে তারা গ্রামের দিকে এগোচ্ছিল। পাকিস্তানী বাহিনী টাঙ্গাইলের সন্তোষে মওলানা ভাসানীর বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। এরপর তারা বিন্যাফৈর গ্রামের দিকে অগ্রসর হওয়ার আগে মওলানা ভাসানী কৃষকের বেশে ওই গ্রাম ত্যাগ করেন।
পরবর্তীকাজে তিনি সিরাজগঞ্জ যান। সেখানে একজন বামপন্থী নেতা সাইফুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে মওলানা ভাসানী যমুনা নদী দিয়ে ভারতের আসামে প্রবেশ করেন। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে মওলানা ভাসানী ভারত যেতে চাননি। তিনি চেয়েছিলেন লন্ডন যেতে। কিন্তু ভারতে যাওয়ার পর ভারত এবং তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক মহলে অনেকেই তাঁর কোনো খোঁজখবর জানতেন না। ভারতে থাকার সময় মওলানা ভাসানীর গতিবিধি ছিল নিয়ন্ত্রিত। কেবল দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারদের সঙ্গে তিনি ঘুরতে পারতেন। রাজনৈতিক ইতিহাসবিদদের অনেকের লেখায় উল্লেখ আছে, নিরাপত্তার অজুহাতে তাঁকে সব সময় নজরদারিতে রাখা হতো। ভারতীয় সেনাবাহিনীর একজন ব্রিগেডিয়ার পদমর্যাদার কর্মকর্তা কিংবা একজন ম্যাজিস্ট্রেট সব সময় ভাসানীর সঙ্গে থাকতেন।
মওলানা ভাসানীর ভাষা আন্দোলনে ভূমিকা সম্পর্কে বলেন।
মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী আসাম ছেড়ে তাঁর জন্মভূমি সিরাজগঞ্জ জেলায় গিয়ে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব তুলে ধরেন এলাকাবাসীর কাছে। সে সময় সিরাজগঞ্জে মুসলিম লীগ ছাড়া আর কোনো সংগঠন ছিল না। মুসলিম লীগও ছিল রাষ্ট্রভাষা বাংলার বিরোধী। তাই সিরাজগঞ্জে ভাষা আন্দোলনের জন্য একটি নতুন সংগঠন সৃষ্টি করা হয়। সিরাজগঞ্জে ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। ১৯৫২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি পূর্ববঙ্গের কর্মী শিবির অফিস ১৫০ নম্বর মোগলটুলিতে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর সভাপতিত্বে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে কয়েকজন ছাত্র নিহত হন। ভাসানী এর কড়া প্রতিবাদ করেন এবং ২৩ ফেব্রুয়ারি তাঁকে তাঁর গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হয়। রাজনৈতিকভাবে ভাসানী এতে আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠেন। পঞ্চাশের দশকের প্রথম দিকে ভাসানী সবচেয়ে প্রতিবাদী এবং শ্রদ্ধেয় রাজনীতিক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।
মওলানা ভাসানীর জন্ম ও শিক্ষাজীবন সম্পর্কে বলুন।
আবদুল হামিদ খান ভাসানী ১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের ধানগড়া পল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা হাজি শারাফত আলী। হাজি শারাফত আলী ও বেগম শারাফত আলীর একটি মেয়ে ও তিনটি ছেলের সবার ছোট মো. আব্দুল হামিদ খান। বাল্যকালেই তিনি পিতা-মাতাকে হারান। পিতৃহীন হামিদ প্রথমে কিছুদিন চাচা ইব্রাহিমের আশ্রয়ে থাকেন। ওই সময় ইরাকের এক আলেম ও ধর্মপ্রচারক নাসির উদ্দীন বোগদাদী সিরাজগঞ্জে আসেন। হামিদ তাঁর আশ্রয়ে কিছুদিন কাটান। এরপর স্থানীয় স্কুল ও মাদ্রাসায় কয়েক বছর অধ্যয়ন করেন। তিনি কর্মজীবন শুরু করেন টাঙ্গাইলের কাগমারিতে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে। পরে তিনি ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট এলাকার কালা গ্রামে একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন।
আবদুল হামিদ খানের নামের সঙ্গে ভাসানী শব্দ কীভাবে যুক্ত হয়?
মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী সব সময় উগ্র মতবাদ ও ঔপনিবেশিকতার বিরোধী ছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় ত্রিশের দশকের শেষ দিকে আসামের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে ভাসানচরে বন্যার কবল থেকে বাঙালি কৃষকদের রক্ষার জন্য স্বেচ্ছায় শ্রমের ভিত্তিতে একটি বাঁধ নির্মাণ করেন। আসামে প্রথম কৃষক-প্রজা আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটান। ১৯২৯ সালে আসামের ধুবড়ী জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের ভাসানচরে প্রথম কৃষক সম্মেলন আয়োজন করেন। ভাসানচরের মানুষ কৃতজ্ঞতাস্বরূপ মওলানা আবদুল হামিদ খানকে ‘ভাসানীর মওলানা’ উপাধি প্রদান করেন। এরপর থেকে তাঁর নামের শেষে ভাসানী শব্দ যুক্ত হয়।
মুক্তিযুদ্ধের সময় মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী কোথায় ছিলেন?
মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নামের ওপর ভিত্তি করেই স্বাধীনতার পথে অগ্রসর হয়েছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান। মুক্তিযুদ্ধের শুরুর দিকে মওলানা ভাসানী বাংলাদেশেই ছিলেন। নিজ বাড়ি ছেড়ে সে সময় তিনি উঠেছিলেন টাঙ্গাইলের বিন্যাফৈর নামের আরেকটি গ্রামে তাঁর এক অনুসারীর বাড়িতে। তিনি চেয়েছিলেন টাঙ্গাইলে থেকেই চীনের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। ততক্ষণে টাঙ্গাইলে পাকিস্তানী বাহিনী আক্রমণ শুরু করেছে এবং টাঙ্গাইল শহর দখল করে তারা গ্রামের দিকে এগোচ্ছিল। পাকিস্তানী বাহিনী টাঙ্গাইলের সন্তোষে মওলানা ভাসানীর বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। এরপর তারা বিন্যাফৈর গ্রামের দিকে অগ্রসর হওয়ার আগে মওলানা ভাসানী কৃষকের বেশে ওই গ্রাম ত্যাগ করেন।
পরবর্তীকাজে তিনি সিরাজগঞ্জ যান। সেখানে একজন বামপন্থী নেতা সাইফুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে মওলানা ভাসানী যমুনা নদী দিয়ে ভারতের আসামে প্রবেশ করেন। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে মওলানা ভাসানী ভারত যেতে চাননি। তিনি চেয়েছিলেন লন্ডন যেতে। কিন্তু ভারতে যাওয়ার পর ভারত এবং তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক মহলে অনেকেই তাঁর কোনো খোঁজখবর জানতেন না। ভারতে থাকার সময় মওলানা ভাসানীর গতিবিধি ছিল নিয়ন্ত্রিত। কেবল দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারদের সঙ্গে তিনি ঘুরতে পারতেন। রাজনৈতিক ইতিহাসবিদদের অনেকের লেখায় উল্লেখ আছে, নিরাপত্তার অজুহাতে তাঁকে সব সময় নজরদারিতে রাখা হতো। ভারতীয় সেনাবাহিনীর একজন ব্রিগেডিয়ার পদমর্যাদার কর্মকর্তা কিংবা একজন ম্যাজিস্ট্রেট সব সময় ভাসানীর সঙ্গে থাকতেন।
মওলানা ভাসানীর ভাষা আন্দোলনে ভূমিকা সম্পর্কে বলেন।
মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী আসাম ছেড়ে তাঁর জন্মভূমি সিরাজগঞ্জ জেলায় গিয়ে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব তুলে ধরেন এলাকাবাসীর কাছে। সে সময় সিরাজগঞ্জে মুসলিম লীগ ছাড়া আর কোনো সংগঠন ছিল না। মুসলিম লীগও ছিল রাষ্ট্রভাষা বাংলার বিরোধী। তাই সিরাজগঞ্জে ভাষা আন্দোলনের জন্য একটি নতুন সংগঠন সৃষ্টি করা হয়। সিরাজগঞ্জে ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। ১৯৫২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি পূর্ববঙ্গের কর্মী শিবির অফিস ১৫০ নম্বর মোগলটুলিতে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর সভাপতিত্বে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে কয়েকজন ছাত্র নিহত হন। ভাসানী এর কড়া প্রতিবাদ করেন এবং ২৩ ফেব্রুয়ারি তাঁকে তাঁর গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হয়। রাজনৈতিকভাবে ভাসানী এতে আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠেন। পঞ্চাশের দশকের প্রথম দিকে ভাসানী সবচেয়ে প্রতিবাদী এবং শ্রদ্ধেয় রাজনীতিক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।
বদলে যাচ্ছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের সব পাঠ্যবই। মাধ্যমিকের প্রতি শ্রেণির বাংলা বইয়ে যুক্ত হচ্ছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে লেখা, কবিতা অথবা কার্টুন। প্রতিটি বইয়ের পেছনের কভারে থাকছে গ্রাফিতি। এর বাইরে ইতিহাসনির্ভর অনেক বিষয়েও পরিবর্তন আনা হচ্ছে। সেই সঙ্গে পাঠ্যবই থেকে বাদ যাচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের নানা
২ ঘণ্টা আগেজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তো বটেই, বিশেষ করে একাডেমিক এবং ক্যারিয়ার জীবনে প্রত্যাখ্যান বা ‘না’ শব্দটি আমাদের অনেক সময় হতাশার দিকে ঠেলে দেয়। কিন্তু যদি আমরা ‘না’কে একটি বাধা না ভেবে বরং পরবর্তী সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করি, তাহলে সেই প্রত্যাখ্যান আমাদের জীবনে নতুন দিগন্তের পথ দেখাতে পারে।
৩ ঘণ্টা আগেচীনে ডংহুয়া ইউনিভার্সিটি সিএসসি স্কলারশিপ ২০২৫-২৬-এর জন্য আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা এ বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। এটি চীন সরকারের সম্পূর্ণ অর্থায়িত বৃত্তি। এ বৃত্তির আওতায় আগ্রহী শিক্ষার্থীরা স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পাবেন।
৩ ঘণ্টা আগেআধুনিককালের উচ্চশিক্ষায় শুধু জ্ঞান অর্জন করা নয়; বরং শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গঠনও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক সময়ে, সঠিক মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার মাধ্যমে আপনি পেশাগত জীবনে অনেক সুযোগ পেতে পারেন। এখানে এমন ১০টি কার্যকর উপায় তুলে ধরা হলো, যা আপনার নেটওয়ার্ক বিস্তারে সহায়ক হবে।
৩ ঘণ্টা আগে