মরুর বুকে সুরের ঝরনা

মুসাররাত আবির
Thumbnail image

সুরের ভুবন থেকে বিচ্ছিন্ন সৌদি আরবে এবার সুরের ঝরনাধারা বইবে। সৌদি আরবের অর্থনীতি বৈচিত্র্যকরণ এবং সমাজ আধুনিকায়নের জন্য যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ধারাবাহিক কর্মসূচিতে যুক্ত হয়েছে তেমনি এক প্রকল্প। প্রথমবারের মতো দেশটির সরকারি স্কুলগুলোতে সংগীতশিক্ষা চালু করছে তারা।

শুধু পর্যটন বা বিনোদনেই নয়, এবার শিক্ষাব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন আনতে চলেছে সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ। দেশটির ভিশন-২০৩০ সংস্কার কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

শিল্প, সংস্কৃতি ও বিনোদনকে প্রাধান্য দিয়ে এই সংস্কারের মাধ্যমে সৌদি আরব বিশ্বের সামনে নিজেকে নতুন রূপে তুলে ধরতে চাইছে। এরই প্রেক্ষাপটে দেশটির সরকারি স্কুলগুলোতে সংগীতশিক্ষা চালু করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৯ হাজারের বেশি সংগীত শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। শুধু তা-ই নয়, সংগীতশিক্ষাকে জাতীয় শিক্ষাক্রমের একটি গুরুত্ব অংশ হিসেবে বিবেচনা করছে দেশটি। সৌদি আরবের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। এর মাধ্যমে দেশের শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক জগতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এটি শুধু শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা বাড়াবে না, তাদের আবেগময় বুদ্ধিমত্তা ও সাংস্কৃতিক উপলব্ধিও সমৃদ্ধ করবে। সরকারি স্কুলগুলোতে ধীরে ধীরে বিশেষ সংগীত বিভাগ চালু করা হবে। স্কুলগুলোতে শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের শাস্ত্রীয় সংগীত, আরবি ঐতিহ্যবাহী সংগীত এবং আধুনিক সংগীতের বিভিন্ন শাখায় দক্ষ করে তুলবেন। তাঁরা সংগীতের তাত্ত্বিক জ্ঞান, বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার এবং পরিবেশনার কলাকৌশল শেখানোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সংগীতের জগতে প্রবেশের সুযোগ করে দেবেন।

বিশ্বের বড় বড় সংগীত প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে বিনিয়োগের মাধ্যমে সৌদি আরব এখন আরবি সংগীতকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরার জন্যও সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।

এই উদ্যোগকে অনেক প্রগতিশীল গোষ্ঠী স্বাগত জানালেও রক্ষণশীল মহল এখনো এর বিরোধিতা করে চলেছে। তারা মনে করে, সংগীতশিক্ষা ঐতিহ্যবাহী মূল্যবোধকে ক্ষুণ্ন করতে পারে। তবে সরকার জোর দিয়েছে, এই সাংস্কৃতিক শিক্ষা ইসলামি মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং এতে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। দেশের শিক্ষার্থীদের অনেকেই প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে সংগীতশিক্ষার সুযোগ পাবে বলে তাদের জন্য এটি এক অনন্য অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে।

সৌদি আরবে সংগীতশিক্ষার প্রবর্তন একটি বিপ্লবী উদ্যোগ, যা শুধু শিক্ষাব্যবস্থার ক্ষেত্রেই নয়, পুরো সমাজের রূপান্তর ঘটাবে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এই পদক্ষেপ যুবসমাজের সৃজনশীলতা ও সাংস্কৃতিক চেতনাকে উদ্দীপ্ত করবে।

সূত্র: মুসলিম মিরর

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত