Ajker Patrika

১৩৬ বছরে ঝিকরগাছা সরকারি এমএল মডেল হাইস্কুল

১৩৬ বছরে ঝিকরগাছা সরকারি এমএল মডেল হাইস্কুল

দেশে শতবর্ষী যে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে, ঝিকরগাছা সরকারি এমএল মডেল হাইস্কুল সেগুলোর মধ্যে অন্যতম। বিদ্যালয়টির বয়স ১৩৬ বছর! শুধু তা-ই নয়, ঝিকরগাছা উপজেলার ৫২ উচ্চবিদ্যালয়ের মধ্যে এটি ঐতিহ্য ও শ্রেষ্ঠত্বের বিবেচনায়ও সেরা। উপজেলার পৌর সদরের মোবারকপুর মৌজায় মূলবাজার থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে এই প্রাচীনতম বিদ্যাপীঠের অবস্থান। সোয়া শ বছরের বেশি সময় ধরে বিদ্যালয়টি তৈরি করে চলেছে চিকিৎসক, প্রকৌশলী, রাজনীতিবিদ, বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা, রাষ্ট্রদূতসহ সফল সব মানুষ।

১৮৮৮ সালে ঝিকরগাছা থানার প্রাণকেন্দ্রে প্রতিষ্ঠিত হয় এম ই স্কুল। এই স্কুলের জন্য জমি ও অর্থ দিয়ে যাঁরা সাহায্য করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম কৃষ্ণনগরের হাজারি বাগ এবং কালীপদ বাগ। হাজারি বাগই এই স্কুলে প্রথম সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করেন। পরে এই দায়িত্ব পালন করেন পদ্মপুকুরের যতীশ চন্দ্র মুখার্জি। স্কুলের উন্নয়নে পরে জমি দান করেন কৃষ্ণনগরের পুণ্য চন্দ্র দফাদার, হরিপদ কবিরাজ, এবাদ আলী সরদার প্রমুখ। ১৯৩৭ সালে প্রতিষ্ঠানটি এইচ.ই স্কুল হিসেবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯৩৯ সালে ঝিকরগাছা হাইস্কুল বঙ্গীয় শিক্ষা বিভাগের স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯৪০ সালে এই স্কুল থেকে প্রথমবারের মতো শিক্ষার্থীরা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ঝিকরগাছা বাজার জনশূন্য হয়ে পড়ে। তখন স্কুলটিকে নিয়ে যাওয়া হয় মিশ্রীদেয়াড়া গ্রামে। যুদ্ধ শেষে আবার নতুনভাবে এর যাত্রা শুরু হয় নিজস্ব ভবনে। ১৯৬২ সালে স্কুলটি মাল্টিলেটারাল স্কিমের অন্তর্ভুক্ত হয় এবং মাল্টিলেটারালের সংক্ষিপ্ত এমএল হাইস্কুল হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। সে সময় স্কুলটি স্থানান্তরিত হয় মোবারকপুর মৌজায়। এ সময় যাঁরা এর উন্নয়নে সহায়তা করেছিলেন, তাঁরা হলেন—মোবারকপুরের ওয়াকেল উদ্দীন, আবদুল আজিজ, আবদুস সামাদ, আবদুস সাত্তার। ১৯৭৬ সালে স্কুলটি পাইলট থিমভুক্ত হয়। 

এই স্কিমের আওতায় স্কুলের মূল ভবনটি সম্প্রসারিত হয়। জুনিয়র বৃত্তি ও এসএসসি পরীক্ষা এবং সহশিক্ষা কার্যক্রমে এমএল মডেল হাইস্কুল বরাবরই কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে চলেছে। ২০১৮ সালে স্কুলটি সরকারি হয়।

১৩৬ বছর বয়সের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত কম্পিউটারের সংকট রয়েছে। রয়েছে আবাসিক-সংকট। এখানে শিক্ষকদের আবাসনের ব্যবস্থা নেই। এসব সংকট বিবেচনায় নিয়েই প্রাচীনতম এই বিদ্যাপীঠের বর্তমান প্রধান শিক্ষক মো. মোস্তাফিজুর রহমান আজাদ সবদিকে বিদ্যালয়টির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে কাজ করে যাচ্ছেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত