Ajker Patrika

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৩ বছরের পথ চলা

তানিউল করিম জীম, বাকৃবি
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮: ৪৪
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৩ বছরের পথ চলা

কৃষিপ্রধান এ দেশে সনাতন কৃষিব্যবস্থার পরিবর্তে বিজ্ঞানভিত্তিক চাষাবাদের মাধ্যমে টেকসই কৃষি উন্নয়ন ও কৃষিবিজ্ঞানভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্য নির্ধারিত হয়। ষাটের দশকের শুরুতেই গড়ে ওঠে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)। কৃষিশিক্ষা, গবেষণা ও সম্প্রসারণের পথিকৃৎ এ বিদ্যাপীঠ ১৯৬১ সালের ১৮ আগস্ট প্রতিষ্ঠিত হয়। এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়টি ৬৩ বছরে পদার্পণ করছে। এই দীর্ঘ পথচলায় বিশ্ববিদ্যালয়টির রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। দেশ-বিদেশে ইতিমধ্যে এটি শিক্ষা ও গবেষণায় সেরা হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। অনেকেই এখন বিশ্ববিদ্যালয়টিকে গবেষণার আঁতুড়ঘর হিসেবে জানেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্মপ্লাজম সেন্টারের মাধ্যমে কৃষি গবেষণায় ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার’ অর্জন করে।

বাংলাদেশ-কৃষি-বিশ্ববিদ্যালয়ের-কৃষি-অনুষদ-(পূর্ব-ভবন)বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. এম ওসমান গণি ১৯৬১ সালে প্রথম উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবোজ্জ্বল যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন গবেষক অধ্যাপক ড. মো. এমদাদুল হক চৌধুরী। বিশ্বমানের গুণগত কৃষিশিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ৬২ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথিতযশা শিক্ষক ও গবেষকেরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। ফলে বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশের সুযোগ লাভ করেছে। আজ বিশ্বে বাংলাদেশ ধান উৎপাদনে তৃতীয়, মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে তৃতীয়, ইলিশ উৎপাদনে প্রথম, পাট উৎপাদনে দ্বিতীয় ও রপ্তানিতে প্রথম, সবজি উৎপাদনে তৃতীয় এবং আম উৎপাদনে অষ্টম স্থান অর্জন করেছে।

গবেষণা কার্যক্রম ও সাফল্য
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) আওতায় বাকৃবির সব গবেষণা পরিচালিত হয়। বাউরেস সাফল্যের সঙ্গে এ পর্যন্ত মোট ৪ হাজার ৪৫টি গবেষণা প্রকল্প শেষ করেছে। বর্তমানে ৬১৫টি গবেষণা প্রকল্প চালু রয়েছে। বাউরেসের প্রধান আর্থিক উৎস বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট। প্রতিনিয়ত নানাবিধ গবেষণা কার্যক্রম, কৃষক প্রশিক্ষণ, খামারি প্রশিক্ষণ পরিচালনা করে বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে বাকৃবি।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় ৭১ ভাস্কর্যআন্তর্জাতিক র‍্যাঙ্কিংয়ে অবস্থান
বিশ্বে টাইমস হায়ার এডুকেশন, কিউএস ও সাংহাই—এই তিনটি গ্লোবাল র‍্যাঙ্কিংয়ের ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তবে টাইমস হায়ার এডুকেশন ছাত্র, শিক্ষক, গবেষক, এক্সিকিউটিভ, পলিসিমেকার কর্তৃক সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য ও সবচেয়ে প্রভাবশালী র‍্যাঙ্কিং। সম্প্রতি বৈশ্বিক বিশ্ববিদ্যালয় র‍্যাঙ্কিং প্রকাশকারী আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান টাইমস হায়ার এডুকেশন (টিএইচই) ২০২৩-এর জন্য বিষয়ভিত্তিক র‍্যাঙ্কিং প্রকাশ করেছে। র‍্যাঙ্কিংয়ে লাইফ সায়েন্স ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সবার ওপরে স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। একই ক্যাটাগরিতে গত বছরও প্রথম স্থানে ছিল উপমহাদেশের কৃষি শিক্ষার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠটি।

বাংলাদেশ-কৃষি-বিশ্ববিদ্যালয়ের-টিএসসি-চত্বর২০২২ সালের ‘সাংহাই র‍্যাঙ্কিং’য়ে লাইফ সায়েন্স ক্যাটাগরির ভেটেরিনারি সায়েন্স বিভাগে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রথমবারের মতো বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ৩০০-এর মধ্যে স্থান লাভ করে। ২০১৭ সালে প্রকাশিত ওয়েবমেট্রিক্স র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের ১৫০টি সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শীর্ষস্থান অর্জন করে বাকৃবি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত