বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে শিক্ষার্থীদের ভাবনা

তৌফিকুর রহমান
প্রকাশ : ১৫ অক্টোবর ২০২৩, ০৮: ১১
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭: ৩৯

১৮৫৮ সালে পুরান ঢাকায় ব্রাহ্ম স্কুল নামে যে প্রতিষ্ঠানের জন্ম হয়েছিল, ১৮৭২ সালে তার নাম হয় জগন্নাথ কলেজ। তারপর ১৩৩ বছর প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে ২০০৫ সালের ২০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতি পায়। বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এ বছর প্রতিষ্ঠানটি ১৯ বর্ষে পদার্পণ করছে। গত ১৮ বছরে ক্যাম্পাসের অনেক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও দেশের উচ্চশিক্ষা প্রসারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে নিজেদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন তাঁদের ভাবনা, অনুভূতি ও প্রত্যাশার কথা। লিখেছেন তৌফিকুর রহমান

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আমার পরিচয়
তৈমুর খান মবিন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আমার কাছে একটা পরিচয়, ভালোবাসা আর আবেগের নাম। বিশ্ববিদ্যালয়টি আবাসন, ক্যাফেটেরিয়া ও ক্যাম্পাসের জায়গা-সংকটসহ নানামুখী সংকটে জর্জরিত। এসব সংকটের পরেও নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সুনামের সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়টি সব সংকট কাটিয়ে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ হিসেবে পরিচিত হোক, এটাই চাওয়া।

মো. শরিফুল ইসলাম (শ্রাবণ)ইতিহাসের সাক্ষী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
মো. শরিফুল ইসলাম (শ্রাবণ), অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ

এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী শুধু একটা আনন্দময় সময় নয়, এর পেছনে রয়েছে হাজারো প্রতিবন্ধকতা ও গৌরবগাথা এবং দেড় শ বছরের বেশি সময়ের ইতিহাস। ভাষা আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ৬ দফা ও ১১ দফা আন্দোলন, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি আন্দোলনের ইতিহাসে এ প্রতিষ্ঠানের আছে গর্ব করার মতো গল্প।  মাত্র ১৮ বছরের পথচলায় বিশ্ববিদ্যালয়টি অবদান রেখে চলেছে। শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ধারণ করে প্রিয় জগন্নাথ পাড়ি দেবে বহুদূর। যোগ্যতাবলে খ্যাতি ছড়াবে দেশ থেকে দেশান্তরে, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে উজ্জীবিত হোক প্রিয় প্রতিষ্ঠান। 

অন্বেষা দেবীঅল্প সময়ে অনেক এগিয়ে গেছে
অন্বেষা দেবী, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ

বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে জ্ঞানী তৈরির কারখানা। প্রতিবছর কতশত জ্ঞানী তৈরি করছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ১৯তম বর্ষে পদার্পণ করতে যাচ্ছে। এই সময়ের মধ্যে এ বিশ্ববিদ্যালয় দেশের অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটি। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে শিক্ষার্থীরা নাচ-গান এবং উৎসবের আমেজে ক্যাম্পাসটি ভরিয়ে রাখে। বাস্তব হোক প্রত্যেক শিক্ষার্থীর স্বপ্ন। বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমেই বোঝা যায় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় কত এগিয়ে আছে। একজন জবিয়ান হিসেবে, প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়টি তার উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে বলে আমি আশাবাদী। 

মাহামুদুর রহমান নাজিদশতভাগ শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত হোক 
মাহামুদুর রহমান নাজিদ, মার্কেটিং বিভাগ

শিক্ষা, গবেষণা, শিক্ষাসহায়ক কার্যক্রম এবং নিজ গুণাবলিতে দেশ-বিদেশে অনন্য হয়ে উঠুক আমাদের প্রাণের বিশ্ববিদ্যালয়। এটি আমার দ্বিতীয় বাড়ি। হাসিকান্না, আনন্দ-বেদনা, আড্ডা—সবকিছুর অন্যতম কেন্দ্রস্থল। একটি বিশ্বমানের শিক্ষাঙ্গনে পড়ব, এটা আমার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল। এখন আমি এই প্রতিষ্ঠানের একজন গর্বিত সদস্য। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে আমার ভাবনা, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শতভাগ শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত হোক। রাজনৈতিক কিংবা দলীয় মতাদর্শ যেন কোনোভাবেই আমাদের সংকুচিত করে না দেয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

রাইসাতুল জান্নাত জুয়াইরিয়ানতুন ক্যাম্পাস দ্রুত বাস্তবায়িত হোক
রাইসাতুল জান্নাত জুয়াইরিয়া, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ

ব্রাহ্ম স্কুল থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছে। ঢাকার তিনটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় একটি। পড়াশোনার মানের দিক থেকে বরাবরই ভালো করে আসছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়টি। এর আঙিনা ছোট হলেও এখানকার পরিবেশ ছাত্র-শিক্ষকবান্ধব। কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়ায় আমাদের নতুন ক্যাম্পাসের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের হলগুলো আগে তৈরি হওয়া উচিত—যেহেতু এখানকার শিক্ষার্থীদের মেসে অথবা সাবলেটে থেকে পড়াশোনা করতে হয়। বলতে চাই, সুন্দর ভবিষ্যতের প্রত্যাশায় বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে সবার দিন আনন্দপূর্ণ হোক, আরও প্রাণবন্ত হোক শরতের আকাশ।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত