Ajker Patrika

রাবির দ্রুততম মানব তামিম

ইয়াসিন আরাফাত বিজয়
তামিম আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
তামিম আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ফিজিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তামিম আহমেদ, যিনি পরপর দুবার বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্রুততম মানব হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান তামিমের পথচলাটা মোটেইা সহজ ছিল না, তবে কঠোর পরিশ্রম, আত্মবিশ্বাস ও পরিবারের সমর্থন তাঁকে এনে দিয়েছে সাফল্যের স্বাদ।

নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার সরাপাড়া গ্রামে বেড়ে ওঠা তামিম ছোটবেলা থেকে খেলাধুলার প্রতি আগ্রহী ছিলেন। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় জেলা পর্যায়ে ১০০ মিটার স্প্রিন্ট ও লং জাম্পে দ্বিতীয় স্থান অর্জনের মধ্য দিয়ে তাঁর অ্যাথলেটিকস ক্যারিয়ার শুরু হয়। প্রাথমিক ও উচ্চবিদ্যালয় মিলিয়ে দুই শতাধিক পদক তিনি অর্জন করেছেন।

তামিমের প্রতিভা দেখে স্থানীয় এক বড় ভাই শামীম তাঁকে ২০২০ সালে ৩৬তম জুনিয়র অ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার পরামর্শ দেন। সেখানে আশানুরূপ ফল অর্জনের পর অনুপ্রাণিত হয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগে ভর্তি হন। এখানে এসে তিনি নতুন সুযোগ ও প্রশিক্ষকদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা পান।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্রুততম মানব নির্বাচন করা হয় ১০০ মিটার স্প্রিন্টের সেরা প্রতিযোগীর ভিত্তিতে। ২০২৪ সালের আন্তকলেজ অ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতায় পাঁচটি স্বর্ণপদক অর্জন করে তিনি প্রথমবার দ্রুততম মানব হন। ২০২৫ সালেও একই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ১৩ পয়েন্ট সংগ্রহের মাধ্যমে চারটি স্বর্ণ ও একটি রৌপ্যপদক অর্জন করেন এবং আবারও ব্যক্তিগত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পাশাপাশি দ্রুততম মানবের খেতাব অর্জন করেন তামিম আহমেদ।

জুনিয়র ন্যাশনাল অ্যাথলেটিকসে দুবার অংশ নেওয়া ২০২৫ সালে সিনিয়র ন্যাশনাল অ্যাথলেটিকসেও কোয়ালিফাই করেছেন তামিম। ভবিষ্যতে আরও ভালো করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তামিম বলেন, ‘দ্রুততম মানব হয়ে অনেক ভালো লাগছে। বাবা-মা সব সময় পাশে ছিলেন। তাঁদের উৎসাহ ও ভালোবাসা ছাড়া আমি এত দূর কোনোভাবেই আসতে পারতাম না।’

কঠিন বাস্তবতার কথাও তুলে ধরলেন তামিম। অ্যাথলেটিকসের জন্য ভালো মানের জুতা কিনতে ২০-৩০ হাজার টাকা দরকার, যা মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য বহন করা খুব কঠিন। হলের খাবারেও পর্যাপ্ত পুষ্টি নিশ্চিত করা যায় না।

তবে কঠিন বাস্তবতার কথাও তুলে ধরেন তামিম। অ্যাথলেটিকসের জন্য ভালো মানের জুতা কিনতে ২০-৩০ হাজার টাকা লাগে, যা মধ্যবিত্ত পরিবারের বহন করা কঠিন। হলের খাবারেও পর্যাপ্ত পুষ্টি নিশ্চিত করা যায় না। তিনি মনে করেন, দেশে প্রতিভাবান অ্যাথলেটদের সহায়তা করতে অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনকে আরও উদ্যোগ নেওয়া দরকার।

তামিম আহমেদের গল্প

শুধু ব্যক্তিগত সাফল্যের নয়, বরং এটি দেশের প্রতিটি প্রতিভাবান অ্যাথলেটের লড়াইয়ের গল্প। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার কঠিন বাস্তবতা সত্ত্বেও তিনি তাঁর স্বপ্নের পেছনে ছুটছেন। সরকার ও ক্রীড়া সংস্থাগুলোর উচিত প্রান্তিক পর্যায় থেকে এমন প্রতিভা খুঁজে বের করা এবং তাঁদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করা।

তামিমের সাফল্য প্রমাণ করে, কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্য ও সঠিক দিকনির্দেশনা থাকলে যেকোনো প্রতিকূলতা জয় করা সম্ভব। তাঁর এই অদম্য সংগ্রাম ও সাফল্য নতুন প্রজন্মের অ্যাথলেটদের জন্য বড় ধরনের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র-এর ওপর নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ মার্কিন ফেডারেল সংস্থার

চীনের আগে ভারত সফরে যেতে চেয়েছিলেন ড. ইউনূস: দ্য হিন্দুকে প্রেস সচিব

কালো টাকা সাদা করেছেন সাবেক প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ

ভারত নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে রিকশাচালকের সঙ্গে তর্ক, বাংলাদেশিকে ফেরত

চেয়ার দখল করে চাকরি হারালেন বিএমডিএ প্রকৌশলী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত