Ajker Patrika

বৃত্তি নিয়ে পড়তে চাইলে

আনিসুল ইসলাম নাঈম, ঢাকা
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯: ১০
বৃত্তি নিয়ে পড়তে চাইলে

মো. ইমরানুল ইসলাম যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ওয়াইওমিংয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য বৃত্তি পেয়েছেন। তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠা কুষ্টিয়া শহরে। এসএসসি ও এইচএসসি উভয় পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুটেক্স) ‘টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং’য়ে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। স্নাতক শেষ হওয়ার পর শুরু করেন চাকরিজীবন। এরপর প্রাতিষ্ঠানিক গবেষণায় ফিরে আসেন। তাঁর দুটি গবেষণামূলক প্রবন্ধ আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। 

বৃত্তি পাওয়ার অনুভূতি 
আমেরিকায় স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পড়াশোনায় ফান্ডিং খুব বেশি পাওয়া যায় না। প্রায় দুই বছরের চেষ্টার পর ফান্ডিং পেয়েছেন। জীবনের নতুন যাত্রায় তাই ভীষণ খুশি মো. ইমরানুল ইসলাম। 

সুযোগ পাওয়ার পেছনে
মো. ইমরানুল ইসলাম ২০২৩ সালে ৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেন। সেই সূত্রে নিজের প্রোফাইল অনুযায়ী ইউনিভার্সিটি অব ওয়াইওমিংয়ে আবেদন করেন তিনি। তাঁর জিআরই স্কোর, ডুয়োলিঙ্গে স্কোর, আগের চাকরি অভিজ্ঞতা এবং গবেষণার অভিজ্ঞতা কর্তৃপক্ষের ভালো লাগে। তাই তাঁকে ‘ডিপার্টমেন্ট অব ফ্যামিলি অ্যান্ড কনজ্যুমার সায়েন্স’ বিভাগে সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত করা হয়। এরপর ডাকা হয় শর্ট জুম ইন্টারভিউতে। এই সাক্ষাৎকারে তিনি সফলভাবে উত্তীর্ণ হন। এ জন্য তাঁরা  ইমরানুল ইসলামকে গবেষণা সহকারী হিসেবে নিতে সম্মত হন। 

যেসব বিষয়ে পড়া যাবে
ইউনিভার্সিটি অব ওয়াইওমিংয়ে কম্পিউটার সায়েন্স, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং, পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, বায়োমেডিকেল সায়েন্স, ফ্যামিলি অ্যান্ড কনজ্যুমার সায়েন্স, রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞান, গণিত, ফার্মাসি, স্বাস্থ্যবিজ্ঞান, মৃত্তিকাবিজ্ঞান, অ্যানাটমি, ফিজিওলজি, ইকোনমিকসসহ ৫০টির বেশি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি করার সুযোগ রয়েছে। 

আবেদনের যোগ্যতা
প্রায় সব বিভাগে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি আবেদনের ক্ষেত্রে কমপক্ষে অনার্সে সিজিপিএ-৪-এর ভেতর ৩ পেতে হবে। কিছু বিভাগে প্রার্থীদের অবশ্যই জিআরই স্কোর থাকতে হবে। বিদেশি শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ইংরেজি দক্ষতা প্রমাণের জন্য আইইএলটিএস, টোফেল অথবা ডুয়োলিঙ্গে স্কোর থাকতে হবে। 

মো. ইমরানুল ইসলাম আবেদন প্রক্রিয়া
আবেদন করার ক্ষেত্রে প্রতিটি বিভাগভেদে ৫০ থেকে ৬০ ডলার জমা দিয়ে আবেদন করতে হয়। আবেদন করার সময় আনঅফিশিয়াল জিআরই স্কোর, আইলটিএস স্কোর অথবা টোফেল অথবা ডুয়োলিঙ্গে স্কোর, স্ক্যান কপি অনার্সের ট্রান্সক্রিপ্ট (সব সেমিস্টার), অনার্স সার্টিফিকেট, এমএস সার্টিফিকেট (যদি থাকে) অ্যাপ্লিকেশন পোর্টালে আপলোড করতে হয়। এ ছাড়া আবেদনের সঙ্গে এসওপি, তিনটি লেটার অব রিকমেন্ডেশন, একটি একাডেমিক সিভি জমা দিতে হয়। 

বৃত্তির সুযোগ-সুবিধা
এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিটি বিভাগ এমএস ও পিএইচডিতে দুই ধরনের ফান্ডিং দিয়ে থাকে। একটি হলো গবেষণা সহকারী, অন্যটি শিক্ষা সহকারী।

গবেষণা সহকারী হিসেবে প্রত্যেক শিক্ষার্থী একজন অধ্যাপকের নির্দিষ্ট প্রকল্পে কাজ করবেন। সেখান থেকে তিনি মাসিক ভিত্তিতে ভাতা পাবেন। শিক্ষা সহকারী হিসেবে একজন শিক্ষার্থী তাঁর অধ্যাপকের বিভিন্ন ক্লাস লেকচার ও ক্লাসে সহযোগিতা করে থাকেন। তাঁর কাজের 
জন্য বিভাগ থেকে মাসিক ভিত্তিতে বেতন দেওয়া হয়। ক্যাম্পাসের বাইরে কোনো শিক্ষার্থীকে কাজের অনুমতি দেওয়া হয় না। তাঁরা সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা কাজের অনুমতি পান, যদি তাঁদের গবেষণা সহকারী অথবা টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্টশিপ না থাকে। পড়াশোনা শেষ হলে শিক্ষার্থীরা রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারেন। তবে তাঁদের অবশ্যই আমেরিকার যেকোনো একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেতে হয়। 

নতুনদের জন্য পরামর্শ 
যাঁরা নতুন, তাঁদের অবশ্যই আগস্ট মাসের মধ্যে সব জিআরই ও টেস্ট পরীক্ষা শেষ করতে হবে। এরপর নিজ নিজ বিভাগের গ্র্যাজুয়েট কো-অর্ডিনেটরের সঙ্গে যোগাযোগ করে জেনে নিতে হবে তাঁর বিভাগ সেন্ট্রাল ফান্ডিং অথবা প্রফেসর ফান্ডিং কি না। যদি প্রফেসর 
ফান্ডিং হয়, তাহলে দ্রুত ই-মেইলে যোগাযোগ করে গবেষণা সহকারী অথবা শিক্ষা সহকারী বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। আর যদি সেন্ট্রাল ফান্ডিং হয়, তাহলে ডেডলাইনের আগে আবেদন করে বিভাগের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত