সাক্ষাৎকার

‘কেউ বাধ্য না করলে নিজস্ব প্রক্রিয়ায় ভর্তি পরীক্ষা নেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’—উপাচার্য রেজাউল করিম (পর্ব-২)

গত ১৮ সেপ্টেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিয়োগ পেয়েছেন রেজাউল করিম। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকে নিয়োগ পাওয়া প্রথম উপাচার্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমসাময়িক বিষয় নিয়ে তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আজকের পত্রিকার জবি প্রতিনিধি আহনাফ তাহমিদ ফাইয়াজ

আজকের পত্রিকা: বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি মাত্র ক্যানটিন—যা শিক্ষার্থীদের জন্য অপ্রতুল, দ্বিতীয় ক্যানটিনের পরিকল্পনা আছে?
উপাচার্য: আমি তথ্য নিয়েছি, শিক্ষার্থীরা তো সব সময় ক্যাম্পাসে থাকে না। যদি বিকেলেও শিক্ষার্থীদের একটা সমাগম থাকত, তাহলে ভাবা যেত। কিন্তু এদিকে থেকেও আমি শিক্ষার্থীদের যাতায়াতটাকে স্মুথ করার চিন্তা করছি। যাত্রাবাড়ী ও গুলিস্তানে চক্রাকার বাস সার্ভিস দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আজকের পত্রিকা: সমবায়ের জায়গায় গড়ে ওঠা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি। এ জায়গা নিয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে কি?
উপাচার্য: সমবায়ের সঙ্গে কথা বলব। আসলে এই জায়গাগুলোতে আমাদের আইনগত অধিকার না থাকায় কোনো স্থাপনা করতে পারি না। কথা বলার মাধ্যমে জায়গাটা যদি আমরা পাই, সেখানে একটা ভালো ভবন তৈরি করতে পারব। যেখানে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র গড়ে উঠবে। এটা নিয়ে প্রয়োজনে সরকারের সঙ্গেও যোগাযোগ করব।

আজকের পত্রিকা: বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের বাসস্ট্যান্ড সরানো হবে কি না?
উপাচার্য: বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়াল ঘেঁষে বাস দাঁড়ায় না। তা ছাড়া সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক সংরক্ষিত থাকে। কলাভবনের পাশের পকেট গেটটাকে আমার গেট বলে মনে হয় না। ওটা বন্ধ রেখে আমাদের প্রধান ফটকগুলোকে সুন্দর করে করতে পারি। 

আজকের পত্রিকা: বিশ্ববিদ্যালয়ের পরবর্তী সমাবর্তন নিয়ে পরিকল্পনা কী?
উপাচার্য: উপাচার্য হিসেবে একটা সমাবর্তন করতে পারলে আমার থেকে বেশি খুশি আর কেউ হবে না। ইনশা আল্লাহ আমাদের চেষ্টা থাকবে। সমাবর্তন করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। একটা সমাবর্তন করার দুই বছর আগে থেকেই পরিকল্পনা করতে হয়। তা–ও আমরা চেষ্টা করব। 

আজকের পত্রিকা: বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাইকে স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আনা হবে কি না?
উপাচার্য: আশা করি, বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাইকে স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আনা হবে। 

আজকের পত্রিকা: মেডিকেল সেন্টার নিয়ে কী পরিকল্পনা? 
উপাচার্য: আমরা যদি আমাদের শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসভিত্তিক করতে পারি, তাহলে সেখানে সব সুযোগ-সুবিধা নিয়ে মেডিকেল সেন্টার করা হবে। এখানে তো জায়গা নেই। তবে বর্তমান মেডিকেল সেন্টারে ওষুধ বাড়ানোর জন্য বলা হয়েছে। 

আজকের পত্রিকা: এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অবন্তিকার আত্মহত্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট এখনো জমা দেওয়া হয়নি। বিষয়টি কি অবগত আছেন?
উপাচার্য: খুব সম্প্রতি আমার সঙ্গে তদন্ত কমিটির এক সদস্যের কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা হয়তো হয়ে গিয়েছে; আপনি যদি বিষয়টি একটু দেখেন। আমরা এটা নিয়ে আলোচনা করব।

আজকের পত্রিকা: বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদানে কোনো পরিবর্তন আসবে কি না?
উপাচার্য: বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদান প্রক্রিয়ায় সিলেবাস যাতে যুগোপযোগী হয়, সে জন্য সংশ্লিষ্ট কমিটিকে আমরা নির্দেশনা দেব।

আজকের পত্রিকা: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কি গুচ্ছে থাকবে, না কি নিজস্ব ভর্তি প্রক্রিয়ায় ফিরে আসবে?
উপাচার্য: আমরা নিজস্ব প্রক্রিয়ায় ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে আগ্রহী। কোনোভাবে কেউ যদি আমাদের বাধ্য না করে, তাহলে আমরা নিজস্ব প্রক্রিয়ায় ভর্তি পরীক্ষা নেব।

আজকের পত্রিকা: শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলার কিছু আছে?
উপাচার্য: শিক্ষার্থীরা একটি অসাধ্য সাধন করেছে। শিক্ষার্থীদের বলব, বৈষম্য, অন্যায়, দুর্নীতির বিষয়ে সচেতন থেকে এখন লেখাপড়া ও গবেষণায় মনোনিবেশ করো। পাশাপাশি নিজেদের সুনাগরিক ও পরবর্তীকালে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য গড়ে তোল।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত