Ajker Patrika

আন্ডারওয়ার্ল্ড আর শাহরুখ খান

সৈয়দ নাজমুস সাকিব
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২১, ১৫: ১৬
আন্ডারওয়ার্ল্ড আর শাহরুখ খান

নব্বইয়ের সময়টা শাহরুখ খানের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে আগমন আর উত্থানের সময়। হিট ফ্লপ- সব ধরনের সিনেমা দিচ্ছেন, তবে তার চেয়েও বড় ব্যাপার হচ্ছে এমন সব রোল দিয়ে নিজের স্টারডমের যাত্রা শুরু করেছিলেন যা ঐ সময়ে ইন্ডাস্ট্রিতে কল্পনাই করা যেত না। একের পর এক ব্যবসাসফল কাজ করে আর পুরস্কার পেয়ে ক্যামেরার সামনের শাহরুখ খানের চেহারায় হাসির পরিমাণ দিনদিন বিস্তৃত হচ্ছিল; তবে ক্যামেরার পেছনে সেই একই চেহারায় বেশিরভাগ সময় থাকতো ভয় আর দুশ্চিন্তা! কারণ? বলিউডে আন্ডারওয়ার্ল্ডের ভয়ংকর প্রভাব!

নব্বইতে বিভিন্ন সিনেমায় টাকা ঢালতেন আন্ডারওয়ার্ল্ডের ডনেরা। উদ্দেশ্য সিম্পল- নিজেদের  কালো টাকা সাদা করা। এটা মোটামুটি ওপেন সিক্রেট ছিল, ইন্ডাস্ট্রির বেশিরভাগ মানুষ এই ব্যাপারটা জানতেন। আন্ডারওয়ার্ল্ড ডনদের কাছ থেকে অভিনেতাদের নিয়মিতভাবে ফোন পাওয়া আর সেইসব ডনদের "কাছের লোক" বলে খ্যাত কোন নির্দিষ্ট প্রোডিউসারের সাথে সিনেমা করার জন্য অভিনেতার উপরে প্রেসার ক্রিয়েট করাটা তখন খুবই স্বাভাবিক একটা ব্যাপার ছিল। পছন্দ না হলেও অভিনেতাদের কিছুই করার থাকতো না। ফোনে যেভাবে হুমকি দেয়া হত, তাতে দিনশেষে একটি কথাই টিকে থাকতো- "জানের মায়া বড় মায়া!"

শাহরুখ খানকে শুরুতে এই ধরনের আন্ডারওয়ার্ল্ডজনিত সমস্যায় পড়তে হয়নি। আর সর্বমহলে গ্রহণযোগ্যতা পেতে তাকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল ১৯৯৫ সালের 'দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙে' পর্যন্ত। তবে ১৯৯৭ সালের একটি ঘটনা সব এলোমেলো করে দেয়। এরপরে শাহরুখের উপরেও চোখ যায় আন্ডারওয়ার্ল্ডের।

টি সিরিজের প্রতিষ্ঠাতা গুলশান কুমারকে দিনেদুপুরে হত্যা করা হয়। এই ঘটনাটি সাধারণ মানুষ তো বটেই, বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়ায়। এই ঘটনার আগ পর্যন্ত সবাই ভাবতেন- হুমকি ধামকি পর্যন্তই হয়ত হাইয়েস্ট। তবে এভাবে দিনে দুপুরে হত্যার ব্যাপারটা বেশিরভাগই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। এই হত্যার সাথে জড়িত ছিলেন গ্যাংস্টার আবু সালেম।

শাহরুখ খান১৯৯৭ সালের জানুয়ারি মাসে পরিচালক ও প্রোডিউসার মহেশ ভাটের কাছে একটা ফোন আসে। ফোনের অপর প্রান্তে ছিলেন সিনিয়র পুলিশ অফিসার রাকেশ মারিয়া। মহেশ ভাট আর শাহরুখ তখন একসাথে চাহাত আর ডুপ্লিকেট সিনেমা করছিলেন। রাকেশ মারিয়া ফোন করেই বলেন- আবু সালিমের নেক্সট টার্গেট হচ্ছে আপনার সুপারস্টার, যার সাথে আপনি এই মুহুর্তে কাজ করছেন। তাকে খুবই সাবধানে থাকতে বলেন, এই মুহুর্তে তার বাড়ির বাইরে যাওয়াই রিস্কি। আর সম্ভব হলে এই মুহুর্তে শাহরুখকে নিয়ে কোন ধরনের আউটডোর শুটিং করবেন না।

মহেশ ভাট সাথে সাথেই শাহরুখকে ফোন করে সবকিছু জানান। ভয় পেয়ে যাওয়া শাহরুখ সাথে সাথেই রাকেশ মারিয়ার সাথে দেখা করেন। শাহরুখ কখনও ধারণাই করতে পারেন নাই যে তিনি মাফিয়াদের রাডারের আণ্ডারে আসবেন। রাকেশ মারিয়া বলেন- সুপারস্টার হয়েছেন, এখন আপনি খুবই পরিচিত মুখ- এইগুলোর সাইড ইফেক্টসও এখন নিতে হবে। টেনশন নেবেন না, আপনার সুরক্ষার দায়িত্ব আমাদের হাতে। 

রাকেশ মারিয়া তার কথা রেখেছিলেন। স্পেশাল অপারেশন স্কোয়াড থেকে একজন সার্বক্ষণিক বডিগার্ড নিয়োগ দেয়া হয়েছিল শাহরুখের জন্য, যার নাম ছিল মোহান ভিসে।

শাহরুখের জীবনযাত্রায় অন্য রকমের পরিবর্তন আসলো। বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া তিনি কমিয়ে আর বন্ধ করে দিলেন। শুটিং আর বাসা ছাড়া পারতপক্ষে কোথাও যেতেন না। শুটিং যাওয়ার স্টাইলেও পরিবর্তন এনেছিলেন- বাসা থেকে পাঁচ মিনিট এক গাড়িতে, এরপরে গাড়ি চেঞ্জ করে আরেক গাড়িতে ১০ মিনিট, এরপরে আবার গাড়ি চেঞ্জ করে আরেক গাড়িতে - এভাবেই প্রতিদিন শুটিং এ যাওয়া আর আসা। সবমিলিয়ে যাকে বলে একটা দমবন্ধকর পরিস্থিতি!

বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া কমিয়ে বা বন্ধ করে দিলেও, এমন কিছু জায়গা থাকে যেখান থেকে নিমন্ত্রণ আসলে খুব সহজে "না" করে দেয়া যায় না। ঐসময়ে ইন্ডিয়ান এক বিখ্যাত ক্রিকেট প্লেয়ারের বিয়ের দাওয়াত ছিল। নিজের স্ত্রীকে নিয়ে শাহরুখ সেখানে গিয়েছিলেন, রিস্ক থাকা সত্ত্বেও। সেখানে এক ফ্যান অটোগ্রাফ চায়, অটোগ্রাফের জন্য কলম সেই ফ্যানই বের করে দিচ্ছিলেন নিজের কোটের পকেট থেকে। শাহরুখ তখন এতটাই আতঙ্কিত ছিলেন, ফ্যান কলম বের করছে এটা না ভেবে তিনি ভেবে বসেন- সে হয়ত পিস্তল বের করছে পকেটের ভেতর থেকে! এই ছেলে হয়ত ফ্যানের ছদ্মবেশে আন্ডারওয়ার্ল্ডের কোন লোক!

শাহরুখ খানএই ভয় থেকে তিনি চিৎকার করে "গৌরি" বলে নিজের স্ত্রীকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেন! ফ্যান থেকে শুরু করে বিয়ের সবাই প্রচন্ড অবাক হয়ে যান শাহরুখের এই আচরণে কারণ তারা এর আগে কখনোই শাহরুখকে এই ধরনের আচরণ করতে দেখেন নাই। শাহরুখ সবার কাছে সরি বলেন। বারবার দুঃখপ্রকাশ করেন সবার কাছে। পরে নিজের বেশ কিছু ইন্টারভিউতে শাহরুখ বলেছেন- আমার প্রধান ভয়টা ছিল আমার স্ত্রীকে নিয়ে। নিজের জীবন নিয়ে খুব একটা পরোয়া ছিল না। তবে বাবা-মা ছাড়া জীবনে যদি আমার শেষ আশ্রয়স্থল গৌরিও না থাকে, সেটা আমার জন্য মেনে নেয়াটা একেবারেই অসম্ভব ছিল। এই কারণেই আমি ঐসময়টায় একটু ওভারপ্রোটেক্টিভ হয়ে গিয়েছিলাম।

এতদিন যা চলছিল, তা ছিল তবলার ঠুকঠাক। আসল গান তখনও শুরু হয় নি- অর্থাৎ এতদিন শাহরুখ জানতেন যে তিনি আন্ডারওয়ার্ল্ডের নজরে আছেন, তবে এখনও কোন কল আসেনি তার কাছে। অবশেষে সেই হিসাবও একদিন পূরণ হল।

খান্ডালা থেকে দিল তো পাগাল হ্যায় সিনেমার শুটিং করে একদিন শাহরুখ খান ফিরছেন। তখনই তার ফোন বেজে উঠলো। ফোনের অপর প্রান্তে ছিলেন কুখ্যাত ডন আবু সালেম।

আবু সালেম ফোন করেই "ফোন দিলে ফোন ধরিস না ক্যান রে?" বলেই কিচ্ছুক্ষণ গালিগালাজ করলেন। খাঁটি হিন্দি ভাষায় গালিগালাজ একদম। ফোনের অপর প্রান্তের মানুষটা একদম ঠান্ডা মাথায় সব শুনে যাচ্ছিলেন, এক মুহূর্তের জন্য মাথা গরম করলেন না। আবু সালেম যেখানে গালিগালাজ করছিলেন বা যা বলার হিন্দিতে বলছিলেন, সেখানে শাহরুখ প্রতিটি কথার উত্তর দিচ্ছিলেন ইংরেজিতে।

আবু সালেমের রাগের কারণ ব্যস্ত শাহরুখের ফোন না ধরা নিয়ে নয়, বরং তার রাগের কারণ ছিল আলাদা। একজন 'মুসলমান' প্রোডিউসার যে কিনা আবু সালেমের খুব "কাছের মানুষ" ছিলেন- তার সিনেমা শাহরুখ খান সাইন করেন নাই।

শাহরুখ খান'নিজে এত বড় স্টার হইসিস, নিজের কমিউনিটির প্রতি তোর কোন দায়িত্ব নাই? নিজের ধর্মের লোকদের ভুলে গেসিস স্টার হয়ে? এখন যশ চোপড়া আর মহেশ ভাট তোর জন্য সবকিছু? আমার কাছের লোক বাদ দিলাম, একজন মুসলমান এক্টর হয়ে তোর তো দায়িত্ব আরেকজন মুসলমান প্রোডিউসারের সাথে কাজ করা"- আবু সালেম টানা বলে গেলেন কথাগুলো।

বিপরীতে শাহরুখ খান ইংরেজিতে বলে গেলেন- আপনি ভুল করছেন মিস্টার আবু সালিম। আমি ধর্ম দেখে কাজ করি নাই, আমি কাজ দেখে আর যাদের সাথে কাজ করে আনন্দ পাই- তাদের সাথে কাজ করি। আর এরপরেও যদি মুসলমান প্রোডিউসার বা ডিরেক্টরের কথাই বলেন, আপনি সম্ভবত ভুলে যাচ্ছেন- আমি আব্বাস মাস্তানের সাথে কাজ করেছি। আজিজ মির্জার সাথে কাজ করেছি, মনসুর খানের সাথে কাজ করছি। এই মুহুর্তে ডুপ্লিকেটের শুটিং করছি, সেটার পরিচালক মহেশ ভাটের মা কিন্তু একজন মুসলিম। এবার কী বলবেন, বলেন?"

আবু সালেম চুপ করে রইলেন। কোন লজিক খুঁজে পাচ্ছিলেন না, কারণ শাহরুখের কথা ঠিক ছিল। "তোর কথা ঠিক আছে, এরপরেও খেয়াল রাখিস নিজের কমিউনিটির লোকের প্রতি। আর হ্যাঁ, আমি এবারের মত তোরে ছেড়ে দিলাম। তোর আর জানের ভয় নাই, অন্তত আমার কাছ থেকে না। আর ২৪ ঘন্টা যে বডিগার্ড তোর সাথে আঠার মত লেগে থাকে, সেটারে সরায় রাখ। সেটার আর কোন দরকার নাই।"

শাহরুখ যদিও কোন চান্স নেন নাই, পুলিশ ডিপার্টমেন্টও না। বডিগার্ড বহাল থাকলো।

অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে, আবু সালেম এরপর থেকে প্রায়ই শাহরুখকে কল করতেন। কোন বিশেষ বিষয়ে না, জাস্ট এমনেই আলাপ আলোচনা। "শুটিং কেমন হল? নাস্তা কি খাইসিস আজকে? দুপুরের লাঞ্চ এত দেরি করে করিস কেন, বাজেট কম নাকি এই প্রোডিউসারের? অমুক নায়িকার সাথে তোরে খুব মানায়! তোর বউ আর বোন কেমন আছে? এত রাত পর্যন্ত শুটিং করলে ঘুমাস কতক্ষণ?"- এই টাইপ প্রশ্ন ছিল আবু সালেমের।

শাহরুখ সিনিয়র অফিসার রাকেশ মারিয়ার প্রতিটি কথা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলতেন। " আপনার কোন ইনফরমেশন দেয়ার দরকার নাই, আন্ডারওয়ার্ল্ডের কোন ইনফরমেশন নেয়ারও দরকার নাই। আপনি জাস্ট আপনার মত থাকবেন। কোন বাড়তি আলাপ না। মাথা ঠান্ডা রাখবেন আর একদম বিনয়ী থাকবেন" শাহরুখ সব মেনে চলতেন আর প্রতিবার আবু সালেমের সাথে আলাপের পর নিজেকে জিজ্ঞাসা করতেন- সব ঠিকঠাক আন্সার দিসি তো? এমন কিছু বলি নাই তো যাতে ক্ষেপে গিয়ে আমাকে বা আমার স্ত্রীকে মেরে ফেলবে?

আবু সালেমের সাথে শাহরুখের সমস্ত ইনফরমেশন ছিল। কখন বের হচ্ছেন, কখন বাসায় আসছেন, জুহি চাওলার সাথে মাত্র কোথায় শুটিং করে আসলেন, এই মুহূর্তে কার সাথে বসে আছেন, সিকিউরিটি গার্ড কোন জায়গায় এই মুহুর্তে দাঁড়িয়ে আছেন- সমস্ত কিছু নিজেই শাহরুখকে ফোনে জানাতেন আর নিজেই বলতেন- আমি তোর সমস্ত কিছুর উপরে নজর রাখি।

নিজের এই সময়টকে পরবর্তীতে বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে শাহরুখ খান বলেছেন এভাবে "ঐ সময়টা ছিল মারাত্মক ডিপ্রেসিং আর ভয়ংকর"

শাহরুখ খানএতকিছুর পরেও শাহরুখকে ক্যামেরার সামনে বা পর্দায় দেখে বোঝার কোন উপায় নাই যে তিনি এইসব কিছুর মাঝ দিয়ে যাচ্ছেন। নিজের কাজে তিনি আগের মত প্রাণোচ্ছল, শুটিং সেট মাতিয়ে রাখছেন। দুই শিফট তো বটেই, মাঝেমধ্যে তিন শিফটেও কাজ করছেন। ডুপ্লিকেটের জন্য কিছু দৃশ্য দিনের বেলায় রাস্তার মাঝে করতে হবে। পুলিশের নিষেধ থাকা সত্ত্বেও, নিজের জীবনের উপর হুমকি থাকা সত্ত্বেও তিনি দৃশ্যগুলো ঝুঁকি নিয়ে শুটিং করেন।

এর মাঝে আবু সালেমের কল আসা বন্ধ হয়নি। মাঝেমধ্যে আবু সালেম নির্দিষ্ট কোন লোকের নাম বলে তার সাথে সিনেমা করার কথা বলতেন শাহরুখকে। শাহরুখ প্রতিবার ইংরেজিতে উত্তর দিতেন- আপনি কাকে গুলি করবেন, সেটা যেহেতু আমি আপনাকে বলে দেই না; সেহেতু আমি কোন সিনেমা করব, দয়া করে সেটাও আমাকে বলবেন না। সেটা আমাকেই চুজ করতে দিন।

আবু সালেম একা না, অন্যান্য অনেক গ্যাংস্টারের ফোন আসতো শাহরুখের কাছে, মাঝেমধ্যে অদ্ভুত সব আবদারও আসতো। ছোটা রাজান গ্যাংয়ের লোকজন তাকে ফোন করে নির্দিষ্ট ফিল্মের অফার করেছিল। শাহরুখ বিনয়ের সাথে না করে দেন। অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে, তারা বিনয়ের সাথে শাহরুখের 'না' মেনে নেন!

শাহরুখ খুবই বুদ্ধিমত্তার সাথে তার কাছে আসা প্রতিটি কল ডিল করতেন। কথার মারপ্যাঁচে বেশিরভাগ সময় অপর প্রান্তের ব্যক্তিকে আটকে ফেলতেন। মাঝেমধ্যে খুবই কঠিন কিছু ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করতেন। গোঙা ভাই নামের একজন ছোটখাটো গ্যাংস্টার শাহরুখ কে কল দিয়ে বললেন- আমার জীবনের উপর একটা সিনেমা বানাব, আমি কীভাবে সাধারণ একটা ছেলে থেকে আজকের গ্যাংস্টার হলাম- সেটা নিয়ে সিনেমা। লিডরোল তুই করবি।

শাহরুখ বিনয়ের সাথে বললেন- যে কষ্ট আপনি এই জীবনে করেছেন, যে ইমোশনাল গ্রাফ আপনার ক্যারেক্টরের হবে সেটা পর্দায় ফুটিয়ে তোলার মত যোগ্যতা অভিনেতা হিসেবে আমার নাই! শুধু আমার কেন? আমার তো মনে হয় না এই ইন্ডাস্ট্রিতে কারো সেটা আছে! আরেকটা ব্যাপার জেনে রাখেন, জীবন জীবনই, আর সিনেমা সিনেমাই। যতই চেষ্টা করি না কেন, আপনার জীবনকে পুরোপুরি পর্দায় ফুটিয়ে তোলা সম্ভব না।

এক বছর ধরে গোঙা ভাই শাহরুখের পেছনে লেগে থাকলেন। শাহরুখও প্রতিবার ঘুরিয়ে প্যাঁচিয়ে এরকম আন্সার দিতেন। এক বছর পর অবশেষে গোঙা ভাই হাল ছেড়ে দেন।

ছোটা শাকিল নামের আরেকজন গ্যাংস্টার ছিলেন। শাহরুখের সিনেমার গানের একটা লাইন নিয়ে তিনি খুবই ক্রুদ্ধ হলেন। দিল সে সিনেমার ছাইয়া ছাইয়া গানের একটি লাইন ছিল- পাও জান্নাত তলে।

ছোটা শাকিল ফোন করে বললেন- সিনেমার গানে এরকম অনৈসলামিক লাইন লিখার মানে কি?

শাহরুখ অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন- অনৈসলামিক মানে?

মানে বুঝিস না? পাও জান্নাত তলে? মানে তোর পায়ের নিচে জান্নাত? জান্মাতের অবস্থান অনেক উপরে, সেটাকে তুই বলতেসিস তোর পায়ের নিচে? মুসলিম হয়ে এভাবে জান্নাতের অপমান? স্টারডম বেশি হয়ে গেসে তোর?

শাহরুখ দ্রুত বললেন- জনাব শাকিল, আপনি ভুল করছেন! আসলে লাইনটা ছিল- পাও জান্নাত চলে। মানে আমার পা দুটো জান্নাতের খোঁজে চলে যাচ্ছে! আসলে সুখবিন্দর সিং একটু দ্রুত গান তো, আপনার শুনতে সমস্যা হয়েছে সম্ভবত। আরেকবার শুনলেই টের পাবেন! এ আর রহমান গানে এরকম ভুল করবে বলে আপনার মনে হয়?

এই বলে বোকা বানিয়ে শাহরুখ ফোন রেখে দিলেন।

পাঠক হয়ত জনাব শাকিল পড়ে অবাক হচ্ছেন। তবে শাহরুখ এভাবেই সবাইকে সম্বোধন করতেন। জনাব ছোটা শাকিল, জনাব আবু সালেম। তার এই বিনয়টাই সম্ভবত তাকে বাঁচিয়ে দিয়েছিল। প্রায় চার বছরের মত এইসব যন্ত্রণা তাকে সহ্য করতে হয়েছিল।

শাহরুখকে না মারার একটি কারণ হচ্ছে, তার মুসলিম আইডেন্টিটি। ইন্ডিয়ার মত দেশে একজন মুসলিম এতবড় স্টার হয়ে যাচ্ছে তাও আবার ইন্ডাস্ট্রির বাইরে থেকে এসে, সেটা গ্যাংস্টারদের কাছে বেশ ভালো লাগতো।

আরেকটা ছোট্ট কারণ ছিল শাহরুখ খানের জনপ্রিয়তা। আবু সালেম নিজে বেশ কয়েকবার শাহরুখকে বলেছেন- আমার মা আর বউ তোর ভয়ংকর ফ্যান। নিজের ঘরে দুইজন ফ্যান না থাকলে তোরে হয়ত অনেক আগেই আমি কিছু করে ফেলতাম। তোরে যতবার টিভিতে দেখায়, আমার মা ততবার বলে- এই ছেলের বাপ মা না থাকতে পারে, তবে ওর উপরে আল্লাহর রহমত আছে। ওর চেহারা দেখলেই মনে হয়, ওর উপরে আল্লাহর রহমত আছে।

তথ্যসূত্র - ‘King of Bollywood: Shah Rukh Khan and the Seductive World of Indian Cinema’- a book by Anupama Chopra

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাক্ষাৎকার

দর্শক চায় বাস্তবজীবনেও আমাদের জুটি হোক

তাবাসসুম ছোঁয়া।

শত পর্বের মাইলফলক স্পর্শ করেছে ধারাবাহিক নাটক ‘দেনা পাওনা’। গত বছর নভেম্বরে সিনেমাওয়ালা ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার শুরু হয়েছিল ধারাবাহিকটির। কে এম সোহাগ রানা পরিচালিত এ নাটকে নিপা চরিত্রে অভিনয় করে পরিচিতি পেয়েছেন তাবাসসুম ছোঁয়া। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন শিহাব আহমেদ

শিহাব আহমেদ

ধারাবাহিকটি যে এত লম্বা সময় ধরে চলবে, শুরুতে সেটা আঁচ করতে পেরেছিলেন?

শুরুতে ৮ পর্বের লক্ষ্য নিয়ে এগোনো হচ্ছিল। কিন্তু প্রচারের শুরুতেই আমরা দর্শকের ব্যাপক সাড়া পাই। তখন নির্মাতা সিদ্ধান্ত নিলেন, দর্শক যেহেতু এত ভালোবাসা দিচ্ছে, আমাদের উচিত এটা চালিয়ে যাওয়া।

এক বছরের বেশি সময় ধরে শুটিং করছেন, এই জার্নির অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

অনেক কিছু শিখেছি। দেনা পাওনা আমার জীবনে স্মরণীয় হয়ে থেকে যাবে। আগে কয়েকটা কাজ করলেও আমার অভিনয়ের হাতেখড়িটা এই নাটকের সেটেই হয়েছে। অভিনয়ে যতটা উন্নতি করেছি, তার কৃতিত্ব দেনা পাওনা নাটকের টিমের। সহশিল্পী, নির্মাতা থেকে শুরু করে ইউনিটের সবাই খুব সাপোর্ট করেছে। এ ছাড়া দর্শকের ভালোবাসা তো পেয়েছি। নিপা চরিত্রে পরিচিতি পেয়েছি, এখন মানুষ আমাকে চিনতে পারছে। সব মিলিয়ে পুরো অভিজ্ঞতাটা খুব সুন্দর।

এই চরিত্র আপনার ব্যক্তিজীবনে কোনো প্রভাব ফেলেছে কি না?

বাস্তবজীবনেও আমি অনেকটা নিপার মতো হয়ে গেছি। এখন আমি মানুষকে বোঝার চেষ্টা করি। নরম করে কথা বলি, যেমনটা নিপা করে।

অনেকে বলে, এ নাটকে খায়রুল চরিত্রে অভিনয় করা অ্যালেন শুভ্রর সঙ্গে আপনি সম্পর্কে আছেন। আসলেই কি তাই?

দেনা পাওনা নাটকে আমাদের জুটির ওপর সবাই ক্রাশ খেয়েছে। ফেসবুকে রীতিমতো হুমকি দিয়ে আমাকে মন্তব্য করা হয়, নিপা, তুমি যদি খায়রুলকে বিয়ে না করো, তাহলে তোমাকে দেখে নেব। স্ক্রিনের মতো বাস্তবেও নাকি আমাদের খুব সুন্দর লাগে। দর্শক চায় বাস্তবজীবনেও আমাদের জুটি হোক। বিষয়টা আমি খুব উপভোগ করি।

এ রকম হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে?

অ্যালেন শুভ্র একজন জেন্টেলম্যান, নাইস পারসন। অ্যালেন ভাই সত্যিই খায়রুলের মতোই। তাঁর মধ্যে শিশুসুলভ ব্যাপার আছে। পর্দায় দেখে দর্শক যেমন তাঁর মায়ায় পড়ে, তেমনি অভিনয় করতে গিয়ে আমারও তাঁর প্রতি মায়া কাজ করে। মায়াটা হয়তো দুজনের মধ্যেই কাজ করে। এই কারণেই হয়তো পর্দায় এত ভালো লাগে। আমাদের মধ্যে সুন্দর একটা সম্পর্ক আছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এমন কিছু হয়নি, যেমনটা মানুষ ভাবছে।

কনটেন্ট ক্রিয়েশন থেকে অভিনয়ে আসা। আপনার এই জার্নিটা নিয়ে জানতে চাই...

ক্যামেরার সঙ্গে আমার অনেক আগে থেকে খাতির ছিল। ফটোগ্রাফি, ভিডিওগ্রাফি শিখতে চেয়েছিলাম। কিছুদিন গিটার শিখেছি। এরপর কনটেন্ট ক্রিয়েশন শুরুর পর বিভিন্ন শুটের প্রস্তাব আসে। শখের বশে করছিলাম। প্রথম অভিনয় ওটিটিতে। ইমরাউল রাফাতের ‘ওপেন কিচেন’ সিরিজে। সেখানে একটি ছোট চরিত্র করি। সেটা করতে গিয়েই মনে হয়, এ মাধ্যমেই নিয়মিত কাজ করব। আমি মনে করি, একজন প্রপার অভিনেত্রী হতে গেলে বেসিক লার্নিং দরকার। সে জন্য কন্টিনিউয়াস প্রসেসের মধ্য দিয়ে চর্চা করে যেতে হবে। সেটাই করার চেষ্টা করছি। আমার জার্নিটা মাত্র শুরু, আশা করছি অনেক দূর যাবে।

অভিনয়কে কি পেশা হিসেবে নেওয়া যায়?

পেশা হিসেবেই নিয়েছি। হ্যাঁ, একটু ঝুঁকি তো থাকেই। আমার মনে হয়, শুধু অভিনয়ের ওপর নির্ভর না করে থাকলে ভালো। শুধু অভিনয় করব তা নয়, পাশাপাশি অনেক কিছু আছে। আমি কিন্তু কনটেন্ট ক্রিয়েশন আর অভিনয় দুটোই করছি। এমন কাজ করতে চাই, যেটাতে আমার অনীহা লাগবে না। যে কাজের প্রতি প্রেম থাকবে, সেটাই করতে চাই। আমার প্রেমটা অভিনয়ের সঙ্গে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শাকিবভক্তদের রোষানলে প্রযোজক সুমি

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
শাকিব খান ও প্রযোজক শাহরিন আক্তার সুমি। ছবি: সংগৃহীত
শাকিব খান ও প্রযোজক শাহরিন আক্তার সুমি। ছবি: সংগৃহীত

গত রোজার ঈদে শাকিব খানকে নিয়ে রিয়েল এনার্জি প্রোডাকশন হাউস থেকে নির্মিত হয় ‘বরবাদ’। বেশ আলোচিত হয় শাহরিন আক্তার সুমি প্রযোজিত সিনেমাটি। আগামী বছরের ঈদের জন্য আরেকটি সিনেমা প্রযোজনা করছেন সুমি। তাঁর নতুন সিনেমা ‘রাক্ষস’-এর নায়ক সিয়াম আহমেদ। সম্প্রতি সিনেমার সংবাদ সম্মেলনে প্রযোজক সুমি মন্তব্য করেন, শাকিব খান থাকলেই সিনেমা ব্লকবাস্টার হবে এটা ভেবে তিনি বরবাদ বানাননি। এমন মন্তব্যের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় শাকিবভক্তদের রোষানলে পড়েছেন এই প্রযোজক।

বরবাদ সাফল্যের পর সুমি জানিয়েছিলেন, তাঁর পরবর্তী সিনেমায়ও থাকবেন শাকিব খান। শেষ পর্যন্ত তাঁকে ছাড়াই দ্বিতীয় সিনেমা শুরু করলেন তিনি। রাক্ষসের সংবাদ সম্মেলনে সুমির কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, এবার তাঁর সিনেমায় শাকিব খান নেই কেন? জবাবের একপর্যায়ে সুমি বলেন, ‘শাকিব খান থাকলে বরবাদ ব্লকবাস্টার হবে আর না থাকলে হবে না, এটা ভেবে আমি সিনেমা করিনি। তাঁর সব সিনেমাই যে ব্লকবাস্টার ছিল, এমনটা কিন্তু না।’

সুমির এমন কথা ভালোভাবে নেয়নি শাকিব খানের ভক্তরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো তুলাধোনা করছেন সুমিকে। সমালোচনার জবাবে সংবাদমাধ্যমে সুমি জানান, শাকিব খানকে নিচু করে তিনি কোনো কথা বলেননি।

শাহরিন আক্তার সুমি বলেন, ‘আমি বলেছিলাম, বরবাদে শাকিব খানকে এ জন্য নিইনি যে আমার সিনেমা হিট হতে হবে। বরবাদের গল্পে তাঁকে ছাড়া অন্য কেউ হলে সেটা মানাত না। এ কারণেই তাঁকে নেওয়া, সিনেমা হিট করানোর জন্য না। আর রাক্ষসের গল্পে সিয়ামকে মানাবে বলেই তাঁকে নেওয়া হয়েছে। হয়তো আমি বিষয়টি ঠিকমতো বোঝাতে পারিনি। এটা আমার ব্যর্থতা। আমি শাকিব ভাইকে নিচু করে কোনো কথা বলিনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্ধারিত সময়ের দুই দিন পর শুরু হচ্ছে নবীন প্রবীণ নাট্যমেলা

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
বাতিঘরের ‘প্যারাবোলা’ নাটকের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
বাতিঘরের ‘প্যারাবোলা’ নাটকের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

১৯ ডিসেম্বর রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হওয়ার কথা ছিল নাট্যতীর্থ আয়োজিত ‘নবীন প্রবীণ নাট্যমেলা’ শীর্ষক আট দিনব্যাপী নাট্যোৎসব। তবে শিল্পকলা একাডেমির অনুষ্ঠান ও প্রদর্শনী অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হওয়ার কারণে শুরু হয়নি নবীন প্রবীণ নাট্যমেলা। অবশেষে আজ থেকে শুরু হচ্ছে এই নাট্যোৎসব।

‘রাষ্ট্রীয় শোক দিবস ও অনিবার্য কারণবশত’ ১৯ ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সব অনুষ্ঠান ও প্রদর্শনী স্থগিতের ঘোষণা দেয় শিল্পকলা একাডেমি। এমন ঘোষণা নিয়ে তৈরি হয় ধোঁয়াশা। অনেকেই মনে করেন, দীর্ঘ সময়ের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে শিল্পকলা একাডেমি। তবে সব শঙ্কা দূর করে গতকাল শিল্পকলা একাডেমির ফেসবুক পেজে জানানো হয়, ২১ ডিসেম্বর থেকে আবার শুরু হবে অনুষ্ঠান ও প্রদর্শনী।

শিল্পকলা একাডেমির ঘোষণা অনুযায়ী, ১৯ ও ২০ ডিসেম্বর বন্ধ ছিল সব আয়োজন। যে কারণে স্থগিত করা হয় নবীন প্রবীণ নাট্যমেলা। তবে বেশি দিন অপেক্ষায় থাকতে হলো না নাট্যপ্রেমীদের। শিল্পকলা একাডেমির অনুষ্ঠান ও প্রদর্শনী চালুর সিদ্ধান্তের পরই নাট্যতীর্থ থেকে জানানো হয়েছে, আজ ২১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে নবীন প্রবীণ নাট্যমেলা। আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাট্যতীর্থ দলের প্রধান ও নাট্যমেলার আহ্বায়ক তপন হাফিজ।

সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় আয়োজিত এই উৎসবে প্রদর্শিত হবে আট দলের আটটি নাটক। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় দেখা যাবে নাটকগুলো। উৎসবে ছয়জন নাট্যব্যক্তিত্বকে দেওয়া হবে নাট্যবন্ধু সম্মাননা। এ ছাড়া অনুষ্ঠিত হবে সেমিনার।

উৎসবের প্রথম দিন প্রদর্শিত হবে তীরন্দাজ রেপার্টরির প্রযোজনা দীপক সুমন নির্দেশিত ‘কণ্ঠনালীতে সূর্য’। দ্বিতীয় দিন মঞ্চস্থ হবে আরণ্যক নাট্যদলের ‘রাঢ়াঙ’। রচনা ও নির্দেশনায় মামুনুর রশীদ। এ ছাড়া এ উৎসবে দেখা যাবে বাতিঘরের ‘প্যারাবোলা’, নাট্যতীর্থের ‘জুলিয়াস সিজার’, ঢাকা থিয়েটার মঞ্চের ‘ঘরজামাই’, পদাতিক নাট্য সংসদের (টিএসসি) ‘আলিবাবা এবং চল্লিশ চোর’ এবং থিয়েটার নাট্যদলের ‘মেরাজ ফকিরের মা’।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাধুরীর কাছে ক্যারিয়ারের চেয়ে পরিবার বেশি জরুরি

বিনোদন ডেস্ক
মাধুরী দীক্ষিত। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
মাধুরী দীক্ষিত। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

আশির দশকের শেষ দিকে এবং নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে বলিউডের অন্যতম ব্যস্ত অভিনেত্রী ছিলেন মাধুরী দীক্ষিত। ওই সময় প্রতিবছর ১০টির বেশি সিনেমা মুক্তি পেত তাঁর। তবে সাফল্যের তুঙ্গে থাকা অবস্থায়ই বড় একটি সিদ্ধান্ত নেন মাধুরী। তারকাখ্যাতি পাশ কাটিয়ে ব্যক্তিজীবনকে বেশি গুরুত্ব দেন। ১৯৯৯ সালে ডা. শ্রীরাম নেনেকে বিয়ে করে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। ফেলে যান সফল ক্যারিয়ার। তবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া নাকি মোটেই কঠিন ছিল না মাধুরীর জন্য।

সম্প্রতি মিড-ডেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওই সময় নিয়ে মুখ খুলেছেন মাধুরী দীক্ষিত। ক্যারিয়ারের সাফল্য নয়, পরিবার-সন্তান-সংসারই নাকি ছিল তাঁর স্বপ্ন। অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি সব সময় ভাবতাম, আমার বিয়ে হবে, একটি সংসার হবে, সন্তান হবে। যখন সেটা ঘটল, মনে হয়েছিল, এত দিনে স্বপ্ন সত্যি হলো। বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতে দুবার ভাবিনি। বিয়ে করে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাই।’

প্রায় এক যুগ মাধুরী কাটিয়েছেন কলোরাডো অঙ্গরাজ্যের ডেনভারে। সেখানে প্রকৃতির নির্জনতায় সহজ-সাধারণ পারিবারিক জীবনেই নিজের সবটুকু মনোযোগ ঢেলে দিয়েছিলেন অভিনেত্রী। যুক্তরাষ্ট্রে আগে থেকে তাঁর ভাইবোনেরা থাকতেন। তাঁদের সঙ্গেও মাধুরীর নিয়মিত দেখা হতো। তাই সময়টা মন্দ কাটত না। অভিনেত্রী বলেন, ‘জীবনের প্রায়োরিটি আসলে কী, সেটা আগে থেকে জানতাম। সেখানে নিজের কাজ নিজেকে করতে হতো। তাতেও কোনো কষ্ট লাগত না। আফসোস হতো না।’

ক্যারিয়ারের জাঁকজমকের চেয়ে বরং পারিবারিক জীবন, সন্তান-সংসার—এসবই মাধুরীর ভালো লাগত বেশি। অভিনেত্রী বলেন, ‘বাচ্চাদের নিয়ে নিজের মতো থাকতাম। তাদের পার্কে নিয়ে যেতাম। ওদের সঙ্গে খেলতাম, মজা করতাম। কেউ আমাকে চিনত না। সময়টা ভীষণ উপভোগ করেছি।’

পাঁচ বছর শোবিজ থেকে দূরে ছিলেন মাধুরী। ২০০৭ সালে ‘আজা নাচলে’ দিয়ে আবার বড় পর্দায় ফেরেন। সিনেমাটি বক্স অফিসে অত সাড়া না পেলেও তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়। এরপর আবারও বিরতি। ২০১৩ সালে ‘বোম্বে টকিজ’ ও ‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’ সিনেমার গানে পারফর্ম করে সাড়া ফেলেন। আবারও মাধুরীকে নিয়ে চর্চা শুরু হয় বলিউডে।

এরপর সিনেমায় সেই অর্থে আর নিয়মিত হননি মাধুরী দীক্ষিত। অল্পস্বল্প কাজ করেছেন। রিয়েলিটি শোতে বিচারক হয়েছেন। ওয়েব কনটেন্টেও দেখা দিয়েছেন। সম্প্রতি জিওহটস্টারের ‘মিসেস দেশপান্ডে’ সিরিজ দিয়ে আবারও আলোচনায় তিনি। ১৯ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া সিরিজটি তৈরি হয়েছে ফরাসি থ্রিলার ‘লা ম্যান্টে’র অনুপ্রেরণায়। এতে মাধুরী অভিনয় করেছেন একজন সিরিয়াল কিলারের চরিত্রে।

মাধুরী সব সময় চেয়েছেন ক্যারিয়ার আর পরিবার—দুটির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে। শোবিজের তারকাখ্যাতি তাঁর পারিবারিক জীবনকে যেন প্রভাবিত করতে না পারে। হলিউড রিপোর্টার ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেন, ‘যখন আমি বাড়িতে ঢুকি, তারকাখ্যাতিকে বাইরে রেখে যাই। সেখানে আমি একেবারেই সাধারণ—একজন স্ত্রী, একজন মা। আর দশটা মানুষের মতোই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত