বিনোদন প্রতিবেদক
ঢাকা: বছর দুই আগের ঘটনা। এফডিসিতে ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ ২’ সিনেমার শুটিং চলছিল। এফডিসির ভেতরে গিয়ে দেখা গেল ঝরনা স্পটের সামনে শুটিং চলছে। একজন সেখানে ফ্যান হাত নিয়ে ঘুরছেন, বেশ কয়েকজন একটু পরপর সেটটিকে বিভিন্নভাবে সাজাচ্ছেন। লাইটে কাজ করছেন তিনজন। ফাইটের দৃশ্য পরিচালনা করছেন একজন, ক্যামেরায় কাজ করছেন কয়েকজন। সেই সঙ্গে স্ট্যান্টম্যানরা তো রয়েছেনই।
শুটিংয়ে কীভাবে দৃশ্য ধারণ করা হবে, তা বুঝিয়ে দিচ্ছেন ফাইট ডিরেক্টর। আর ক্যামেরায় তা ধারণ করছেন প্রধান ক্যামেরাম্যান। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন চার–পাঁচজন সহকারী। শুটিংয়ে দেখা যায়, নায়ককে চারদিক থেকে ঘিরে ধরেছে একদল লোক। সিনেমার ভাষায় তাদের পরিচয় গুন্ডা বাহিনী। শুটিংয়ের সময় চোখে পড়ে নায়ক এবং ভিলেনের গাল বেয়ে রক্ত পড়ছে। হঠাৎ দেখলে মনে হবে আসলেই গাল কেটে গেছে বুঝি। এর পেছনে অবদান আসলে মেকআপম্যান জামাল উদ্দিনের।
মেকআপ রুমেই জামাল উদ্দিনের পাশে দেখা গেল দুজনকে ট্রাংকের ভেতর থেকে বিভিন্ন ধরনের পোশাক বাছাই করছেন। বিভিন্ন দৃশ্যে অভিনেতা–অভিনেত্রীরা কখন কী ধরনের পোশাক পরবেন, তা ঠিক করছেন এই দুজন। ইউনিটে তাঁদের সবাই চেনে ড্রেসম্যান হিসেবে। সেখান থেকে বেরিয়ে দুজনকে দেখা গেল জেব্রা ক্রসিংয়ের মতো করে ফ্লোরে রং করছেন। এখানে সড়কের চিত্র ফুটিয়ে তোলা হবে।
এ ছাড়া লাইটম্যান, স্টিল ফটোগ্রাফার, ফিল্ম এডিটর, প্লেব্যাক সিঙ্গার, সংগীত পরিচালক, নৃত্য পরিচালকসহ আরও অনেকেই থাকেন পর্দার আড়ালে। পর্দার আড়ালের মানুষগুলোর গল্প বলতে গেলে যাঁর কথা না বললেই নয়, তাঁরা প্রোডাকশন বয় হিসেবে পরিচিত। এরা না থাকলে পুরো ইউনিট যে অচল, সেটা মোটামুটি এক বাক্যেই সবাই স্বীকার করেন। কারও পানি চাই, কারও চা, কারও খাবার, আবার কারও হয়তো সেফটিপিন– সবকিছুর জোগান দিয়ে যাচ্ছে প্রোডাকশন বয়। মো হারুন ত্রিশ বছর ধরে প্রোডাকশন টিমে কাজ করছেন। পেছনে কত মানুষই না এই সিনেমাকে দর্শকের সামনে তুলে ধরেন।
বড় তারকারা চলছেন নানা নির্দেশনা মেনে। যতটা পারছেন বিপদ এড়িয়ে রাখছেন। আর্থিকভাবে সচ্ছল এই শিল্পীরা বিধিনিষেধ মেনে চলতে পারলেও ক্যামেরার পেছনের মানুষেরা আছেন ভীষণ বিপদে। কারণ, শুটিং চললেও বাজেট কমানো ও সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে পেছনের মানুষদের সংখ্যা ক্রমেই কমানো হচ্ছে।
জামাল আহমেদ, সহকারী ফাইটার
আমরা মারামারি করি। মার খেয়ে গড়িয়ে পড়ে যাই। পাবলিক হাততালি দেয় হিরোরে। শখে আসছিলাম। শখের থেকে পেশা হয়ে গেছে। অন্য কোথাও আর যাওয়া যাবে না। পরিশ্রম অনুসারে পয়সা মেলে না। অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু তখন কেউ দেখে না। বাড়ি থেকে টাকাপয়সা নিয়ে চিকিৎসা করতে হয়। একটি শিফটে এক হাজার টাকা। তার মানে ঝুঁকিপূর্ণ দৃশ্যগুলোতে কাজ করে এক একটি সিনেমায় ১৫-২০ হাজার টাকা পান এ ফাইটাররা। করোনাকালে কোনো শুটিং নেই। পরিবারের লোকেরা ছোট একটা মুদির দোকান দিয়ে দিয়েছে। সেখানে বসি। মন মানে না। গত বছর করোনা শুরু হলে এ পর্যন্ত দুটি সিনেমায় কাজ করেছি। দুই সিনেমা মিলিয়ে আয় হয়েছে বড়জোর ৩০ হাজার টাকা। তা দিয়ে কীভাবে সংসার চালাব!
জামালউদ্দিন, মেকাপম্যান
আমি একজনের সঙ্গে শুটিং দেখতে আসছি। তারপর ববিতা ম্যাডাম আর আলমগীর স্যারকে দেখে মনে মনে চিন্তা করলাম আমার এখানেই থাকতে হবে। চিন্তা করলাম মেকআপম্যান হলে তাঁদের সবচেয়ে কাছে কাছে থাকা যায়। এরপর পেরিয়ে গেছে ত্রিশটি বছর। বয়স হয়েছে এখন আর আগের মতো ডাক পাই না। তবে এ সময়ের পরিচালক-অভিনয়শিল্পীরাও আমাকে শ্রদ্ধা করেন। সেদিন এফডিসিতে নায়ক সাইমনের সঙ্গে দেখা হলো। আলাদা করে ডেকে কুশলাদি জিজ্ঞেস করে হাতে ৫ হাজার টাকা গুঁজে দিলেন। এভাবে আরও অনেকেই সাহায্য করেন। কিন্তু কাজ তো নেই। এভাবে আর কত দিন চলবে।
ফরিদ আহমেদ, সেট ডিজাইনার
দেড় শর মতো সেট ডিজাইন করেছি। নতুন করে আর সেট ডিজাইনার আসছেন না। বর্তমানে চলচ্চিত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির হাওয়া লাগায় অনেক সিনেমাতেই আর সেট বানানো হয় না। এখন সিনেমা খুব কম তৈরি হচ্ছে। তার ওপর এখন সবাই ডিজিটাল ফিল্ম বানাতে চায়। লোকজন টাকা খরচ করে আগের মতো সেট বানাতে চায় না। আস্তে আস্তে যেন আমাদের পেশার সমাপ্তি ঘটছে। অথচ সারা বিশ্বে সেট ডিজাইন সিনেমার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। করোনার সময় তো সেটা ডিজাইন করে সিনেমা নির্মাণের কথা কেউ কল্পনাই করতে পারছেন না। আর্থিক অসচ্ছলতা তো আছেই। কিন্তু আমি চিন্তা করি আমাদের পেশার আসলেই ভবিষ্যৎ কী হবে।
আবদুল লতিফ বাচ্চু, চিত্রগ্রাহক সমিতির সভাপতি
চলচ্চিত্র চিত্রগ্রাহক সমিতির সদস্য ৮০ জন। এই অবস্থায় কষ্টে আছেন ২৫ জন সদস্য। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র চিত্রগ্রাহক সমিতির তহবিলে এরই মধ্যে চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতিও অনুদান দিয়েছে। এর বাইরেও কয়েকজন কিছু অর্থসহায়তা করেছেন। কবরী ম্যাম এই সংগঠনটির তহবিলে ১ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছিলেন। এরপর আরও কয়েকজন অভিনয়শিল্পী অনুদান দিয়েছেন। আমাদের সমস্যা হলো আমরা তো রিলিফের লাইনে দাঁড়াতে পারি না। হাত পাততে পারি না। যা সাহায্য পাচ্ছি আমরা অসহায় ক্যামেরা পারসন ও সহকারীদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি।
সোহানুর রহমান সোহান, পরিচালক সমিতির সভাপতি
চলচ্চিত্রটা পুরোটাই টিম ওয়ার্ক। এই কর্মযজ্ঞে এইসব মানুষেরা যদি না থাকে চলচ্চিত্র নির্মাণ আসলেই কঠিন হয়ে পড়বে। এখন আর লোকজন আগের মতো কাজে আসছে না। সিনেমার বাজার খুব মন্দা। কারণ শুটিং এখন এফডিসিতে সে রকম হয় না বললেই চলে। আগে কম করেও আট–দশটা পার্টির শুটিং হতো। এখন আর সে রকম কাজ নেই। চিকিৎসা সাহায্য দেওয়ার জন্য চারটি হাসপাতাল রাজি হয়েছে। হাসপাতালগুলো হচ্ছে এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ইনসাফ বারাকা কিডনি এবং জেনারেল হাসপাতাল, ইমপালস হাসপাতাল, অ্যাডভান্স হাসপাতাল। স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের পাশাপাশি পরিচালক সমিতি থেকে আর্থিকভাবে অসচ্ছল সদস্যদের জন্য সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাদের সমিতির ফান্ডে তো ওইভাবে কোনো টাকাপয়সা নেই। এরপর যতটুকু আছে এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্যবস্থা করে যাঁরা এ সময়ে নানাভাবে সমস্যায় ভুগছেন, আমরা তাঁদের সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করছি। এটা ঠিক সাহায্য না বলে আমরা উপহার বলতে চাই।
গত বছর করোনার প্রথম ঢেউয়ে বেকার হয়ে পড়া চলচ্চিত্রশিল্পীদের মধ্যে অসচ্ছল ২৩১ জনের তালিকা করেছিল পরিচালক সমিতি, শিল্পী সমিতি ও প্রযোজক সমিতি। সেই তালিকা এফডিসির মাধ্যমে পাঠানো হয় তথ্য মন্ত্রণালয়ে। তাঁদের জন্য চাওয়া হয় আর্থিক প্রণোদনা। তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে তখনই ফাইলটি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়। জানানো হয় শিল্পীরা ‘নগদ’-এর মাধ্যমে ডিসেম্বরেই যাঁর যাঁর মোবাইলে টাকা পাবেন।
শিল্পীরাও নিজেদের নম্বরে নগদ অ্যাকাউন্ট চালু করেন। কিন্তু পাঁচ মাস হয়ে গেলেও এখনো কেউ টাকা পাননি বলে জানিয়েছেন শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান।
তিনি বলেন, ‘গত বছরের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার আগেই আবার করোনার প্রকোপ বেড়েছে। শিল্পীদের হাতে কোনো কাজ নেই। আমি সরকারকে অনুরোধ করব প্রণোদনা দিয়ে অসচ্ছল শিল্পীদের পাশে দাঁড়ানোর। এমন অনেক শিল্পী আছেন যাঁরা তিন বেলা খেতে পারছেন না। ওষুধ কেনার টাকা নেই। তাঁরা সারা জীবন ব্যয় করেছেন শিল্পের জন্য। এই খারাপ সময়ে তাঁদের পাশে দাঁড়ানো সরকারের কর্তব্য।’
ঢাকা: বছর দুই আগের ঘটনা। এফডিসিতে ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ ২’ সিনেমার শুটিং চলছিল। এফডিসির ভেতরে গিয়ে দেখা গেল ঝরনা স্পটের সামনে শুটিং চলছে। একজন সেখানে ফ্যান হাত নিয়ে ঘুরছেন, বেশ কয়েকজন একটু পরপর সেটটিকে বিভিন্নভাবে সাজাচ্ছেন। লাইটে কাজ করছেন তিনজন। ফাইটের দৃশ্য পরিচালনা করছেন একজন, ক্যামেরায় কাজ করছেন কয়েকজন। সেই সঙ্গে স্ট্যান্টম্যানরা তো রয়েছেনই।
শুটিংয়ে কীভাবে দৃশ্য ধারণ করা হবে, তা বুঝিয়ে দিচ্ছেন ফাইট ডিরেক্টর। আর ক্যামেরায় তা ধারণ করছেন প্রধান ক্যামেরাম্যান। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন চার–পাঁচজন সহকারী। শুটিংয়ে দেখা যায়, নায়ককে চারদিক থেকে ঘিরে ধরেছে একদল লোক। সিনেমার ভাষায় তাদের পরিচয় গুন্ডা বাহিনী। শুটিংয়ের সময় চোখে পড়ে নায়ক এবং ভিলেনের গাল বেয়ে রক্ত পড়ছে। হঠাৎ দেখলে মনে হবে আসলেই গাল কেটে গেছে বুঝি। এর পেছনে অবদান আসলে মেকআপম্যান জামাল উদ্দিনের।
মেকআপ রুমেই জামাল উদ্দিনের পাশে দেখা গেল দুজনকে ট্রাংকের ভেতর থেকে বিভিন্ন ধরনের পোশাক বাছাই করছেন। বিভিন্ন দৃশ্যে অভিনেতা–অভিনেত্রীরা কখন কী ধরনের পোশাক পরবেন, তা ঠিক করছেন এই দুজন। ইউনিটে তাঁদের সবাই চেনে ড্রেসম্যান হিসেবে। সেখান থেকে বেরিয়ে দুজনকে দেখা গেল জেব্রা ক্রসিংয়ের মতো করে ফ্লোরে রং করছেন। এখানে সড়কের চিত্র ফুটিয়ে তোলা হবে।
এ ছাড়া লাইটম্যান, স্টিল ফটোগ্রাফার, ফিল্ম এডিটর, প্লেব্যাক সিঙ্গার, সংগীত পরিচালক, নৃত্য পরিচালকসহ আরও অনেকেই থাকেন পর্দার আড়ালে। পর্দার আড়ালের মানুষগুলোর গল্প বলতে গেলে যাঁর কথা না বললেই নয়, তাঁরা প্রোডাকশন বয় হিসেবে পরিচিত। এরা না থাকলে পুরো ইউনিট যে অচল, সেটা মোটামুটি এক বাক্যেই সবাই স্বীকার করেন। কারও পানি চাই, কারও চা, কারও খাবার, আবার কারও হয়তো সেফটিপিন– সবকিছুর জোগান দিয়ে যাচ্ছে প্রোডাকশন বয়। মো হারুন ত্রিশ বছর ধরে প্রোডাকশন টিমে কাজ করছেন। পেছনে কত মানুষই না এই সিনেমাকে দর্শকের সামনে তুলে ধরেন।
বড় তারকারা চলছেন নানা নির্দেশনা মেনে। যতটা পারছেন বিপদ এড়িয়ে রাখছেন। আর্থিকভাবে সচ্ছল এই শিল্পীরা বিধিনিষেধ মেনে চলতে পারলেও ক্যামেরার পেছনের মানুষেরা আছেন ভীষণ বিপদে। কারণ, শুটিং চললেও বাজেট কমানো ও সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে পেছনের মানুষদের সংখ্যা ক্রমেই কমানো হচ্ছে।
জামাল আহমেদ, সহকারী ফাইটার
আমরা মারামারি করি। মার খেয়ে গড়িয়ে পড়ে যাই। পাবলিক হাততালি দেয় হিরোরে। শখে আসছিলাম। শখের থেকে পেশা হয়ে গেছে। অন্য কোথাও আর যাওয়া যাবে না। পরিশ্রম অনুসারে পয়সা মেলে না। অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু তখন কেউ দেখে না। বাড়ি থেকে টাকাপয়সা নিয়ে চিকিৎসা করতে হয়। একটি শিফটে এক হাজার টাকা। তার মানে ঝুঁকিপূর্ণ দৃশ্যগুলোতে কাজ করে এক একটি সিনেমায় ১৫-২০ হাজার টাকা পান এ ফাইটাররা। করোনাকালে কোনো শুটিং নেই। পরিবারের লোকেরা ছোট একটা মুদির দোকান দিয়ে দিয়েছে। সেখানে বসি। মন মানে না। গত বছর করোনা শুরু হলে এ পর্যন্ত দুটি সিনেমায় কাজ করেছি। দুই সিনেমা মিলিয়ে আয় হয়েছে বড়জোর ৩০ হাজার টাকা। তা দিয়ে কীভাবে সংসার চালাব!
জামালউদ্দিন, মেকাপম্যান
আমি একজনের সঙ্গে শুটিং দেখতে আসছি। তারপর ববিতা ম্যাডাম আর আলমগীর স্যারকে দেখে মনে মনে চিন্তা করলাম আমার এখানেই থাকতে হবে। চিন্তা করলাম মেকআপম্যান হলে তাঁদের সবচেয়ে কাছে কাছে থাকা যায়। এরপর পেরিয়ে গেছে ত্রিশটি বছর। বয়স হয়েছে এখন আর আগের মতো ডাক পাই না। তবে এ সময়ের পরিচালক-অভিনয়শিল্পীরাও আমাকে শ্রদ্ধা করেন। সেদিন এফডিসিতে নায়ক সাইমনের সঙ্গে দেখা হলো। আলাদা করে ডেকে কুশলাদি জিজ্ঞেস করে হাতে ৫ হাজার টাকা গুঁজে দিলেন। এভাবে আরও অনেকেই সাহায্য করেন। কিন্তু কাজ তো নেই। এভাবে আর কত দিন চলবে।
ফরিদ আহমেদ, সেট ডিজাইনার
দেড় শর মতো সেট ডিজাইন করেছি। নতুন করে আর সেট ডিজাইনার আসছেন না। বর্তমানে চলচ্চিত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির হাওয়া লাগায় অনেক সিনেমাতেই আর সেট বানানো হয় না। এখন সিনেমা খুব কম তৈরি হচ্ছে। তার ওপর এখন সবাই ডিজিটাল ফিল্ম বানাতে চায়। লোকজন টাকা খরচ করে আগের মতো সেট বানাতে চায় না। আস্তে আস্তে যেন আমাদের পেশার সমাপ্তি ঘটছে। অথচ সারা বিশ্বে সেট ডিজাইন সিনেমার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। করোনার সময় তো সেটা ডিজাইন করে সিনেমা নির্মাণের কথা কেউ কল্পনাই করতে পারছেন না। আর্থিক অসচ্ছলতা তো আছেই। কিন্তু আমি চিন্তা করি আমাদের পেশার আসলেই ভবিষ্যৎ কী হবে।
আবদুল লতিফ বাচ্চু, চিত্রগ্রাহক সমিতির সভাপতি
চলচ্চিত্র চিত্রগ্রাহক সমিতির সদস্য ৮০ জন। এই অবস্থায় কষ্টে আছেন ২৫ জন সদস্য। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র চিত্রগ্রাহক সমিতির তহবিলে এরই মধ্যে চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতিও অনুদান দিয়েছে। এর বাইরেও কয়েকজন কিছু অর্থসহায়তা করেছেন। কবরী ম্যাম এই সংগঠনটির তহবিলে ১ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছিলেন। এরপর আরও কয়েকজন অভিনয়শিল্পী অনুদান দিয়েছেন। আমাদের সমস্যা হলো আমরা তো রিলিফের লাইনে দাঁড়াতে পারি না। হাত পাততে পারি না। যা সাহায্য পাচ্ছি আমরা অসহায় ক্যামেরা পারসন ও সহকারীদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি।
সোহানুর রহমান সোহান, পরিচালক সমিতির সভাপতি
চলচ্চিত্রটা পুরোটাই টিম ওয়ার্ক। এই কর্মযজ্ঞে এইসব মানুষেরা যদি না থাকে চলচ্চিত্র নির্মাণ আসলেই কঠিন হয়ে পড়বে। এখন আর লোকজন আগের মতো কাজে আসছে না। সিনেমার বাজার খুব মন্দা। কারণ শুটিং এখন এফডিসিতে সে রকম হয় না বললেই চলে। আগে কম করেও আট–দশটা পার্টির শুটিং হতো। এখন আর সে রকম কাজ নেই। চিকিৎসা সাহায্য দেওয়ার জন্য চারটি হাসপাতাল রাজি হয়েছে। হাসপাতালগুলো হচ্ছে এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ইনসাফ বারাকা কিডনি এবং জেনারেল হাসপাতাল, ইমপালস হাসপাতাল, অ্যাডভান্স হাসপাতাল। স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের পাশাপাশি পরিচালক সমিতি থেকে আর্থিকভাবে অসচ্ছল সদস্যদের জন্য সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাদের সমিতির ফান্ডে তো ওইভাবে কোনো টাকাপয়সা নেই। এরপর যতটুকু আছে এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্যবস্থা করে যাঁরা এ সময়ে নানাভাবে সমস্যায় ভুগছেন, আমরা তাঁদের সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করছি। এটা ঠিক সাহায্য না বলে আমরা উপহার বলতে চাই।
গত বছর করোনার প্রথম ঢেউয়ে বেকার হয়ে পড়া চলচ্চিত্রশিল্পীদের মধ্যে অসচ্ছল ২৩১ জনের তালিকা করেছিল পরিচালক সমিতি, শিল্পী সমিতি ও প্রযোজক সমিতি। সেই তালিকা এফডিসির মাধ্যমে পাঠানো হয় তথ্য মন্ত্রণালয়ে। তাঁদের জন্য চাওয়া হয় আর্থিক প্রণোদনা। তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে তখনই ফাইলটি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়। জানানো হয় শিল্পীরা ‘নগদ’-এর মাধ্যমে ডিসেম্বরেই যাঁর যাঁর মোবাইলে টাকা পাবেন।
শিল্পীরাও নিজেদের নম্বরে নগদ অ্যাকাউন্ট চালু করেন। কিন্তু পাঁচ মাস হয়ে গেলেও এখনো কেউ টাকা পাননি বলে জানিয়েছেন শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান।
তিনি বলেন, ‘গত বছরের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার আগেই আবার করোনার প্রকোপ বেড়েছে। শিল্পীদের হাতে কোনো কাজ নেই। আমি সরকারকে অনুরোধ করব প্রণোদনা দিয়ে অসচ্ছল শিল্পীদের পাশে দাঁড়ানোর। এমন অনেক শিল্পী আছেন যাঁরা তিন বেলা খেতে পারছেন না। ওষুধ কেনার টাকা নেই। তাঁরা সারা জীবন ব্যয় করেছেন শিল্পের জন্য। এই খারাপ সময়ে তাঁদের পাশে দাঁড়ানো সরকারের কর্তব্য।’
অভিষেক বচ্চন ও ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনের আলাদা হওয়ার গুঞ্জন কয়েক মাস ধরে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে। বিচ্ছেদের গুঞ্জনের মধ্যে সম্প্রতি স্ত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ অভিষেক। মেয়ে আরাধ্যার দেখাশোনা করার জন্য ঐশ্বরিয়ার প্রশংসা করেছেন তিনি। দ্য হিন্দু পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে অভিষেক স্মরণ করেছেন কীভাবে ঐশ্বরিয়া...
৮ ঘণ্টা আগেভারতীয় জনপ্রিয় অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া ও অভিনেতা বিজয় বর্মার প্রেমের সম্পর্ক বেশ কিছুদিন ধরেই ‘টক অব দ্য টাউন’। রেস্তোরাঁ থেকে সিনেমার পার্টি, সবখানেই হাতে হাত রেখে একসঙ্গে প্রবেশ করছেন তামান্না-বিজয়। পাপারাজ্জিদের ক্যামেরার সামনেও কোনো রাখঢাক নেই তাদের! এবার প্রেম থেকে তা গড়াচ্ছে বিয়ের প্রণয়ে। এব
১০ ঘণ্টা আগেভারতের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ বাবা সিদ্দিকি নিহতের পর থেকে আবারও প্রাণ নাশের হুমকিতে বলিউড ভাইজান সালমান খান। বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁর নিরাপত্তা। কৃষ্ণসার হরিণ হত্যা অভিযোগে বিষ্ণোই গ্যাংয়ের এমন হুমকিতে সালমান। যেতে হয়েছিল হাজতেও। এরই মধ্যে বিগ বসের এক অংশগ্রহণকারীকে শিক্ষা দিতে থানায় আটকের...
১২ ঘণ্টা আগেঢাকাই সিনেমায় দুই যুগের ক্যারিয়ার শাকিব খানের। সম্প্রতি তিনি যুক্ত হয়েছেন ক্রিকেটের সঙ্গে। শাকিবের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রিমার্ক-হারল্যান দল কিনেছে বিপিএলে। দলের নাম ঢাকা ক্যাপিটালস। শাকিবের ঢাকা ক্যাপিটালসের সঙ্গে ম্যাচ খেলবেন দেশের শোবিজ তারকারা। এমনটাই জানালেন শাকিবের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান...
১৪ ঘণ্টা আগে