Ajker Patrika

সত্যজিতের ইন্দির ঠাকুরণ

খায়রুল বাসার নির্ঝর
আপডেট : ১২ জুলাই ২০২১, ১৪: ৪৮
সত্যজিতের ইন্দির ঠাকুরণ

ইন্দির ঠাকুরণ অতিশয় বৃদ্ধা। বিধবা। স্বামী-সন্তানহীন। ভাইয়ের ইচ্ছায় পিতৃপ্রদত্ত ভিটার এক ঘরে তাঁর আশ্রয়। দুর্গা-অপুর পিসি তিনি। এ ভিটার বাইরে যাওয়ার তেমন কোনো জায়গাও নেই তাঁর। আপনও কেউ নেই। দুর্গা-অপুকে তিনি নিজের সন্তানের মতোই দেখেন। ‘পথের পাঁচালী’তে দুর্গা-অপু-সর্বজয়া-হরিহর যেমন গুরুত্বপূর্ণ, ইন্দির ঠাকুরণও তেমনি।

এই খানিকটা নিশ্চল, অসহায়, আশ্রয়হীন, সর্বজয়ার চোখে স্বার্থপর ইন্দির ঠাকুরণ ভারতীয় উপমহাদেশের নারীর প্রতীক তো বটেই, প্রতিনিধিত্ব করে তৎকালীন সমাজ বাস্তবতারও। ইন্দির ঠাকুরণ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন চুনিবালা দেবী। তাঁর সরল-স্বাভাবিক, অথচ আশ্চর্য অভিনয়ক্ষমতা তো লোকে দেখেছেই ‘পথের পাঁচালী’তে, দেখছে এখনও। সত্যজিৎ রায় এই বৃদ্ধাকে কোথা থেকে, কীভাবে পেলেন, সে এক গল্প বৈকি!

সত্যজিৎ রায়ের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে আমরা ইন্দির ঠাকুরণ, মানে চুনিবালা দেবীর গল্পে দিকে তাকাতে চাই আরেকবার। এই বৃদ্ধা ছবিটির জন্য এতই গুরুত্বপূর্ণ যে, স্বয়ং সত্যজিৎ বলে গেছেন—‘চুনিবালা দেবীকে নিয়ে কাজ করার সময় বারবার এই কথাটাই মনে হয়েছে যে, এঁর সন্ধান না পেলে আমাদের পথের পাঁচালি হতো না।’ তাঁর মুখে এমন কথা এল কেন? সেটা জানার জন্য আমাদের ফিরে যেতে হবে ‘পথের পাঁচালী’র শুরুতে।

ইন্দির ঠাকুরণকে পাওয়া যাচ্ছে না
সব প্রস্তুত। অপু, দুর্গা, হরিহর, সর্বজয়া—এ চরিত্রগুলোতে কারা কাজ করবেন; সেটা নির্বাচন হয়ে গেছে। বাকি কাস্টিংগুলোও মোটামুটি সত্যজিৎ রায়ের মাথায় আছে। শুধু নেই ইন্দির ঠাকুরণ। বিভূতিভূষণ যেভাবে চরিত্রটির বর্ণনা দিয়েছেন উপন্যাসে, ‘পঁচাত্তর বৎসরের বৃদ্ধা, গাল তোবড়াইয়া গিয়াছে, মাজা ঈষৎ ভাঙিয়া শরীর সামনের দিকে ঝুঁকে পড়িয়াছে। দূরের জিনিস আগের মতো ঠাহর হয় না’—এমন চরিত্রের কাউকে পাওয়া মুশকিলই।

বিশেষ করে সত্যজিৎ আগেই যখন পত্রিকায় ঘোষণা দিয়ে ফেলেছেন, সিদ্ধান্তও পাকাপাকি যে, ‘এ ছবিতে মেকআপ ব্যবহার করা হবে না।’ আর তা ছাড়া চেহারাই তো সবটা নয়। অন্য সমস্যাও আছে। এত বয়স্ক একজন মহিলা, শুটিংয়ের ধকল সহ্য করতে পারবেন কি না, সংলাপ ঠিকঠাক মুখস্ত রাখতে পারবেন কি না, এসব ব্যাপারও তো আছে।

এদিকে ইন্দির ঠাকুরণকে রেখেই শুরু হয়ে গেছে ছবির কাজ। ভেতরে ভেতরে খোঁজ চলছে। খোঁজ মিলছে না, সে চিন্তাও আছে।

চরিত্রের খোঁজে পাইকপাড়ায়
‘পথের পাঁচালী’র সেজো ঠাকুরণ যিনি, রেবা দেবী, তিনি সত্যজিৎ রায়কে খোঁজ জানালেন এক বৃদ্ধার। তাঁর নাম চুনিবালা দেবী। এক রোববার। সকালবেলা। ঠিকানা জোগাড় করে সত্যজিৎ রায় ছুটলেন পাইকপাড়ায়। বর্ণনা ঠিকঠাক, যেভাবে ইন্দির ঠাকুরণের বর্ণনা উপন্যাসে দিয়েছেন বিভূতিভূষণ। এখন দেখতে হবে বাদবাকি বিষয়গুলো।

সত্যজিৎ জানতে চাইলেন, ‘আপনি ছড়া জানেন? আবৃত্তি করতে পারেন?’ উত্তর, ‘ঘুমপাড়নি মাসিপিসি’ ছড়ার দশ-বারো লাইনের বেশি আমি কখনো শুনিনি।’ চুনিবালা ছড়াটির আদি সংস্করণ পড়ে গেলেন গড়গড় করে। অর্থাৎ, সংলাপ মুখস্ত রাখতে পারবেন কি না—এ আশঙ্কা আর থাকল না।

পরের প্রশ্ন—‘এখান থেকে ভোর ছ’টায় রওনা হয়ে পনেরো মাইল দূরে গ্রামে গিয়ে শুটিং করে আবার সন্ধ্যেবেলা সেই পনেরো মাইল পথ মোটরে ফিরে আসতে পারবেন?’ চুনিবালার উত্তরে অনেকখানি দৃঢ়তা, ‘খু-উ-ব’।

একেই বলে আন্তরিকতা!
ইন্দির ঠাকুরণ, মানে চুনিবালা দেবী, একদিন সত্যজিৎকে বলেছিলেন—‘আপনারা যখন তরুণীকে মেকআপ করে বুড়ি না সাজিয়ে আমাকে বেছে নিয়েছেন, তখনই বুঝেছি কোনদিকে আপনাদের ঝোঁক।’ অর্থাৎ চুনিবালা কিন্তু ঠিকই সত্যজিতের কাজের ধরনটা ধরে ফেলেছিলেন। শুরুতেই।

তাই তিনি সবসময় সচেতন থাকতেন, শুধু ক্যামেরার সামনের সময়টুকুতেই নয়। বাইরেও, নানান খুঁটিনাটি ব্যাপারে। গল্পে ইন্দিরের তো স্বভাব থাকে যে, ছেঁড়াফাঁড়া শাড়িতে গিঁট বেঁধে চালিয়ে নেওয়া। অবশ্য স্বভাবও বলা চলে না। এ ছাড়া তাঁর উপায়ও নেই। ইউনিট থেকে চুনিবালাকে একটা ছেঁড়া থান দেওয়া হলো। বলাও হলো, ‘আপনি ইচ্ছেমতো গেরো বেঁধে ছিদ্রগুলোর একটা ব্যবস্থা করে নেবেন।’

কিছুদিন কাজের পর ছেঁড়া শাড়িটি এমন অবস্থায় পৌঁছাল যে, ওটা আর পরার মতো থাকল না। একদিন সত্যজিৎ রায় শুনলেন, চুনিবালা কাকে যেন বলছেন, ‘এ কাপড়ের যে দশা এতে লজ্জা ঢাকা যায় না।’

তড়িঘড়ি করে আরেকটা থান এনে ছেঁড়ার মাত্রা খানিকটা কমিয়ে তাঁকে দেওয়া হলো। কিন্তু ইন্দিরের বেশে পরদিন যখন চুনিবালা সেটে এলেন, নতুন নয়, পরনে পুরোনো থানটাই!

বৃদ্ধার আশ্চর্য স্মৃতিশক্তি
মাঝেমধ্যে টিমের তো ভুল হতোই। হয়ও। হতো না চুনিবালার। একেবারে নিখুঁত কন্টিউনিটি মনে রাখতেন তিনি।

‘আমার ডান হাত যে ভিজে ছিল সেদিন?’ ‘কই, আমার মুখে ঘাম দিলেন না?’ ‘এ শটে তো আমার গায়ে চাদর থাকবে না।’ ‘আমার পুঁটলি কি ডান হাতে ছিল? না, পুঁটলি বাঁ-হাতে দিন। ঘটি ডান হাতে...’ প্রায়ই এ ধরনের খুঁটিনাটি, অথচ গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারগুলো ধরিতে দিতেন চুনিবালা।

চুনিবালা দেবীকে মৃত্যু দৃশ্য বুঝিয়ে দিচ্ছেন সত্যজিৎ রায়। ছবি: সংগৃহীতদুটো মৃত্যু দৃশ্য
চুনিবালা সত্যজিৎকে বললেন, ‘বইয়ে আছে বুড়ি চণ্ডীমণ্ডপে মরছে। আপনি দেখাচ্ছেন বাঁশবনে। ধার্মিক বুড়ি, তার কি বাঁশবনে মরাটা ভালো দেখায়?’ বই, মানে বিভূতিভূষণের মূল উপন্যাসে এটা আছে। চুনিবালা সেটা পড়েছেন, অথবা শুনেছেন কারও কাছ থেকে। সত্যজিৎ যখন উপন্যাস থেকে চলচ্চিত্র বানাচ্ছেন, তখন কিছু পার্থক্য তো এসেই যাবে। ঘটনার, স্থানের, মানসিকতার।

চুনিবালা সবই মেনেছিলেন, কেবল এই মৃত্যুর বেলায় এসে খানিকটা আপত্তি করে বসলেন। সত্যজিৎ বোঝাতে চেষ্টা করলেন, ‘বাঁশবনে মৃতদেহের আবিষ্কার অপু-দুর্গার শিশুমনে যে ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে, ছবি ও নাটকের দিক থেকে তার মূল্য অনেক।’ অবশেষে চুনিবালা মানলেন।

দৃশ্য এ রকম—বাগানে বুড়ি হাঁটুতে মাথা গুঁজে বসে আছেন। দুর্গা বুড়িকে ওইভাবে বসে থাকতে দেখে মনে করে যে, বুড়ি ঘুমিয়েছে। ফলে সে কাঁধ ধরে ঝাঁকুনি দেয়। বুড়ির মৃতদেহ ধপ করে মাটিতে পড়ে। এই দৃশ্য কতখানি বাস্তব হয়ে উঠবে, কতখানি আবেদন সৃষ্টি করবে; সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে চুনিবালার ওপর।

সত্যজিৎ লিখছেন, ‘তিনি যদি গুরুতর আঘাতের সম্ভাবনা অগ্রাহ্য করে তাঁর দেহকে মাটিতে ফেলতে পারেন, তবেই শট-এর ও অভিনয়ের সার্থকতা।’ চুনিবালা কতখানি স্বার্থকভাবে, গুরুতর আঘাতের সম্ভাবনাকে কতখানি হেলায় উড়িয়ে দিয়ে অভিনয় করেছিলেন, তার প্রমাণ তো আমরা ‘পথের পাঁচালী’তে পাই-ই।

আরেকটি ঘটনা। এটাও মৃত্যুর। ইন্দির ঠাকুরণ মারা গেছেন। তাঁর শবযাত্রা। নিয়ে যাওয়া হচ্ছে শ্মশানের দিকে—দৃশ্যটি এমন। সকাল পর্যন্ত চুনিবালা জানেন না, এমন একটি শট তাঁকে দিতে হবে। ভোর পাঁচটা। মেঠো রাস্তায় শটের তোড়জোড় চলছে। ট্যাক্সিতে করে পৌঁছলেন চুনিবালা।

সত্যজিৎ রায় ‘কোনোমতে সাহস সঞ্চয় করে’ তাঁকে বললেন, ‘আজ আপনাকে খাটে চড়াবো।’ চুনিবালা বিচলিত হলেন না। রাগলেনও না—‘বেশ তো, এ অভিজ্ঞতা আর ক’জনের হয়? আমার আপত্তি নেই।’

বাঁশের খাট। মাদুর বিছানো হলো তার ওপর। চুনিবালাকে শুইয়ে, চাদরে মুড়ে, দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলা হলো। তারপর শুরু হলো কাজ। আসল ঘটনা এর পরই। শট শেষ। খাট নামানো হয়েছে মাটিতে। বাঁধনও খুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চুনিবালা দেবীর আর নড়চড় নেই। ব্যাপার কী?

অজানা আশঙ্কায় সবাই পরস্পরের দিকে মুখ চাওয়াচাওয়ি করেন। খারাপ কিছু ঘটল না তো! হঠাৎ ধড়ফড় করে উঠে বসলেন চুনিবালা, ‘শট হয়ে গেছে? কই, আমাকে তো কেউ বলেনি! আমি তাই মড়া হয়ে পড়ে আছি।’

ঘটনা শেষ করে সত্যজিৎ রায় বলছেন, ‘আশ্চর্য অভিনয়!’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তিন বছর পর বিচ্ছেদের খবর দিলেন বিন্দু

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ২৮
বিন্দু। ছবি: সংগৃহীত
বিন্দু। ছবি: সংগৃহীত

২০১৪ সালে ব্যবসায়ী আসিফ সালাহউদ্দিন মালিককে বিয়ে করেন অভিনেত্রী আফসান আরা বিন্দু। বিয়ের পর শোবিজ থেকে পুরোপুরি নিজেকে গুটিয়ে নেন তিনি। অভিনয় ছেড়ে হয়ে ওঠেন সংসারী। বিয়ের চার বছর পর গুঞ্জন রটে, সংসার ভেঙেছে বিন্দুর। তবে বিচ্ছেদ নিয়ে তখন কোনো কথা বলেননি বিন্দু কিংবা তাঁর স্বামী। অবশেষে নিজের বিচ্ছেদের বিষয়টি নিশ্চিত করলেন অভিনেত্রী। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বিন্দু জানান, ২০২২ সালে বিচ্ছেদ হয়েছে তাঁর।

২০২২ সালে বিচ্ছেদ হলেও ২০১৭ সাল থেকেই স্বামীর সঙ্গে সেপারেশনে ছিলেন বিন্দু। পাঁচ বছর পর তাঁরা চূড়ান্তভাবে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন। বিন্দু বলেন, ‘অনেকেই মনে করেন, আমি এখনো বিবাহিত। কিন্তু না, আমার বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। আমার সংসারের জার্নিটা অনেক ছোট ছিল।’

বিচ্ছেদের কারণ জানিয়ে বিন্দু বলেন, ‘আলাদা হওয়ার জন্য অনেক সময় বড় কারণ থাকে, বড় ঘটনা ঘটে। অনেক সময় আবার তেমন কোনো কারণও দরকার হয় না। আমার এই জার্নিতে আরও একজন মানুষ জড়িত। তারও ব্যক্তিগত জীবন আছে। বিচ্ছেদ নিয়ে কোনো ব্যাখ্যা দিয়ে তাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে চাই না।’

২০০৬ সালে লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতা দিয়ে শোবিজে যাত্রা শুরু হয় বিন্দুর। অল্প দিনেই হয়ে ওঠেন মিডিয়ার নিয়মিত মুখ। অভিনয় থেকে বিরতি নেওয়ার আগে ২০১৪ সালের শুধু কোরবানির ঈদেই প্রচারিত হয় তাঁর অভিনীত ৫২টি নাটক। ছোট পর্দার পাশাপাশি বিন্দু অভিনয় করেছেন সিনেমাতেও।

ক্যারিয়ারের শুরুতে আরিফিন শুভর সঙ্গে জুটি বেঁধে অনেক নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। পর্দায় তাঁদের জুটি অনেক জনপ্রিয় ছিল। অনস্ক্রিন কেমেস্ট্রির প্রভাব পড়েছিল দুজনের বাস্তব জীবনেও। একসময় শুভর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান বিন্দু। সেই প্রেমের কথা স্বীকারও করেছেন অভিনেত্রী। কেন তাঁদের সম্পর্ক ভেঙে গিয়েছিল? বিন্দুর সংক্ষিপ্ত জবাব, ‘এর উত্তর আমার কাছে নেই। দুটি মানুষের জার্নি যে একসঙ্গে একই গন্তব্যে শেষ হবে, এমন তো কোনো কথা নেই।’

প্রায় এক দশকের বিরতি কাটিয়ে ২০২৩ সালে ‘উনিশ ২০’ ওয়েব ফিল্ম দিয়ে অভিনয়ে ফেরেন বিন্দু। মিজানুর রহমান আরিয়ানের পরিচালনায় এতে বিন্দুর বিপরীতে ছিলেন সেই আরিফিন শুভই। তবে এরপর আর কোনো কাজে দেখা যায়নি বিন্দুকে। তবে তিনি নিয়মিত অভিনয় করতে চান। বিন্দু বলেন, ‘শিল্পী হিসেবে কাজ করতে প্রস্তুত। এখন আমাকে নিয়ে কাজ করার চিন্তা, আমার পেছনে ইনভেস্ট করার বিষয়গুলো ভাবতে হবে। এমন ধরনের কাজ করতে চাই, যেগুলো এখনো করিনি। আমি চাই, নির্মাতারা আমাকে নিয়ে এমনভাবে ভাবুক, যেমনটা আগে ভাবা হয়নি।’

অভিনয় ছেড়ে দিয়ে বছর পাঁচেক আগে ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়েছেন বিন্দু। গুলশানে রয়েছে তাঁর একটি বুটিক হাউস। ‘আফসান বিন্দু ডিজাইনার স্টুডিও’ নামের এ ব্র্যান্ডের পোশাক বিন্দু নিজেই ডিজাইন করেন। ২০২০ সালে যখন প্রতিষ্ঠানটি শুরু করেন বিন্দু, তখন তাঁর কর্মীর সংখ্যা ছিল মাত্র একজন। তবে এখন তাঁর সঙ্গে ১৫ জন কাজ করেন বলে জানিয়েছেন অভিনেত্রী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘ইত্যাদি’র নতুন পর্ব এবার চুয়াডাঙ্গায়

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র দৃশ্য
ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র দৃশ্য

নব্বইয়ের দশক থেকে স্টুডিওর চারদেয়ালের বাইরে বেরিয়ে শিকড়ের সন্ধানে দেশের নানা প্রান্তে শুটিং করা হচ্ছে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদির। তারই ধারাবাহিকতায় ইত্যাদির নতুন পর্ব ধারণ করা হয়েছে ইতিহাস ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ প্রাচীন জনপদ চুয়াডাঙ্গায়।

এবারের ইত্যাদির মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছিল ব্রিটিশ আমলে তৈরি শতাধিক বছরের প্রাচীন হাজারদুয়ারি নামে খ্যাত ঐতিহ্যবাহী স্কুল নাটুদা মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। এবারের পর্বে গান রয়েছে দুটি। একটি গান গেয়েছেন লোকসংগীতশিল্পী বিউটি ও পান্থ কানাই। গানটির কথা লিখেছেন মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান, সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদী।

এ ছাড়া অনুষ্ঠানের শুরুতে চুয়াডাঙ্গার কৃষ্টিকথা ও ইতিহাসগাথা নিয়ে রয়েছে শাহ আলম সনির কথায় একটি পরিচিতিমূলক গানের সঙ্গে নৃত্য। গানটির সুর করেছেন হানিফ সংকেত, সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদী। পরিবেশন করেছেন স্থানীয় নৃত্যশিল্পীরা। এ ছাড়া ইত্যাদির নতুন পর্বে থাকছে চুয়াডাঙ্গা নিয়ে কয়েকটি প্রতিবেদন। রয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলার ইতিহাস-ঐতিহ্যসহ এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান-স্থাপনার ওপর একটি তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন।

ইত্যাদির নিয়মিত আয়োজন চিঠিপত্র পর্বে উঠে এসেছে চুয়াডাঙ্গার একজন ব্যতিক্রমী ছড়াকারের গল্প। আরও রয়েছে সামাজিক অসংগতি ও সমসাময়িক প্রসঙ্গনির্ভর নাটিকা। দানের নামে ফটোসেশন, সংসারের ভারে স্বপ্নভঙ্গ, মিষ্টি নিয়ে অনাসৃষ্টি, ইংরেজির দাপটে অসহায় বাংলা ভাষা, বোঝা না বোঝার বোঝা, স্টাইলিশ আইকনের বিপত্তি, লোম বাছতে কম্বল উজাড়সহ কয়েকটি নাট্যাংশে অভিনয় করেছেন সোলায়মান খোকা, সুভাশিষ ভৌমিক, আবদুল্লাহ রানা, আমিন আজাদ, কাজী আসাদ, মুকিত জাকারিয়া, আনোয়ার শাহী, শাহেদ আলী, জামিল হোসেন, আনন্দ খালেদ, তারিক স্বপন, আবু হেনা রনি প্রমুখ।

ইত্যাদির এই পর্ব দেখা যাবে ২৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ টেলিভিশনে রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর। ইত্যাদি রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। নির্মাণ করেছে ফাগুন অডিও ভিশন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘মহাশূন্যে সাইকেল’ নাটকের চার দিনে সাত প্রদর্শনী

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘মহাশূন্যে সাইকেল’ নাটকের দৃশ্য
‘মহাশূন্যে সাইকেল’ নাটকের দৃশ্য

গত বছর ডিসেম্বরে মঞ্চে এসেছিল অনুস্বর নাট্যদলের নাটক ‘মহাশূন্যে সাইকেল’। বাংলাদেশ মহিলা সমিতিতে পাঁচ দিনে নাটকটির আটটি প্রদর্শনী হয়েছিল। বছর ঘুরে আবারও মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে মহাশূন্যে সাইকেল নাটকের প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে অনুস্বর। ২৪ থেকে ২৭ ডিসেম্বর টানা চার দিন দেখা যাবে নাটকের সাতটি প্রদর্শনী।

কথাসাহিত্যিক শাহাদুজ্জামানের লেখা একই শিরোনামের গল্প অবলম্বনে এর নাট্যরূপ দিয়েছেন লেখক নিজে। নির্দেশনায় সাইফ সুমন। ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দেখা যাবে মহাশূন্যে সাইকেল। ২৫ থেকে ২৭ ডিসেম্বর প্রতিদিন বিকেল ৫টা ও সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মঞ্চস্থ হবে আরও ছয়টি প্রদর্শনী।

নাট্যকার শাহাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা কিছু কথা অনেকের সঙ্গে বলি, কিছু কথা নির্দিষ্ট মানুষের সঙ্গে বলি আর কিছু কথা শুধু নিজের সঙ্গে বলি। যেকোনো ক্রান্তির সময় নিজের সঙ্গে এই বোঝাপড়ার মাত্রা এবং ব্যাপ্তি সম্ভবত বেড়ে যায়। মহাশূন্যে সাইকেলের মূল ভাবনাটা এ রকম। গত বছর এই গল্পের নাট্যরূপ দিই। একজন ব্যক্তি নিজেকে দুই ভাগ করে তার এই দুই সত্তার সঙ্গে মঞ্চে কথোপকথন করছে। দর্শক হিসেবে একজন ব্যক্তির এই একান্ত বিভক্ত সত্তার ভেতরে এই কথোপকথন দেখার ভেতরে একটা গোপন কৌতূহল হয়তো আছে। কিংবা নিজের সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়ার আনন্দ আছে।’

নির্দেশক সাইফ সুমন বলেন, ‘ভোগবাদিতা আর ব্যক্তিস্বার্থের কারণে মানুষ এখন প্রতিনিয়তই পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। পরিবার, বন্ধু, সমাজ থেকে ক্রমেই বিচ্ছিন্ন হচ্ছি আমরা। কখনো কখনো মানুষের মধ্যে বাস্তবের চেয়ে কল্পনা বা অলৌকিক জগৎ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। পরিবারের সঙ্গে থেকেও একা অনুভব করে। সেই কথাই বলার চেষ্টা হয়েছে নাটকে।’

মহাশূন্যে সাইকেল নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোহাম্মদ বারী, এস আর সম্পদ, প্রশান্ত হালদার, নুরুজ্জামান সরকার, রীমা প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নতুন লুকে চমকে দিলেন কিয়ারা আদভানি

বিনোদন ডেস্ক
কিয়ারা আদভানি। ছবি: সংগৃহীত
কিয়ারা আদভানি। ছবি: সংগৃহীত

‘কেজিএফ’ সিনেমার দুই পর্বের ব্যাপক সাফল্যের পর কন্নড় সুপারস্টার ইয়াশ যুক্ত হয়েছেন মালয়ালম নির্মাতা গিতু মোহনদাসের সিনেমায়। ‘টক্সিক: আ ফেয়ারিটেল ফর গ্রোনআপস’ নামের কন্নড় ভাষার এ সিনেমায় প্রথমবারের মতো ইয়াশের নায়িকা হয়েছেন কিয়ারা আদভানি। টক্সিকে কিয়ারার চরিত্রের নাম নাদিয়া। গতকাল প্রকাশ করা হয়েছে এ সিনেমায় কিয়ারার চরিত্রের লুক।

শোবিজে কিয়ারার এক যুগ হতে চলেছে। ২০১৪ সালে ‘ফুগলি’ দিয়ে যাত্রা শুরুর পর এ পর্যন্ত ২০টির মতো সিনেমায় অভিনয় করেছেন। প্রতিটিতেই দেখা দিয়েছেন বৈচিত্র্যময় চরিত্রে। তবে টক্সিকে কিয়ারার চরিত্রটি যে একেবারেই আলাদা হতে চলেছে, সে আভাস পাওয়া গেল সদ্য মুক্তি পাওয়া ফার্স্ট লুক পোস্টারে। এতে তাঁকে দেখা যাবে একজন সার্কাসশিল্পী হিসেবে।

ফার্স্ট লুক পোস্টারে আলো ঝলমলে সার্কাসের সেটে অফ-শোল্ডার ভেলভেট গাউন পরে দাঁড়িয়ে আছে কিয়ারা অভিনীত নাদিয়া চরিত্রটি। চোখে-মুখে বিষণ্নতা, ক্লান্তির ছাপ। সার্কাসের মঞ্চে জাঁকজমক আবহে নৃত্যরত যে শিল্পীকে দেখা যায় দর্শকের সামনে, তার মনের ভেতরে অনেক সময় চলে দুঃখের দোলাচল। ভেতরে জমাট কষ্ট নিয়েই হাসিমুখে দর্শকের সামনে পারফর্ম করে তারা। টক্সিকের পোস্টারে তেমনটাই ধরা পড়েছে। এমনই এক জটিল চরিত্র নিয়ে দর্শকের সামনে আসবেন কিয়ারা।

ভিএন প্রোডাকশন এবং মনস্টার মাইন্ড ক্রিয়েশনসের ব্যানারে নির্মিত বিগ-বাজেট সিনেমা টক্সিক মুক্তি পাবে ২০২৬ সালের ১৯ মার্চ। দক্ষিণি মেগাস্টার যশ ও কিয়ারার এই নতুন রসায়ন বড় পর্দায় দেখার জন্য এখন থেকেই অপেক্ষায় অনুরাগীরা। এতে আরও অভিনয় করেছেন নয়নতারা, তারা সুতারিয়া, হুমা কুরেশি, অক্ষয় ওবেরয় প্রমুখ।

ইংরেজি ও কন্নড়—দুই ভাষাতেই টক্সিক সিনেমার শুটিং করা হয়েছে। পাশাপাশি হিন্দি, তেলুগু, তামিল, মালয়ালমসহ বিভিন্ন ভাষায় ডাব করা হবে। এতে কিয়ারার পারফরম্যান্স নিয়ে নির্মাতা গিতু মোহনদাস বলেন, ‘কিছু পারফরম্যান্স শুধু পর্দায় নয়, প্রভাব ফেলে শিল্পীর জীবনেও। টক্সিক সিনেমায় কিয়ারা যা করেছে, তার কোনো তুলনা হয় না। সিনেমাটি নিয়ে আমাদের প্রথম আলাপের মুহূর্ত থেকেই তিনি চরিত্রটির প্রতি নিজেকে সম্পূর্ণ সমর্পণ করেছেন। তিনি শুধু নাদিয়া চরিত্রে অভিনয় করেননি, নিজেও চরিত্রটির মতো করেই যাপন করেছেন।’

প্রসঙ্গত, বলিউডের তারকা দম্পতি কিয়ারা আদভানি ও সিদ্ধার্থ মালহোত্রার সংসারে নতুন সদস্য এসেছে গত ১৫ জুলাই। এখন সন্তানকে নিয়েই পুরো সময়টা কাটছে অভিনেত্রীর। আর একটু একটু করে নিচ্ছেন আবার শোবিজে ফেরার প্রস্তুতি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত