Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

এই উন্মাদনার কারণেই সিনেমাটি শেষ পর্যন্ত হয়ে উঠেছে

ছবি: ওমর ফারুক

৬ ডিসেম্বর সারা দেশে মুক্তি পাচ্ছে সোহেল রানা বয়াতির প্রথম সিনেমা ‘নয়া মানুষ’। ইতিমধ্যেই প্রকাশিত গান, ট্রেলার আশা জাগিয়েছে সিনেমাটি নিয়ে। আজকের পত্রিকার সঙ্গে শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা, সিনেমা নিয়ে প্রত্যাশা আর প্রাসঙ্গিক নানা বিষয়ে কথা বলেছেন এর মুখ্য দুই অভিনয়শিল্পী রওনক হাসানমৌসুমী হামিদ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এম এস রানা

এম এস রানা
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭: ৪৩

‘নয়া মানুষ’ মুক্তি পাচ্ছে। সিনেমার চরিত্রের জন্য কীভাবে নিজেকে তৈরি করলেন?

রওনক হাসান: এমন বানভাসি একজন মানুষ, প্রান্তিক একজন মানুষ—এই জীবনটা তো আমি দেখিনি, আমি যাপন করিনি কখনো। সেই জায়গা থেকে এটা আমার জন্য খুবই কঠিন একটা কাজ ছিল। অভিনয়ে অভিজ্ঞতার জায়গা থেকে, স্ক্রিপ্ট পড়ে, ওই অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে মিশে একধরনের চেষ্টা করেছি আমি। বিষয়টা খুব সহজ ছিল না আমার জন্য, বেশ কঠিন ছিল। আমাদের সঙ্গে ঔপন্যাসিক আ মা ম হাসানুজ্জামান ছিলেন, তিনিও অনেক সহযোগিতা করেছেন।

মৌসুমী হামিদ: আমার তো এমন চরিত্রে অভিজ্ঞতা একেবারেই কম। আমার যে শারীরিক গঠন বা উচ্চতা, তাতেও একধরনের শঙ্কা ছিল। যতই আমি শাড়ি পরে তাদের মতো করে সাজি না কেন, ভয় ছিল আমি তাদের মতো হয়ে উঠতে পারব কি না। যারা ওই চরে থাকে, চেষ্টা করেছি তাদের সঙ্গে সময় কাটাতে, তাদের সঙ্গে মিশে, কথা বলে, তাদের মতো হয়ে উঠতে। তারা কীভাবে কথা বলে, কীভাবে ঝগড়া করে, কীভাবে জীবনটা যাপন করে—এসব আয়ত্ত করার চেষ্টা করেছি।

অভিনয়ের পর নিজের চরিত্রে নিজেকে কতটা সফল মনে হয়েছে?

মৌসুমী: সহশিল্পীরা আমাকে ভীষণ সহযোগিতা করেছেন। রওনক ভাই ছিলেন, হাসান ভাই ছিলেন, বদরুদ্দোজা ভাই ছিলেন, আশীষ খন্দকারের মতো আর্টিস্ট ছিলেন। সবার সহযোগিতায় চেষ্টা করেছি, কতটা পেরেছি, সেটা দর্শকই ভালো বলবেন।

রওনক: একটা কাজে অভিনয় করার পর সেই কাজটি আমার আর ভালো লাগে না। আমার মনে হয় আরও ভালো করার সুযোগ ছিল। যে কারণে একটা পর্যায়ে আমি হতাশ হয়ে পড়তাম। তাই যখন পরিচালক বলেন ভালো হয়েছে, যখন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বা দর্শকেরা বলেন ভালো হয়েছে, তখন আমার মনে হয় ভালো হয়েছে।

শহুরে মানুষের জন্য তো নৌকা চালানো বেশ কঠিন। প্রাইভেট কার চালানোয় অভ্যস্ত মানুষের জন্য শুটিংয়ে নৌকা চালানোটা কতটা কঠিন মনে হলো রওনকের?

রওনক: ভীষণ কঠিন।

মৌসুমী: রওনক ভাই তো শুটিং চলাকালে শক্ত হয়ে বসে থাকতেন, নৌকা চালিয়ে তাঁর শরীর ব্যথা হয়ে যেত। কোনো কিছু পাত্তা দিতেন না। কিন্তু যখনই শুটিং শেষ হতো, তিনি বিছানায় এলিয়ে পড়তেন, ব্যথায় কাতরাতেন। এমনও দিন গেছে, শরীরে প্রচণ্ড জ্বর নিয়ে তিনি শুটিং করেছেন, প্রচণ্ড কষ্ট হয়েছে কিন্তু থেমে যাননি বা কাউকে বুঝতে দেননি।

ঝড়ের কবলে পড়ে সেট ভেঙে গিয়েছিল শুনেছি?

রওনক: সিত্রাং ঝড়ের পূর্বাভাস আগে থেকেই ছিল। আমরা ঝড় শুরুর আগে চলে এসেছিলাম। শুটিংয়ের জন্য যে ঘরটা বানানো হয়েছিল, সেটা ঝড়ে ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছিল। পরে পুরো সেটটা আবার বানিয়ে শুটিং করতে হয়েছে।

সেই ঝড়ের দৃশ্য কি আছে সিনেমায়?

মৌসুমী: কিছু আছে, বৃষ্টির দৃশ্য আছে। আমরা চলে এলেও পরিচালককে কিছুতেই আনা যাচ্ছিল না। তিনি ওর মাঝেই লাইভ কিছু দৃশ্যের শুটিং করতে চেয়েছেন।

নয়া মানুষ সিনেমাটি দর্শক কী কারণে, কেন দেখবেন?

রওনক: নয়া মানুষের গল্পটা শতভাগ এই বাংলার, এই বাংলার প্রান্তিক মানুষের গল্প, এই বাংলার জল, মাটি, আগুন, মানুষ ও সম্প্রীতির গল্প। এবং এই মুহূর্তে আমাদের দেশে কিছু বিষয়ের বিবেচনায় এই গল্পটা খুবই সমসাময়িক। আমার দেশের প্রান্তিক মানুষেরা জীবনটাকে কীভাবে দেখে, ধর্মকে কীভাবে দেখে, রাজনীতিকে কীভাবে দেখে, সেই বিষয়গুলো এখানে আছে। সব মিলিয়ে সিনেমাটা যখন দর্শক হলে বসে দেখবে, তখন চোখের এবং মনের একধরনের আরাম পাবে।

এখন তো সারা বিশ্বেই অ্যাকশন, অ্যানিমেশন, হরর সিনেমার প্রতি দর্শকের আগ্রহ বেশি দেখা যাচ্ছে। এমন সময়ে এই সিনেমাটা দর্শকদের কতটা স্বস্তি দেবে বলে মনে করেন?

মৌসুমী: সিনেমাটাকে যদি কোনো ফর্মুলায় ফেলতে চান, তাহলে বলতে পারেন এটা এটা সোশ্যাল ড্রামা মুভি। চরের মানুষের জীবনেও একটা ফিলোসফি আছে। তারাও তো জীবন ধারণ করে কোনো না কোনো বিশ্বাসের ওপরে। এই সিনেমায় ওই মানুষগুলোর রোমান্টিসিজম আছে, ওই মানুষগুলোর জীবনের অ্যাকশন আছে, তারা কীভাবে ধর্মকে মেনে চলে, তারা কীভাবে প্রেমকে দেখে, সম্পর্ককে দেখে। অ্যাকশন, অ্যানিমেশন তো প্রচুর হচ্ছে। এর মাঝে এই সিনেমাটা বৈচিত্র্য দেবে।

সিনেমার একটা গান রিলিজ হয়েছে ‘চান্দের বাড়ি’। কেমন প্রতিক্রিয়া পাচ্ছেন গানটি নিয়ে?

মৌসুমী: সবাই খুব পছন্দ করছে। গানটার দৃশ্যায়ন যেমন সুন্দর, কথাগুলো, সুরটাও তেমন সুন্দর। গেয়েছেনও দুজন মিষ্টি মানুষ—মাশা ও অনিমেষ। কম্পোজ করেছেন ইমন চৌধুরী। সুজন হাজংয়ের লেখা। সব মিলিয়ে দারুণ একটা গান হয়েছে।

অন্য গানগুলো কেমন?

রওনক: আরও দু-তিনটি গান আছে। একটা লিখেছেন নির্মলেন্দু গুণ। অসাধারণ লিরিক। আরেকটি গান শহিদুল্লাহ ফরায়েজী লিখেছেন। গেয়েছেন শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, খায়রুল ওয়াসিফ। গানগুলোও সিনেমার একটা সম্পদ হয়ে থাকবে।

প্রচারণা নিয়ে কী ধরনের পরিকল্পনা আছে?

রওনক: এই ধরনের সিনেমায় আমাদের দেশে স্পনসর পাওয়া যায় না। এই সিনেমাটিও তৈরি হয়েছে নানাজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে। সেই অর্থে এটাকে গণ-অর্থায়নও বলতে পারেন। এই সিনেমার প্রচারণার সবচেয়ে বড় মাধ্যম হচ্ছে গণমাধ্যম। তারা আমাদের যথেষ্ট সহযোগিতা করছে। ইতিমধ্যেই মানুষ তাদের মাধ্যমেই সিনেমাটি সম্পর্কে জেনেছেন, আগ্রহী হয়েছেন। আমরাও পরিকল্পনা করছি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় বা সিনেমা মুক্তির পর হলে যাওয়ার। তবে সেই অর্থে সিনেমাটি নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালানোর সুযোগ বা সামর্থ্য আমাদের নেই।

প্রযোজকেরা কেন এ ধরনের সিনেমায় লগ্নি করতে চান না? এটা কি আস্থাহীনতার অভাব?

রওনক: এটা খুবই জটিল বিষয়। এর একটা কারণ হতে পারে, আমরা শতভাগ পেশাদারি মনোভাব নিয়ে কাজটা করি না। আবেগ থেকে কাজটা করি। আবার এই কথাটাও আমি বলতে চাই, নাটক, সিনেমার ক্ষেত্রে আমরা রাষ্ট্রের কাছ থেকে যথাযথ সাপোর্ট পাই না। সমাজ থেকেও পাই না। আমার মনে আছে, একবার আমার মাকে একজন পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন, ওনার ছোট ছেলেটা কলেজে পড়ে আর বড় ছেলেটা নষ্ট হয়ে গেছে, ও নাটক করে। আমার মা বিছানায় শুয়ে কাঁদে, কারণ তার বড় ছেলে নষ্ট হয়ে গেছে। আমার বাবা আমাকে বললেন, তুই এক হাজার টাকা বেতনের হলেও একটা চাকরি কর, যেন বলতে পারি আমার ছেলে একটা চাকরি করে।

নয়া মানুষ সোহেল রানা বয়াতির প্রথম সিনেমা। পরিচালকের জন্য কি এটা কোনো প্রতিবন্ধকতা ছিল?

রওনক: প্রথম সিনেমায় এলে কোনো কিছুই ঠিকমতো বোঝা যায় না। ডিরেকশন দিতে গিয়ে আমি নিজেও সেটা টের পেয়েছিলাম। আমার পরিচালিত প্রথম নাটকের বাজেট ছিল সাড়ে ৫ লাখ টাকা, খরচ হয়েছিল ৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা। বাকি টাকা আমার নিজেকে ম্যানেজ করতে হয়েছে। প্রথম কাজে তো কিছু সমস্যা থাকবেই।

পরিচালক সোহেল রানা বয়াতির সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?

রওনক: নানা রকম অভিজ্ঞতা হয়েছে। নানা অভিযোগ, নানা অভিমান। তবে যখন সিনেমাটি তৈরি হয়ে গেল, তখন মনে হলো, বয়াতি অসাধারণ একটা কাজ করে ফেলেছে।

মৌসুমী: কিছু কিছু ব্যাপারে আমাদের মনোমালিন্য হয়েছে, কোনো কোনো বিষয়ে আমরা একমত হতে পারছিলাম না। একসময় তো আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম সিনেমাটির শুটিং আর করব না। শেষ পর্যন্ত মনে হয়েছে, বয়াতি একটা দুঃসাহসিক কাজ করেছে।

রওনক: কিছু কিছু কাজ দেখে আমার কাছে ওকে উন্মাদ মনে হয়েছে। সে মাত্র ৩৭ হাজার টাকা পকেটে নিয়ে আস্ত একটা ইউনিট নিয়ে সিনেমার শুটিং করতে চলে গেছে। এই কথা আগে জানলে তো আমি শুটিংয়েই যেতাম না। কিন্তু শুটিংয়ের মাঝে এর কাছে, ওর কাছে বলে টাকা আনিয়ে ঠিকই শুটিং শেষ করেছে। ওর এই উন্মাদনার কারণেই সিনেমাটি শেষ পর্যন্ত হয়ে উঠেছে।

মৌসুমী: আমি ভাবছিলাম সিনেমাটি হবে না। আচ্ছা বলুন, এটা কোনো সুস্থ মানুষের কাজ! এই কটা টাকা নিয়ে ৬০ জন লোক নিয়ে সে ১২দিনের জন্য আউটডোরে চলে গেল শুটিং করতে!

সিনেমাটি কতটা সফলতা পেলে আপনারা সন্তুষ্ট?

রওনক: আমরা অনেক কষ্ট করে একটা সিনেমা করলাম, সেটা দর্শক দেখলেই আমরা খুশি হব। আমরা চাই, সিনেমাটি ভালো লাগলে দর্শক সেটা উপভোগ করুক, মন্দ লাগলে কেন মন্দ লাগল সেই কথাটাও বলুক, আমরা কী ভুল করেছি তা জানাক।

মৌসুমী: আমাদের পেছনে বড় কোনো অর্থায়ন নেই, আমাদের পেছনে বড় কোনো লোগো নেই, আমরা এত কষ্ট করে যে সিনেমাটা বানালাম, সেটা দর্শকের অনুভূতিকে সামান্যতম নাড়া দিতে পারলেও আমি খুশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তিন বছর পর বিচ্ছেদের খবর দিলেন বিন্দু

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
বিন্দু। ছবি: সংগৃহীত
বিন্দু। ছবি: সংগৃহীত

২০১৪ সালে ব্যবসায়ী আসিফ সালাহউদ্দিন মালিককে বিয়ে করেন অভিনেত্রী আফসান আরা বিন্দু। বিয়ের পর শোবিজ থেকে পুরোপুরি নিজেকে গুটিয়ে নেন তিনি। অভিনয় ছেড়ে হয়ে ওঠেন সংসারী। বিয়ের চার বছর পর গুঞ্জন রটে, সংসার ভেঙেছে বিন্দুর। তবে বিচ্ছেদ নিয়ে তখন কোনো কথা বলেননি বিন্দু কিংবা তাঁর স্বামী। অবশেষে নিজের বিচ্ছেদের বিষয়টি নিশ্চিত করলেন অভিনেত্রী। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বিন্দু জানান, ২০২২ সালে বিচ্ছেদ হয়েছে তাঁর।

২০২২ সালে বিচ্ছেদ হলেও ২০১৭ সাল থেকেই স্বামীর সঙ্গে সেপারেশনে ছিলেন বিন্দু। পাঁচ বছর পর তাঁরা চূড়ান্তভাবে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন। বিন্দু বলেন, ‘অনেকেই মনে করেন, আমি এখনো বিবাহিত। কিন্তু না, আমার বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। আমার সংসারের জার্নিটা অনেক ছোট ছিল।’

বিচ্ছেদের কারণ জানিয়ে বিন্দু বলেন, ‘আলাদা হওয়ার জন্য অনেক সময় বড় কারণ থাকে, বড় ঘটনা ঘটে। অনেক সময় আবার তেমন কোনো কারণও দরকার হয় না। আমার এই জার্নিতে আরও একজন মানুষ জড়িত। তারও ব্যক্তিগত জীবন আছে। বিচ্ছেদ নিয়ে কোনো ব্যাখ্যা দিয়ে তাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে চাই না।’

২০০৬ সালে লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতা দিয়ে শোবিজে যাত্রা শুরু হয় বিন্দুর। অল্প দিনেই হয়ে ওঠেন মিডিয়ার নিয়মিত মুখ। অভিনয় থেকে বিরতি নেওয়ার আগে ২০১৪ সালের শুধু কোরবানির ঈদেই প্রচারিত হয় তাঁর অভিনীত ৫২টি নাটক। ছোট পর্দার পাশাপাশি বিন্দু অভিনয় করেছেন সিনেমাতেও।

ক্যারিয়ারের শুরুতে আরিফিন শুভর সঙ্গে জুটি বেঁধে অনেক নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। পর্দায় তাঁদের জুটি অনেক জনপ্রিয় ছিল। অনস্ক্রিন কেমেস্ট্রির প্রভাব পড়েছিল দুজনের বাস্তব জীবনেও। একসময় শুভর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান বিন্দু। সেই প্রেমের কথা স্বীকারও করেছেন অভিনেত্রী। কেন তাঁদের সম্পর্ক ভেঙে গিয়েছিল? বিন্দুর সংক্ষিপ্ত জবাব, ‘এর উত্তর আমার কাছে নেই। দুটি মানুষের জার্নি যে একসঙ্গে একই গন্তব্যে শেষ হবে, এমন তো কোনো কথা নেই।’

প্রায় এক দশকের বিরতি কাটিয়ে ২০২৩ সালে ‘উনিশ ২০’ ওয়েব ফিল্ম দিয়ে অভিনয়ে ফেরেন বিন্দু। মিজানুর রহমান আরিয়ানের পরিচালনায় এতে বিন্দুর বিপরীতে ছিলেন সেই আরিফিন শুভই। তবে এরপর আর কোনো কাজে দেখা যায়নি বিন্দুকে। তবে তিনি নিয়মিত অভিনয় করতে চান। বিন্দু বলেন, ‘শিল্পী হিসেবে কাজ করতে প্রস্তুত। এখন আমাকে নিয়ে কাজ করার চিন্তা, আমার পেছনে ইনভেস্ট করার বিষয়গুলো ভাবতে হবে। এমন ধরনের কাজ করতে চাই, যেগুলো এখনো করিনি। আমি চাই, নির্মাতারা আমাকে নিয়ে এমনভাবে ভাবুক, যেমনটা আগে ভাবা হয়নি।’

অভিনয় ছেড়ে দিয়ে বছর পাঁচেক আগে ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়েছেন বিন্দু। গুলশানে রয়েছে তাঁর একটি বুটিক হাউস। ‘আফসান বিন্দু ডিজাইনার স্টুডিও’ নামের এ ব্র্যান্ডের পোশাক বিন্দু নিজেই ডিজাইন করেন। ২০২০ সালে যখন প্রতিষ্ঠানটি শুরু করেন বিন্দু, তখন তাঁর কর্মীর সংখ্যা ছিল মাত্র একজন। তবে এখন তাঁর সঙ্গে ১৫ জন কাজ করেন বলে জানিয়েছেন অভিনেত্রী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘ইত্যাদি’র নতুন পর্ব এবার চুয়াডাঙ্গায়

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র দৃশ্য
ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র দৃশ্য

নব্বইয়ের দশক থেকে স্টুডিওর চারদেয়ালের বাইরে বেরিয়ে শিকড়ের সন্ধানে দেশের নানা প্রান্তে শুটিং করা হচ্ছে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদির। তারই ধারাবাহিকতায় ইত্যাদির নতুন পর্ব ধারণ করা হয়েছে ইতিহাস ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ প্রাচীন জনপদ চুয়াডাঙ্গায়।

এবারের ইত্যাদির মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছিল ব্রিটিশ আমলে তৈরি শতাধিক বছরের প্রাচীন হাজারদুয়ারি নামে খ্যাত ঐতিহ্যবাহী স্কুল নাটুদা মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। এবারের পর্বে গান রয়েছে দুটি। একটি গান গেয়েছেন লোকসংগীতশিল্পী বিউটি ও পান্থ কানাই। গানটির কথা লিখেছেন মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান, সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদী।

এ ছাড়া অনুষ্ঠানের শুরুতে চুয়াডাঙ্গার কৃষ্টিকথা ও ইতিহাসগাথা নিয়ে রয়েছে শাহ আলম সনির কথায় একটি পরিচিতিমূলক গানের সঙ্গে নৃত্য। গানটির সুর করেছেন হানিফ সংকেত, সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদী। পরিবেশন করেছেন স্থানীয় নৃত্যশিল্পীরা। এ ছাড়া ইত্যাদির নতুন পর্বে থাকছে চুয়াডাঙ্গা নিয়ে কয়েকটি প্রতিবেদন। রয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলার ইতিহাস-ঐতিহ্যসহ এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান-স্থাপনার ওপর একটি তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন।

ইত্যাদির নিয়মিত আয়োজন চিঠিপত্র পর্বে উঠে এসেছে চুয়াডাঙ্গার একজন ব্যতিক্রমী ছড়াকারের গল্প। আরও রয়েছে সামাজিক অসংগতি ও সমসাময়িক প্রসঙ্গনির্ভর নাটিকা। দানের নামে ফটোসেশন, সংসারের ভারে স্বপ্নভঙ্গ, মিষ্টি নিয়ে অনাসৃষ্টি, ইংরেজির দাপটে অসহায় বাংলা ভাষা, বোঝা না বোঝার বোঝা, স্টাইলিশ আইকনের বিপত্তি, লোম বাছতে কম্বল উজাড়সহ কয়েকটি নাট্যাংশে অভিনয় করেছেন সোলায়মান খোকা, সুভাশিষ ভৌমিক, আবদুল্লাহ রানা, আমিন আজাদ, কাজী আসাদ, মুকিত জাকারিয়া, আনোয়ার শাহী, শাহেদ আলী, জামিল হোসেন, আনন্দ খালেদ, তারিক স্বপন, আবু হেনা রনি প্রমুখ।

ইত্যাদির এই পর্ব দেখা যাবে ২৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ টেলিভিশনে রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর। ইত্যাদি রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। নির্মাণ করেছে ফাগুন অডিও ভিশন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘মহাশূন্যে সাইকেল’ নাটকের চার দিনে সাত প্রদর্শনী

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘মহাশূন্যে সাইকেল’ নাটকের দৃশ্য
‘মহাশূন্যে সাইকেল’ নাটকের দৃশ্য

গত বছর ডিসেম্বরে মঞ্চে এসেছিল অনুস্বর নাট্যদলের নাটক ‘মহাশূন্যে সাইকেল’। বাংলাদেশ মহিলা সমিতিতে পাঁচ দিনে নাটকটির আটটি প্রদর্শনী হয়েছিল। বছর ঘুরে আবারও মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে মহাশূন্যে সাইকেল নাটকের প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে অনুস্বর। ২৪ থেকে ২৭ ডিসেম্বর টানা চার দিন দেখা যাবে নাটকের সাতটি প্রদর্শনী।

কথাসাহিত্যিক শাহাদুজ্জামানের লেখা একই শিরোনামের গল্প অবলম্বনে এর নাট্যরূপ দিয়েছেন লেখক নিজে। নির্দেশনায় সাইফ সুমন। ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দেখা যাবে মহাশূন্যে সাইকেল। ২৫ থেকে ২৭ ডিসেম্বর প্রতিদিন বিকেল ৫টা ও সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মঞ্চস্থ হবে আরও ছয়টি প্রদর্শনী।

নাট্যকার শাহাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা কিছু কথা অনেকের সঙ্গে বলি, কিছু কথা নির্দিষ্ট মানুষের সঙ্গে বলি আর কিছু কথা শুধু নিজের সঙ্গে বলি। যেকোনো ক্রান্তির সময় নিজের সঙ্গে এই বোঝাপড়ার মাত্রা এবং ব্যাপ্তি সম্ভবত বেড়ে যায়। মহাশূন্যে সাইকেলের মূল ভাবনাটা এ রকম। গত বছর এই গল্পের নাট্যরূপ দিই। একজন ব্যক্তি নিজেকে দুই ভাগ করে তার এই দুই সত্তার সঙ্গে মঞ্চে কথোপকথন করছে। দর্শক হিসেবে একজন ব্যক্তির এই একান্ত বিভক্ত সত্তার ভেতরে এই কথোপকথন দেখার ভেতরে একটা গোপন কৌতূহল হয়তো আছে। কিংবা নিজের সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়ার আনন্দ আছে।’

নির্দেশক সাইফ সুমন বলেন, ‘ভোগবাদিতা আর ব্যক্তিস্বার্থের কারণে মানুষ এখন প্রতিনিয়তই পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। পরিবার, বন্ধু, সমাজ থেকে ক্রমেই বিচ্ছিন্ন হচ্ছি আমরা। কখনো কখনো মানুষের মধ্যে বাস্তবের চেয়ে কল্পনা বা অলৌকিক জগৎ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। পরিবারের সঙ্গে থেকেও একা অনুভব করে। সেই কথাই বলার চেষ্টা হয়েছে নাটকে।’

মহাশূন্যে সাইকেল নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোহাম্মদ বারী, এস আর সম্পদ, প্রশান্ত হালদার, নুরুজ্জামান সরকার, রীমা প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নতুন লুকে চমকে দিলেন কিয়ারা আদভানি

বিনোদন ডেস্ক
কিয়ারা আদভানি। ছবি: সংগৃহীত
কিয়ারা আদভানি। ছবি: সংগৃহীত

‘কেজিএফ’ সিনেমার দুই পর্বের ব্যাপক সাফল্যের পর কন্নড় সুপারস্টার ইয়াশ যুক্ত হয়েছেন মালয়ালম নির্মাতা গিতু মোহনদাসের সিনেমায়। ‘টক্সিক: আ ফেয়ারিটেল ফর গ্রোনআপস’ নামের কন্নড় ভাষার এ সিনেমায় প্রথমবারের মতো ইয়াশের নায়িকা হয়েছেন কিয়ারা আদভানি। টক্সিকে কিয়ারার চরিত্রের নাম নাদিয়া। গতকাল প্রকাশ করা হয়েছে এ সিনেমায় কিয়ারার চরিত্রের লুক।

শোবিজে কিয়ারার এক যুগ হতে চলেছে। ২০১৪ সালে ‘ফুগলি’ দিয়ে যাত্রা শুরুর পর এ পর্যন্ত ২০টির মতো সিনেমায় অভিনয় করেছেন। প্রতিটিতেই দেখা দিয়েছেন বৈচিত্র্যময় চরিত্রে। তবে টক্সিকে কিয়ারার চরিত্রটি যে একেবারেই আলাদা হতে চলেছে, সে আভাস পাওয়া গেল সদ্য মুক্তি পাওয়া ফার্স্ট লুক পোস্টারে। এতে তাঁকে দেখা যাবে একজন সার্কাসশিল্পী হিসেবে।

ফার্স্ট লুক পোস্টারে আলো ঝলমলে সার্কাসের সেটে অফ-শোল্ডার ভেলভেট গাউন পরে দাঁড়িয়ে আছে কিয়ারা অভিনীত নাদিয়া চরিত্রটি। চোখে-মুখে বিষণ্নতা, ক্লান্তির ছাপ। সার্কাসের মঞ্চে জাঁকজমক আবহে নৃত্যরত যে শিল্পীকে দেখা যায় দর্শকের সামনে, তার মনের ভেতরে অনেক সময় চলে দুঃখের দোলাচল। ভেতরে জমাট কষ্ট নিয়েই হাসিমুখে দর্শকের সামনে পারফর্ম করে তারা। টক্সিকের পোস্টারে তেমনটাই ধরা পড়েছে। এমনই এক জটিল চরিত্র নিয়ে দর্শকের সামনে আসবেন কিয়ারা।

ভিএন প্রোডাকশন এবং মনস্টার মাইন্ড ক্রিয়েশনসের ব্যানারে নির্মিত বিগ-বাজেট সিনেমা টক্সিক মুক্তি পাবে ২০২৬ সালের ১৯ মার্চ। দক্ষিণি মেগাস্টার যশ ও কিয়ারার এই নতুন রসায়ন বড় পর্দায় দেখার জন্য এখন থেকেই অপেক্ষায় অনুরাগীরা। এতে আরও অভিনয় করেছেন নয়নতারা, তারা সুতারিয়া, হুমা কুরেশি, অক্ষয় ওবেরয় প্রমুখ।

ইংরেজি ও কন্নড়—দুই ভাষাতেই টক্সিক সিনেমার শুটিং করা হয়েছে। পাশাপাশি হিন্দি, তেলুগু, তামিল, মালয়ালমসহ বিভিন্ন ভাষায় ডাব করা হবে। এতে কিয়ারার পারফরম্যান্স নিয়ে নির্মাতা গিতু মোহনদাস বলেন, ‘কিছু পারফরম্যান্স শুধু পর্দায় নয়, প্রভাব ফেলে শিল্পীর জীবনেও। টক্সিক সিনেমায় কিয়ারা যা করেছে, তার কোনো তুলনা হয় না। সিনেমাটি নিয়ে আমাদের প্রথম আলাপের মুহূর্ত থেকেই তিনি চরিত্রটির প্রতি নিজেকে সম্পূর্ণ সমর্পণ করেছেন। তিনি শুধু নাদিয়া চরিত্রে অভিনয় করেননি, নিজেও চরিত্রটির মতো করেই যাপন করেছেন।’

প্রসঙ্গত, বলিউডের তারকা দম্পতি কিয়ারা আদভানি ও সিদ্ধার্থ মালহোত্রার সংসারে নতুন সদস্য এসেছে গত ১৫ জুলাই। এখন সন্তানকে নিয়েই পুরো সময়টা কাটছে অভিনেত্রীর। আর একটু একটু করে নিচ্ছেন আবার শোবিজে ফেরার প্রস্তুতি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত