একটি গ্রাম। সেখানে থাকে এক জুটি। লালু আর মালা। তাঁদের সুখের সংসার। লালু সারা বছর গতর খেটে উপার্জন করে। খেয়া ঘাটের মাঝি সে। সীমিত উপার্জন, কিন্তু তাতে সুখ অনেক। বছরে একবার, যখন গাঁয়ে আসে নৌকা বাইচের মৌসুম; লালুর খাওয়া-ঘুম থাকে না। ওইদিন, যেদিন নৌকা বাইচ দেখার লাগি বিশ গাঁয়ের লোক একখানে হয়, ওইদিন দেখা যায় লালুর খেল।
লালুর বউ মালা। তাঁরা যেনো এক আত্মা। সত্যিকারের জোড়া তাঁরা, য্যান নাইমা আইছে আসমানথে। কিন্তু তাঁদের এই সুখের সংসারে একদিন অশান্তির তাপ এসে লাগে। ছারখার হয়ে যায় সব...
গল্পটা আরেকটু আগানো গেলে ভালো হতো। কিন্তু শুধু গল্পের প্লট, শুটিংয়ের ছবি, চরিত্রের নাম, শুটিং লোকেশন- এসব দেখে গল্পটা নিয়ে এরচেয়ে বেশি আন্দাজ করা যাচ্ছে না। ‘গলুই’ ছবি নিয়ে এ পর্যন্ত যত তথ্য পাওয়া গেছে, তা দেখে-শুনে জোর সন্দেহ- ছবিটার আবহ এ রকমই হতে যাচ্ছে।
‘গলুই’য়ে লালু হয়েছেন শাকিব খান। আর লালুর সেই মালা হয়েছেন পূজা চেরি। গত কয়েকদিন ধরে শুটিং চলছে জামালপুরের মাদারগঞ্জে। ছবিতে ‘মাঝি’ শাকিবের লুক কেমন হবে, এটা নিয়ে সবার মধ্যে এক ধরনের আগ্রহ ছিল। দু-দিন আগেই শাকিব খান তাঁর ফেসবুক পেজ থেকে নতুন লুকের ছবিটা ছড়িয়ে দিয়ে ভক্তদের আগ্রহ মিটিয়েছেন। সোমবার পূজার পেজ থেকেও একটি ছবি ছড়িয়ে গেল।
একফ্রেমে শাকিব খান ও পূজা চেরি। ব্যাপারটা আগেও অনেকবার ঘটেছে। ‘সন্তান আমার অহংকার’, ‘মাই নেম ইজ খান’ ছবিগুলোতে একসঙ্গেই অভিনয় করেছেন তাঁরা। কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপট একেবারেই আলাদা। একেবারেই স্পেশাল।
এতদিন পূজা ছিলেন শাকিবের ছবিতে শিশুশিল্পী। আর এবার নায়িকা। এই প্রথম। পূজা চেরির খুশি তো ধরে না! আনন্দে ঘুম আসে না তাঁর!
সে আনন্দের ঝিলিক শুটিংয়ে তোলা ছবিতেও স্পষ্ট পূজার চোখেমুখে। সবুজ তাঁতের শাড়ি পরে, চিকন চুড়ি, কপালে টিপ- যেনো নিপুণ ছিমছাম গৃহবধু পূজা। মাঠের মাঝখানে বরের সঙ্গে গল্পে মেতেছেন।
চারপাশে সবুজ ধানক্ষেত। বাঁশ-খুটি দিয়ে বানানো টেম্পোরি একটা ঘর ক্ষেতের মাঝে। বেড়ায় একটা তবলা ঝুলছে। এমন ব্যাকগ্রাউন্ডে শাকিব-পূজা শট দিচ্ছেন। এই ছবিটি ফেসবুকে আপলোড করে, পূজা চেরি ক্যাপশনে লিখলেন তিনটি মাত্র শব্দ- #গলুই, #লালু, #মালা।
শাকিব-পূজার নতুন জুটি হিসেবে ‘গলুই’ তো বিশেষ। কিন্তু আরেকটা কারণেও ছবিটি রিমার্কেবল। এ ছবির পরিচালক এস এ হক অলিক একটা চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন শাকিব খানকে নিয়ে। অথবা এভাবেও বলা যায়, শাকিব খান আগ্রহ করেই চ্যালেঞ্জটা নিয়েছেন। চ্যালেঞ্জটা হলো- চরিত্রের ধরনে বদল।
এতদিন শাকিব যে ধরনের চরিত্রে ক্রমাগত অভিনয় করে যাচ্ছিলেন সেগুলো ছিল শহরকেন্দ্রিক। ভার্সিটির ছাত্র, বিশাল ব্যবসায়ী, প্রভাবশালী রাজনৈতিক, বিরাট টেরর- এ ধরনের যত চরিত্র তিনি করছিলেন, সবগুলো প্রকৃত অর্থেই ‘লার্জার দ্যান লাইফ’।
‘গলুই’য়ে শাকিব খান মাটির কাছাকাছি নামলেন। নিজেকে বদলে ফেললেন। ঝকঝকে কস্টিউম ছেড়ে, লুঙ্গি-গামছা পরে দাঁড়িয়ে গেলেন ক্যামেরার সামনে।
এই ছবিতে শাকিব কতটা ভালো অভিনয় করবেন, কতটা হয়ে উঠতে পারবেন ‘মাঝির পোলা মাঝি’; সেটা এখনকার হিসেব নয়। ওটা রিলিজ অব্দি তোলা থাক। এখন বরং শাকিব-পূজা এই দুটির জুটিকে শুভকামনা জানানো যাক।