Ajker Patrika

তিন ডাকসাইটের চোখে সত্যজিৎ

জাহীদ রেজা নূর
আপডেট : ১২ জুলাই ২০২১, ১৪: ৪৫
তিন ডাকসাইটের চোখে সত্যজিৎ

যে তিনজন মানুষ সত্যজিৎ রায়ের বিষয়ে এখানে কথা বলেছেন, একবারের জন্য হলেও সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে তাঁদের সাক্ষাৎ হয়েছে। নানা উপলক্ষে তাঁদের দেখা হয়েছে। তাঁরা প্রত্যেকেই রায়ের চলচ্চিত্র–জীবনের এমন কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন, যা শুনতে ভালো লাগবে। এটা কোনো নতুন দিগন্তের উন্মোচন হয়তো নয়, কিন্তু একসঙ্গে এই তিনজনকে পাওয়া একটা ব্যাপার বটে।

১৯৭৫ সালে সত্যজিৎ রায়কে নিয়ে একটি সংকলন প্রকাশ করা হয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়নে। সেখান থেকেই এই লেখাগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে। সে সংকলনে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, মাধবী মুখার্জী, শর্মিলা ঠাকুরসহ ভারতের আরও কয়েকজন শিল্পীর চোখে সত্যজিৎ রায় কেমন ছিলেন, তার বর্ণনা আছে। আমরা তো সেগুলো বাংলাতেই পড়ে নিতে পারব। এখানে ভিনদেশী তিন চলচ্চিত্র বোদ্ধার কথাই শুনি বরং।

জর্জ সাদ্যুল ছিলেন তুখোড় ফরাসী সাংবাদিক। চলচ্চিত্র নিয়ে লিখতেন তিনি। ছিলেন স্যুরিয়ালিস্ট, ১৯৩২ সালে পরিণত হয়েছিলেন কমিউনিস্টে। বিশ্ব চলচ্চিত্র নিয়ে তাঁর লেখা বই l'Histoire générale du cinéma, সমীহ জাগানিয়া। ১৯০৪ সালে জন্ম নেওয়া এই সাংবাদিক মারা যান ১৯৬৭ সালে। সত্যজিৎ রায় সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।

ফরাসি সাংবাদিক জর্জ সাদ্যুল। ছবি: সংগৃহীতসাদ্যুল লিখছেন, ‘রায় সম্পর্কে জানা `কিংবদন্তী’গুলো সম্পর্কে বলি: নিজেরাই আমরা কারও গায়ে কোনো একটা তকমা এঁকে দিই, তারপর তা প্রচার করি। প্যারিসে আমি কয়েকবার সত্যজিৎ রায়কে দেখেছি। ওর কয়েকটি সিনেমা দেখেছি এবং তা থেকে ব্যক্তি সত্যজিৎ ও তাঁর নান্দনিক পথযাত্রা সম্পর্কে নিজের একটা ধারণা জন্মেছে। কলকাতার এই শিল্পী শেষ পর্যন্ত শহীদ হয়েছেন সেই দিনটিতে, যেদিন তিনি ঝাঁ ও ক্লদ রেনোয়ার সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন। এরা দুজন বাংলায় গিয়েছিলেন ‘দ্য রিভার’–এর শুটিং করতে। তাঁদের এই সাক্ষাতের পরই রায় চিৎকার করে উঠেছিলেন—‘আমিও সিনেমা পরিচালক!’ এবং তারপর তিনি ‘পথের পাঁচালী’র জন্য প্রস্তুত হতে শুরু করেন। কান চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানোর আগ পর্যন্ত এই ছবি সম্পর্কে ভারতে কোনো আলোড়নই ওঠেনি। কানেও ছবিটি নিয়ে আলোড়ন উঠত না, যদি না আঁদ্রে বাজেন ছবিটির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ না করতেন। ‘বছরের সেরা মানবিক দলিল’ পুরস্কারটা পেয়েছিল ‘পথের পাঁচালী’। ইউরোপের স্বীকৃতি না পেলে সত্যজিৎ রায়ের পক্ষে তাঁর চলচ্চিত্রে ক্যারিয়ার গড়ে তোলা কঠিন হয়ে পড়ত। ‘অপরাজিত’ ছবির জন্য ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে `স্বর্ণ সিংহ’ লাভ করলেও তাতে ভারতে তাঁর জনপ্রিয়তা আসেনি। বছরের পর বছর তিনি ছবি তৈরি করেছেন, কিন্তু সেটা দেশের বাজারে জায়গা করে নিতে পারেনি। ইংল্যান্ড আর আমেরিকার বাজারে তাতে সাফল্য এসেছে। তাই অনেকেই বলাবলি করত, পূর্বদেশের এই চলচ্চিত্র পরিচালক সম্পূর্ণই পশ্চিমা–নির্ভর। কিন্তু এই কথা একেবারেই সত্য নয়। নয়া দিল্লি ও কলকাতায় দীর্ঘ সময় বসবাস করে এবং কয়েক ঘণ্টা সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে কথা বলার পর সত্যজিৎ রায় সম্পর্কে গড়ে ওঠা ওইসব কিংবদন্তী আর টিকে থাকেনি। ভারতে সত্যজিৎ রায়কে কেউ চেনে না—এ কথা একেবারেই সত্য নয়। নয়া দিল্লি কিংবা কলকাতার রাস্তায় নেমে এলেই পথচারীর দল কীভাবে তাঁকে ঘিরে ধরত এবং অটোগ্রাফ নিত, সেটা তো আমি নিজ চোখে দেখেছি। রাষ্ট্রপতি এবং মন্ত্রীরা তাঁকে সমীহ করে কথা বলতেন।

জাপানি চলচ্চিত্র পরিচালক আকিরা কুরোসাওয়াকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। শুধু এটুকু বললেই চলে যে, তিনি চলচ্চিত্র ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী পরিচালক। জাপানের টোকিওয় তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৯১০ সালে। সে শহরেই মারা গেছেন ১৯৯৮ সালে।

সত্যজিৎ রায়কে নিয়ে রচিত একটি রুশ সংকলনের জন্য মস্কোতে ১৯৭৫ সালে কুরোসাওয়ার মন্তব্য জানতে চাওয়া হয়েছিল। তিনি বলেছেন, প্রথমবারের মতো সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালী’ দেখার পর আমার ভেতরটা যেভাবে আন্দোলিত হয়ে উঠেছিল, সেটা এখনো ভুলতে পারি না। এরপরও বারবার আমি এই ছবি দেখেছি, আর প্রতিবারই আগেরবারের চেয়ে অনেক বেশি আকৃষ্ট করেছে সেটা। যেন পূর্ণযৌবনা নদী বয়ে চলেছে ধীরে চলচ্চিত্রের সকল শৌকর্য নিয়ে। মানুষের জন্ম হয়, সে বেঁচে থাকে ও একসময় মরে যায়। সত্যজিৎ রায় মানবজীবনের এই স্বাভাবিক চক্রটি নিয়েই ছবি তৈরি করেন এবং তা করেন এমন অবলীলায় যে, তাতে অমসৃণ কিছু থাকে না। অথচ তা প্রবলভাবে দর্শক–শ্রোতার আবেগকে গ্রাস করে নেয়। সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্রের ভাষা খুবই সুক্ষ্ণ, তাতেই তার পূর্ণতা। রায়ের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল টোকিওতে। মনে আছে, আমার মনে কী এক অসামান্য ছাপ ফেলেছিল শিল্পীর অবয়ব—উচ্চতায় অনেকখানি, হাত–পায়ের ভঙ্গি আকর্ষণীয়, অন্তর্ভেদী দৃষ্টি। আর তা দেখেই আমার মাথায় ভাবনাটা এল—এ রকম মানুষের পক্ষেই এ ধরনের বিশাল কর্মযজ্ঞ সম্ভব। তখনই আমি তাঁর প্রতি আরও গভীরভাবে আকৃষ্ট হলাম। দুর্ভাগ্যবশত তাঁর ছবিগুলোর মধ্যে আমি শুধু তিনটি ছবি দেখেছি. ‘পথের পাচালী’, ‘অপরাজিত’, আর ‘অপুর সংসার’। পৃথিবীর সকল পরিচালককে আমি বলব, এখনই সত্যজিৎ রায়ের ছবি দেখে ফেলুন। বিশেষ করে ‘পথের পাঁচালী, আর ‘অপরাজিত’। সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্র না দেখার অর্থ পৃথিবীতে বসবাস করে সূর্য ও চাঁদকে না দেখা।

গ্রিগরি চুখরাইয়ের নাম অনেকেরই মনে পড়ে যাবে ‘ব্যালাড অব এ সোলজার’ ছবিটির কথা মনে করিয়ে দিলে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে এ রকম কাব্যিক ছবি খুব কমই হয়েছে। সে ছবি গ্রিগরি চুখরাইয়ের তৈরি। চুখরাইও সত্যজিৎ রায়কে চলচ্চিত্র জগতের এক মহাশক্তি বলেই মনে করেন।

ইউক্রেনের পরিচালক গিগরি চুখরাই। ছবি: সংগৃহীতচুখরাইয়ের জন্ম ১৯২১ সালে ইউক্রেনের মেলিতাপোলে। মস্কোতে মারা যান ২০০১ সালে। চুখরাই লিখছেন, ‘আধুনিক চলচ্চিত্র আন্তর্জাতিক। রাষ্ট্রের সীমানা আর ভাষার অবোধ্যতা দূর হয়ে যায় প্রায় বিনাশ্রমে। বলা যায়, সাহিত্যের চেয়েও দ্রুত অন্য ভাষাভাষীকে আকৃষ্ট করে চলচ্চিত্রের ভাষা। কোনো দেশের লাখ লাখ মানুষ সিনেমা দেখে, অন্য দেশের মানুষ তা উপভোগ করে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, সব দেশের সবার কথা মাথায় রেখে কিন্তু পরিচালক ছবি নির্মাণ করেন না। যদি কেউ নিজের দেশ, নিজ সংস্কৃতির ওপর নির্ভর না করে আন্তর্জাতিক ছবি নির্মাণ করার কথা ভাবেন, তাহলে তার সে ভাবনা মুখ থুবড়ে পড়বে। সে রকম চেষ্টা ব্যর্থ হয়। জাতীয় জীবনের প্রতিফলন আছে যে ছবিতে, সে ছবিই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র হিসেবে টিকে যায়। সত্যজিৎ রায়ের সিনেমাও সফল হয়েছে তার জাতীয় সংস্কৃতির চরিত্রের জন্যই। ভারতীয় বাণিজ্যিক ছবিই সর্বপ্রথম পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যায়। এরই ফাঁকে একসময় রাশিয়ায় আসে সাতিয়াজিৎ রায়ের নাম, যদিও ভারতীয় উচ্চারণে তা ‘শত্যোজিৎ রায়’।

চুখরাই বলছেন, সত্যজিৎ রায়ের ছবি সম্পর্কে বলা যায়, ভারতকে ভেতরের চোখ দিয়ে দেখা। ওপরের চাকচিক্য নয়, ভেতরটাই উঠে আসে সত্যজিৎ রায়ের ছবিতে। সত্যজিৎ রায়ের ছবি মানেই একজন শিল্পীর সৃষ্টি, একজন সৃষ্টিশীল মানুষের কারবার, যে মানুষটি দাঁড়িয়ে আছেন তাঁর দর্শন ও নান্দনিক ভাবনার ভিত্তির ওপর। অপু ট্রিলজি, জলসাঘর, চারুলতা, অরণ্যের দিনরাত্রি, প্রতিদ্বন্দ্বী ইত্যাদি সত্যজিৎ রায়কে সম্মান এনে দিয়েছে। আমাকে দারুণভাবে আকৃষ্ট করেছে পথের পাঁচালী। একটি দরিদ্র পরিবারকে নিয়েই এর গল্প। গল্পের শুরুতে মনে করতে চাই বা না চাই, মনে হবে এটা ইতালির নিওরিয়ালিস্ট ছবির মতো। নব্যবাস্তবতাবাদী ছবির সঙ্গেই এর যত মিল। ক্রিয়েটিভ টেকনিকগুলোও একরকম মনে হবে। যদিও স্বাধীনতা–পূর্ব ভারতের দারিদ্র্য আর বিশ্বযুদ্ধ–পরবর্তী ইতালির দারিদ্র্যের তুলনা চলে না, তবুও ছবি হিসেবে তা একই রকম লাগবে। কিন্তু ছবিটি যখন এগিয়ে যেতে থাকবে, তখন বুঝতে পারা যাবে যে, এটা নিওরিয়ালাজিম মুদ্রার এপিঠ–ওপিঠ নয়। এটা সত্যজিৎ রায়ের তৈরি বাস্তবতা এবং এর চলচ্চিত্রের ভাষাও সত্যজিৎ রায়েরই। ছবিতে ইন্দিরা ঠাকরুণের যে চেহারা হাজির করা হয়েছে, তা নান্দনিকতা বহির্ভূত। বার্ধক্য তাঁকে এতটাই কাহিল করে তুলেছে যে, তাঁর দিকে তাকাতেই অস্বস্তি হয়। কিন্তু ছবিটি দেখা শুরু করার একটু পর থেকেই আমি নিজের অজান্তেই এই বৃদ্ধাকে ভালোবেসে ফেলেছি। আমার জন্য এই বৃদ্ধা হয়ে পড়লেন অতি গুরুত্বপূর্ণ এবং মূল্যবান। কীভাবে এই জাদু ঘটে গেল, তার ব্যাখ্যা খুব সহজ নয়। মানে, ব্যাখ্যা করা সম্ভব সবকিছুই এবং তা দরকারিও। যেকোনো ব্যাখ্যার জন্যই দরকার ঠিক শব্দটি খুঁজে পাওয়া। কিন্তু এখানে শব্দ নয়, জাদুটা আসলে শিল্পের। শিল্পই ঘটিয়ে দিল এই জাদুটি। একজন বড় শিল্পীই এই জাদুকরি কাণ্ডটি ঘটিয়ে ফেলতে পারেন। এই বিধ্বস্ত কুৎসিৎ পরিবর্তিত হলো বিধ্বস্ত সুন্দর মন্দিরে। আর এটা ঘটতে পারল এ জন্য যে, পরিচালক তাঁর নন্দনতাত্ত্বিক আবহে মূল্যবান করে তুলেছেন মানুষের মনকে, মানুষকে। এ ধরনের ছবি বানাতে ভেতরের সাহস লাগে, আর নিজ জাতির প্রতি লাগে অমলিন ভালোবাসা। কেউ কেউ আছেন, যারা মনে করেন, নিজ জাতির প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের ঠিক উপায় হচ্ছে, তার আলোকিত সেরা জিনিসগুলোর উপস্থাপন। সত্যজিৎ রায় সেটা মনে করেন না। তিনি মনে করেন, দেখাতে হবে সেটাই, যা সত্য। আমিও তাঁর সঙ্গে একমত। সত্যজিৎ রায়ের ছবির কাব্যময়তাও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। কত সুক্ষ্ণভাবেই না তাঁর ছবিতে প্রকৃতি, বৃষ্টি, ফুল, আকাশ, পানি নিজের শব্দে সত্যের প্রকাশ ঘটায়। প্রকৃতির এ রকম নান্দনিক উপস্থাপনা কেবল তাঁর পক্ষেই করা সম্ভব, যিনি নিজে গভীরভাবে তা অনুভব করেন। সত্যজিৎ রায়ের ছবিতে প্রকৃতিও জীবন্ত, পরিচালকের সঙ্গেই সে শ্বাস–প্রশ্বাস নেয়। প্রকৃতি, চরিত্র, দৃশ্য—সবমিলে একটা সংগীতের সৃষ্টি হয়, সবকিছুর যেন একটাই ত্বক, একই অণু–পরমাণু, সব যেন একসঙ্গে মিলেমিশে গেছে।

সত্যজিতের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতের স্মৃতি হাতড়ে চুখরাই বলছেন, সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে আমার প্রথম দেখা হয় ১৯৬৩ সালে। সে সময় আমরা একসঙ্গে মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের জুরিবোর্ডে ছিলাম। তিনি শুধু তাঁর পেশাদারি মনোভাব এবং বিশাল তাত্ত্বিক জ্ঞান দিয়ে আমাকে আকৃষ্ট করেননি। তিনি আকৃষ্ট করেছেন তাঁর উচ্চ মূল্যবোধ ও সরলতা দিয়ে। জুরি বোর্ডের প্রধান হিসেবে যে জটিল সমস্যাগুলোয় পড়তাম, সত্যজিৎ রায়ের কাছ থেকে সে বিষয়ে ঠিক পরামর্শটি পেতাম। সব ব্যাপারেই তাঁর কিছু না কিছু বলার ছিল। খুব মুশকিল হয়, যখন কেউ তাঁর বিবেচনাবোধ দিয়ে দোদুল্যমান হয়। নিজস্ব নীতিও খুব দরকারি। আরেকটা বিষয়ে বলি। অনেকেই মনে করেন, সত্যজিৎ রায়ের সব ছবিই একইভাবে নির্মিত। রায়ের নান্দনিক ভাষা এক ছবি থেকে আরেক ছবিতে বারবার পরিবর্তিত হয়েছে। কলকাতার পটভূমিতে নির্মিত ছবি ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’র ভাষা, ‘পথের পাচালী’ বা গ্রামকেন্দ্রিক ছবির ভাষা থেকে একেবারে আলাদা। রায় বেড়ে উঠেছেন ভারতের ধ্রুপদী সংস্কৃতির আওতায়। কিন্তু তিনি নিশ্বাস–প্রশ্বাস নিয়েছেন বিশ্ব চলচ্চিত্রের ভুবনে। দেশ ও আন্তর্জাতিকতা—দুইয়ের মিলনই সত্যজিৎ রায়কে করে তুলেছে বিশ্বমানের চলচ্চিত্রকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

হাদি হত্যা: ফয়সালসহ সংশ্লিষ্টদের অ্যাকাউন্টে ১২৭ কোটি টাকার লেনদেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাক্ষাৎকার

দর্শক চায় বাস্তবজীবনেও আমাদের জুটি হোক

তাবাসসুম ছোঁয়া।

শত পর্বের মাইলফলক স্পর্শ করেছে ধারাবাহিক নাটক ‘দেনা পাওনা’। গত বছর নভেম্বরে সিনেমাওয়ালা ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার শুরু হয়েছিল ধারাবাহিকটির। কে এম সোহাগ রানা পরিচালিত এ নাটকে নিপা চরিত্রে অভিনয় করে পরিচিতি পেয়েছেন তাবাসসুম ছোঁয়া। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন শিহাব আহমেদ

শিহাব আহমেদ

ধারাবাহিকটি যে এত লম্বা সময় ধরে চলবে, শুরুতে সেটা আঁচ করতে পেরেছিলেন?

শুরুতে ৮ পর্বের লক্ষ্য নিয়ে এগোনো হচ্ছিল। কিন্তু প্রচারের শুরুতেই আমরা দর্শকের ব্যাপক সাড়া পাই। তখন নির্মাতা সিদ্ধান্ত নিলেন, দর্শক যেহেতু এত ভালোবাসা দিচ্ছে, আমাদের উচিত এটা চালিয়ে যাওয়া।

এক বছরের বেশি সময় ধরে শুটিং করছেন, এই জার্নির অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

অনেক কিছু শিখেছি। দেনা পাওনা আমার জীবনে স্মরণীয় হয়ে থেকে যাবে। আগে কয়েকটা কাজ করলেও আমার অভিনয়ের হাতেখড়িটা এই নাটকের সেটেই হয়েছে। অভিনয়ে যতটা উন্নতি করেছি, তার কৃতিত্ব দেনা পাওনা নাটকের টিমের। সহশিল্পী, নির্মাতা থেকে শুরু করে ইউনিটের সবাই খুব সাপোর্ট করেছে। এ ছাড়া দর্শকের ভালোবাসা তো পেয়েছি। নিপা চরিত্রে পরিচিতি পেয়েছি, এখন মানুষ আমাকে চিনতে পারছে। সব মিলিয়ে পুরো অভিজ্ঞতাটা খুব সুন্দর।

এই চরিত্র আপনার ব্যক্তিজীবনে কোনো প্রভাব ফেলেছে কি না?

বাস্তবজীবনেও আমি অনেকটা নিপার মতো হয়ে গেছি। এখন আমি মানুষকে বোঝার চেষ্টা করি। নরম করে কথা বলি, যেমনটা নিপা করে।

অনেকে বলে, এ নাটকে খায়রুল চরিত্রে অভিনয় করা অ্যালেন শুভ্রর সঙ্গে আপনি সম্পর্কে আছেন। আসলেই কি তাই?

দেনা পাওনা নাটকে আমাদের জুটির ওপর সবাই ক্রাশ খেয়েছে। ফেসবুকে রীতিমতো হুমকি দিয়ে আমাকে মন্তব্য করা হয়, নিপা, তুমি যদি খায়রুলকে বিয়ে না করো, তাহলে তোমাকে দেখে নেব। স্ক্রিনের মতো বাস্তবেও নাকি আমাদের খুব সুন্দর লাগে। দর্শক চায় বাস্তবজীবনেও আমাদের জুটি হোক। বিষয়টা আমি খুব উপভোগ করি।

এ রকম হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে?

অ্যালেন শুভ্র একজন জেন্টেলম্যান, নাইস পারসন। অ্যালেন ভাই সত্যিই খায়রুলের মতোই। তাঁর মধ্যে শিশুসুলভ ব্যাপার আছে। পর্দায় দেখে দর্শক যেমন তাঁর মায়ায় পড়ে, তেমনি অভিনয় করতে গিয়ে আমারও তাঁর প্রতি মায়া কাজ করে। মায়াটা হয়তো দুজনের মধ্যেই কাজ করে। এই কারণেই হয়তো পর্দায় এত ভালো লাগে। আমাদের মধ্যে সুন্দর একটা সম্পর্ক আছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এমন কিছু হয়নি, যেমনটা মানুষ ভাবছে।

কনটেন্ট ক্রিয়েশন থেকে অভিনয়ে আসা। আপনার এই জার্নিটা নিয়ে জানতে চাই...

ক্যামেরার সঙ্গে আমার অনেক আগে থেকে খাতির ছিল। ফটোগ্রাফি, ভিডিওগ্রাফি শিখতে চেয়েছিলাম। কিছুদিন গিটার শিখেছি। এরপর কনটেন্ট ক্রিয়েশন শুরুর পর বিভিন্ন শুটের প্রস্তাব আসে। শখের বশে করছিলাম। প্রথম অভিনয় ওটিটিতে। ইমরাউল রাফাতের ‘ওপেন কিচেন’ সিরিজে। সেখানে একটি ছোট চরিত্র করি। সেটা করতে গিয়েই মনে হয়, এ মাধ্যমেই নিয়মিত কাজ করব। আমি মনে করি, একজন প্রপার অভিনেত্রী হতে গেলে বেসিক লার্নিং দরকার। সে জন্য কন্টিনিউয়াস প্রসেসের মধ্য দিয়ে চর্চা করে যেতে হবে। সেটাই করার চেষ্টা করছি। আমার জার্নিটা মাত্র শুরু, আশা করছি অনেক দূর যাবে।

অভিনয়কে কি পেশা হিসেবে নেওয়া যায়?

পেশা হিসেবেই নিয়েছি। হ্যাঁ, একটু ঝুঁকি তো থাকেই। আমার মনে হয়, শুধু অভিনয়ের ওপর নির্ভর না করে থাকলে ভালো। শুধু অভিনয় করব তা নয়, পাশাপাশি অনেক কিছু আছে। আমি কিন্তু কনটেন্ট ক্রিয়েশন আর অভিনয় দুটোই করছি। এমন কাজ করতে চাই, যেটাতে আমার অনীহা লাগবে না। যে কাজের প্রতি প্রেম থাকবে, সেটাই করতে চাই। আমার প্রেমটা অভিনয়ের সঙ্গে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

হাদি হত্যা: ফয়সালসহ সংশ্লিষ্টদের অ্যাকাউন্টে ১২৭ কোটি টাকার লেনদেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শাকিবভক্তদের রোষানলে প্রযোজক সুমি

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
শাকিব খান ও প্রযোজক শাহরিন আক্তার সুমি। ছবি: সংগৃহীত
শাকিব খান ও প্রযোজক শাহরিন আক্তার সুমি। ছবি: সংগৃহীত

গত রোজার ঈদে শাকিব খানকে নিয়ে রিয়েল এনার্জি প্রোডাকশন হাউস থেকে নির্মিত হয় ‘বরবাদ’। বেশ আলোচিত হয় শাহরিন আক্তার সুমি প্রযোজিত সিনেমাটি। আগামী বছরের ঈদের জন্য আরেকটি সিনেমা প্রযোজনা করছেন সুমি। তাঁর নতুন সিনেমা ‘রাক্ষস’-এর নায়ক সিয়াম আহমেদ। সম্প্রতি সিনেমার সংবাদ সম্মেলনে প্রযোজক সুমি মন্তব্য করেন, শাকিব খান থাকলেই সিনেমা ব্লকবাস্টার হবে এটা ভেবে তিনি বরবাদ বানাননি। এমন মন্তব্যের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় শাকিবভক্তদের রোষানলে পড়েছেন এই প্রযোজক।

বরবাদ সাফল্যের পর সুমি জানিয়েছিলেন, তাঁর পরবর্তী সিনেমায়ও থাকবেন শাকিব খান। শেষ পর্যন্ত তাঁকে ছাড়াই দ্বিতীয় সিনেমা শুরু করলেন তিনি। রাক্ষসের সংবাদ সম্মেলনে সুমির কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, এবার তাঁর সিনেমায় শাকিব খান নেই কেন? জবাবের একপর্যায়ে সুমি বলেন, ‘শাকিব খান থাকলে বরবাদ ব্লকবাস্টার হবে আর না থাকলে হবে না, এটা ভেবে আমি সিনেমা করিনি। তাঁর সব সিনেমাই যে ব্লকবাস্টার ছিল, এমনটা কিন্তু না।’

সুমির এমন কথা ভালোভাবে নেয়নি শাকিব খানের ভক্তরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো তুলাধোনা করছেন সুমিকে। সমালোচনার জবাবে সংবাদমাধ্যমে সুমি জানান, শাকিব খানকে নিচু করে তিনি কোনো কথা বলেননি।

শাহরিন আক্তার সুমি বলেন, ‘আমি বলেছিলাম, বরবাদে শাকিব খানকে এ জন্য নিইনি যে আমার সিনেমা হিট হতে হবে। বরবাদের গল্পে তাঁকে ছাড়া অন্য কেউ হলে সেটা মানাত না। এ কারণেই তাঁকে নেওয়া, সিনেমা হিট করানোর জন্য না। আর রাক্ষসের গল্পে সিয়ামকে মানাবে বলেই তাঁকে নেওয়া হয়েছে। হয়তো আমি বিষয়টি ঠিকমতো বোঝাতে পারিনি। এটা আমার ব্যর্থতা। আমি শাকিব ভাইকে নিচু করে কোনো কথা বলিনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

হাদি হত্যা: ফয়সালসহ সংশ্লিষ্টদের অ্যাকাউন্টে ১২৭ কোটি টাকার লেনদেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্ধারিত সময়ের দুই দিন পর শুরু হচ্ছে নবীন প্রবীণ নাট্যমেলা

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
বাতিঘরের ‘প্যারাবোলা’ নাটকের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
বাতিঘরের ‘প্যারাবোলা’ নাটকের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

১৯ ডিসেম্বর রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হওয়ার কথা ছিল নাট্যতীর্থ আয়োজিত ‘নবীন প্রবীণ নাট্যমেলা’ শীর্ষক আট দিনব্যাপী নাট্যোৎসব। তবে শিল্পকলা একাডেমির অনুষ্ঠান ও প্রদর্শনী অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হওয়ার কারণে শুরু হয়নি নবীন প্রবীণ নাট্যমেলা। অবশেষে আজ থেকে শুরু হচ্ছে এই নাট্যোৎসব।

‘রাষ্ট্রীয় শোক দিবস ও অনিবার্য কারণবশত’ ১৯ ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সব অনুষ্ঠান ও প্রদর্শনী স্থগিতের ঘোষণা দেয় শিল্পকলা একাডেমি। এমন ঘোষণা নিয়ে তৈরি হয় ধোঁয়াশা। অনেকেই মনে করেন, দীর্ঘ সময়ের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে শিল্পকলা একাডেমি। তবে সব শঙ্কা দূর করে গতকাল শিল্পকলা একাডেমির ফেসবুক পেজে জানানো হয়, ২১ ডিসেম্বর থেকে আবার শুরু হবে অনুষ্ঠান ও প্রদর্শনী।

শিল্পকলা একাডেমির ঘোষণা অনুযায়ী, ১৯ ও ২০ ডিসেম্বর বন্ধ ছিল সব আয়োজন। যে কারণে স্থগিত করা হয় নবীন প্রবীণ নাট্যমেলা। তবে বেশি দিন অপেক্ষায় থাকতে হলো না নাট্যপ্রেমীদের। শিল্পকলা একাডেমির অনুষ্ঠান ও প্রদর্শনী চালুর সিদ্ধান্তের পরই নাট্যতীর্থ থেকে জানানো হয়েছে, আজ ২১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে নবীন প্রবীণ নাট্যমেলা। আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাট্যতীর্থ দলের প্রধান ও নাট্যমেলার আহ্বায়ক তপন হাফিজ।

সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় আয়োজিত এই উৎসবে প্রদর্শিত হবে আট দলের আটটি নাটক। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় দেখা যাবে নাটকগুলো। উৎসবে ছয়জন নাট্যব্যক্তিত্বকে দেওয়া হবে নাট্যবন্ধু সম্মাননা। এ ছাড়া অনুষ্ঠিত হবে সেমিনার।

উৎসবের প্রথম দিন প্রদর্শিত হবে তীরন্দাজ রেপার্টরির প্রযোজনা দীপক সুমন নির্দেশিত ‘কণ্ঠনালীতে সূর্য’। দ্বিতীয় দিন মঞ্চস্থ হবে আরণ্যক নাট্যদলের ‘রাঢ়াঙ’। রচনা ও নির্দেশনায় মামুনুর রশীদ। এ ছাড়া এ উৎসবে দেখা যাবে বাতিঘরের ‘প্যারাবোলা’, নাট্যতীর্থের ‘জুলিয়াস সিজার’, ঢাকা থিয়েটার মঞ্চের ‘ঘরজামাই’, পদাতিক নাট্য সংসদের (টিএসসি) ‘আলিবাবা এবং চল্লিশ চোর’ এবং থিয়েটার নাট্যদলের ‘মেরাজ ফকিরের মা’।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

হাদি হত্যা: ফয়সালসহ সংশ্লিষ্টদের অ্যাকাউন্টে ১২৭ কোটি টাকার লেনদেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাধুরীর কাছে ক্যারিয়ারের চেয়ে পরিবার বেশি জরুরি

বিনোদন ডেস্ক
মাধুরী দীক্ষিত। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
মাধুরী দীক্ষিত। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

আশির দশকের শেষ দিকে এবং নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে বলিউডের অন্যতম ব্যস্ত অভিনেত্রী ছিলেন মাধুরী দীক্ষিত। ওই সময় প্রতিবছর ১০টির বেশি সিনেমা মুক্তি পেত তাঁর। তবে সাফল্যের তুঙ্গে থাকা অবস্থায়ই বড় একটি সিদ্ধান্ত নেন মাধুরী। তারকাখ্যাতি পাশ কাটিয়ে ব্যক্তিজীবনকে বেশি গুরুত্ব দেন। ১৯৯৯ সালে ডা. শ্রীরাম নেনেকে বিয়ে করে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। ফেলে যান সফল ক্যারিয়ার। তবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া নাকি মোটেই কঠিন ছিল না মাধুরীর জন্য।

সম্প্রতি মিড-ডেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওই সময় নিয়ে মুখ খুলেছেন মাধুরী দীক্ষিত। ক্যারিয়ারের সাফল্য নয়, পরিবার-সন্তান-সংসারই নাকি ছিল তাঁর স্বপ্ন। অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি সব সময় ভাবতাম, আমার বিয়ে হবে, একটি সংসার হবে, সন্তান হবে। যখন সেটা ঘটল, মনে হয়েছিল, এত দিনে স্বপ্ন সত্যি হলো। বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতে দুবার ভাবিনি। বিয়ে করে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাই।’

প্রায় এক যুগ মাধুরী কাটিয়েছেন কলোরাডো অঙ্গরাজ্যের ডেনভারে। সেখানে প্রকৃতির নির্জনতায় সহজ-সাধারণ পারিবারিক জীবনেই নিজের সবটুকু মনোযোগ ঢেলে দিয়েছিলেন অভিনেত্রী। যুক্তরাষ্ট্রে আগে থেকে তাঁর ভাইবোনেরা থাকতেন। তাঁদের সঙ্গেও মাধুরীর নিয়মিত দেখা হতো। তাই সময়টা মন্দ কাটত না। অভিনেত্রী বলেন, ‘জীবনের প্রায়োরিটি আসলে কী, সেটা আগে থেকে জানতাম। সেখানে নিজের কাজ নিজেকে করতে হতো। তাতেও কোনো কষ্ট লাগত না। আফসোস হতো না।’

ক্যারিয়ারের জাঁকজমকের চেয়ে বরং পারিবারিক জীবন, সন্তান-সংসার—এসবই মাধুরীর ভালো লাগত বেশি। অভিনেত্রী বলেন, ‘বাচ্চাদের নিয়ে নিজের মতো থাকতাম। তাদের পার্কে নিয়ে যেতাম। ওদের সঙ্গে খেলতাম, মজা করতাম। কেউ আমাকে চিনত না। সময়টা ভীষণ উপভোগ করেছি।’

পাঁচ বছর শোবিজ থেকে দূরে ছিলেন মাধুরী। ২০০৭ সালে ‘আজা নাচলে’ দিয়ে আবার বড় পর্দায় ফেরেন। সিনেমাটি বক্স অফিসে অত সাড়া না পেলেও তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়। এরপর আবারও বিরতি। ২০১৩ সালে ‘বোম্বে টকিজ’ ও ‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’ সিনেমার গানে পারফর্ম করে সাড়া ফেলেন। আবারও মাধুরীকে নিয়ে চর্চা শুরু হয় বলিউডে।

এরপর সিনেমায় সেই অর্থে আর নিয়মিত হননি মাধুরী দীক্ষিত। অল্পস্বল্প কাজ করেছেন। রিয়েলিটি শোতে বিচারক হয়েছেন। ওয়েব কনটেন্টেও দেখা দিয়েছেন। সম্প্রতি জিওহটস্টারের ‘মিসেস দেশপান্ডে’ সিরিজ দিয়ে আবারও আলোচনায় তিনি। ১৯ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া সিরিজটি তৈরি হয়েছে ফরাসি থ্রিলার ‘লা ম্যান্টে’র অনুপ্রেরণায়। এতে মাধুরী অভিনয় করেছেন একজন সিরিয়াল কিলারের চরিত্রে।

মাধুরী সব সময় চেয়েছেন ক্যারিয়ার আর পরিবার—দুটির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে। শোবিজের তারকাখ্যাতি তাঁর পারিবারিক জীবনকে যেন প্রভাবিত করতে না পারে। হলিউড রিপোর্টার ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেন, ‘যখন আমি বাড়িতে ঢুকি, তারকাখ্যাতিকে বাইরে রেখে যাই। সেখানে আমি একেবারেই সাধারণ—একজন স্ত্রী, একজন মা। আর দশটা মানুষের মতোই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

হাদি হত্যা: ফয়সালসহ সংশ্লিষ্টদের অ্যাকাউন্টে ১২৭ কোটি টাকার লেনদেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত