মীর রাকিব হাসান, ঢাকা
প্রযোজক হিসেবে টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে পরিচিতি আছে সাব্বির চৌধুরীর। অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করেও নিয়মিত দেশের নাটক, বিজ্ঞাপন প্রযোজনা করছেন। অস্ট্রেলিয়ায় করছেন বাংলাদেশ ও ভারতের বাংলা ছবি পরিবেশনা। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় আছে ছবি প্রযোজনার। সাব্বিরের সঙ্গে কথোপকথনে ছিলেন মীর রাকিব হাসান।
প্রযোজনার উৎসাহ এল কীভাবে?
শৈশব-কৈশোরে প্রচুর দেশি-বিদেশি সিনেমা সিরিজ দেখা হতো। সেখান থেকেই মূলত স্বপ্নটা দেখা শুরু হয়। অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার বলেছেন, ‘মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়।' তার মানে, আমাদের স্বপ্ন যত বড় হবে, আমরাও তত বড় হব। পড়াশোনায় কখনোই সিরিয়াস ছিলাম না । আমার এখনো মনে আছে, এসএসসি ও এইচএসসি ফাইনাল পরীক্ষার আগের রাতেও ডিভিডিতে ইংরেজি ছবি দেখেছিলাম। আমাদের বংশেই কেউ মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে জড়িত ছিল না বলে কখনো মনে হয়নি সময় নিয়ে প্রযোজক, পরিচালক কিংবা অভিনেতা হতে পারব। দ্বিতীয়ত, বাংলা ছবির যখন রমরমা যুগ ছিল, তখনো আমাদের পিকচারাইজেশন মন ছুঁত না। পাশাপাশি হলিউডের ছবি ঝকঝকে ছিল। পিকচারাইজেশন দেখে মনে হতো আমরা উন্নতমানের সিনেমাটিক কোয়ালিটিতে অন্যদের থেকে অনেক পিছিয়ে আছি। ছোটবেলা থেকেই স্বপ্নটা ছিল যে একদিন যখন অনেক টাকা আয় করব, তখন এমন হলিউড বা বলিউড কোয়ালিটির ছবি বানাব। পড়াশোনার গতিপথে চলতে চলতে অস্ট্রেলিয়ায় চলে আসি। এখানে এসেও আমার মনে হয়েছে দেশের নাটক-সিনেমার জন্য কিছু করতে পারব। আস্তে আস্তে টাকা উপার্জন শুরু করলাম। প্রযোজনায়ও নামলাম। আমি মনে হয় বাংলাদেশের সবচেয়ে কম বয়সী প্রযোজক। মাত্র ১৭ বছর বয়সে নাটক প্রযোজনা শুরু করি। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের কিং খান শাকিব আমাকে দেখে তো অবাক হয়েছিলেন।
শাকিব খানের গল্পটা কী?
নাটক প্রযোজনার বছরখানেকের মধ্যেই আমি ছবি নির্মাণের প্ল্যান করি। শাকিব খান এখনো নাম্বার ওয়ান। বছর দশেক আগে এমনই জনপ্রিয় ছিলেন, ব্যস্ত শিডিউল ছিল। আমি এফডিসিতে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। উনি আমার সঙ্গে খুবই আন্তরিকভাবে কথা বললেন। উনি শুনে অবাক যে আমি প্রযোজক, ইতিমধ্যেই এই বয়সে অনেকগুলো নাটক প্রযোজনা করেছি। তখন আমার বয়স ১৮ বছর। যদিও ছবি নির্মাণে পিছপা হতে হয়েছিল।
কেন পিছপা হতে হয়েছিল?
প্রযোজনার প্ল্যান থাকলেও কিছুদিন ঘুরে মনে হয়েছে আমার আরও সময় নেওয়া উচিত। কেননা, অভিজ্ঞতা অর্জন করাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমি যে মানের ছবি বানাতে চাই, তার জন্য সময় নেওয়া উচিত। ছবি নির্মাণ না করলেও নিয়মিত নাটক ও বিজ্ঞাপন প্রযোজনা করছি। ইতিমধ্যে শতাধিক নাটক নির্মাণ করেছি। আমার প্রযোজনায় বাংলাদেশে নাটকের সব বড় বড় স্টার অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে বলা যায় আফজাল হোসেন, নোবেল, মৌ, জাহিদ হাসান, রিয়াজ, তৌকির আহমেদ, মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, অপূর্ব, আফরান নিশো, মেহজাবিন, তানজিন তিশা, তাহসান খান, নুসরাত ইমরোজ তিশা, মীর সাব্বির, রিনা খান, সুব্রত, সাজু খাদেম, জন কবির, সিয়াম, তাসকিন রহমান, ইমন, শামিম হাসান সরকার, ফারহান আহমেদ জোভান, নাঈম, নাদিয়া, সালমান, পিয়া বিপাশা, শখ, সারিকা, মম, শারলিন, সোহানা সাবা, নিশা, নওশিন, জেনি, সানজিদা প্রীতিসহ সময়ের সব জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী। বিজ্ঞাপনে কাজ করেছি বিশ্ব ক্রিকেটের সব ফরম্যাটের নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের সঙ্গে। নাটক ও বিজ্ঞাপন নির্মাণ করতে করতে আমি ছবির প্ল্যানও করে ফেলেছি।
তাহলে ছবি নির্মাণ করছেন?
গত বছরই হয়তো আমার ছবির শুটিং শুরু হয়ে যেত। করোনা এসে বাধা হয়ে দাঁড়াল। এই যে অস্ট্রেলিয়ায় এখনো লকডাউন চলছে। আমি বাসা থেকেই অফিস করছি। আমি আফরান নিশো-পরীমণিকে জুটি করে ছবি নির্মাণ করতে চাইছি। আমার নিশো ভাই ও পরীর সঙ্গে কথাও হয়েছিল। ওনারা দুজনেই ভালো কাজ করার ব্যাপারে সব সময়ই পজিটিভ। অস্ট্রেলিয়ার বর্ডার করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। বর্ডার খুললে বাংলাদেশে গিয়ে সামনাসামনি বসে ছবির ব্যাপারটি ফাইনাল করার প্ল্যান আছে। এর আগে তো অবশ্যই তাঁদের সঙ্গে আরও যোগাযোগ হবে।
নিশো-পরীকে জুটি করতে চাইছেন কেন?
নিশো ভাইয়ের সঙ্গে নাটকে অনেক কাজ করেছি। সবগুলোই জনপ্রিয়। ব্যক্তিগতভাবেও উনি আমার প্রিয় অভিনেতা। একটা ঘটনা বলি। একবার আমি মালয়েশিয়া যাচ্ছি, আমার পাশে বসেছেন এক প্রবাসী ভাই। উনি আমাকে দেখে চিনেছেন। বলে, ভাই, আপনি না নাটকে অভিনয় করেন? তখন তাকে বোঝালাম যে আমি নাটকে অভিনয় করি না। দেশে এলে মাঝেমধ্যে অতিথি চরিত্র করা হয়। তখন উনি একটা নাটকের কথা বললেন। অবাক হলাম এটা জেনে যে উনি জানেন, আমি ওই নাটকের প্রযোজক এবং লেখকও। উনি তখন বললেন, ভাই, নিশো ভাইকে নিয়ে একটা সিনেমা বানান। আমরা প্রবাসে থাকি, পরিশ্রম করে রুমে ফিরে নাটক দেখি। ওনার আমি ভীষণ ফ্যান। নাটক দেখলেই মনটা ভালো হয়ে যায়। অনেক দুঃখ-কষ্ট ভুলে যাই। তখন আমার মনে হলো নিশো ভাইকে নিয়ে আমি সিনেমা নির্মাণ করবই। তাকে আমি যেকোনোভাবে রাজি করাব। আর আমি আশাবাদী যে তাঁর ভালোলাগার গল্প ও শুটিং প্ল্যান নিয়েই বসব। নিশো ভাই একটা এক ঘণ্টার নাটক করার জন্য যেই ডেডিকেশন দেন, যদি সিনেমায় ওনাকে ওভাবে সময় দিতে পারি, উনি অন্যরকম কিছু করতে পারবেন। অন্যদিকে পরীমণি বাংলাদেশের এই সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়িকা। উনি কতটা জনপ্রিয়, এই সময়ে এসে সবাই ভালোই টের পেয়েছেন। তাছাড়া উনি ভালো অভিনেত্রীও। ভালো পরিচালক ওনাকে গাইড করলে সেটা আমরা দেখতেও পাই। যেমন ‘স্বপ্নজাল’ ছবিতে গিয়াসউদ্দিন সেলিম ভাই ওনার কাছ থেকে কী দুর্দান্তই না অভিনয় বের করেছেন।
শুটিং প্ল্যান কি কিছু হয়েছে?
প্রথমত রিয়েল লাইফ বেসড রোম্যান্টিক ছবি বানাব, যাতে করে মানুষ রিলেট করতে পারে কাজটা। দেখে মনে হয় যেন এটা তো আমারই দেখা একজনের জীবনের গল্প! ইচ্ছে আছে যৌথ প্রযোজনা করার। দুই বাংলা থেকে দুজন জনপ্রিয় পরিচালক এবং সমানভাবে অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের নিয়ে কাজটা করার। এখনো সবকিছু ঠিক না হলেও কথাবার্তা চলছে। বিশ্বজুড়ে ৩০ কোটিরও বেশি মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে। এদের মধ্যে ২৬ কোটিরও বেশি বাংলা ভাষাভাষীর বসবাস বাংলাদেশ ও ভারতে। বাংলা ভাষা ব্যবহারকারী বাকি ৪ কোটিরও বেশি মানুষ ছড়িয়ে আছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। এই বিশাল অডিয়েন্সটাকে যদি আমরা ধরতে পারি, তাহলে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না । আমার ছবিটা বিশ্বের অনেক দেশেই মুক্তি দিতে চাইছি। কেননা, বাংলাদেশের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ায় তো মুক্তি দেবই; এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, দুবাইসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। শুটিংটাও সেভাবে করতে চাইছি। বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশে এর শুটিং হবে। গল্পটাই এমন হবে। একটা-দুটো গান করার জন্য যে বিদেশে আনব টিম, সেটা না। গল্পের বাঁকে বাঁকে টুইস্ট রেখে এটা করার ইচ্ছে। এখন এসব প্ল্যান করে এই বছর আর সম্ভব নয়। তা ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার বর্ডার খুললে আগে দেশে তো যেতে হবে।
প্রবাসে থেকে বাংলাদেশে প্রযোজনা। লাভ-ক্ষতির হিসেব কী?
আমি যে খুব একটা লাভের আশায় বিনিয়োগ করি এমনটা না। একটা ভালোবাসার জায়গা তো আছেই। আমার চাওয়া যে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ হোক। আবার এত দিন কাজ করতে করতে একটা শিক্ষাও হয়েছে। আমার মা সব সময় একটা কথা বলতেন যে তোমার ক্লাসে অনেক স্টুডেন্ট থাকবে। এর মধ্যে কেউ ভালো এবং কেউ খারাপ থাকবে। তবে তাদের প্রত্যেকেরই আলাদা আলাদা কোনো ভালো গুণ আছে। তোমার কাজটা হলো তাদের খারাপ গুণগুলো বর্জন করে ভালো গুণ বা দক্ষতাকে নিজের মধ্যে ক্রিমের মতো অ্যাডাপ্ট করে নেওয়া। এভাবেই আমি সারা জীবন সব সময় ভালো গুণগুলোই অ্যাডাপ্ট করে নেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমি ইন্ডাস্ট্রি রিসার্চ করে সবার ভালো পরামর্শগুলোই সব সময় নিয়ে কাজ করেছি। তার পরও কিছু দুঃখবোধ তো আছে।
তা কী?
অনেক পরিচালক মনে করেন আজ পেয়েছি। প্রযোজকের টাকাটা যত্ন করে খরচ করেন না বা মনে করেন, যা পারি এই নাটক থেকেই আয় করে নিই। বাইরে থেকে সব সময় তো সবটা মনিটরিং করা সম্ভব হয় না। কিন্তু কোনো না কোনো সময় তো বুঝি যে আমাকে কীভাবে ঠকিয়েছে। আমি কালো টাকা দিয়ে প্রযোজনা করি না। পড়াশোনা শেষে চাকরি করে সৎভাবে টাকা আয় করে ভালোবাসার জায়গা থেকে ইনভেস্ট করি। তা ছাড়া অনেক সময় চ্যানেলের ব্যবহারেও খুশি থাকতে পারি না। একটা নাটক কিনে নেওয়ার পর তারা যে কতবার প্রচার করে হিসাব নেই। এর থেকে ডিজিটালি আয় করে। এর ক্লিপস কেটে আয় করে। কিন্তু আমরা প্রযোজকেরা সেখান থেকে কী পাই? ছবির ক্ষেত্রে কিন্তু এমনটা না। আমাদের মহানায়ক সালমান শাহর ছবি থেকে আমার পরিচিত একজন প্রযোজক আংকেল এখনো উপার্জন করছেন। তাঁর প্রযোজনা করা চলচ্চিত্রটি যতবার টেলিভিশনের পর্দায় প্রদর্শিত হয়, ততবার তিনি টাকা পাচ্ছেন। এটা একধরনের সম্পত্তির মতো। নাটক প্রযোজনাটা বেশ কষ্টসাধ্য। কেননা, নাটকের বাজেট যেমন প্রতিনিয়ত বাড়ছে, ঠিক তেমনি নাটকের লাভের পরিমাণ সেভাবেই কমছে। এর থেকে খুব বেশি কিছু পাওয়ার আশাও করা যায় না।
প্রযোজক হিসেবে টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে পরিচিতি আছে সাব্বির চৌধুরীর। অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করেও নিয়মিত দেশের নাটক, বিজ্ঞাপন প্রযোজনা করছেন। অস্ট্রেলিয়ায় করছেন বাংলাদেশ ও ভারতের বাংলা ছবি পরিবেশনা। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় আছে ছবি প্রযোজনার। সাব্বিরের সঙ্গে কথোপকথনে ছিলেন মীর রাকিব হাসান।
প্রযোজনার উৎসাহ এল কীভাবে?
শৈশব-কৈশোরে প্রচুর দেশি-বিদেশি সিনেমা সিরিজ দেখা হতো। সেখান থেকেই মূলত স্বপ্নটা দেখা শুরু হয়। অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার বলেছেন, ‘মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়।' তার মানে, আমাদের স্বপ্ন যত বড় হবে, আমরাও তত বড় হব। পড়াশোনায় কখনোই সিরিয়াস ছিলাম না । আমার এখনো মনে আছে, এসএসসি ও এইচএসসি ফাইনাল পরীক্ষার আগের রাতেও ডিভিডিতে ইংরেজি ছবি দেখেছিলাম। আমাদের বংশেই কেউ মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে জড়িত ছিল না বলে কখনো মনে হয়নি সময় নিয়ে প্রযোজক, পরিচালক কিংবা অভিনেতা হতে পারব। দ্বিতীয়ত, বাংলা ছবির যখন রমরমা যুগ ছিল, তখনো আমাদের পিকচারাইজেশন মন ছুঁত না। পাশাপাশি হলিউডের ছবি ঝকঝকে ছিল। পিকচারাইজেশন দেখে মনে হতো আমরা উন্নতমানের সিনেমাটিক কোয়ালিটিতে অন্যদের থেকে অনেক পিছিয়ে আছি। ছোটবেলা থেকেই স্বপ্নটা ছিল যে একদিন যখন অনেক টাকা আয় করব, তখন এমন হলিউড বা বলিউড কোয়ালিটির ছবি বানাব। পড়াশোনার গতিপথে চলতে চলতে অস্ট্রেলিয়ায় চলে আসি। এখানে এসেও আমার মনে হয়েছে দেশের নাটক-সিনেমার জন্য কিছু করতে পারব। আস্তে আস্তে টাকা উপার্জন শুরু করলাম। প্রযোজনায়ও নামলাম। আমি মনে হয় বাংলাদেশের সবচেয়ে কম বয়সী প্রযোজক। মাত্র ১৭ বছর বয়সে নাটক প্রযোজনা শুরু করি। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের কিং খান শাকিব আমাকে দেখে তো অবাক হয়েছিলেন।
শাকিব খানের গল্পটা কী?
নাটক প্রযোজনার বছরখানেকের মধ্যেই আমি ছবি নির্মাণের প্ল্যান করি। শাকিব খান এখনো নাম্বার ওয়ান। বছর দশেক আগে এমনই জনপ্রিয় ছিলেন, ব্যস্ত শিডিউল ছিল। আমি এফডিসিতে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। উনি আমার সঙ্গে খুবই আন্তরিকভাবে কথা বললেন। উনি শুনে অবাক যে আমি প্রযোজক, ইতিমধ্যেই এই বয়সে অনেকগুলো নাটক প্রযোজনা করেছি। তখন আমার বয়স ১৮ বছর। যদিও ছবি নির্মাণে পিছপা হতে হয়েছিল।
কেন পিছপা হতে হয়েছিল?
প্রযোজনার প্ল্যান থাকলেও কিছুদিন ঘুরে মনে হয়েছে আমার আরও সময় নেওয়া উচিত। কেননা, অভিজ্ঞতা অর্জন করাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমি যে মানের ছবি বানাতে চাই, তার জন্য সময় নেওয়া উচিত। ছবি নির্মাণ না করলেও নিয়মিত নাটক ও বিজ্ঞাপন প্রযোজনা করছি। ইতিমধ্যে শতাধিক নাটক নির্মাণ করেছি। আমার প্রযোজনায় বাংলাদেশে নাটকের সব বড় বড় স্টার অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে বলা যায় আফজাল হোসেন, নোবেল, মৌ, জাহিদ হাসান, রিয়াজ, তৌকির আহমেদ, মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, অপূর্ব, আফরান নিশো, মেহজাবিন, তানজিন তিশা, তাহসান খান, নুসরাত ইমরোজ তিশা, মীর সাব্বির, রিনা খান, সুব্রত, সাজু খাদেম, জন কবির, সিয়াম, তাসকিন রহমান, ইমন, শামিম হাসান সরকার, ফারহান আহমেদ জোভান, নাঈম, নাদিয়া, সালমান, পিয়া বিপাশা, শখ, সারিকা, মম, শারলিন, সোহানা সাবা, নিশা, নওশিন, জেনি, সানজিদা প্রীতিসহ সময়ের সব জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী। বিজ্ঞাপনে কাজ করেছি বিশ্ব ক্রিকেটের সব ফরম্যাটের নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের সঙ্গে। নাটক ও বিজ্ঞাপন নির্মাণ করতে করতে আমি ছবির প্ল্যানও করে ফেলেছি।
তাহলে ছবি নির্মাণ করছেন?
গত বছরই হয়তো আমার ছবির শুটিং শুরু হয়ে যেত। করোনা এসে বাধা হয়ে দাঁড়াল। এই যে অস্ট্রেলিয়ায় এখনো লকডাউন চলছে। আমি বাসা থেকেই অফিস করছি। আমি আফরান নিশো-পরীমণিকে জুটি করে ছবি নির্মাণ করতে চাইছি। আমার নিশো ভাই ও পরীর সঙ্গে কথাও হয়েছিল। ওনারা দুজনেই ভালো কাজ করার ব্যাপারে সব সময়ই পজিটিভ। অস্ট্রেলিয়ার বর্ডার করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। বর্ডার খুললে বাংলাদেশে গিয়ে সামনাসামনি বসে ছবির ব্যাপারটি ফাইনাল করার প্ল্যান আছে। এর আগে তো অবশ্যই তাঁদের সঙ্গে আরও যোগাযোগ হবে।
নিশো-পরীকে জুটি করতে চাইছেন কেন?
নিশো ভাইয়ের সঙ্গে নাটকে অনেক কাজ করেছি। সবগুলোই জনপ্রিয়। ব্যক্তিগতভাবেও উনি আমার প্রিয় অভিনেতা। একটা ঘটনা বলি। একবার আমি মালয়েশিয়া যাচ্ছি, আমার পাশে বসেছেন এক প্রবাসী ভাই। উনি আমাকে দেখে চিনেছেন। বলে, ভাই, আপনি না নাটকে অভিনয় করেন? তখন তাকে বোঝালাম যে আমি নাটকে অভিনয় করি না। দেশে এলে মাঝেমধ্যে অতিথি চরিত্র করা হয়। তখন উনি একটা নাটকের কথা বললেন। অবাক হলাম এটা জেনে যে উনি জানেন, আমি ওই নাটকের প্রযোজক এবং লেখকও। উনি তখন বললেন, ভাই, নিশো ভাইকে নিয়ে একটা সিনেমা বানান। আমরা প্রবাসে থাকি, পরিশ্রম করে রুমে ফিরে নাটক দেখি। ওনার আমি ভীষণ ফ্যান। নাটক দেখলেই মনটা ভালো হয়ে যায়। অনেক দুঃখ-কষ্ট ভুলে যাই। তখন আমার মনে হলো নিশো ভাইকে নিয়ে আমি সিনেমা নির্মাণ করবই। তাকে আমি যেকোনোভাবে রাজি করাব। আর আমি আশাবাদী যে তাঁর ভালোলাগার গল্প ও শুটিং প্ল্যান নিয়েই বসব। নিশো ভাই একটা এক ঘণ্টার নাটক করার জন্য যেই ডেডিকেশন দেন, যদি সিনেমায় ওনাকে ওভাবে সময় দিতে পারি, উনি অন্যরকম কিছু করতে পারবেন। অন্যদিকে পরীমণি বাংলাদেশের এই সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়িকা। উনি কতটা জনপ্রিয়, এই সময়ে এসে সবাই ভালোই টের পেয়েছেন। তাছাড়া উনি ভালো অভিনেত্রীও। ভালো পরিচালক ওনাকে গাইড করলে সেটা আমরা দেখতেও পাই। যেমন ‘স্বপ্নজাল’ ছবিতে গিয়াসউদ্দিন সেলিম ভাই ওনার কাছ থেকে কী দুর্দান্তই না অভিনয় বের করেছেন।
শুটিং প্ল্যান কি কিছু হয়েছে?
প্রথমত রিয়েল লাইফ বেসড রোম্যান্টিক ছবি বানাব, যাতে করে মানুষ রিলেট করতে পারে কাজটা। দেখে মনে হয় যেন এটা তো আমারই দেখা একজনের জীবনের গল্প! ইচ্ছে আছে যৌথ প্রযোজনা করার। দুই বাংলা থেকে দুজন জনপ্রিয় পরিচালক এবং সমানভাবে অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের নিয়ে কাজটা করার। এখনো সবকিছু ঠিক না হলেও কথাবার্তা চলছে। বিশ্বজুড়ে ৩০ কোটিরও বেশি মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে। এদের মধ্যে ২৬ কোটিরও বেশি বাংলা ভাষাভাষীর বসবাস বাংলাদেশ ও ভারতে। বাংলা ভাষা ব্যবহারকারী বাকি ৪ কোটিরও বেশি মানুষ ছড়িয়ে আছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। এই বিশাল অডিয়েন্সটাকে যদি আমরা ধরতে পারি, তাহলে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না । আমার ছবিটা বিশ্বের অনেক দেশেই মুক্তি দিতে চাইছি। কেননা, বাংলাদেশের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ায় তো মুক্তি দেবই; এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, দুবাইসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। শুটিংটাও সেভাবে করতে চাইছি। বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশে এর শুটিং হবে। গল্পটাই এমন হবে। একটা-দুটো গান করার জন্য যে বিদেশে আনব টিম, সেটা না। গল্পের বাঁকে বাঁকে টুইস্ট রেখে এটা করার ইচ্ছে। এখন এসব প্ল্যান করে এই বছর আর সম্ভব নয়। তা ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার বর্ডার খুললে আগে দেশে তো যেতে হবে।
প্রবাসে থেকে বাংলাদেশে প্রযোজনা। লাভ-ক্ষতির হিসেব কী?
আমি যে খুব একটা লাভের আশায় বিনিয়োগ করি এমনটা না। একটা ভালোবাসার জায়গা তো আছেই। আমার চাওয়া যে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ হোক। আবার এত দিন কাজ করতে করতে একটা শিক্ষাও হয়েছে। আমার মা সব সময় একটা কথা বলতেন যে তোমার ক্লাসে অনেক স্টুডেন্ট থাকবে। এর মধ্যে কেউ ভালো এবং কেউ খারাপ থাকবে। তবে তাদের প্রত্যেকেরই আলাদা আলাদা কোনো ভালো গুণ আছে। তোমার কাজটা হলো তাদের খারাপ গুণগুলো বর্জন করে ভালো গুণ বা দক্ষতাকে নিজের মধ্যে ক্রিমের মতো অ্যাডাপ্ট করে নেওয়া। এভাবেই আমি সারা জীবন সব সময় ভালো গুণগুলোই অ্যাডাপ্ট করে নেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমি ইন্ডাস্ট্রি রিসার্চ করে সবার ভালো পরামর্শগুলোই সব সময় নিয়ে কাজ করেছি। তার পরও কিছু দুঃখবোধ তো আছে।
তা কী?
অনেক পরিচালক মনে করেন আজ পেয়েছি। প্রযোজকের টাকাটা যত্ন করে খরচ করেন না বা মনে করেন, যা পারি এই নাটক থেকেই আয় করে নিই। বাইরে থেকে সব সময় তো সবটা মনিটরিং করা সম্ভব হয় না। কিন্তু কোনো না কোনো সময় তো বুঝি যে আমাকে কীভাবে ঠকিয়েছে। আমি কালো টাকা দিয়ে প্রযোজনা করি না। পড়াশোনা শেষে চাকরি করে সৎভাবে টাকা আয় করে ভালোবাসার জায়গা থেকে ইনভেস্ট করি। তা ছাড়া অনেক সময় চ্যানেলের ব্যবহারেও খুশি থাকতে পারি না। একটা নাটক কিনে নেওয়ার পর তারা যে কতবার প্রচার করে হিসাব নেই। এর থেকে ডিজিটালি আয় করে। এর ক্লিপস কেটে আয় করে। কিন্তু আমরা প্রযোজকেরা সেখান থেকে কী পাই? ছবির ক্ষেত্রে কিন্তু এমনটা না। আমাদের মহানায়ক সালমান শাহর ছবি থেকে আমার পরিচিত একজন প্রযোজক আংকেল এখনো উপার্জন করছেন। তাঁর প্রযোজনা করা চলচ্চিত্রটি যতবার টেলিভিশনের পর্দায় প্রদর্শিত হয়, ততবার তিনি টাকা পাচ্ছেন। এটা একধরনের সম্পত্তির মতো। নাটক প্রযোজনাটা বেশ কষ্টসাধ্য। কেননা, নাটকের বাজেট যেমন প্রতিনিয়ত বাড়ছে, ঠিক তেমনি নাটকের লাভের পরিমাণ সেভাবেই কমছে। এর থেকে খুব বেশি কিছু পাওয়ার আশাও করা যায় না।
আগামী ৪ ডিসেম্বর শুরু হবে ৩০তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। এবারের উৎসবে অংশ নেবে বিভিন্ন দেশের ২০০টির বেশি সিনেমা। তবে রাখা হয়নি না বাংলাদেশের কোনো সিনেমা।
৫ মিনিট আগেঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন ও অভিষেক বচ্চন দম্পতির ঘর ভাঙার গুঞ্জন এখন বলিউডের লোকের মুখে মুখে। এই তারকা দম্পতির বিচ্ছেদের গুঞ্জন ঘিরে একের পর এক তথ্য সামনে আসছে। কখনো সংসারে বনিবনা না হওয়া কখনোবা তৃতীয় ব্যক্তির প্রবেশের কথাও শোনা যাচ্ছে। যদিও এ নিয়ে কুলুপ এঁটে ছিলেন পুরো বচ্চন পরিবার। এসবের মধ্যেই নিজের ব্ল
২ ঘণ্টা আগেশুধু কিং খানই নন, তাঁর নিশানায় ছিলেন বাদশাপুত্র আরিয়ান খানও। শাহরুখের নিরাপত্তাবলয়ের বিষয়েও খুঁটিনাটি তথ্য ইন্টারনেট ঘেঁটে জোগাড় করেছিলেন ফয়জান। এমনকি শাহরুখ এবং আরিয়ান নিত্যদিন কোথায়, কখন যেতেন, কী করতেন সমস্ত গতিবিধির ওপর নজর ছিল ধৃতর। পুলিশি সূত্রে খবর, রীতিমতো আটঘাট বেঁধে শাহরুখ খানকে খুনের হুম
৫ ঘণ্টা আগেগত বছরের শেষ দিকে ‘নীলচক্র’ সিনেমার খবর দিয়েছিলেন আরিফিন শুভ। এতে শুভর বিপরীতে অভিনয় করেছেন মন্দিরা চক্রবর্তী। শুটিং শেষে মুক্তির জন্য প্রস্তুত সিনেমাটি। ট্রেন্ডি ও সমসাময়িক গল্পে নীলচক্র বানিয়েছেন মিঠু খান।
৭ ঘণ্টা আগে