শুটিংপাড়ায় দুশ্চিন্তার ভাঁজ

বিনোদন প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ জুন ২০২১, ১০: ৩৫

ঢাকা: দুয়ারে দাঁড়িয়ে ঈদ। জোরেশোরে চলছে ঈদের নাটকের প্রস্তুতি। অনেক প্রযোজক-পরিচালক এরই মধ্যে শিল্পীদের শিডিউল নিয়ে অগ্রিম টাকাও পরিশোধ করেছেন। কিন্তু দেশে আবারও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ২৮ থেকে ৩০ জুন সীমিত পরিসরে এবং আগামী ১ থেকে ৭ জুলাই সর্বাত্মক লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ফলে নির্মাতাদের কপালে স্পষ্ট হয়েছে দুশ্চিন্তার ভাঁজ।

লকডাউনের কারণে শুটিং বন্ধ থাকলে তাঁরা পড়ে যাবেন মহা বিপদে। গত রোজার ঈদ উপলক্ষে সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুটিং করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এতে খানিকটা ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন নাট্যশিল্পীরা।

আসন্ন ঈদুল আজহায়ও ইউটিউব, টেলিভিশন ও ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলোর জন্য পাঁচ শতাধিক নাটক নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল, যার বেশির ভাগ শুটিং চলমান প্রক্রিয়ায় রয়েছে। গতকাল পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত জানাতে পারেননি টেলিভিশন নাটকের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি সালাউদ্দীন লাভলু।  এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে শুটিং বন্ধ হয়ে গেলে বিরাট ক্ষতির মুখে পড়ব। অনেকেরই অর্থলগ্নি হয়ে গেছে। টেলিভিশনগুলোও বিপদে পড়বে। তাদের পরিকল্পনা ছিল ঈদে নতুন নাটক প্রচারের। যদি কাজ শেষ করা না যায় তাহলে পুরোনো নাটক দেখানো ছাড়া উপায় থাকবে না।’

অভিনয়শিল্পী সমিতির সভাপতি শহীদুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘বেশিরভাগ পরিচালক ও শিল্পী-কলাকুশলী শুটিং চালিয়ে যেতে চান। তা ছাড়া সরকারিভাবে শুটিং বন্ধ রাখার ব্যাপারে এখনো কিছু বলা হয়নি। সামনে ঈদ, এই সময়ে শুটিং বন্ধ করলে টিভি ইন্ডাস্ট্রি ভীষণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে।’

‘লিডার—আমিই বাংলাদেশ’ , ‘রিভেঞ্জ’, ‘ঈশা খাঁ’, ‘প্রেম প্রীতি ভালোবাসা’, ‘ঘর ভাঙা সংসার’সহ কয়েকটি বড় বাজেটের ছবির শুটিং চলছে কয়েক দিন ধরে। হুট করে শুটিং বন্ধ করতে হলে বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। ‘রিভেঞ্জ’ ছবির পরিচালক মোহাম্মদ ইকবাল শুটিং চালিয়ে যেতে চান।

ইকবাল বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে এমনিতেই আমাদের শুটিং বন্ধ ছিল। এই সময়ে আবার শুটিং বন্ধ হলে বাজেট বেড়ে যাবে।’

তবে অপু বিশ্বাস কিছুদিন শুটিং বন্ধের পক্ষে। যদিও তাঁর দুটি ছবির শুটিং চলছে। তিনি বলেন, ‘আমার বাসায় ছোট ছেলে। শুটিং শেষে বাসায় ফিরতে হয়। এখন শুটিং করা মানেই জীবনের রিস্ক নেওয়া।’ শাকিব খানকে নিয়ে এফডিসিতে ‘লিডার—আমিই বাংলাদেশ’ ছবির শুটিং করছেন পরিচালক তপু খান। জানা যায়, কঠোর লকডাউনের ঘোষণা শোনার পর থেকেই দুই শিফটে শুটিং চালিয়ে যাচ্ছেন কাজ শেষ করার আশায়। কিন্তু শেষ রক্ষা হবে কি না তা নিয়ে তিনিও শঙ্কিত।

পরিচালক সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান বলেন, ‘এই মুহূর্তে শুটিং বন্ধ করে ঘরে বসা মানে পথে বসা। আমরা কীভাবে শুটিং চালিয়ে যেতে পারি তা নিয়েই আলোচনা করছি। সরকারের সঙ্গে বসেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমাদের পরবর্তী পরিকল্পনা কী হতে পারে।’

সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নির্মাতা ও অভিনয়শিল্পীরা অপেক্ষায় আছেন সরকারি নির্দেশনার। তবে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুটিং চালিয়ে যাওয়ার পক্ষেই মতামত জানিয়েছেন বেশির ভাগ নির্মাতা ও অভিনয়শিল্পী।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত