তারার বন্ধু তারা

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০১ আগস্ট ২০২১, ১৪: ৩৭
আপডেট : ০১ আগস্ট ২০২১, ১৭: ৪৬

কাজের সুবাদেই বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে অনেক তারকার। দিনে দিনে সেই সম্পর্ক হয়েছে গভীর। কোনো কিছুই বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি তাঁদের সম্পর্কে। আজ বিশ্ব বন্ধু দিবসে তেমনই কয়েকজন তারকার বন্ধুত্বের খবর নিয়ে বিশেষ আয়োজন। লিখেছেন মীর রাকিব হাসানখায়রুল বাসার নির্ঝর

চঞ্চলের কাজের কট্টর সমালোচক বন্ধু খুশি
দুজনই পাবনার। একজনের থেকে অন্যজনের বাড়ি বেশি দূরের পথ নয়। একই এলাকার হলেও পরিচয়টা নাটকে এসে। বৃন্দাবন দাশের গল্পে কাজ করেছেন একসঙ্গে। খুশি জানালেন, ‘ক্যারিয়ারের শুরুতে আমাদের নিজস্ব যানবাহন ছিল না। ইউনিটের গাড়িতে একসঙ্গে যেতাম। শুটিংয়ে অনেক আড্ডা হতো আমাদের। ধারাবাহিক নাটক ‘ঘরকুটুম’ করতে গিয়ে বন্ধুত্ব হয়ে গেল।’ চঞ্চল যোগ করেন, ‘আমার ক্যারিয়ারে যত নাটক করেছি, তার মধ্যে খুশির স্বামী বৃন্দাবনদার নাটক সবচেয়ে বেশি। কাজ করতে করতেই আমাদের বন্ধুত্ব এবং বোঝাপড়ার জায়গাটা মজবুত হয়েছে। আপন আত্মীয়ের চেয়ে কম নয়। আমার স্ত্রীর সঙ্গে ওদের বা ওদের দুই ছেলের সঙ্গে আমাদের পারিবারিক একটা সম্পর্ক’- বললেন চঞ্চল।

বন্ধুত্বের খাতিরেই একে অন্যকে গুরুত্ব দেন তাঁরা। একটা সময় চঞ্চলের স্ক্রিপ্ট সাইন, বিজ্ঞাপন, সিনেমাসহ নানা বিষয়েই পরামর্শ দিতেন খুশি–বৃন্দাবন দম্পতি। চঞ্চল বললেন, ‘তাঁরা দুজনই আমার কাজের কট্টর সমালোচক। বন্ধু তো বটেই, মিডিয়ায় তাঁরা আমার অভিভাবক।’

একসময় রটেছিল রানা–অপর্ণার প্রেমের গুঞ্জনপ্রেমের গুঞ্জনকে ভুল প্রমাণকরেছে রানা-অপর্ণার বন্ধুত্ব
পরিচালক শাফায়েত মনসুর রানার সঙ্গে অভিনেত্রী অপর্ণার প্রথম কাজ ‘ইচ্ছেঘুড়ি’ ধারাবাহিকে। এই ধারাবাহিক শেষে পরপর একসঙ্গে বেশ কয়েকটি কাজ করা হয়েছে। দুজনার বন্ধুত্ব গড়ে ওঠার নাকি বেশ কিছু কারণ রয়েছে। কারণটা প্রথমে জানালেন অপর্ণা, ‘সবচেয়ে বড় কথা, ও একটা ভালো মানুষ। আর খুবই মেধাবী। ওর সঙ্গে থাকলে অনেক কিছু শেখা হয়। ওর সঙ্গে যখন আড্ডা দিই, তখন প্রতিটা কথা থেকেই কিছু না কিছু শিখি। নাটক–সিনেমার বাইরেও ওর অনেক অনেক পড়াশোনা।’

রানা বললেন, ‘অপর্ণার বড় গুণ, সে কথা আর ভাবনায় সোজাসাপ্টা। কোনো ধরনের খোলস নেই। আরেকটা ব্যাপার, ও মানুষকে অনেক হেল্প করে, হেল্প করতে চায়।’ একসময় খবর রটেছিল দুজনে প্রেম করছেন। কিন্তু অপর্ণা বিয়ে করে সেই ভুল ভাঙালেন। দুজনার বন্ধুত্বের রেশ এখনো দেখা যায় সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায়, আড্ডায়।

বিজ্ঞাপন করতে গিয়ে পরিচয়, ইমন–নিরবের বন্ধুত্বের বয়স ১৪ বছর১৪ বছরের বন্ধুত্ব ইমন–নিরবের
প্রায় কাছাকাছি সময় মডেলিং–অভিনয় শুরু করেছিলেন ঢাকাই ছবির দুই নায়ক ইমন ও নিরব। একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে বন্ধু হয়ে ওঠেন তাঁরা। আগে থেকেই একে–অপরকে চিনতেন। কিন্তু বন্ধুত্বের শুরুটা ২০০৭ সালে, বিজ্ঞাপন করতে গিয়ে। ওই বিজ্ঞাপনের শুটিংয়ের আগে ১৫ দিনের প্রস্তুতি পর্ব ছিল। গ্রুমিংয়ে একসঙ্গে কাটিয়েছেন ১৫ দিন। ইমন বলেন, ‘এক রুমেই দুজন থাকতাম। সারা রাত দুষ্টুমি, মজা, আড্ডায় দারুণ সময় কাটত। তখন থেকেই দুজনের বন্ধুত্বের পথচলা। একসঙ্গে কত বিজ্ঞাপন, কত নাটকে অভিনয় করেছি!’ এরপর থেকে এক মুহূর্তের জন্যও তাঁদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়নি। বরং সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়েছে। বোঝাপড়ার জায়গাটা আরও শক্ত হয়েছে। ইমন–নিরব একসঙ্গেই কাটান অনেক সময়। দুজনের কেউ কোনো কাজের প্রস্তাব পেলে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে নেন। অনেকেই অনেক সময় চেষ্টা করেছে তাঁদের সম্পর্কে ফাটল ধরানোর। কিন্তু সফল হয়নি কেউ–ই।

বয়সের ব্যবধান শাওন–সাবার বন্ধুত্বে কোনো বাঁধা হতে পারেনিএকইদিনে দুই বন্ধুর জন্মদিন
বয়সের হিসেবে চার-পাঁচ বছরের বড় শাওন। কিন্তু সেই বয়সটা বাধা হতে হতে পারেনি বন্ধুত্ব কিংবা বোঝাপড়ার জায়গায়। দু-জনের পরিচয়ের প্রথম পর্বটা কাজের মাধ্যমেই। হুমায়ূন আহমেদের লেখা ও মোরশেদুল ইসলামের পরিচালনায় ‘প্রিয়তমেষু’ সিনেমায় কাজ করেছিলেন সাবা। সিনেমাটি হুমায়ূন আহমেদ-শাওন খুব পছন্দ করেন। তারপর ‘একলা পাখি’ শিরোনামের একটি সিরিয়ালে সাবাকে কাস্ট করেন শাওন। ‘তখন থেকেই ওকে আমার ভালো লাগতো। সেই ধারাবাহিকের প্রধান দুই নারী চরিত্রে ছিল তিশা ও সাবা। দুজনেই ট্যালেন্ট। পরে সাবার সঙ্গে আমার সম্পর্ক গভীর হয়’– বলেন সোহানা সাবা; ‘একটা দারুণ ব্যাপার হলো আমাদের দুজনার জন্মদিন একই তারিখে, ১২ অক্টোবর।’

শাওন বলেন, ‘ও অনেক আবেগী একটা মেয়ে। এটা ওর দোষও বলবো, গুনও বলতে পারি। আমাদের বন্ধুত্ব থাকলেও তাকে আমি সন্তানের মতোই ভালোবাসি। ওকে ধমক দেই।’

স্ট্রাগলিং পিরিয়ড একসঙ্গেই কেটেছে সিয়াম–জোভানেরসংগ্রামের শুরু থেকেই বন্ধুত্ব সিয়াম–জোভানের
প্রথম দেখা ২০১২ সালে। আদনান আল রাজিবের একটি বিজ্ঞাপনচিত্রের অডিশন দিতে গিয়েছিলেন তাঁরা। সেদিনই পরিচয়। সেই অডিশনে তাঁদের সঙ্গে পরিচয় হয় তৌসিফ মাহবুবেরও। বন্ধুত্বটা গাঢ় হয় আরও কিছুদিন পর। জোভানের বাসার পাশেই সিয়ামের কাজিনের বাসা। প্রায়ই সেখানে যেতেন সিয়াম। রাত-দিন আড্ডা হতো।

সেই আড্ডাতেই একে-অন্যের ভালো–মন্দ জেনেছেন। জানা হয়েছে শৈশবের গল্পও। মডেলিংয়ের পর একসঙ্গেই তাঁদের অভিনয় ক্যারিয়ার শুরু। আতিক জামানের ধারাবাহিক নাটক ‘ইউনিভার্সির্টি’র অডিশন দিতে গিয়েছিলেন একসঙ্গে। দুজনই দুটি চরিত্রে সিলেক্ট হন। যদিও তিন দিন শুটিং করে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ওই ধারাবাহিকে আর অভিনয় করেননি সিয়াম।

প্রথম ধারাবাহিকেই পরিচিতি পান জোভান। এরপর আবার দুই বন্ধু একসঙ্গে দীর্ঘদিন অভিনয় করেন মাবরুর রশিদ বান্নাহর ধারাবাহিক ‘নাইন অ্যান্ড আ হাফ’–এ। সিয়াম বলেন, ‘আমাদের স্ট্রাগলিং পিরিয়ড একসঙ্গে কেটেছে। মানসিকভাবে ভেঙে পড়লে একে অন্যকে যতটা পেরেছি সাহায্য করেছি, শক্তি জুগিয়েছি।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত