Ajker Patrika

‘গডফাদার’ তৈরির নেপথ্যের গল্প

জুবায়ের ইবনে কামাল, ঢাকা
‘গডফাদার’ তৈরির নেপথ্যের গল্প

‘গডফাদার’কে ধরা হয় উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত সিনেমার আদর্শ উদাহরণ। এমনকি আইএমডিবি রেটিংয়ে শীর্ষে থাকা ‘দ্য শশাঙ্ক রিডাম্পশন’ সিনেমাটি উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হলেও, সমালোচকদের মতে ‘গডফাদার’-এর মতো সফলভাবে কেউই উপন্যাসকে চলচ্চিত্রের পর্দায় আনতে পারেননি। সম্প্রতি ‘গডফাদার’ মুক্তির ৫০ বছর পেরিয়েছে। জেনে নেওয়া যাক, যেভাবে তৈরি হয়েছিলো গডফাদার…

মারিয়া পুজোর লেখা ‘গডফাদার’ উপন্যাসটি যখন বিখ্যাত হয়নি, তখনই ৮০ হাজার ডলারের বিনিময়ে বইটির স্বত্ব কিনে নেয় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান প্যারামাউন্ট পিকচারস। সংশ্লিষ্ট অনেকেই বলে থাকেন, বইটি যখন মাত্র একশ পৃষ্ঠা লেখা হয়েছিল, তখনই স্বত্ব কেনার পরিকল্পনা করছিল প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটি। একেই হয়তো বলে প্রযোজকের চোখ! কারণ এটি যে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ব্যবসাসফল সিনেমা হতে চলেছে, তা হয়তো অদৃশ্য চোখে দেখতে পেয়েছিলেন তাঁরা।

কিন্তু সিনেমাটি তৈরির শুরু থেকেই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আর পরিচালকের মধ্যে ছোট ছোট বিষয়ে বিরোধ লেগেই ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত যে সিনেমাটি তৈরি করা গেছে, এটিই ছিল অবাক করা ব্যাপার। প্রথমত, সিনেমাটিকে সত্তর দশকের গল্প হিসেবে দেখানোর জন্য উপন্যাসের অনেক কিছুই চিত্রনাট্যে পাল্টে ফেলা হয়। কিন্তু পরিচালক ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা চেয়েছিলেন, উপন্যাসের মতো সিনেমায় চল্লিশ-পঞ্চাশের দশকের গল্পই দেখাক। মুল চিত্রনাট্যকার ও উপন্যাসের লেখক মারিও পুজোকে তিনি রাজি করালেও প্রযোজক প্রতিষ্ঠান প্যারামাউন্ট পিকচারস তা মানতে চায়নি শুরুতে।

‘গডফাদার’ সিনেমার দৃশ্য। দ্বিতীয়বার নির্মাতা ফ্রান্সিসের সাথে আবার প্যারামাউন্টের দ্বন্দ্ব বাঁধে অভিনেতা নির্বাচনের সময়। ভিটো কর্লিয়নি চরিত্রের জন্য নির্মাতা ফ্রান্সিস তুখোড় অভিনেতা মারলন ব্র্যান্ডোকে নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী হন। কিন্তু প্রযোজনা সংস্থা প্যারামাউন্ট শুরুতেই এটি নাকচ করে। কারণ তখন সময়মতো না আসা, শুটিংয়ে দুর্ব্যবহারসহ দুর্নামে জর্জরিত ছিল ব্র্যান্ডোর ইমেজ। প্যারামাউন্ট পিকচারসের মিটিংয়ে পরিচালক ফ্রান্সিস রীতিমতো গড়াগড়ি খেয়েছিলেন মারলন ব্র্যান্ডোকে নেওয়ার জন্য। তখন কঠিন তিনটি শর্ত জুড়ে দিয়ে ব্র্যান্ডোকে নেওয়ার ব্যাপারে অনুমতি দেয় তারা।

প্রথমত, কপোলা ও ব্র্যান্ডোর যা পারিশ্রমিক তার তুলনায় অনেক কম দেওয়া হবে।

দ্বিতীয়ত, ব্র্যান্ডো যত বড় অভিনেতাই হন না কেন, এই সিনেমায় অভিনয়ের জন্য তাঁকে স্ক্রিন টেস্ট দিতে হবে।

আর তৃতীয়ত, এক মিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি করতে হবে, যাতে ব্র্যান্ডোর কোনো কাজের জন্য বাজেটের বেশি টাকা খরচ না হয়।

সত্যিকার অর্থে, সেসময়ের জন্য মারলন ব্র্যান্ডোকে এই তিনটি শর্তে রাজি করানো ছিল প্রায় অসম্ভব। পরিচালক ফ্রান্সিস যখন মারলন ব্র্যান্ডোর কাছে যান চরিত্রটি নিয়ে এবং অনুরোধ করেন স্ক্রিনটেস্ট দেওয়ার, তখন কয়েক মুহুর্তের জন্য মারলন ব্র্যান্ডো যেন বনে যান গডফাদারের ভিটো কর্লিয়নি। পরিচালক একটি সাক্ষাৎকারে সেই পরিস্থিতি বর্ণনা করেছিলেন এভাবে, ‘তিনি প্রথম তাঁর বড় চুল খুলে শক্ত করে বাঁধলেন। চোয়ালটা সামনের দিকে নিয়ে গডফাদার সিনেমার প্রথম সংলাপটি বললেন। যেন কয়েক সেকেন্ড মাত্র! একটু আগের মারলন ব্র্যান্ডো মুহুর্তেই হয়ে গেলেন গডফাদার।’

‘গডফাদার’ সিনেমার দৃশ্য। স্ক্রিনটেস্টের জন্য ধারণ করা কয়েক মুহুর্তের চলমান চিত্র দেখে সন্তুষ্ট হয়ে যায় প্যারামাউন্ট পিকচার্স। তারা মারলন ব্র্যান্ডোকে সাদরে আহবান জানায় গডফাদার সিনেমায় অভিনয় করার জন্য।

‘গডফাদার’ সিনেমায় বিখ্যাত সব দৃশ্য ও সংলাপ আছে। সিনেমাটির রন্ধ্রে রন্ধ্রে রয়েছে সে সময়ের মাফিয়া ও গ্যাংস্টারদের কোলাহল। এ সবকিছুই দাঁড়িয়ে আছে সিনেমাটির সম্পাদনা ও চলচ্চিত্রের উচ্চ মানের ভাষার কারণে। ‘গডফাদার’ সিনেমায় কমলা ফলকে মৃত্যুর প্রতীক হিসেবে দেখানো হয়। যখন কোনো মৃত্যু, বিশেষ করে খুন হতে দেখা যায়, তখনই আশেপাশে কমলার আধিক্য দেখতে পাওয়া যায়। ভিটো কর্লিয়নি চরিত্রটিকে প্রথমবার যখন খুন করার জন্য আক্রমণ করা হয়, তখন তিনি একটি দোকানের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন যেখানে কমলা বিক্রি হচ্ছিল।

কিংবা মাইকেল কর্লিয়নিকে একটি সভায় ডেকে হত্যা করার জন্য আক্রমণের সময় খাবার টেবিলের উপর হঠাৎ একটি কমলা গড়িয়ে পরতে দেখা যায়। এটিকে চলচ্চিত্রের ভাষায় বলা হয়— ফোরশেডয়িং।

সবচেয়ে দারুণ ছিল এই সিনেমার চিত্রগ্রহণ। পুরো সিনেমা জুড়ে একটি অন্ধকার জগতের আবহ তৈরি করা হয়েছিল। এমন গল্পও প্রচলিত আছে যে, সিনেমাটি শুরুর সময় আলো-আঁধারির একটি আবহ তৈরি করার জন্য প্রায় এক সপ্তাহ শুটিং পিছিয়েও দেওয়া হয়েছিল।

শুটিংয়ের মাঝামাঝি সময়ে প্রযোজক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পরিচালকের দ্বন্দ্ব তুঙ্গে উঠে গিয়েছিল। পরিচালক হিসেবে ফ্রান্সিসকে বরখাস্ত করার কথাও ভাবছিল প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু বেঁকে বসেন মারলন ব্র্যান্ডো। সাফ জানিয়ে দেন, পরিচালককে বরখাস্ত করা হলে তিনিও কাজ করবেন না।

প্রচুর চাপ, উভয় দিকের দ্বন্দ্ব ও বিভিন্ন বড়সড় বাধাকে পেছনে ফেলে যখন সিনেমাটি মুক্তি পেল, তখন বিশ্বজুড়ে কী ঘটলো এই পঞ্চাশ বছরে তা নিশ্চয়ই দর্শক মাত্রই জানেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তিন বছর পর বিচ্ছেদের খবর দিলেন বিন্দু

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ২৮
বিন্দু। ছবি: সংগৃহীত
বিন্দু। ছবি: সংগৃহীত

২০১৪ সালে ব্যবসায়ী আসিফ সালাহউদ্দিন মালিককে বিয়ে করেন অভিনেত্রী আফসান আরা বিন্দু। বিয়ের পর শোবিজ থেকে পুরোপুরি নিজেকে গুটিয়ে নেন তিনি। অভিনয় ছেড়ে হয়ে ওঠেন সংসারী। বিয়ের চার বছর পর গুঞ্জন রটে, সংসার ভেঙেছে বিন্দুর। তবে বিচ্ছেদ নিয়ে তখন কোনো কথা বলেননি বিন্দু কিংবা তাঁর স্বামী। অবশেষে নিজের বিচ্ছেদের বিষয়টি নিশ্চিত করলেন অভিনেত্রী। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বিন্দু জানান, ২০২২ সালে বিচ্ছেদ হয়েছে তাঁর।

২০২২ সালে বিচ্ছেদ হলেও ২০১৭ সাল থেকেই স্বামীর সঙ্গে সেপারেশনে ছিলেন বিন্দু। পাঁচ বছর পর তাঁরা চূড়ান্তভাবে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন। বিন্দু বলেন, ‘অনেকেই মনে করেন, আমি এখনো বিবাহিত। কিন্তু না, আমার বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। আমার সংসারের জার্নিটা অনেক ছোট ছিল।’

বিচ্ছেদের কারণ জানিয়ে বিন্দু বলেন, ‘আলাদা হওয়ার জন্য অনেক সময় বড় কারণ থাকে, বড় ঘটনা ঘটে। অনেক সময় আবার তেমন কোনো কারণও দরকার হয় না। আমার এই জার্নিতে আরও একজন মানুষ জড়িত। তারও ব্যক্তিগত জীবন আছে। বিচ্ছেদ নিয়ে কোনো ব্যাখ্যা দিয়ে তাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে চাই না।’

২০০৬ সালে লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতা দিয়ে শোবিজে যাত্রা শুরু হয় বিন্দুর। অল্প দিনেই হয়ে ওঠেন মিডিয়ার নিয়মিত মুখ। অভিনয় থেকে বিরতি নেওয়ার আগে ২০১৪ সালের শুধু কোরবানির ঈদেই প্রচারিত হয় তাঁর অভিনীত ৫২টি নাটক। ছোট পর্দার পাশাপাশি বিন্দু অভিনয় করেছেন সিনেমাতেও।

ক্যারিয়ারের শুরুতে আরিফিন শুভর সঙ্গে জুটি বেঁধে অনেক নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। পর্দায় তাঁদের জুটি অনেক জনপ্রিয় ছিল। অনস্ক্রিন কেমেস্ট্রির প্রভাব পড়েছিল দুজনের বাস্তব জীবনেও। একসময় শুভর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান বিন্দু। সেই প্রেমের কথা স্বীকারও করেছেন অভিনেত্রী। কেন তাঁদের সম্পর্ক ভেঙে গিয়েছিল? বিন্দুর সংক্ষিপ্ত জবাব, ‘এর উত্তর আমার কাছে নেই। দুটি মানুষের জার্নি যে একসঙ্গে একই গন্তব্যে শেষ হবে, এমন তো কোনো কথা নেই।’

প্রায় এক দশকের বিরতি কাটিয়ে ২০২৩ সালে ‘উনিশ ২০’ ওয়েব ফিল্ম দিয়ে অভিনয়ে ফেরেন বিন্দু। মিজানুর রহমান আরিয়ানের পরিচালনায় এতে বিন্দুর বিপরীতে ছিলেন সেই আরিফিন শুভই। তবে এরপর আর কোনো কাজে দেখা যায়নি বিন্দুকে। তবে তিনি নিয়মিত অভিনয় করতে চান। বিন্দু বলেন, ‘শিল্পী হিসেবে কাজ করতে প্রস্তুত। এখন আমাকে নিয়ে কাজ করার চিন্তা, আমার পেছনে ইনভেস্ট করার বিষয়গুলো ভাবতে হবে। এমন ধরনের কাজ করতে চাই, যেগুলো এখনো করিনি। আমি চাই, নির্মাতারা আমাকে নিয়ে এমনভাবে ভাবুক, যেমনটা আগে ভাবা হয়নি।’

অভিনয় ছেড়ে দিয়ে বছর পাঁচেক আগে ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়েছেন বিন্দু। গুলশানে রয়েছে তাঁর একটি বুটিক হাউস। ‘আফসান বিন্দু ডিজাইনার স্টুডিও’ নামের এ ব্র্যান্ডের পোশাক বিন্দু নিজেই ডিজাইন করেন। ২০২০ সালে যখন প্রতিষ্ঠানটি শুরু করেন বিন্দু, তখন তাঁর কর্মীর সংখ্যা ছিল মাত্র একজন। তবে এখন তাঁর সঙ্গে ১৫ জন কাজ করেন বলে জানিয়েছেন অভিনেত্রী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘ইত্যাদি’র নতুন পর্ব এবার চুয়াডাঙ্গায়

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র দৃশ্য
ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র দৃশ্য

নব্বইয়ের দশক থেকে স্টুডিওর চারদেয়ালের বাইরে বেরিয়ে শিকড়ের সন্ধানে দেশের নানা প্রান্তে শুটিং করা হচ্ছে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদির। তারই ধারাবাহিকতায় ইত্যাদির নতুন পর্ব ধারণ করা হয়েছে ইতিহাস ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ প্রাচীন জনপদ চুয়াডাঙ্গায়।

এবারের ইত্যাদির মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছিল ব্রিটিশ আমলে তৈরি শতাধিক বছরের প্রাচীন হাজারদুয়ারি নামে খ্যাত ঐতিহ্যবাহী স্কুল নাটুদা মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। এবারের পর্বে গান রয়েছে দুটি। একটি গান গেয়েছেন লোকসংগীতশিল্পী বিউটি ও পান্থ কানাই। গানটির কথা লিখেছেন মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান, সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদী।

এ ছাড়া অনুষ্ঠানের শুরুতে চুয়াডাঙ্গার কৃষ্টিকথা ও ইতিহাসগাথা নিয়ে রয়েছে শাহ আলম সনির কথায় একটি পরিচিতিমূলক গানের সঙ্গে নৃত্য। গানটির সুর করেছেন হানিফ সংকেত, সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদী। পরিবেশন করেছেন স্থানীয় নৃত্যশিল্পীরা। এ ছাড়া ইত্যাদির নতুন পর্বে থাকছে চুয়াডাঙ্গা নিয়ে কয়েকটি প্রতিবেদন। রয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলার ইতিহাস-ঐতিহ্যসহ এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান-স্থাপনার ওপর একটি তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন।

ইত্যাদির নিয়মিত আয়োজন চিঠিপত্র পর্বে উঠে এসেছে চুয়াডাঙ্গার একজন ব্যতিক্রমী ছড়াকারের গল্প। আরও রয়েছে সামাজিক অসংগতি ও সমসাময়িক প্রসঙ্গনির্ভর নাটিকা। দানের নামে ফটোসেশন, সংসারের ভারে স্বপ্নভঙ্গ, মিষ্টি নিয়ে অনাসৃষ্টি, ইংরেজির দাপটে অসহায় বাংলা ভাষা, বোঝা না বোঝার বোঝা, স্টাইলিশ আইকনের বিপত্তি, লোম বাছতে কম্বল উজাড়সহ কয়েকটি নাট্যাংশে অভিনয় করেছেন সোলায়মান খোকা, সুভাশিষ ভৌমিক, আবদুল্লাহ রানা, আমিন আজাদ, কাজী আসাদ, মুকিত জাকারিয়া, আনোয়ার শাহী, শাহেদ আলী, জামিল হোসেন, আনন্দ খালেদ, তারিক স্বপন, আবু হেনা রনি প্রমুখ।

ইত্যাদির এই পর্ব দেখা যাবে ২৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ টেলিভিশনে রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর। ইত্যাদি রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। নির্মাণ করেছে ফাগুন অডিও ভিশন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘মহাশূন্যে সাইকেল’ নাটকের চার দিনে সাত প্রদর্শনী

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘মহাশূন্যে সাইকেল’ নাটকের দৃশ্য
‘মহাশূন্যে সাইকেল’ নাটকের দৃশ্য

গত বছর ডিসেম্বরে মঞ্চে এসেছিল অনুস্বর নাট্যদলের নাটক ‘মহাশূন্যে সাইকেল’। বাংলাদেশ মহিলা সমিতিতে পাঁচ দিনে নাটকটির আটটি প্রদর্শনী হয়েছিল। বছর ঘুরে আবারও মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে মহাশূন্যে সাইকেল নাটকের প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে অনুস্বর। ২৪ থেকে ২৭ ডিসেম্বর টানা চার দিন দেখা যাবে নাটকের সাতটি প্রদর্শনী।

কথাসাহিত্যিক শাহাদুজ্জামানের লেখা একই শিরোনামের গল্প অবলম্বনে এর নাট্যরূপ দিয়েছেন লেখক নিজে। নির্দেশনায় সাইফ সুমন। ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দেখা যাবে মহাশূন্যে সাইকেল। ২৫ থেকে ২৭ ডিসেম্বর প্রতিদিন বিকেল ৫টা ও সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মঞ্চস্থ হবে আরও ছয়টি প্রদর্শনী।

নাট্যকার শাহাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা কিছু কথা অনেকের সঙ্গে বলি, কিছু কথা নির্দিষ্ট মানুষের সঙ্গে বলি আর কিছু কথা শুধু নিজের সঙ্গে বলি। যেকোনো ক্রান্তির সময় নিজের সঙ্গে এই বোঝাপড়ার মাত্রা এবং ব্যাপ্তি সম্ভবত বেড়ে যায়। মহাশূন্যে সাইকেলের মূল ভাবনাটা এ রকম। গত বছর এই গল্পের নাট্যরূপ দিই। একজন ব্যক্তি নিজেকে দুই ভাগ করে তার এই দুই সত্তার সঙ্গে মঞ্চে কথোপকথন করছে। দর্শক হিসেবে একজন ব্যক্তির এই একান্ত বিভক্ত সত্তার ভেতরে এই কথোপকথন দেখার ভেতরে একটা গোপন কৌতূহল হয়তো আছে। কিংবা নিজের সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়ার আনন্দ আছে।’

নির্দেশক সাইফ সুমন বলেন, ‘ভোগবাদিতা আর ব্যক্তিস্বার্থের কারণে মানুষ এখন প্রতিনিয়তই পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। পরিবার, বন্ধু, সমাজ থেকে ক্রমেই বিচ্ছিন্ন হচ্ছি আমরা। কখনো কখনো মানুষের মধ্যে বাস্তবের চেয়ে কল্পনা বা অলৌকিক জগৎ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। পরিবারের সঙ্গে থেকেও একা অনুভব করে। সেই কথাই বলার চেষ্টা হয়েছে নাটকে।’

মহাশূন্যে সাইকেল নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোহাম্মদ বারী, এস আর সম্পদ, প্রশান্ত হালদার, নুরুজ্জামান সরকার, রীমা প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নতুন লুকে চমকে দিলেন কিয়ারা আদভানি

বিনোদন ডেস্ক
কিয়ারা আদভানি। ছবি: সংগৃহীত
কিয়ারা আদভানি। ছবি: সংগৃহীত

‘কেজিএফ’ সিনেমার দুই পর্বের ব্যাপক সাফল্যের পর কন্নড় সুপারস্টার ইয়াশ যুক্ত হয়েছেন মালয়ালম নির্মাতা গিতু মোহনদাসের সিনেমায়। ‘টক্সিক: আ ফেয়ারিটেল ফর গ্রোনআপস’ নামের কন্নড় ভাষার এ সিনেমায় প্রথমবারের মতো ইয়াশের নায়িকা হয়েছেন কিয়ারা আদভানি। টক্সিকে কিয়ারার চরিত্রের নাম নাদিয়া। গতকাল প্রকাশ করা হয়েছে এ সিনেমায় কিয়ারার চরিত্রের লুক।

শোবিজে কিয়ারার এক যুগ হতে চলেছে। ২০১৪ সালে ‘ফুগলি’ দিয়ে যাত্রা শুরুর পর এ পর্যন্ত ২০টির মতো সিনেমায় অভিনয় করেছেন। প্রতিটিতেই দেখা দিয়েছেন বৈচিত্র্যময় চরিত্রে। তবে টক্সিকে কিয়ারার চরিত্রটি যে একেবারেই আলাদা হতে চলেছে, সে আভাস পাওয়া গেল সদ্য মুক্তি পাওয়া ফার্স্ট লুক পোস্টারে। এতে তাঁকে দেখা যাবে একজন সার্কাসশিল্পী হিসেবে।

ফার্স্ট লুক পোস্টারে আলো ঝলমলে সার্কাসের সেটে অফ-শোল্ডার ভেলভেট গাউন পরে দাঁড়িয়ে আছে কিয়ারা অভিনীত নাদিয়া চরিত্রটি। চোখে-মুখে বিষণ্নতা, ক্লান্তির ছাপ। সার্কাসের মঞ্চে জাঁকজমক আবহে নৃত্যরত যে শিল্পীকে দেখা যায় দর্শকের সামনে, তার মনের ভেতরে অনেক সময় চলে দুঃখের দোলাচল। ভেতরে জমাট কষ্ট নিয়েই হাসিমুখে দর্শকের সামনে পারফর্ম করে তারা। টক্সিকের পোস্টারে তেমনটাই ধরা পড়েছে। এমনই এক জটিল চরিত্র নিয়ে দর্শকের সামনে আসবেন কিয়ারা।

ভিএন প্রোডাকশন এবং মনস্টার মাইন্ড ক্রিয়েশনসের ব্যানারে নির্মিত বিগ-বাজেট সিনেমা টক্সিক মুক্তি পাবে ২০২৬ সালের ১৯ মার্চ। দক্ষিণি মেগাস্টার যশ ও কিয়ারার এই নতুন রসায়ন বড় পর্দায় দেখার জন্য এখন থেকেই অপেক্ষায় অনুরাগীরা। এতে আরও অভিনয় করেছেন নয়নতারা, তারা সুতারিয়া, হুমা কুরেশি, অক্ষয় ওবেরয় প্রমুখ।

ইংরেজি ও কন্নড়—দুই ভাষাতেই টক্সিক সিনেমার শুটিং করা হয়েছে। পাশাপাশি হিন্দি, তেলুগু, তামিল, মালয়ালমসহ বিভিন্ন ভাষায় ডাব করা হবে। এতে কিয়ারার পারফরম্যান্স নিয়ে নির্মাতা গিতু মোহনদাস বলেন, ‘কিছু পারফরম্যান্স শুধু পর্দায় নয়, প্রভাব ফেলে শিল্পীর জীবনেও। টক্সিক সিনেমায় কিয়ারা যা করেছে, তার কোনো তুলনা হয় না। সিনেমাটি নিয়ে আমাদের প্রথম আলাপের মুহূর্ত থেকেই তিনি চরিত্রটির প্রতি নিজেকে সম্পূর্ণ সমর্পণ করেছেন। তিনি শুধু নাদিয়া চরিত্রে অভিনয় করেননি, নিজেও চরিত্রটির মতো করেই যাপন করেছেন।’

প্রসঙ্গত, বলিউডের তারকা দম্পতি কিয়ারা আদভানি ও সিদ্ধার্থ মালহোত্রার সংসারে নতুন সদস্য এসেছে গত ১৫ জুলাই। এখন সন্তানকে নিয়েই পুরো সময়টা কাটছে অভিনেত্রীর। আর একটু একটু করে নিচ্ছেন আবার শোবিজে ফেরার প্রস্তুতি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত