ধর্ষণে গর্ভবতী গাগাকে রাস্তায় ছুড়ে ফেলা হয়েছিল

বিনোদন ডেস্ক
আপডেট : ২২ মে ২০২১, ১৮: ৩৯
Thumbnail image

ঢাকা: সংগীত তারকা লেডি গাগার বয়স তখন মাত্র ১৯। পৃথিবীর কঠিন বাস্তবতা তখনো ছোঁয়নি তাঁকে। গান নিয়েই স্বপ্ন। গানকে ঘিরেই সমস্ত প্রচেষ্টা। ওই বয়সেই এমন এক পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় তাঁকে, যেটা সারা জীবন লেডি গাগাকে তাড়িয়ে বেড়িয়েছে।

তখন নিজের কিছু গান রেকর্ড করছিলেন গাগা। একজন পরিচিত প্রযোজক ছিলেন। তাঁর স্টুডিওতে কাজের জন্য মাঝেমধ্যেই যেতে হতো গাগাকে। একদিনের ঘটনা। স্টুডিওতে গাগা। প্রযোজকও আছেন। কাজের ফাঁকে হঠাৎ তিনি গাগাকে এমন এক কথা বলে বসলেন, যেটা শুনে প্রথমে নিজের কানকেও বিশ্বাস করতে পারেননি শিল্পী। তাঁকে কাপড় খুলে নগ্ন হতে বলেন প্রযোজক!

লেডি গাগা। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

সামলে উঠতে কয়েক মুহূর্ত লাগল লেডি গাগার। তারপর তিনি ‘না’ বলে স্টুডিও থেকে বেরিয়ে যেতে চাইলেন। প্রযোজক হুমকি দিলেন গাগার সব গানের রেকর্ড নষ্ট করে ফেলার।

ঘটনা এখানেই শেষ নয়। ওই স্টুডিওতে নির্মমভাবে তাঁকে ধর্ষণ করেন প্রযোজক। ১৯ বছরের একটা মেয়ে। গান গাইতে এসে এমন পরিস্থিতির মুখে ‍পড়বেন, কল্পনায়ও আসেনি কখনো। কয়েক মাস ঘর থেকে বের হতে পারেননি গাগা। সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়েন। ক্রমেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।

লেডি গাগা। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

ওই সময়ের স্মৃতি সম্প্রতি সামনে এনেছেন সংগীত তারকা লেডি গাগা। প্রিন্স হ্যারি ও অপরাহ উইনফ্রের প্রযোজনা ও উপস্থাপনায় ‘দ্য মি ইউ কান্ট সি’ নামে একটি নতুন শো শুরু হয়েছে। অ্যাপল প্লাস টিভিতে প্রচার হয় শোটি। সেখানে অস্কার ও গ্র্যামিজয়ী লেডি গাগা জীবনের এ কঠিন সময় নিয়ে কথা বলেন।

গাগা বলেন, ‘তিনি আমাকে ধর্ষণ করে ঘরের এক কোনায় ফেলে চলে যান। কারণ আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। বমি হচ্ছিল। এ ঘটনায় আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি। বেশ কয়েক বছর ধরে আমার চিকিৎসা চলে।’

লেডি গাগা। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

ওই প্রযোজকের নাম মুখে আনেননি গাগা। বলেন, ‘সারা জীবন আমি তাঁর চেহারা দেখতে চাই না। দীর্ঘ সময় আমি নিজের শরীরকে ঘৃণা করেছি। এই ট্রমা কাটিয়ে উঠতে আমার অনেক সময় লেগেছে।’

দীর্ঘদিন এ মানসিক যন্ত্রণায় ভুগে একপর্যায়ে তিনি ফিরে আসেন। নতুন শক্তি নিয়ে ঘুরে দাঁড়ান। গানকেই আঁকড়ে থাকেন। তারপর তো বাদবাকি ইতিহাস। লেডি গাগা হয়ে ওঠেন তারকাশিল্পী। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে তাঁর নামডাক। লেডি গাগার ভাষায়, ‘ওই ঘটনা আমি আর কখনোই মনে করতে চাই না। এটাও চাই না, এ নিয়ে আমাকে কোনো প্রশ্ন করা হোক। সবাইকে কেবল একটা কথাই জানাতে চাই, এমন জঘন্য ঘটনার পরেও জীবন শেষ হয়ে যায় না। জীবনের কাছ থেকে তখনো অনেক উপহার পাওয়া বাকি।’

লেডি গাগা। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকেনিজের জীবন দিয়ে উপলব্ধি করেছেন বলেই আরও যাঁরা মানসিক কষ্টে ভোগেন, তাঁদের জন্য সব সময় কিছু করতে চেয়েছেন লেডি গাগা। তাই ২০১২ সালে তৈরি করেন ‘বর্ন দিজ ওয়ে’ নামে একটি সংস্থা। বিভিন্ন মানসিক জটিলতায় ভুগছেন যাঁরা, তাঁদের সহায়তা করে লেডি গাগার এই সংগঠন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত