মাহমুদ দিদার
ঢাকা: ১৯৭৫ সালে আমেরিকান যুবক টেরেন্স মালিক কিউবা যাইতেছিল। লগে আছিলো সাংবাদিক লেখিয়ে জ্যাকব বরাকম্যান। হে আবার মালিকরে পরিচয় করাইয়া দিলো লগে থাকা প্রডিউসার বার্ট স্নেইডার– এর লগে। ইতিমধ্যে টেরেন্স তার পয়লা চলচ্চিত্র ‘ব্যাডল্যান্ড’ কইরা ফালাইছেন। মেকার টেরেন্স মালিক তার চলচ্চিত্র ‘ডেজ অব হেভেন’ এর কাহিনী পয়দা করেন কিউবা যাইতে যাইতে।
পাক্কা আলাপ হইলো। টাকা দেয়নাওয়ালা ঈশ্বর স্নেইডার। মহাত্মা প্রযোজক। জাস্টিন হফম্যান অথবা আল পাসিনোরে তিনি চাইছিলেন ‘ডেজ অব হেভেন’ এর বুনিয়াদী চরিত্রখান করার জন্য। লিড রোল আর কি। তারা হয়তো ভাব দেখাইছিলেন।
তো সমস্যা কী? টেরেন্স মালিক নতুন যুবা রিচার্ড গিয়াররে কাস্টিং দেন। সিনেমাটোগ্রাফার নেস্টর আলমেন্ডরস কে সে ভাও কইরা ফেলে। এই লোক আবার পলিটিকাল বিপ্লবী। কিউবা বিপ্লবে কাম কাইজ করছে। তো ইতিমধ্যে নেস্টর আলমেন্ডরস, ফ্রান্সিস ত্রাফোর্ট এর বিখ্যাত সিনেমা ‘ওয়াইল্ড চাইল্ড’ কইরা ফালাইছে।
মালিক এর ফটোগ্রাফি জ্ঞান পাল্লা দেওয়ার মতো। এইডা পুলকিত করে নেস্টররেও। তো টেরেন্স তার দোসরা বই ‘ডেজ অব হেভেন’ ১৯৭৮ সনে বানাইয়া ফালান। পরের সনে তিনি সেরা চলচ্চিত্রকার হন কান সিনেমা মাহফিলে। কানে টেরেন্স সেরা হইলেও অস্কারে নেস্টর মাস্টার লেভেলের স্বীকৃতি হজম করেন। সেরা সিনেমাটোগ্রাফার অভিধা লাভ করেন নেস্টর। এই সিনেমা আরও তিনটা মনোনয়ন পায় অস্কারে। পোশাক-আশাক, অরিজিনাল স্কোর, শব্দর জন্য।
‘ডেজ অব হেভেন’-রে মাস্টারপিস ধরা হয় তার ইমেজারি সেক্সের লাইগা। ক্যামেরা ক্যামনে ছবির লগে সেক্স করে তা দেখন যায়। হেভি কিন্তু। মজা লওন যাইবো। এই সিনেমা পরে আমেরিকার কি এক কংগ্রেস আছে নাকি ওইখানে মাস্টারপিস হিসেবে মজুত রাখছে অরা।
গল্প আহামরি নয়। নায়িকা ব্রুক এডামস, সিনেমায় নাম ‘আবি’, খুব প্রান্তিক মায়াভরা মুখ। নায়ক আগেই কইছি রিচার্ড গিয়ার। সিনেমায় নাম ‘বিল’। বিল-এর ছোট বইন আছে লিন্ডা নাম। চঞ্চল, মজারু। বিল শিকাগোর এক স্টিল মিলের শ্রমিক।
স্টিল মিলটা সেট আকারে রিয়েল লাইফ। স্পার্ক দেখতে ভালো। আগুন গলে নিরীহ পাটাতন হওয়ার মজা দেখা যায়। কম্পোজিট, ছোটো শটে বেশ ডিটেল পাওয়া যায়।
যেই কথা বলছিলাম, বিল-এর মেজাজ একটু তিরিক্ষি হইছিল একদিন। মিলের ভেতরেই হারামি টাইপের বসরে মাইরা ফেলে। তারপর হের গার্লফ্রেন্ড আবি আর ছোট বইন লিন্ডারে লইয়া ভাগে। এই যে ল্যান্ডস্কেপের ভেতর দিয়া হুলুস্থুল শব্দ আর কালো ধোয়া তুইলা যে রেল গাড়ি ছুটতাছে আর সিনেমাটোগ্রাফার নেস্টর ক্যামেরাটা লার্জার লম্বা শটে ধইরা যা বাইর করছে তা দেহনের মত মাইরি। তার উপরি পাওনা দূরগামী মাঠে মিলিয়ে যাওয়া গম গাছের পাকনা শরীরে রোদের খেলা।
এটাকে আমি বলি ছবির পরম যৌনতা। ইমেজ এন্ড ইমাজিনেশনের যৌথ সহবাস। হা! দেখেন, দেখেন না কেন মিয়া! ফিল্মমেকার হইছো আর দেখবা না? সিনেমা কারে কয় শিখবা না? নাকি হুদাই ফুটেজ কালেক্ট কইরা ফিলিম বইলা চালাইয়া দিবা?
তারপর তো তারা টেক্সাসের এক খামারে আইসা পড়ে। এইখানে ভ্রাম্যমাণ সংসার, প্রেম অথবা ভবিষ্যত না দেখা জীবনের বাসভূমি হতে পারে ভেবে একটা না জাগতিক ভালো লাগা আচ্ছন্ন করে দেয় তাঁদেরকে। বেশ হেভেনলি জায়গাটা।
তো তারা কাজ করছিল। চোখের সীমানা বরাবর শস্যক্ষেত। পোড় খাওয়া চেহারা। শ্রমিকের নেতানো শরীর। জীর্ণ পোশাক। শ্রমজীবী মানুষের শ্রেণীবদ্ধ দুনিয়া আর ট্র্যাডিশনকে জায়েজ করিয়ে দেয়।
এক রাতে পঙ্গপালের আক্রমণ দেখা দিল। সমস্ত শ্রমিক নাইমা পড়ল প্রতিরোধে। পরিচালকের কী শক্তি! ক্যামেরার প্রশান্ত চোখে, সময় নিয়ে ফোকাসে তুইলা আনল পোকাদের সাথে শস্যের জীবনের অপরিসীম মধু কিংবা প্রেম।
কিন্তু কৃষকের তাড়া ক্ষেতে হয় পোকাদের। তারাও পালায়। এই চলচ্চিত্রের সব থেকে লড়াকু ছবি এইটা। দেখতে দেখতে আলফ্রেড হিচকককে মনে পইড়া যায়। দ্য বার্ড! পাখিদের কোরাস আক্রমণ। ঝাঁকে ঝাঁকে পাখিরা নেমে আসলো কি এক আক্রোশে!
কাজ আর ক্লান্তির হিসেব মিলিয়ে সময় পার হইয়া যায়। সবুজ, বিরল সুন্দর শস্যক্ষেতে লুটিয়ে পড়ছিল বিল আর আবির ভালোবাসা। কিছুটা এড়িয়ে। সঙ্গোপনে।
সিনেমার ঘটনা এইভাবে চলে না। একটা লেভেলে ক্লাইমেক্স দরকার পড়ে। এখন আমরা খুব সাবধানে একটা একিউট ক্লাইমেক্সে ঢুকব। টেরেন্স এর গল্প লিনিয়ার একটা বাতলানো পথে আগায় (‘দি ট্রি অব লাইফ’ ছাড়া)। ঘটনাচক্রে বিল আর আবি জানতে পারে, তাদের খামারের মালিক অসুস্থ। কিছুদিন পর মারা যাবে।
দুষ্টু হতচ্ছাড়া বিল আর ভবিতব্যের বিচারে অনিশ্চিত গন্তব্যের নারী আবি ঠিক করে, মৃত্যুমুখী খামার মালিকের লগে আবি-র বিয়া দিবে। যাতে করে তার সমস্ত সম্পদের মালিক হবে আবি।
ঠিক তখন থেকেই হয়ত তাদের স্বর্গের জীবন শুরু হবে। বিয়েটা হইয়া গেলে আমরা বেশ একটা সিনেম্যাটিক মোমেন্টাম দেখি। একঅর্থে এটা ‘গিমিক’ হিসেবে কাজ করে। আবি-র ভাই পরিচয় দিয়ে বিল থাইকা যায় খামারবাড়িতে। একদিন গোপনে আবিকে চুমা খাইতে গিয়া ধরা পইড়া যায় বিল। ভাই পরিচয় টিকলো না। খামার মালিকের চৌকিদারের নিকট ধরা খাইয়া যায়।
বিলের তো একটা মনোজাগতিক চাপ তইরি হয়। তাইনা? হবেই তো। দীর্ঘদিনের প্রেমিকা এখন অন্যের ঘরে সংসার ধর্ম করতেছে। বিলের ভাগ্য আসলেই খারাপ। দৌড়ের উপর থাকতে হয়েছে এমনি তারে গল্পের শুরু থেকে।
না। লোকটা মরে না। সময় পার হয়ে যায়। দিব্যি বাইচা আছে বহাল তবিয়তে। প্যারাডক্স কারে কয়! আবি সত্যিকারের প্রেমে পড়ে যায় খামার মালিকের। মৃত্যু তো দূরের কথা। এখন হেভি একটা পিরিতি জমে যায়।
বিল কী করবে এখন? এক ধরনের অঘোষিত, অমোঘ ক্ষোভ এসে তারে পীড়া দেয়। ক্ষেপাটে যুবক আবারও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। আরও একটা খুন। এবার খামার মালিক। আবার পালানো। কিন্তু ঘোড়সওয়ার পুলিশের হাত থেকে বেশিক্ষণ বাঁচতে পারে না। গুলিবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়ে।
একটা ক্ষীণকায় পাথুরে নদীর নির্মল জলে লুটিয়ে পড়ে বিলের শরীর। হ্যাঁ! আবি এই ঘটনার সাক্ষী। সে লাশ দেখেছিল। জড়িয়ে ধরে কেঁদেছিল। তীব্র। বোন লিন্ডাও ছিল। পরে অবশ্য আবি খামার মালিকের সমস্ত সম্পত্তি পায়। সে লিন্ডাকে একটা বোর্ডিং স্কুলে দিয়ে আসে।
আর কোনো একদিন হটাৎ অনেক কোলাহল আর প্রচণ্ড বিষণ্ণতা উপেক্ষা করে আবি প্রথম বিশ্বযুদ্ধগামী সৈন্যদের সাথে কোনো এক ট্রেনে চেপে শহর ত্যাগ করে। আর লিন্ডা তার কোনো এক বন্ধুর লগে বিদ্যালয় থেইকা পালায়।
স্টুডিও লাইটের ব্যবহার। ঘনায়মান আয়ু কমে আসা দিনের আলোয় সিলুটে তোলা শটগুলো সুন্দরের মহামারী লাগিয়ে দেয়। সূর্যের প্রখর আলো ও বিউটিফুল এক্সপোজার হিসেবে কাজে লাগিয়ে দেয় নেস্টর টেরেন্স জুটি।
সীমিত রিয়েল লাইফ লাইটে অবজেক্ট দেখার যে সিনেমাটোগ্রাফি তা ‘বই’টিকে অদ্ভুত প্রণোদনা দেয়। আলাদা করে তোলে অন্য বই থেকে।
টেরেন্স ‘ডেজ অব হেভেন’ শেষ করতে টাইম নেয় দুই বছর। তো সিনেমার দিন-দুনিয়া বিচারে আমরা কোনটাকে ফিল্ম বলবো আর কোনটাকে ‘ফুটেজ শো’ বলবো তার একখান উদাহরণ হইতে পারে ‘ডেজ অব হেভেন’। সিনেমাটোগ্রাফি হৃদয় দিয়ে ফিল করার জন্য এই চলচ্চিত্র আসলেই মাস্টারপিস।
দেখুন ‘ডেজ অব হেভেন’ সিনেমার ট্রেলার:
লেখক: মাহমুদ দিদার, নির্মাতা
(লেখকের ভাষারীতি অক্ষুন্ন রাখা হয়েছে)
ঢাকা: ১৯৭৫ সালে আমেরিকান যুবক টেরেন্স মালিক কিউবা যাইতেছিল। লগে আছিলো সাংবাদিক লেখিয়ে জ্যাকব বরাকম্যান। হে আবার মালিকরে পরিচয় করাইয়া দিলো লগে থাকা প্রডিউসার বার্ট স্নেইডার– এর লগে। ইতিমধ্যে টেরেন্স তার পয়লা চলচ্চিত্র ‘ব্যাডল্যান্ড’ কইরা ফালাইছেন। মেকার টেরেন্স মালিক তার চলচ্চিত্র ‘ডেজ অব হেভেন’ এর কাহিনী পয়দা করেন কিউবা যাইতে যাইতে।
পাক্কা আলাপ হইলো। টাকা দেয়নাওয়ালা ঈশ্বর স্নেইডার। মহাত্মা প্রযোজক। জাস্টিন হফম্যান অথবা আল পাসিনোরে তিনি চাইছিলেন ‘ডেজ অব হেভেন’ এর বুনিয়াদী চরিত্রখান করার জন্য। লিড রোল আর কি। তারা হয়তো ভাব দেখাইছিলেন।
তো সমস্যা কী? টেরেন্স মালিক নতুন যুবা রিচার্ড গিয়াররে কাস্টিং দেন। সিনেমাটোগ্রাফার নেস্টর আলমেন্ডরস কে সে ভাও কইরা ফেলে। এই লোক আবার পলিটিকাল বিপ্লবী। কিউবা বিপ্লবে কাম কাইজ করছে। তো ইতিমধ্যে নেস্টর আলমেন্ডরস, ফ্রান্সিস ত্রাফোর্ট এর বিখ্যাত সিনেমা ‘ওয়াইল্ড চাইল্ড’ কইরা ফালাইছে।
মালিক এর ফটোগ্রাফি জ্ঞান পাল্লা দেওয়ার মতো। এইডা পুলকিত করে নেস্টররেও। তো টেরেন্স তার দোসরা বই ‘ডেজ অব হেভেন’ ১৯৭৮ সনে বানাইয়া ফালান। পরের সনে তিনি সেরা চলচ্চিত্রকার হন কান সিনেমা মাহফিলে। কানে টেরেন্স সেরা হইলেও অস্কারে নেস্টর মাস্টার লেভেলের স্বীকৃতি হজম করেন। সেরা সিনেমাটোগ্রাফার অভিধা লাভ করেন নেস্টর। এই সিনেমা আরও তিনটা মনোনয়ন পায় অস্কারে। পোশাক-আশাক, অরিজিনাল স্কোর, শব্দর জন্য।
‘ডেজ অব হেভেন’-রে মাস্টারপিস ধরা হয় তার ইমেজারি সেক্সের লাইগা। ক্যামেরা ক্যামনে ছবির লগে সেক্স করে তা দেখন যায়। হেভি কিন্তু। মজা লওন যাইবো। এই সিনেমা পরে আমেরিকার কি এক কংগ্রেস আছে নাকি ওইখানে মাস্টারপিস হিসেবে মজুত রাখছে অরা।
গল্প আহামরি নয়। নায়িকা ব্রুক এডামস, সিনেমায় নাম ‘আবি’, খুব প্রান্তিক মায়াভরা মুখ। নায়ক আগেই কইছি রিচার্ড গিয়ার। সিনেমায় নাম ‘বিল’। বিল-এর ছোট বইন আছে লিন্ডা নাম। চঞ্চল, মজারু। বিল শিকাগোর এক স্টিল মিলের শ্রমিক।
স্টিল মিলটা সেট আকারে রিয়েল লাইফ। স্পার্ক দেখতে ভালো। আগুন গলে নিরীহ পাটাতন হওয়ার মজা দেখা যায়। কম্পোজিট, ছোটো শটে বেশ ডিটেল পাওয়া যায়।
যেই কথা বলছিলাম, বিল-এর মেজাজ একটু তিরিক্ষি হইছিল একদিন। মিলের ভেতরেই হারামি টাইপের বসরে মাইরা ফেলে। তারপর হের গার্লফ্রেন্ড আবি আর ছোট বইন লিন্ডারে লইয়া ভাগে। এই যে ল্যান্ডস্কেপের ভেতর দিয়া হুলুস্থুল শব্দ আর কালো ধোয়া তুইলা যে রেল গাড়ি ছুটতাছে আর সিনেমাটোগ্রাফার নেস্টর ক্যামেরাটা লার্জার লম্বা শটে ধইরা যা বাইর করছে তা দেহনের মত মাইরি। তার উপরি পাওনা দূরগামী মাঠে মিলিয়ে যাওয়া গম গাছের পাকনা শরীরে রোদের খেলা।
এটাকে আমি বলি ছবির পরম যৌনতা। ইমেজ এন্ড ইমাজিনেশনের যৌথ সহবাস। হা! দেখেন, দেখেন না কেন মিয়া! ফিল্মমেকার হইছো আর দেখবা না? সিনেমা কারে কয় শিখবা না? নাকি হুদাই ফুটেজ কালেক্ট কইরা ফিলিম বইলা চালাইয়া দিবা?
তারপর তো তারা টেক্সাসের এক খামারে আইসা পড়ে। এইখানে ভ্রাম্যমাণ সংসার, প্রেম অথবা ভবিষ্যত না দেখা জীবনের বাসভূমি হতে পারে ভেবে একটা না জাগতিক ভালো লাগা আচ্ছন্ন করে দেয় তাঁদেরকে। বেশ হেভেনলি জায়গাটা।
তো তারা কাজ করছিল। চোখের সীমানা বরাবর শস্যক্ষেত। পোড় খাওয়া চেহারা। শ্রমিকের নেতানো শরীর। জীর্ণ পোশাক। শ্রমজীবী মানুষের শ্রেণীবদ্ধ দুনিয়া আর ট্র্যাডিশনকে জায়েজ করিয়ে দেয়।
এক রাতে পঙ্গপালের আক্রমণ দেখা দিল। সমস্ত শ্রমিক নাইমা পড়ল প্রতিরোধে। পরিচালকের কী শক্তি! ক্যামেরার প্রশান্ত চোখে, সময় নিয়ে ফোকাসে তুইলা আনল পোকাদের সাথে শস্যের জীবনের অপরিসীম মধু কিংবা প্রেম।
কিন্তু কৃষকের তাড়া ক্ষেতে হয় পোকাদের। তারাও পালায়। এই চলচ্চিত্রের সব থেকে লড়াকু ছবি এইটা। দেখতে দেখতে আলফ্রেড হিচকককে মনে পইড়া যায়। দ্য বার্ড! পাখিদের কোরাস আক্রমণ। ঝাঁকে ঝাঁকে পাখিরা নেমে আসলো কি এক আক্রোশে!
কাজ আর ক্লান্তির হিসেব মিলিয়ে সময় পার হইয়া যায়। সবুজ, বিরল সুন্দর শস্যক্ষেতে লুটিয়ে পড়ছিল বিল আর আবির ভালোবাসা। কিছুটা এড়িয়ে। সঙ্গোপনে।
সিনেমার ঘটনা এইভাবে চলে না। একটা লেভেলে ক্লাইমেক্স দরকার পড়ে। এখন আমরা খুব সাবধানে একটা একিউট ক্লাইমেক্সে ঢুকব। টেরেন্স এর গল্প লিনিয়ার একটা বাতলানো পথে আগায় (‘দি ট্রি অব লাইফ’ ছাড়া)। ঘটনাচক্রে বিল আর আবি জানতে পারে, তাদের খামারের মালিক অসুস্থ। কিছুদিন পর মারা যাবে।
দুষ্টু হতচ্ছাড়া বিল আর ভবিতব্যের বিচারে অনিশ্চিত গন্তব্যের নারী আবি ঠিক করে, মৃত্যুমুখী খামার মালিকের লগে আবি-র বিয়া দিবে। যাতে করে তার সমস্ত সম্পদের মালিক হবে আবি।
ঠিক তখন থেকেই হয়ত তাদের স্বর্গের জীবন শুরু হবে। বিয়েটা হইয়া গেলে আমরা বেশ একটা সিনেম্যাটিক মোমেন্টাম দেখি। একঅর্থে এটা ‘গিমিক’ হিসেবে কাজ করে। আবি-র ভাই পরিচয় দিয়ে বিল থাইকা যায় খামারবাড়িতে। একদিন গোপনে আবিকে চুমা খাইতে গিয়া ধরা পইড়া যায় বিল। ভাই পরিচয় টিকলো না। খামার মালিকের চৌকিদারের নিকট ধরা খাইয়া যায়।
বিলের তো একটা মনোজাগতিক চাপ তইরি হয়। তাইনা? হবেই তো। দীর্ঘদিনের প্রেমিকা এখন অন্যের ঘরে সংসার ধর্ম করতেছে। বিলের ভাগ্য আসলেই খারাপ। দৌড়ের উপর থাকতে হয়েছে এমনি তারে গল্পের শুরু থেকে।
না। লোকটা মরে না। সময় পার হয়ে যায়। দিব্যি বাইচা আছে বহাল তবিয়তে। প্যারাডক্স কারে কয়! আবি সত্যিকারের প্রেমে পড়ে যায় খামার মালিকের। মৃত্যু তো দূরের কথা। এখন হেভি একটা পিরিতি জমে যায়।
বিল কী করবে এখন? এক ধরনের অঘোষিত, অমোঘ ক্ষোভ এসে তারে পীড়া দেয়। ক্ষেপাটে যুবক আবারও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। আরও একটা খুন। এবার খামার মালিক। আবার পালানো। কিন্তু ঘোড়সওয়ার পুলিশের হাত থেকে বেশিক্ষণ বাঁচতে পারে না। গুলিবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়ে।
একটা ক্ষীণকায় পাথুরে নদীর নির্মল জলে লুটিয়ে পড়ে বিলের শরীর। হ্যাঁ! আবি এই ঘটনার সাক্ষী। সে লাশ দেখেছিল। জড়িয়ে ধরে কেঁদেছিল। তীব্র। বোন লিন্ডাও ছিল। পরে অবশ্য আবি খামার মালিকের সমস্ত সম্পত্তি পায়। সে লিন্ডাকে একটা বোর্ডিং স্কুলে দিয়ে আসে।
আর কোনো একদিন হটাৎ অনেক কোলাহল আর প্রচণ্ড বিষণ্ণতা উপেক্ষা করে আবি প্রথম বিশ্বযুদ্ধগামী সৈন্যদের সাথে কোনো এক ট্রেনে চেপে শহর ত্যাগ করে। আর লিন্ডা তার কোনো এক বন্ধুর লগে বিদ্যালয় থেইকা পালায়।
স্টুডিও লাইটের ব্যবহার। ঘনায়মান আয়ু কমে আসা দিনের আলোয় সিলুটে তোলা শটগুলো সুন্দরের মহামারী লাগিয়ে দেয়। সূর্যের প্রখর আলো ও বিউটিফুল এক্সপোজার হিসেবে কাজে লাগিয়ে দেয় নেস্টর টেরেন্স জুটি।
সীমিত রিয়েল লাইফ লাইটে অবজেক্ট দেখার যে সিনেমাটোগ্রাফি তা ‘বই’টিকে অদ্ভুত প্রণোদনা দেয়। আলাদা করে তোলে অন্য বই থেকে।
টেরেন্স ‘ডেজ অব হেভেন’ শেষ করতে টাইম নেয় দুই বছর। তো সিনেমার দিন-দুনিয়া বিচারে আমরা কোনটাকে ফিল্ম বলবো আর কোনটাকে ‘ফুটেজ শো’ বলবো তার একখান উদাহরণ হইতে পারে ‘ডেজ অব হেভেন’। সিনেমাটোগ্রাফি হৃদয় দিয়ে ফিল করার জন্য এই চলচ্চিত্র আসলেই মাস্টারপিস।
দেখুন ‘ডেজ অব হেভেন’ সিনেমার ট্রেলার:
লেখক: মাহমুদ দিদার, নির্মাতা
(লেখকের ভাষারীতি অক্ষুন্ন রাখা হয়েছে)
শিল্পকলার মঞ্চে অভিনয় থেকে নাট্যজন মামুনুর রশীদকে সাময়িক দূরে থাকার অনুরোধ করেছেন একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ। এমন অনুরোধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নাট্যজন মামুনুর রশীদ।
১০ ঘণ্টা আগেজন লেনন যখন এই চিঠি লিখছেন এরিক ক্ল্যাপটনকে, ততদিনে তিনি দ্য বিটলস থেকে বেরিয়ে এসেছেন। প্লাস্টিক ওনো ব্যান্ড নিয়েই সমস্ত ব্যস্ততা তখন। তবুও নতুন ব্যান্ডের কথা ভাবছিলেন লেনন। ক্ল্যাপটনের জীবনও তখন ছিল নানা সমস্যায় জর্জরিত।
১০ ঘণ্টা আগেসম্প্রতি ঢাকার আশুলিয়ায় ইপিজেড শিল্প এলাকায় নিজের রেস্টুরেন্টের নতুন শাখা চালু করেছেন ওমর সানী। সানী জানিয়েছেন, দেশে চলমান আন্দোলনের কারণে রেস্টুরেন্টের নতুন শাখাটি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তিনি।
১৫ ঘণ্টা আগেদক্ষিণি অভিনেতা ধানুশ ও অভিনেত্রী নয়নতারার দ্বন্দ্ব আরও বড় আকার নিল। নয়নতারা ও তাঁর স্বামী পরিচালক ভিগনেশ শিবানের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দিলেন ধানুশ। আজ মাদ্রাজ হাই কোর্টে মামলাটি করা হয় ধানুশের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ওয়ান্ডারবার ফিল্মস প্রাইভেট লিমিটেডের পক্ষ থেকে।
১৫ ঘণ্টা আগে