Ajker Patrika

ক্রাইমস অব দ্য ফিউচার: ভয়ংকর ভবিষ্যৎ ও শরীরের রাজনীতির গল্প

জাহাঙ্গীর আলম
আপডেট : ৩০ জুন ২০২২, ১৮: ৪৭
ক্রাইমস অব দ্য ফিউচার: ভয়ংকর ভবিষ্যৎ ও শরীরের রাজনীতির গল্প

মানুষের সবচেয়ে অরক্ষিত বস্তুটি কী? উত্তর হলো, তার নিজের শরীর। এই শরীরকে উপলক্ষ করেই শিল্প নির্মাণ করতে চান ডেভিড ক্রোনেনবার্গ। আবিষ্কার, উদ্ভাবন, বিপর্যয়, বিবর্তন—সবকিছুরই প্রথম ‘শিকার’ শরীর। তবে শুধু শরীরের বাহ্যিক গঠন নয়, এটিকে কাটাছেঁড়াও করতে চান নির্মাতা ডেভিড ক্রোনেনবার্গ। সেটিই তিনি করেছেন তাঁর সর্বশেষ ছবি ‘ক্রাইমস অব দ্য ফিউচার’-এ।

দীর্ঘ আট বছর পর বড় পর্দায় ফিরেছেন এ কানাডীয় নির্মাতা। ধরন হিসেবে অনেকে এটিকে বলছেন, ‘সায়েন্স ফিকশন-বডি হরর’। অবশ্য এর অনেক আগেই ‘কিং অব বডি হরর’ খেতাব পেয়ে গেছেন ক্রোনেনবার্গ! 

এ সিনেমার নট-নটীরা বিজ্ঞানী, চিকিৎসক, আমলা, গোয়েন্দা আর বিশেষ করে বডি পারফরমেন্স আর্টিস্ট। উপলক্ষ যেহেতু শরীর, তাই বডি আর্টিস্টদেরই প্রধান চরিত্র হিসেবে বেছে নিয়েছেন ক্রোনেনবার্গ। কারণ, এই শিল্পীরাই শরীর উজাড় করে দিয়ে শিল্প করেন। যেমন: ট্যাটু আর্টিস্ট, বডি পেইন্টিং, সার্কাস, বাজিকর এবং সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ যেটিকে বলা যেতে পারে—অঙ্গপ্রত্যঙ্গে পরিবর্তন অযোগ্য অস্ত্রোপচার। এসব শিল্প শ্রমসাধ্য ও বেদনাদায়ক। পৃথিবী নামের গ্রহে সম্ভবত মানুষই সবচেয়ে বুদ্ধিমান চতুর প্রাণী, যারা নিজের অস্তিত্ব সম্পর্কে সচেতন। শরীরই অস্তিত্ব। এটাই বাস্তব। এই বাস্তবতাই শিল্পের ক্যানভাস। 

দূষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিপর্যয়কর প্রভাবগুলো মানুষকে জৈব প্রযুক্তিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করতে বাধ্য করেছে। অতি উচ্চ প্রযুক্তির যন্ত্র এবং (অ্যানালগ) কম্পিউটারের উদ্ভাবন এর মধ্যে অন্যতম। এই প্রযুক্তি সরাসরি মানুষের জৈবিক ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। 

একই সময় মানবজাতি বেশ কিছু জৈবিক পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে যেতে শুরু করেছে। এই পরিবর্তনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো শারীরিক ব্যথা এবং ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে এমন সংক্রামক রোগের অন্তর্ধান। কিছু মানুষ আবার শরীরে আরও ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করতে শুরু করেছে। তাদেরই একজন, ব্রেকেন নামের আট বছর বয়সী বালক, যার খাদ্য প্লাস্টিক। প্লাস্টিক চিবিয়ে খেয়ে সহজেই হজম করতে পারে সে। এটি হলো গল্পের উপক্রমণিকা। 

টেনসরের শরীরে ক্রমাগত নতুন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তৈরি হচ্ছে। ছবি: টুইটারপ্লাস্টিকখেকো মানুষের বিবর্তনের ব্যাপারটা বেশ মজার। ডেভিড ক্রোনেনবার্গ একই নামে ১৯৭০ সালে একটি সিনেমা বানিয়েছিলেন। অবশ্য এখনকারটার গল্প সম্পূর্ণ আলাদা। প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলার একটা বিকল্প দেখিয়েছেন তিনি, জনাথন সুইফট স্টাইলের প্রহসনমূলক, তবে বাস্তব। এখানে তিনি অ্যাকটিভিস্টদের পথে হাঁটতে চাননি। ধারণাটা গাঁজাখুরি মনে হতে পারে। কিন্তু এখন অন্যান্য প্রাণী তো বটেই মানুষের রক্তপ্রবাহেও মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া যাচ্ছে! প্লাস্টিকখেকো ব্যাকটেরিয়ারও সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। যেমনটি প্রযুক্তির কল্যাণে মানুষ ক্রমেই সাইবর্গ হয়ে উঠছে! 

কিন্তু ব্রেকেনের মায়ের কাছে ব্যাপারটা স্বাভাবিক মনে হয়নি। নিজের সন্তানকে ‘অন্য’, ‘ভীতিকর’, ‘অসহ্য’ কিছু মনে হয়েছে তাঁর। একদিন ঘুমের মধ্যে আপন সন্তানকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেন তিনি। 

সোল টেনসর এবং ক্যাপ্রিস দম্পতি বিশ্ববিখ্যাত অভিনয় শিল্পী (পারফরম্যান্স আর্টিস্ট)। টেনসরের ‘এক্সিলারেটেড ইভোলিউশন সিন্ড্রোম’ নামে এক বিশেষ শারীরিক সমস্যা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ ব্যাধি তাঁর শরীরকে ক্রমাগত নতুন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সৃষ্টিতে বাধ্য করছে। 

এই সমস্যাকে পুঁজি করেন তাঁরা। আন্ডারগ্রাউন্ডে এই নিষিদ্ধ শিল্পের প্রদর্শনী চলে। দর্শকদের সামনে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নতুন অঙ্গ অপসারণ করা হয়। কিন্তু এই সিন্ড্রোমটি টেনসরকে অবিরাম ব্যথা এবং তীব্র শ্বাসকষ্ট ও হজমের সমস্যায় ফেলে দেয়। সার্বক্ষণিক অস্বস্তিতে ভোগেন তিনি। বেশ কয়েকটি বিশেষায়িত বায়োমেকানিক্যাল ডিভাইসের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন টেনসর। 

এর মধ্যে টেনসর এবং ক্যাপ্রিস ন্যাশনাল অর্গান রেজিস্ট্রির দায়িত্বে থাকা আমলাদের সঙ্গে দেখা করেন। মানব বিবর্তনের ওপর রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ ও বিধিনিষেধ বজায় রাখার জন্যই এই অফিস করা হয়েছে। তাঁরা মানুষের মধ্যে নতুন বিকশিত অঙ্গগুলোর তালিকা এবং সংরক্ষণ করেন। 

তাহলে কি আমরা ধরে নিতে পারি, রাষ্ট্র নাগরিকের শরীরের ওপরও নিয়ন্ত্রণ চায়? হ্যাঁ, চায় তো। রাষ্ট্র নাগরিককে মৃত্যুদণ্ড দেয়, সশ্রম কারাদণ্ড দেয়, গর্ভপাতের অধিকারের ওপর খবরদারি করে, সন্তানের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করে, বিয়ের বয়স নির্ধারণ করে দেয়। আপাতদৃষ্টিতে এটি নাগরিকদের মঙ্গলের জন্য করা হয়। কিন্তু আপাত মঙ্গলময় সিদ্ধান্ত ও আইনগুলোও শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হয়ে ওঠে। 

ন্যাশনাল অর্গান রেজিস্ট্রির একজন আমলা, যৌন হতাশাগ্রস্ত, নার্ভি টিমলিন, টেনসরের শিল্পভাবনার মোহে পড়ে যান। টেনসরের একটি দারুণ সফল শোতে গোপনে হাজির হন তিনি। কারণ, এ ধরনের পারফরমেন্সে সরকারের অনুমতি নেই। শো শেষে টিমলিন টেনসরের কাছে গিয়ে কানে কানে বলেন, ‘সার্জারি ইজ দ্য নিউ সেক্স।’ নতুন দুনিয়ায় স্বাগতম! নতুন এ ভাবনা টেনসরকেও নাড়িয়ে দেয়। 

তার মানে ক্রোনেনবার্গ কি আমাদের মনে করিয়ে দিতে চাচ্ছেন বা মহিমান্বিত করতে চাচ্ছেন যে, কষ্ট বা বেদনার অনুভূতিও উপভোগ্য হতে পারে। অথবা সহিংসতার আনন্দ! এগুলোকে তো বিশেষ মানসিক বিকৃতি (স্যাডিজম/ধর্ষকাম) হিসেবেই দেখা হয়। ক্রোনেনবার্গ বলছেন, না, সেরকম কোনো বার্তা তিনি দিতে চান না। তিনি বরং একজন আত্মোৎসর্গকারী নিবেদিত শিল্পীর উজাড় করে দেওয়ার বাসনা ও দর্শককে বিস্মিত বিমোহিত করতে সব শ্রম, ঘাম, পীড়ন সহ্য করার মধ্যে মানসিক তৃপ্তির, স্বর্গীয় আনন্দের স্বরূপটাকে ওভাবে দেখতে এবং দেখাতে চেয়েছেন। নির্মাতা নিজেও ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে মূলধারায় প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। বারবার সেন্সরের কাঁচিতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছেন। 

তাহলে কি এই সিনেমার কোনো রাজনৈতিক অবস্থান নেই? পরিচালক প্রথমত বলছেন, আক্ষরিক অর্থে এখানে কোনো রাজনীতি নেই। এটা কোনো রাজনৈতিক সিনেমা নয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সব শিল্পেরই তো একটা রাজনৈতিক অবয়ব থাকে। শিল্পের রাজনীতি থাকবে না, এটা তো হয় না! সামগ্রিক অর্থে এখানেও নিশ্চয় আছে। 

মাংসল, পচা অর্কিডের মতো অপারেশনের বেডে চরম অস্বস্তি নিয়ে শুয়ে থাকা টেনসর। ছবি: টুইটারসিনেমার মাঝপথে গিয়ে গল্পের বাঁকবদলের মধ্যে এই রাজনৈতিক চরিত্র কিছুটা প্রকাশ পেয়েছে। হঠাৎ সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা টেনসরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তারা শিল্পী টেনসরকে ব্যবহার করে উগ্র বিবর্তনবাদীদের একটি দলের ভেতরে অনুপ্রবেশ করতে চায়। ক্যাপ্রিসকে না জানিয়ে গোপনে টেনসর অন্য পারফরম্যান্স আর্ট শোগুলোতে যাতায়াত শুরু করেন। সেখানে অনেকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। এভাবেই এক সময় পৌঁছে যান বিবর্তনবাদীদের একটি সেলে। তাদের মধ্যে একজন প্রাক্তন কসমেটিক সার্জন নাসাতির। টেনসরের পেটে একটি জিপারযুক্ত গহ্বর তৈরি করে দেন। অন্যান্য পারফরম্যান্স শিল্পীদের সঙ্গে নেটওয়ার্ক গড়তে গিয়ে নিজেও বডি আর্টে আসক্ত হয়ে পড়েন ট্রমা সার্জন ক্যাপ্রিস। কপালে আলংকারিক কসমেটিকস সার্জারি করেন। যদিও টেনসর তাতে খুব একটা খুশি হন বলে মনে হয় না। 

অনেকে বলছেন, এই সিনেমা মূলত ট্রান্স ফ্যান্টাসি এবং বডি পলিটিকস (শরীরের রাজনীতি) নিয়ে। এমনটি মনে করার যথেষ্ট উপাদান এই সিনেমায় রয়েছে। টেনসর জানেন, তাঁর শরীরে নতুন হরমোনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। সেটি শরীরের ভেতরে ব্যাপক পরিবর্তন সাধন করছে। অপারেশনের বেডটি দেখতে মাংসল, পচা অর্কিডের মতো। সেখানে টেনসরকে অত্যন্ত অস্বস্তি নিয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়। ফলে এখানে ট্রান্সজেন্ডারবিষয়ক প্রচুর রূপক আছে। তা ছাড়া সমাজে, রাষ্ট্রে ট্রান্সজেন্ডাররা যেন ভীতিকর প্রাণী। রীতিমতো হরর সিনেমার চরিত্র। ‘অদ্ভুত আচরণ’ ও ফ্যান্টাসির কারণে রাজনৈতিকভাবে এবং স্বাস্থ্যগত দিক থেকে তারা কঠোর ও সমালোচনার নজরে থাকেন। এমনকি তাদের জন্য অমানবিক আইনকানুনও করা হয়। 

টেনসরকেও এমন পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে যেতে হয়। অবশ্য টেনসর নিজেকে ট্রান্সজেন্ডার বলেননি। তাঁর মুখ দিয়েই আমরা শুনছি, তাঁর শরীর বিদ্রোহ করছে, শরীরে চলছে জৈবিক নৈরাজ্য এবং গভীরে বৈপ্লবিক কিছু ঘটছে। টিমলিন যখন তাঁকে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করছিলেন, তখন তাঁর জবাব ছিল, ‘আমি পুরোনো যৌনতায় খুব একটা ভালো না!’ বহু ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তি এমন অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যান। টেনসরকে বলা যেতে পারে ট্রান্স হিউম্যান। ভবিষ্যতে হয়তো এমন কিছুর সঙ্গে মানবজাতিকে মানিয়ে নিতে হবে। 

এখানে আরেকটি বিষয় উল্লেখ না করলেই নয়, টেনসর জানেন, চলমান বিবর্তন প্রক্রিয়া গ্রহণে যে মানুষ আগ্রহী, তা নয়। বরং তারা এটা অপছন্দই করে। কারণ, শরীরে তৈরি নতুন অঙ্গ অপসারণের প্রদর্শনীই তো তাদের টিকিট কেটে দেখতে আসতে প্রলুব্ধ করছে। অবশ্য আরেকটা বিষয়ও মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রে। সবখানে মানব বিবর্তন আর মিউটেশনের ভীতিকর গল্প। কিন্তু সবাই তো সেই অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে না, বা তারা সচেতন নয়। মূলত তাদের সচেতন করতেই টেনসরের এই আয়োজন কি? সেটা শিল্পের ঘাড়ে নৈতিকতার খাঁড়া বললেও বলা যেতে পারে। 

টেনসর একদিন টিমলিনের সঙ্গে দেখা করেন। টিমলিন তাঁকে বিবর্তনবাদীদের এজেন্ডা বিস্তারিত বলেন। এই বিবর্তনবাদীরা প্লাস্টিক এবং অন্যান্য সিনথেটিক রাসায়নিক হজম করার সক্ষমতা অর্জনের জন্য নিজেদের পাচনতন্ত্র পরিবর্তন করছে। তাদের প্রধান খাদ্য বিষাক্ত বর্জ্যে তৈরি এক ধরনের বেগুনি ‘ক্যান্ডি বার’। অন্যদের জন্য এটি মারাত্মক বিষাক্ত। 

ল্যাং নামক ব্যক্তি এই সংগঠনের নেতা। আমরা প্রথম দৃশ্যে যেই বালকের কথা বলেছিলাম, সেই ব্রেকেন তাঁরই ছেলে। তবে ব্রেকেন কিন্তু প্লাস্টিক হজম করার ক্ষমতা নিয়েই জন্মেছিল। 

কিন্তু সরকার এটি বিশ্বাস করতে চায়নি। মানুষের এই স্বতঃস্ফূর্ত বিবর্তন কোনো মঙ্গল বয়ে আনবে না—এটিই সরকারের অবস্থান। ব্রেকেন সেই ধারণা ভুল প্রমাণ করেছিল। তাহলে কি ব্রেকেনকে সরকারই খুন করেছে? না, সেটি নিঃসন্দেহে বলা যাবে না। কিন্তু রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে যে ধারণা প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল, তাতে ব্রেকেনের মা আস্থা রেখেছিলেন। তিনি নিজের সন্তানকেই মানবশিশু বলে বিশ্বাস করতে পারেননি। এটি কি বিশৃঙ্খল বিশ্বে বিষণ্ন মানুষের মানসিক বিকৃতির আভাস! হবে হয়তো। অবশ্য শেষের দিকে কিছু ইঙ্গিত মিলবে। 

অবশেষে ল্যাংয়ের সঙ্গে টেনসরের যোগাযোগ হয়। ল্যাং চান টেনসর এবং ক্যাপ্রিস ব্রেকেনের একটি প্রকাশ্য ময়নাতদন্ত করুক। মানুষ দেখুক ব্রেকেনের প্লাস্টিক হজমকারী পাচনতন্ত্র প্রাকৃতিকভাবেই বিকশিত হয়েছে। মানুষ জানুক এই গ্রুপের এজেন্ডা কী, সরকারের ধারণা আসলে ভুল। 

প্রথমে আপত্তি করলেও শেষ পর্যন্ত টেনসর সম্মত হন। সরকারি আমলা টিমলিন, ল্যাং এবং আরও অনেকের সামনে ব্রেকেনের ময়নাতদন্ত করা হয়। কিন্তু দেখা যায়, ব্রেকেনের পাচনতন্ত্র আসলে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে! আশাহত ল্যাং কাঁদতে কাঁদতে শো থেকে সবার অলক্ষ্যে বেরিয়ে যান। 

সিঁড়িতে বসে ফোঁপাচ্ছেন ল্যাং। পেছন থেকে নিঃশব্দে সেখানে হাজির হয় সেই দুই লেসবিয়ান টেকনিশিয়ান। টেনসরের বায়োমেডিক্যাল মেশিন প্রস্তুতকারী করপোরেশনে কাজ করে তারা। হঠাৎ করে গুপ্তঘাতক হয়ে ওঠে। তারা সেই কসমেটিক সার্জন নাসাতিরকে হত্যা করে ড্রিল মেশিন দিয়ে মাথা ফুটো করে। একই কায়দায় তারা ল্যাংকেও হত্যা করে সটকে পড়ে।

রাষ্ট্র আর করপোরেশনের এজেন্ডার এই মিল কি কাকতালীয়? মোটেও তা নয়। যদিও পরিচালক সেটি স্পষ্ট করেননি। 

পরে সেই গোয়েন্দা এজেন্টের কাছ থেকেই টেনসর জানতে পারেন, চলমান বিবর্তনের ঘটনাগুলো থেকে জনসাধারণের নজর সরাতেই টিমলিন ব্রেকেনের অঙ্গ প্রতিস্থাপন করেছিলেন। 

প্রশ্ন উঠতে পারে, সরকার কেন একটি অমোঘ বাস্তবতাকে গোপন রাখতে চায়? কেন এই প্রাকৃতিক পরিবর্তনকে মেনে নিতে পারছে না? কারণ একটাই, যেটিকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না, সেটি রাষ্ট্র পছন্দ করে না! ঠিক এই কারণেই রাষ্ট্র অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নিবন্ধনের দোকান খুলেছে! এটি আসলে নজরদারির টুল। 

ব্রেকেন এবং ল্যাংয়ের মৃত্যুতে মর্মাহত টেনসর গোয়েন্দা সংস্থাকে জানান, তিনি আর তাদের সঙ্গে কাজ করবেন না। সেই সঙ্গে সেই বিবর্তনবাদীদের অবস্থানকেও সমর্থনের কথা জানান তিনি। শেষ দৃশ্যে প্লাস্টিকের ক্যান্ডিবার মুখে নিয়ে টেনসরের হাসি আরেকবার তারই স্পষ্ট অনুমোদন দেয়। 

সমালোচকেরা সিনেমাটিকে পাস নম্বর দিয়েছেন। অনেকে বলেছেন, সিনেমায় নির্মাতা যত রহস্যের অবতারণা করেছেন, তার সমাধান দিয়েছেন খুব কম। পুরো গল্পটি বোঝার মতো যথেষ্ট দীর্ঘ নয় বলেও অনেকে অভিযোগ করেছেন। তা ছাড়া সিক্যুয়েন্সগুলোর মধ্যে ধারাবাহিকতা পাওয়াও কঠিন। 

অবশ্য ডেভিড ক্রোনেনবার্গকে কোনো নির্দিষ্ট ছাঁচে ফেলা যায় না। তিনি হরর গল্প বলার প্রচলিত ধরনটি পছন্দ করেন না। তিনি চান মানুষকে তার বাস্তবতা বোঝাতে। বডি হরর নয়, তিনি বলতে চান বডি বিউটিফুল। নির্মাতা স্পষ্ট করেই বলেছেন, তাঁর সিনেমায় কোনো খলনায়ক নেই! আর সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে ট্রান্সজেন্ডার উপাদানের বিষয়েও কোনো ইঙ্গিত তিনি দেননি। 

মূল প্রতিপাদ্য হলো—পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে টিকে থাকা এবং অভিযোজনই শেষ কথা। শরীরই একমাত্র বাস্তবতা। শরীরই হলো অস্তিত্বের সার। ২০ বছর আগে লেখা স্ক্রিপ্ট। এ কারণে মাইক্রোপ্লাস্টিকের বিষয়টি আসেনি। প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলায় বিকল্প হিসেবে এসেছে প্লাস্টিক ভক্ষণের ধারণা। 

চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: ডেভিড ক্রোনেনবার্গ
প্রযোজক: রবার্ট ল্যান্টোস
অভিনয়ে: ভিগ্গো মরটেনসেন, লে সিদোক্স, ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ট 
সিনেমাটোগ্রাফি: ডগলাস কোচ
সংগীত পরিচালনা: হাওয়ার্ড শোর
মুক্তি: ২৩ মে, কান; ২৫ মে, ফ্রান্স; ৩ জুন, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র
দৈর্ঘ্য: ১০৭ মিনিট
এখন পর্যন্ত আয়: ৩৩ লাখ মার্কিন ডলার

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তিন বছর পর বিচ্ছেদের খবর দিলেন বিন্দু

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ১৯
বিন্দু। ছবি: সংগৃহীত
বিন্দু। ছবি: সংগৃহীত

২০১৪ সালে ব্যবসায়ী আসিফ সালাহউদ্দিন মালিককে বিয়ে করেন অভিনেত্রী আফসান আরা বিন্দু। বিয়ের পর শোবিজ থেকে পুরোপুরি নিজেকে গুটিয়ে নেন তিনি। অভিনয় ছেড়ে হয়ে ওঠেন সংসারী। বিয়ের চার বছর পর গুঞ্জন রটে, সংসার ভেঙেছে বিন্দুর। তবে বিচ্ছেদ নিয়ে তখন কোনো কথা বলেননি বিন্দু কিংবা তাঁর স্বামী। অবশেষে নিজের বিচ্ছেদের বিষয়টি নিশ্চিত করলেন অভিনেত্রী। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বিন্দু জানান, ২০২২ সালে বিচ্ছেদ হয়েছে তাঁর।

২০২২ সালে বিচ্ছেদ হলেও ২০১৭ সাল থেকেই স্বামীর সঙ্গে সেপারেশনে ছিলেন বিন্দু। পাঁচ বছর পর তাঁরা চূড়ান্তভাবে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন। বিন্দু বলেন, ‘অনেকেই মনে করেন, আমি এখনো বিবাহিত। কিন্তু না, আমার বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। আমার সংসারের জার্নিটা অনেক ছোট ছিল।’

বিচ্ছেদের কারণ জানিয়ে বিন্দু বলেন, ‘আলাদা হওয়ার জন্য অনেক সময় বড় কারণ থাকে, বড় ঘটনা ঘটে। অনেক সময় আবার তেমন কোনো কারণও দরকার হয় না। আমার এই জার্নিতে আরও একজন মানুষ জড়িত। তারও ব্যক্তিগত জীবন আছে। বিচ্ছেদ নিয়ে কোনো ব্যাখ্যা দিয়ে তাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে চাই না।’

২০০৬ সালে লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতা দিয়ে শোবিজে যাত্রা শুরু হয় বিন্দুর। অল্প দিনেই হয়ে ওঠেন মিডিয়ার নিয়মিত মুখ। অভিনয় থেকে বিরতি নেওয়ার আগে ২০১৪ সালের শুধু কোরবানির ঈদেই প্রচারিত হয় তাঁর অভিনীত ৫২টি নাটক। ছোট পর্দার পাশাপাশি বিন্দু অভিনয় করেছেন সিনেমাতেও।

ক্যারিয়ারের শুরুতে আরিফিন শুভর সঙ্গে জুটি বেঁধে অনেক নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। পর্দায় তাঁদের জুটি অনেক জনপ্রিয় ছিল। অনস্ক্রিন কেমেস্ট্রির প্রভাব পড়েছিল দুজনের বাস্তব জীবনেও। একসময় শুভর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান বিন্দু। সেই প্রেমের কথা স্বীকারও করেছেন অভিনেত্রী। কেন তাঁদের সম্পর্ক ভেঙে গিয়েছিল? বিন্দুর সংক্ষিপ্ত জবাব, ‘এর উত্তর আমার কাছে নেই। দুটি মানুষের জার্নি যে একসঙ্গে একই গন্তব্যে শেষ হবে, এমন তো কোনো কথা নেই।’

প্রায় এক দশকের বিরতি কাটিয়ে ২০২৩ সালে ‘উনিশ ২০’ ওয়েব ফিল্ম দিয়ে অভিনয়ে ফেরেন বিন্দু। মিজানুর রহমান আরিয়ানের পরিচালনায় এতে বিন্দুর বিপরীতে ছিলেন সেই আরিফিন শুভই। তবে এরপর আর কোনো কাজে দেখা যায়নি বিন্দুকে। তবে তিনি নিয়মিত অভিনয় করতে চান। বিন্দু বলেন, ‘শিল্পী হিসেবে কাজ করতে প্রস্তুত। এখন আমাকে নিয়ে কাজ করার চিন্তা, আমার পেছনে ইনভেস্ট করার বিষয়গুলো ভাবতে হবে। এমন ধরনের কাজ করতে চাই, যেগুলো এখনো করিনি। আমি চাই, নির্মাতারা আমাকে নিয়ে এমনভাবে ভাবুক, যেমনটা আগে ভাবা হয়নি।’

অভিনয় ছেড়ে দিয়ে বছর পাঁচেক আগে ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়েছেন বিন্দু। গুলশানে রয়েছে তাঁর একটি বুটিক হাউস। ‘আফসান বিন্দু ডিজাইনার স্টুডিও’ নামের এ ব্র্যান্ডের পোশাক বিন্দু নিজেই ডিজাইন করেন। ২০২০ সালে যখন প্রতিষ্ঠানটি শুরু করেন বিন্দু, তখন তাঁর কর্মীর সংখ্যা ছিল মাত্র একজন। তবে এখন তাঁর সঙ্গে ১৫ জন কাজ করেন বলে জানিয়েছেন অভিনেত্রী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘ইত্যাদি’র নতুন পর্ব এবার চুয়াডাঙ্গায়

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র দৃশ্য
ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র দৃশ্য

নব্বইয়ের দশক থেকে স্টুডিওর চারদেয়ালের বাইরে বেরিয়ে শিকড়ের সন্ধানে দেশের নানা প্রান্তে শুটিং করা হচ্ছে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদির। তারই ধারাবাহিকতায় ইত্যাদির নতুন পর্ব ধারণ করা হয়েছে ইতিহাস ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ প্রাচীন জনপদ চুয়াডাঙ্গায়।

এবারের ইত্যাদির মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছিল ব্রিটিশ আমলে তৈরি শতাধিক বছরের প্রাচীন হাজারদুয়ারি নামে খ্যাত ঐতিহ্যবাহী স্কুল নাটুদা মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। এবারের পর্বে গান রয়েছে দুটি। একটি গান গেয়েছেন লোকসংগীতশিল্পী বিউটি ও পান্থ কানাই। গানটির কথা লিখেছেন মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান, সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদী।

এ ছাড়া অনুষ্ঠানের শুরুতে চুয়াডাঙ্গার কৃষ্টিকথা ও ইতিহাসগাথা নিয়ে রয়েছে শাহ আলম সনির কথায় একটি পরিচিতিমূলক গানের সঙ্গে নৃত্য। গানটির সুর করেছেন হানিফ সংকেত, সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদী। পরিবেশন করেছেন স্থানীয় নৃত্যশিল্পীরা। এ ছাড়া ইত্যাদির নতুন পর্বে থাকছে চুয়াডাঙ্গা নিয়ে কয়েকটি প্রতিবেদন। রয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলার ইতিহাস-ঐতিহ্যসহ এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান-স্থাপনার ওপর একটি তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন।

ইত্যাদির নিয়মিত আয়োজন চিঠিপত্র পর্বে উঠে এসেছে চুয়াডাঙ্গার একজন ব্যতিক্রমী ছড়াকারের গল্প। আরও রয়েছে সামাজিক অসংগতি ও সমসাময়িক প্রসঙ্গনির্ভর নাটিকা। দানের নামে ফটোসেশন, সংসারের ভারে স্বপ্নভঙ্গ, মিষ্টি নিয়ে অনাসৃষ্টি, ইংরেজির দাপটে অসহায় বাংলা ভাষা, বোঝা না বোঝার বোঝা, স্টাইলিশ আইকনের বিপত্তি, লোম বাছতে কম্বল উজাড়সহ কয়েকটি নাট্যাংশে অভিনয় করেছেন সোলায়মান খোকা, সুভাশিষ ভৌমিক, আবদুল্লাহ রানা, আমিন আজাদ, কাজী আসাদ, মুকিত জাকারিয়া, আনোয়ার শাহী, শাহেদ আলী, জামিল হোসেন, আনন্দ খালেদ, তারিক স্বপন, আবু হেনা রনি প্রমুখ।

ইত্যাদির এই পর্ব দেখা যাবে ২৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ টেলিভিশনে রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর। ইত্যাদি রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। নির্মাণ করেছে ফাগুন অডিও ভিশন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘মহাশূন্যে সাইকেল’ নাটকের চার দিনে সাত প্রদর্শনী

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘মহাশূন্যে সাইকেল’ নাটকের দৃশ্য
‘মহাশূন্যে সাইকেল’ নাটকের দৃশ্য

গত বছর ডিসেম্বরে মঞ্চে এসেছিল অনুস্বর নাট্যদলের নাটক ‘মহাশূন্যে সাইকেল’। বাংলাদেশ মহিলা সমিতিতে পাঁচ দিনে নাটকটির আটটি প্রদর্শনী হয়েছিল। বছর ঘুরে আবারও মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে মহাশূন্যে সাইকেল নাটকের প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে অনুস্বর। ২৪ থেকে ২৭ ডিসেম্বর টানা চার দিন দেখা যাবে নাটকের সাতটি প্রদর্শনী।

কথাসাহিত্যিক শাহাদুজ্জামানের লেখা একই শিরোনামের গল্প অবলম্বনে এর নাট্যরূপ দিয়েছেন লেখক নিজে। নির্দেশনায় সাইফ সুমন। ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দেখা যাবে মহাশূন্যে সাইকেল। ২৫ থেকে ২৭ ডিসেম্বর প্রতিদিন বিকেল ৫টা ও সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মঞ্চস্থ হবে আরও ছয়টি প্রদর্শনী।

নাট্যকার শাহাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা কিছু কথা অনেকের সঙ্গে বলি, কিছু কথা নির্দিষ্ট মানুষের সঙ্গে বলি আর কিছু কথা শুধু নিজের সঙ্গে বলি। যেকোনো ক্রান্তির সময় নিজের সঙ্গে এই বোঝাপড়ার মাত্রা এবং ব্যাপ্তি সম্ভবত বেড়ে যায়। মহাশূন্যে সাইকেলের মূল ভাবনাটা এ রকম। গত বছর এই গল্পের নাট্যরূপ দিই। একজন ব্যক্তি নিজেকে দুই ভাগ করে তার এই দুই সত্তার সঙ্গে মঞ্চে কথোপকথন করছে। দর্শক হিসেবে একজন ব্যক্তির এই একান্ত বিভক্ত সত্তার ভেতরে এই কথোপকথন দেখার ভেতরে একটা গোপন কৌতূহল হয়তো আছে। কিংবা নিজের সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়ার আনন্দ আছে।’

নির্দেশক সাইফ সুমন বলেন, ‘ভোগবাদিতা আর ব্যক্তিস্বার্থের কারণে মানুষ এখন প্রতিনিয়তই পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। পরিবার, বন্ধু, সমাজ থেকে ক্রমেই বিচ্ছিন্ন হচ্ছি আমরা। কখনো কখনো মানুষের মধ্যে বাস্তবের চেয়ে কল্পনা বা অলৌকিক জগৎ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। পরিবারের সঙ্গে থেকেও একা অনুভব করে। সেই কথাই বলার চেষ্টা হয়েছে নাটকে।’

মহাশূন্যে সাইকেল নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোহাম্মদ বারী, এস আর সম্পদ, প্রশান্ত হালদার, নুরুজ্জামান সরকার, রীমা প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নতুন লুকে চমকে দিলেন কিয়ারা আদভানি

বিনোদন ডেস্ক
কিয়ারা আদভানি। ছবি: সংগৃহীত
কিয়ারা আদভানি। ছবি: সংগৃহীত

‘কেজিএফ’ সিনেমার দুই পর্বের ব্যাপক সাফল্যের পর কন্নড় সুপারস্টার ইয়াশ যুক্ত হয়েছেন মালয়ালম নির্মাতা গিতু মোহনদাসের সিনেমায়। ‘টক্সিক: আ ফেয়ারিটেল ফর গ্রোনআপস’ নামের কন্নড় ভাষার এ সিনেমায় প্রথমবারের মতো ইয়াশের নায়িকা হয়েছেন কিয়ারা আদভানি। টক্সিকে কিয়ারার চরিত্রের নাম নাদিয়া। গতকাল প্রকাশ করা হয়েছে এ সিনেমায় কিয়ারার চরিত্রের লুক।

শোবিজে কিয়ারার এক যুগ হতে চলেছে। ২০১৪ সালে ‘ফুগলি’ দিয়ে যাত্রা শুরুর পর এ পর্যন্ত ২০টির মতো সিনেমায় অভিনয় করেছেন। প্রতিটিতেই দেখা দিয়েছেন বৈচিত্র্যময় চরিত্রে। তবে টক্সিকে কিয়ারার চরিত্রটি যে একেবারেই আলাদা হতে চলেছে, সে আভাস পাওয়া গেল সদ্য মুক্তি পাওয়া ফার্স্ট লুক পোস্টারে। এতে তাঁকে দেখা যাবে একজন সার্কাসশিল্পী হিসেবে।

ফার্স্ট লুক পোস্টারে আলো ঝলমলে সার্কাসের সেটে অফ-শোল্ডার ভেলভেট গাউন পরে দাঁড়িয়ে আছে কিয়ারা অভিনীত নাদিয়া চরিত্রটি। চোখে-মুখে বিষণ্নতা, ক্লান্তির ছাপ। সার্কাসের মঞ্চে জাঁকজমক আবহে নৃত্যরত যে শিল্পীকে দেখা যায় দর্শকের সামনে, তার মনের ভেতরে অনেক সময় চলে দুঃখের দোলাচল। ভেতরে জমাট কষ্ট নিয়েই হাসিমুখে দর্শকের সামনে পারফর্ম করে তারা। টক্সিকের পোস্টারে তেমনটাই ধরা পড়েছে। এমনই এক জটিল চরিত্র নিয়ে দর্শকের সামনে আসবেন কিয়ারা।

ভিএন প্রোডাকশন এবং মনস্টার মাইন্ড ক্রিয়েশনসের ব্যানারে নির্মিত বিগ-বাজেট সিনেমা টক্সিক মুক্তি পাবে ২০২৬ সালের ১৯ মার্চ। দক্ষিণি মেগাস্টার যশ ও কিয়ারার এই নতুন রসায়ন বড় পর্দায় দেখার জন্য এখন থেকেই অপেক্ষায় অনুরাগীরা। এতে আরও অভিনয় করেছেন নয়নতারা, তারা সুতারিয়া, হুমা কুরেশি, অক্ষয় ওবেরয় প্রমুখ।

ইংরেজি ও কন্নড়—দুই ভাষাতেই টক্সিক সিনেমার শুটিং করা হয়েছে। পাশাপাশি হিন্দি, তেলুগু, তামিল, মালয়ালমসহ বিভিন্ন ভাষায় ডাব করা হবে। এতে কিয়ারার পারফরম্যান্স নিয়ে নির্মাতা গিতু মোহনদাস বলেন, ‘কিছু পারফরম্যান্স শুধু পর্দায় নয়, প্রভাব ফেলে শিল্পীর জীবনেও। টক্সিক সিনেমায় কিয়ারা যা করেছে, তার কোনো তুলনা হয় না। সিনেমাটি নিয়ে আমাদের প্রথম আলাপের মুহূর্ত থেকেই তিনি চরিত্রটির প্রতি নিজেকে সম্পূর্ণ সমর্পণ করেছেন। তিনি শুধু নাদিয়া চরিত্রে অভিনয় করেননি, নিজেও চরিত্রটির মতো করেই যাপন করেছেন।’

প্রসঙ্গত, বলিউডের তারকা দম্পতি কিয়ারা আদভানি ও সিদ্ধার্থ মালহোত্রার সংসারে নতুন সদস্য এসেছে গত ১৫ জুলাই। এখন সন্তানকে নিয়েই পুরো সময়টা কাটছে অভিনেত্রীর। আর একটু একটু করে নিচ্ছেন আবার শোবিজে ফেরার প্রস্তুতি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত