Ajker Patrika

দেশে নজরুলসংগীত শিক্ষার অগ্রগতি নিয়ে আমি সন্তুষ্ট

আপডেট : ২৫ মে ২০২৩, ১৩: ০৮
দেশে নজরুলসংগীত শিক্ষার অগ্রগতি নিয়ে আমি সন্তুষ্ট

আজ ১১ জ্যৈষ্ঠ। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মদিন। সংগীতশিল্পী শাহীন সামাদ মাত্র ১৪ বছর বয়স থেকেই নজরুলচর্চা করছেন। নজরুলচর্চায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে গতকাল তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় এ বছরের বাংলা একাডেমির নজরুল পুরস্কার। নজরুল পুরস্কার ও জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শাহীন সামাদের সঙ্গে কথা বলেছেন শিহাব আহমেদ

বাংলা একাডেমির নজরুল পুরস্কার পাওয়ায় কেমন লাগছে?
খবরটা শোনার পর থেকেই খুব ভালো লাগছে। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে অনেক পুরস্কার পেয়েছি। প্রতিটি পুরস্কারই আমাকে আনন্দ দেয়, উদ্দীপ্ত করে। বাংলা একাডেমির পুরস্কারটি আমার কাছে বিশেষ সম্মানের। আর যেকোনো পুরস্কার পেলে দায়িত্ব আরও বেড়ে যায়। চেষ্টা করব নিজের কাজটি যেন আরও ভালোভাবে চালিয়ে যেতে পারি। 

নজরুল পুরস্কার আপনার কাছে কেন বিশেষ? 
একুশে পদক পেয়েছি স্বাধীনতার জন্য অবদান রাখায়। আর এটা পেয়েছি নজরুলসংগীতে অবদানের জন্য। এটা আমার কাছে বিরাট পাওয়া। ১৯৬৬ সাল থেকে আমি ছায়ানটের সঙ্গে যুক্ত। নজরুলসংগীত চর্চার মধ্য দিয়েই জীবনটা পার করে দিচ্ছি। নতুন নজরুলসংগীতশিল্পী তৈরি করছি। এদের মধ্যে অনেকেই সুনাম অর্জন করেছে। 

এটা আমাকে গর্বিত করে। আমি জানি না আমি এখনো কোনো জায়গায় পৌঁছাতে পেরেছি কি না। এই পুরস্কারপ্রাপ্তির পুরো কৃতিত্ব ছায়ানটের। এখানে থেকেই আমি বাংলাচর্চা শিখেছি, নজরুলসংগীত শিখেছি, কীভাবে কথা বলতে হবে শিখেছি—সবকিছুই ছায়ানট থেকে শেখা। ছায়ানটই আমাকে সব দিয়েছে। যাঁরা নজরুলসংগীতে অবদান রেখেছেন, তাঁরা সবাই এ 
পুরস্কার পাবেন, এমনটাই প্রত্যাশা।

বাংলাদেশে নজরুলসংগীত শিক্ষার অগ্রগতি কতটা হয়েছে বলে মনে হয়?
দেশে নজরুলসংগীত শিক্ষার অগ্রগতি নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। ছায়ানট আছে, নজরুল একাডেমি আছে; আরও কিছু একাডেমি আছে, যেখানে নজরুলসংগীত শেখানো হচ্ছে। গত ১০ বছরে নজরুলসংগীত শিক্ষার চর্চাটা চোখে পড়ার মতো বেড়েছে। তবে অনেকেই নজরুলের গান কঠিন ভেবে সরে পড়েন। আমি বলব, না সরে গানের গ্রামারটা ভালো করে আয়ত্ত করতে। তাহলে আর কঠিন লাগবে না। আমি কিন্তু ক্ল্যাসিক্যাল শিখেছি। তাই সব ধরনের গান করতে পারি। সাধনা করে লক্ষ্যে পৌঁছাতে চাইলে অবশ্যই ক্ল্যাসিক্যাল শিখতে হবে। 

নজরুলসংগীত চর্চায় বর্তমান প্রজন্মের আগ্রহ কতখানি?
১০ বছর আগে যেমন দেখেছি, তার চেয়ে অনেক ভালো। আমাকে অনেক জায়গায় যেতে হয় বিচারক হিসেবে। অনেকেই খুব ভালো গাইছে। তাদের আরও সুযোগ দেওয়া উচিত। সুযোগের অভাবে অনেকেই হতাশ হয়ে পড়ে। এদের নিয়ে বেশি বেশি অনুষ্ঠান করা প্রয়োজন। 

নতুনদের উদ্দেশে কী বলবেন? 
নতুনদের বলব, সাধনাটা চালিয়ে যেতে হবে, পরিশ্রম চালিয়ে যেতে হবে। একটু ওপরে উঠেই যেন তোমাদের মাথা গরম না হয়ে যায়। আমি আশা করি, বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা আরও ভালো করে নজরুলসংগীত শিখবে। নজরুলকে আরও ভালোভাবে বুঝবে, মনের গভীর থেকে ধারণ করবে। এটাই আমার চাওয়া।  

নজরুলসংগীত সংরক্ষণে উদ্যোগ যথেষ্ট বলে মনে করেন?
কবি তো অনেকটা আনমনা ছিলেন, তিনি পান চিবোতেন আর লিখে লিখে কাগজ ডাস্টবিনে ফেলে দিতেন। অনেকেই তাঁর ফেলে দেওয়া লেখা সংগ্রহ করে নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন। তাঁর অনেক গান আমরা হারিয়ে ফেলেছি। নজরুলসংগীত সংরক্ষণে নজরুল ইনস্টিটিউট ভালো কাজ করছে। সেখানে সুধীন দাশের করা স্বরলিপি আছে। নজরুলের পাশে বসে গান শিখেছেন এমন শিল্পীদের রেকর্ড থেকে স্বরলিপি করা হচ্ছে। প্রতিবছর ১০০টি করে গানের শুদ্ধ স্বরলিপি প্রকাশ করা হচ্ছে। অনুরোধ থাকবে, যাঁরা ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে শেখাচ্ছেন, তাঁরা যেন নজরুল ইনস্টিটিউটে এসে শুদ্ধ স্বরলিপিগুলো সংগ্রহ করে নিয়ে যান। যেন শুদ্ধ করে শেখানো যায়।  

তাহলে এত দিন কি নজরুলসংগীত চর্চা শুদ্ধভাবে হয়নি? 
বিষয়টি তেমন নয়। আগে যেভাবে গাওয়া হতো, সেটাও শুদ্ধ। আমাদের গুরুরা তো ভুল শেখাননি। কবির আশপাশে যাঁরা শিখতেন, যেমন আঙ্গুরবালা, ইন্দুবালা, কানন দেবী, জ্ঞানেন্দ্র গোস্বামীরা। যাঁরাই শিখেছেন, তাঁদের সবার গান তো রেকর্ড হয়নি। কবি ছিলেন আত্মভোলা। হয়তো আমাকে একটা সুরে শিখিয়েছেন, তো আপনাকে আরেকটা, অন্যজনকে আরেকটা। এগুলো থেকে হয়তো রেকর্ড হয়েছে একটা। তাহলে অন্য সুরগুলো কি তাঁর সুর নয়? সে জন্যই বলছি, আগের সুরটাও গাইব, নতুন করে যে স্বরলিপি করা হচ্ছে, সেটাও গাইব। 

নজরুলসংগীতশিল্পী এবং শিক্ষক হিসেবে আপনার কি মনে হয় নজরুলকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে?
জাতীয় কবি হিসেবে মূল্যায়ন হয়, তবে সরকারিভাবে কি মূল্যায়ন করা হয়েছে? এই বিষয়টি সামনে এলে খুব কষ্ট লাগে। যত দ্রুত সম্ভব সরকারিভাবে তাঁকে তাঁর স্বীকৃতিটা দেওয়া উচিত বলে মনে করি। কবিকে যে মর্যাদা দিয়ে বঙ্গবন্ধু আমাদের দেশে নিয়ে এসেছিলেন, সেই মর্যাদাটা তাঁকে যেন দেওয়া হয়। 

নজরুলসংগীতে ফিউশন হচ্ছে আজকাল। সম্প্রতি কোক স্টুডিওতে দুটি গান করা হয়েছে। এটাকে কীভাবে দেখছেন?
আমি গান দুটি শুনেছি। ওয়েস্টার্ন মিউজিকে আমার কোনো অভিযোগ নেই। কিন্তু সুরকে বিচ্যুতি করে নিজের ইচ্ছেমতো গাইবার রাইট তো দেওয়া হয়নি। এটা তো কেউ করতে পারে না। তোমরা সুরটা ঠিক রাখো। পেছন থেকে আরেকটা সুর যোগ করে দেওয়া হলো। এগুলো তো ঠিক না। এমন কাজ কবিকে এবং কবির গানকে অসম্মানিত করে বলে আমি মনে করি। 

আজ কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মদিন। এখন তিনি বেঁচে থাকলে তাঁকে কোন গানটি শোনাতেন?
কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ২৫ তারিখে (আজ) সরকারিভাবে আমাকে ত্রিশালে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে। নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছে। কেন জানি মনে হচ্ছে কবি আমাকে বলছেন, তুমি আসো, আমাকে গান শুনিয়ে যাও। দরিরামপুরে একটা বটগাছ আছে, সেখানে কবি গান লিখতেন, কবিতা লিখতেন। আমি যত দূর জানি, সেখানেই অনুষ্ঠানটি হবে। কবিকে সামনে পেলে ‘খেলিছ এ বিশ্ব লয়ে’ ও ‘আমায় নহে গো ভালোবাসো’ গান দুটি শোনাতাম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাক্ষাৎকার

দর্শক চায় বাস্তবজীবনেও আমাদের জুটি হোক

তাবাসসুম ছোঁয়া।

শত পর্বের মাইলফলক স্পর্শ করেছে ধারাবাহিক নাটক ‘দেনা পাওনা’। গত বছর নভেম্বরে সিনেমাওয়ালা ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার শুরু হয়েছিল ধারাবাহিকটির। কে এম সোহাগ রানা পরিচালিত এ নাটকে নিপা চরিত্রে অভিনয় করে পরিচিতি পেয়েছেন তাবাসসুম ছোঁয়া। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন শিহাব আহমেদ

শিহাব আহমেদ

ধারাবাহিকটি যে এত লম্বা সময় ধরে চলবে, শুরুতে সেটা আঁচ করতে পেরেছিলেন?

শুরুতে ৮ পর্বের লক্ষ্য নিয়ে এগোনো হচ্ছিল। কিন্তু প্রচারের শুরুতেই আমরা দর্শকের ব্যাপক সাড়া পাই। তখন নির্মাতা সিদ্ধান্ত নিলেন, দর্শক যেহেতু এত ভালোবাসা দিচ্ছে, আমাদের উচিত এটা চালিয়ে যাওয়া।

এক বছরের বেশি সময় ধরে শুটিং করছেন, এই জার্নির অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

অনেক কিছু শিখেছি। দেনা পাওনা আমার জীবনে স্মরণীয় হয়ে থেকে যাবে। আগে কয়েকটা কাজ করলেও আমার অভিনয়ের হাতেখড়িটা এই নাটকের সেটেই হয়েছে। অভিনয়ে যতটা উন্নতি করেছি, তার কৃতিত্ব দেনা পাওনা নাটকের টিমের। সহশিল্পী, নির্মাতা থেকে শুরু করে ইউনিটের সবাই খুব সাপোর্ট করেছে। এ ছাড়া দর্শকের ভালোবাসা তো পেয়েছি। নিপা চরিত্রে পরিচিতি পেয়েছি, এখন মানুষ আমাকে চিনতে পারছে। সব মিলিয়ে পুরো অভিজ্ঞতাটা খুব সুন্দর।

এই চরিত্র আপনার ব্যক্তিজীবনে কোনো প্রভাব ফেলেছে কি না?

বাস্তবজীবনেও আমি অনেকটা নিপার মতো হয়ে গেছি। এখন আমি মানুষকে বোঝার চেষ্টা করি। নরম করে কথা বলি, যেমনটা নিপা করে।

অনেকে বলে, এ নাটকে খায়রুল চরিত্রে অভিনয় করা অ্যালেন শুভ্রর সঙ্গে আপনি সম্পর্কে আছেন। আসলেই কি তাই?

দেনা পাওনা নাটকে আমাদের জুটির ওপর সবাই ক্রাশ খেয়েছে। ফেসবুকে রীতিমতো হুমকি দিয়ে আমাকে মন্তব্য করা হয়, নিপা, তুমি যদি খায়রুলকে বিয়ে না করো, তাহলে তোমাকে দেখে নেব। স্ক্রিনের মতো বাস্তবেও নাকি আমাদের খুব সুন্দর লাগে। দর্শক চায় বাস্তবজীবনেও আমাদের জুটি হোক। বিষয়টা আমি খুব উপভোগ করি।

এ রকম হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে?

অ্যালেন শুভ্র একজন জেন্টেলম্যান, নাইস পারসন। অ্যালেন ভাই সত্যিই খায়রুলের মতোই। তাঁর মধ্যে শিশুসুলভ ব্যাপার আছে। পর্দায় দেখে দর্শক যেমন তাঁর মায়ায় পড়ে, তেমনি অভিনয় করতে গিয়ে আমারও তাঁর প্রতি মায়া কাজ করে। মায়াটা হয়তো দুজনের মধ্যেই কাজ করে। এই কারণেই হয়তো পর্দায় এত ভালো লাগে। আমাদের মধ্যে সুন্দর একটা সম্পর্ক আছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এমন কিছু হয়নি, যেমনটা মানুষ ভাবছে।

কনটেন্ট ক্রিয়েশন থেকে অভিনয়ে আসা। আপনার এই জার্নিটা নিয়ে জানতে চাই...

ক্যামেরার সঙ্গে আমার অনেক আগে থেকে খাতির ছিল। ফটোগ্রাফি, ভিডিওগ্রাফি শিখতে চেয়েছিলাম। কিছুদিন গিটার শিখেছি। এরপর কনটেন্ট ক্রিয়েশন শুরুর পর বিভিন্ন শুটের প্রস্তাব আসে। শখের বশে করছিলাম। প্রথম অভিনয় ওটিটিতে। ইমরাউল রাফাতের ‘ওপেন কিচেন’ সিরিজে। সেখানে একটি ছোট চরিত্র করি। সেটা করতে গিয়েই মনে হয়, এ মাধ্যমেই নিয়মিত কাজ করব। আমি মনে করি, একজন প্রপার অভিনেত্রী হতে গেলে বেসিক লার্নিং দরকার। সে জন্য কন্টিনিউয়াস প্রসেসের মধ্য দিয়ে চর্চা করে যেতে হবে। সেটাই করার চেষ্টা করছি। আমার জার্নিটা মাত্র শুরু, আশা করছি অনেক দূর যাবে।

অভিনয়কে কি পেশা হিসেবে নেওয়া যায়?

পেশা হিসেবেই নিয়েছি। হ্যাঁ, একটু ঝুঁকি তো থাকেই। আমার মনে হয়, শুধু অভিনয়ের ওপর নির্ভর না করে থাকলে ভালো। শুধু অভিনয় করব তা নয়, পাশাপাশি অনেক কিছু আছে। আমি কিন্তু কনটেন্ট ক্রিয়েশন আর অভিনয় দুটোই করছি। এমন কাজ করতে চাই, যেটাতে আমার অনীহা লাগবে না। যে কাজের প্রতি প্রেম থাকবে, সেটাই করতে চাই। আমার প্রেমটা অভিনয়ের সঙ্গে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শাকিবভক্তদের রোষানলে প্রযোজক সুমি

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
শাকিব খান ও প্রযোজক শাহরিন আক্তার সুমি। ছবি: সংগৃহীত
শাকিব খান ও প্রযোজক শাহরিন আক্তার সুমি। ছবি: সংগৃহীত

গত রোজার ঈদে শাকিব খানকে নিয়ে রিয়েল এনার্জি প্রোডাকশন হাউস থেকে নির্মিত হয় ‘বরবাদ’। বেশ আলোচিত হয় শাহরিন আক্তার সুমি প্রযোজিত সিনেমাটি। আগামী বছরের ঈদের জন্য আরেকটি সিনেমা প্রযোজনা করছেন সুমি। তাঁর নতুন সিনেমা ‘রাক্ষস’-এর নায়ক সিয়াম আহমেদ। সম্প্রতি সিনেমার সংবাদ সম্মেলনে প্রযোজক সুমি মন্তব্য করেন, শাকিব খান থাকলেই সিনেমা ব্লকবাস্টার হবে এটা ভেবে তিনি বরবাদ বানাননি। এমন মন্তব্যের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় শাকিবভক্তদের রোষানলে পড়েছেন এই প্রযোজক।

বরবাদ সাফল্যের পর সুমি জানিয়েছিলেন, তাঁর পরবর্তী সিনেমায়ও থাকবেন শাকিব খান। শেষ পর্যন্ত তাঁকে ছাড়াই দ্বিতীয় সিনেমা শুরু করলেন তিনি। রাক্ষসের সংবাদ সম্মেলনে সুমির কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, এবার তাঁর সিনেমায় শাকিব খান নেই কেন? জবাবের একপর্যায়ে সুমি বলেন, ‘শাকিব খান থাকলে বরবাদ ব্লকবাস্টার হবে আর না থাকলে হবে না, এটা ভেবে আমি সিনেমা করিনি। তাঁর সব সিনেমাই যে ব্লকবাস্টার ছিল, এমনটা কিন্তু না।’

সুমির এমন কথা ভালোভাবে নেয়নি শাকিব খানের ভক্তরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো তুলাধোনা করছেন সুমিকে। সমালোচনার জবাবে সংবাদমাধ্যমে সুমি জানান, শাকিব খানকে নিচু করে তিনি কোনো কথা বলেননি।

শাহরিন আক্তার সুমি বলেন, ‘আমি বলেছিলাম, বরবাদে শাকিব খানকে এ জন্য নিইনি যে আমার সিনেমা হিট হতে হবে। বরবাদের গল্পে তাঁকে ছাড়া অন্য কেউ হলে সেটা মানাত না। এ কারণেই তাঁকে নেওয়া, সিনেমা হিট করানোর জন্য না। আর রাক্ষসের গল্পে সিয়ামকে মানাবে বলেই তাঁকে নেওয়া হয়েছে। হয়তো আমি বিষয়টি ঠিকমতো বোঝাতে পারিনি। এটা আমার ব্যর্থতা। আমি শাকিব ভাইকে নিচু করে কোনো কথা বলিনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নির্ধারিত সময়ের দুই দিন পর শুরু হচ্ছে নবীন প্রবীণ নাট্যমেলা

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
বাতিঘরের ‘প্যারাবোলা’ নাটকের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
বাতিঘরের ‘প্যারাবোলা’ নাটকের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

১৯ ডিসেম্বর রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হওয়ার কথা ছিল নাট্যতীর্থ আয়োজিত ‘নবীন প্রবীণ নাট্যমেলা’ শীর্ষক আট দিনব্যাপী নাট্যোৎসব। তবে শিল্পকলা একাডেমির অনুষ্ঠান ও প্রদর্শনী অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হওয়ার কারণে শুরু হয়নি নবীন প্রবীণ নাট্যমেলা। অবশেষে আজ থেকে শুরু হচ্ছে এই নাট্যোৎসব।

‘রাষ্ট্রীয় শোক দিবস ও অনিবার্য কারণবশত’ ১৯ ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সব অনুষ্ঠান ও প্রদর্শনী স্থগিতের ঘোষণা দেয় শিল্পকলা একাডেমি। এমন ঘোষণা নিয়ে তৈরি হয় ধোঁয়াশা। অনেকেই মনে করেন, দীর্ঘ সময়ের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে শিল্পকলা একাডেমি। তবে সব শঙ্কা দূর করে গতকাল শিল্পকলা একাডেমির ফেসবুক পেজে জানানো হয়, ২১ ডিসেম্বর থেকে আবার শুরু হবে অনুষ্ঠান ও প্রদর্শনী।

শিল্পকলা একাডেমির ঘোষণা অনুযায়ী, ১৯ ও ২০ ডিসেম্বর বন্ধ ছিল সব আয়োজন। যে কারণে স্থগিত করা হয় নবীন প্রবীণ নাট্যমেলা। তবে বেশি দিন অপেক্ষায় থাকতে হলো না নাট্যপ্রেমীদের। শিল্পকলা একাডেমির অনুষ্ঠান ও প্রদর্শনী চালুর সিদ্ধান্তের পরই নাট্যতীর্থ থেকে জানানো হয়েছে, আজ ২১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে নবীন প্রবীণ নাট্যমেলা। আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাট্যতীর্থ দলের প্রধান ও নাট্যমেলার আহ্বায়ক তপন হাফিজ।

সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় আয়োজিত এই উৎসবে প্রদর্শিত হবে আট দলের আটটি নাটক। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় দেখা যাবে নাটকগুলো। উৎসবে ছয়জন নাট্যব্যক্তিত্বকে দেওয়া হবে নাট্যবন্ধু সম্মাননা। এ ছাড়া অনুষ্ঠিত হবে সেমিনার।

উৎসবের প্রথম দিন প্রদর্শিত হবে তীরন্দাজ রেপার্টরির প্রযোজনা দীপক সুমন নির্দেশিত ‘কণ্ঠনালীতে সূর্য’। দ্বিতীয় দিন মঞ্চস্থ হবে আরণ্যক নাট্যদলের ‘রাঢ়াঙ’। রচনা ও নির্দেশনায় মামুনুর রশীদ। এ ছাড়া এ উৎসবে দেখা যাবে বাতিঘরের ‘প্যারাবোলা’, নাট্যতীর্থের ‘জুলিয়াস সিজার’, ঢাকা থিয়েটার মঞ্চের ‘ঘরজামাই’, পদাতিক নাট্য সংসদের (টিএসসি) ‘আলিবাবা এবং চল্লিশ চোর’ এবং থিয়েটার নাট্যদলের ‘মেরাজ ফকিরের মা’।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাধুরীর কাছে ক্যারিয়ারের চেয়ে পরিবার বেশি জরুরি

বিনোদন ডেস্ক
মাধুরী দীক্ষিত। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
মাধুরী দীক্ষিত। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

আশির দশকের শেষ দিকে এবং নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে বলিউডের অন্যতম ব্যস্ত অভিনেত্রী ছিলেন মাধুরী দীক্ষিত। ওই সময় প্রতিবছর ১০টির বেশি সিনেমা মুক্তি পেত তাঁর। তবে সাফল্যের তুঙ্গে থাকা অবস্থায়ই বড় একটি সিদ্ধান্ত নেন মাধুরী। তারকাখ্যাতি পাশ কাটিয়ে ব্যক্তিজীবনকে বেশি গুরুত্ব দেন। ১৯৯৯ সালে ডা. শ্রীরাম নেনেকে বিয়ে করে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। ফেলে যান সফল ক্যারিয়ার। তবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া নাকি মোটেই কঠিন ছিল না মাধুরীর জন্য।

সম্প্রতি মিড-ডেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওই সময় নিয়ে মুখ খুলেছেন মাধুরী দীক্ষিত। ক্যারিয়ারের সাফল্য নয়, পরিবার-সন্তান-সংসারই নাকি ছিল তাঁর স্বপ্ন। অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি সব সময় ভাবতাম, আমার বিয়ে হবে, একটি সংসার হবে, সন্তান হবে। যখন সেটা ঘটল, মনে হয়েছিল, এত দিনে স্বপ্ন সত্যি হলো। বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতে দুবার ভাবিনি। বিয়ে করে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাই।’

প্রায় এক যুগ মাধুরী কাটিয়েছেন কলোরাডো অঙ্গরাজ্যের ডেনভারে। সেখানে প্রকৃতির নির্জনতায় সহজ-সাধারণ পারিবারিক জীবনেই নিজের সবটুকু মনোযোগ ঢেলে দিয়েছিলেন অভিনেত্রী। যুক্তরাষ্ট্রে আগে থেকে তাঁর ভাইবোনেরা থাকতেন। তাঁদের সঙ্গেও মাধুরীর নিয়মিত দেখা হতো। তাই সময়টা মন্দ কাটত না। অভিনেত্রী বলেন, ‘জীবনের প্রায়োরিটি আসলে কী, সেটা আগে থেকে জানতাম। সেখানে নিজের কাজ নিজেকে করতে হতো। তাতেও কোনো কষ্ট লাগত না। আফসোস হতো না।’

ক্যারিয়ারের জাঁকজমকের চেয়ে বরং পারিবারিক জীবন, সন্তান-সংসার—এসবই মাধুরীর ভালো লাগত বেশি। অভিনেত্রী বলেন, ‘বাচ্চাদের নিয়ে নিজের মতো থাকতাম। তাদের পার্কে নিয়ে যেতাম। ওদের সঙ্গে খেলতাম, মজা করতাম। কেউ আমাকে চিনত না। সময়টা ভীষণ উপভোগ করেছি।’

পাঁচ বছর শোবিজ থেকে দূরে ছিলেন মাধুরী। ২০০৭ সালে ‘আজা নাচলে’ দিয়ে আবার বড় পর্দায় ফেরেন। সিনেমাটি বক্স অফিসে অত সাড়া না পেলেও তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়। এরপর আবারও বিরতি। ২০১৩ সালে ‘বোম্বে টকিজ’ ও ‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’ সিনেমার গানে পারফর্ম করে সাড়া ফেলেন। আবারও মাধুরীকে নিয়ে চর্চা শুরু হয় বলিউডে।

এরপর সিনেমায় সেই অর্থে আর নিয়মিত হননি মাধুরী দীক্ষিত। অল্পস্বল্প কাজ করেছেন। রিয়েলিটি শোতে বিচারক হয়েছেন। ওয়েব কনটেন্টেও দেখা দিয়েছেন। সম্প্রতি জিওহটস্টারের ‘মিসেস দেশপান্ডে’ সিরিজ দিয়ে আবারও আলোচনায় তিনি। ১৯ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া সিরিজটি তৈরি হয়েছে ফরাসি থ্রিলার ‘লা ম্যান্টে’র অনুপ্রেরণায়। এতে মাধুরী অভিনয় করেছেন একজন সিরিয়াল কিলারের চরিত্রে।

মাধুরী সব সময় চেয়েছেন ক্যারিয়ার আর পরিবার—দুটির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে। শোবিজের তারকাখ্যাতি তাঁর পারিবারিক জীবনকে যেন প্রভাবিত করতে না পারে। হলিউড রিপোর্টার ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেন, ‘যখন আমি বাড়িতে ঢুকি, তারকাখ্যাতিকে বাইরে রেখে যাই। সেখানে আমি একেবারেই সাধারণ—একজন স্ত্রী, একজন মা। আর দশটা মানুষের মতোই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত