ইশতিয়াক হাসান

অনেকেই চিতা আর চিতা বাঘ নিয়ে ধন্দে পড়ে যান। দুটি যে আলাদা প্রাণী এটিও জানেন না কেউ কেউ। এমনকি কোনো কোনো বইয়ে ডাঙার দ্রুততম জন্তু হিসেবে চিতা বাঘের ছবি ছেপে দেওয়া হয় অবলীলায়।
দুটোরই লম্বা লেজ, অনেকটা একই রকম গায়ের রং ও ফোঁটা বিভ্রান্ত করে মানুষকে। তবে একটু ভালোভাবে খেয়াল করলেই এদের অনেক পার্থক্য দৃশ্যমান হয়ে উঠবে আপনার সামনে। তেমনি আচরণসহ নানা বিষয়ে আছে পার্থক্য।
নানান ধরনের পার্থক্য
চিতার ইংরেজি নাম চিতা (cheetah) ও অপরদিকে চিতা বাঘের ইংরেজি নাম লেপার্ড। তবে ভারতীয় উপমহাদেশে হান্টিং লেপার্ড নামেও বেশ পরিচিতি পায়। এর কারণ, একসময় ভারতীয় অভিজাতরা চিতা পোষ মানিয়ে তা দিয়ে অ্যান্টিলোপ শিকার করতেন। ওই চিতারা মায়ের থেকে আগেই অ্যান্টিলোপ শিকারের বিদ্যা শিখে আসত। স্থলভাগের দ্রুততম প্রাণী কিন্তু চিতা বাঘ নয়, চিতা।
দুটি প্রাণীর মুখমণ্ডলেও পার্থক্য আছে। চিতার নাকের দুই ধার বরাবর চোখ থেকে চোয়াল পর্যন্ত গাঢ় কালো দাগ আছে। চিতা বাঘের এমন কোনো দাগ নেই। চিতার মুখ গোলাকার ও দাঁত ছোট। চিতাবাঘের মুখ একটু লম্বাটে, চোয়াল শক্তিশালী।
চিতার উচ্চতা চিতা বাঘের চেয়ে বেশি। তবে চিতা বাঘের স্বাস্থ্য চিতার তুলনায় ভালো অর্থাৎ ভারী গড়ন এদের। অপর দিকে দ্রুতগতি সম্পন্ন প্রাণী হওয়ায় চিতার শরীর যে একটু পলকা ধরনের এটা বুঝতেই পারছেন।
পাঁচটি বিগ ক্যাট বা বড় বিড়ালের একটি চিতা বাঘ। তবে চিতাকে সাধারণত বিগ ক্যাটের অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। কারণ এরা প্যান্থারা গণের অন্তর্ভুক্ত নয়। চিতার গর্জন করার অক্ষমতাও একে বড় বিড়ালদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত না করার পক্ষে যুক্তি হিসেবে দেখানো হয়।
চিতা ও চিতা বাঘ দুটি প্রাণীরই হলুদ শরীরের কালো ফোঁটা থাকে। তবে এই ফোঁটা বা দাগ একেবারেই আলাদা। চিতা বাঘ আর চিতা দুটোর চামড়ার বেলায় হলদে-বাদামি জমিনে কালো ফোঁটা আছে। তবে একটু ভালোভাবে খেয়াল করলে দেখবেন চিতাবাঘের কালো ফোঁটাগুলো মাঝখানে হলুদ রেখে অনেকটা বলয়ের রূপ নিলেও চিতার বেলায় মাঝখানের হলুদ চিহ্ন ছাড়া কেবলই কালো ফোঁটা।
চিতা বাঘের নখ বিড়ালের মতো। তবে এই ধারালো নখ থাবার আড়ালে ঢুকিয়ে থাকে। শিকার ধরার সময় নখ বার করে তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। কিন্তু, চিতার নখ অনেকটা কুকুরের মতো। তা বাইরের দিকে বের করাই থাকে। চিতার গাছে চড়তে না পারার অন্যতম কারণ হলো নখের এই গড়ন। এই নখের কারণে পায়ের ছাপ থেকে দুটি প্রাণীকে আলাদা করা যায়।
চিতা সাধারণত দিনের আলোতেই শিকার করে। রাতে কম দেখতে পায়। তবে চিতাবাঘ রাতেই শিকার ধরতে পছন্দ করে। এদের চোখের কোষ ওই সময়ই বেশি সংবেদনশীল। অবশ্য পরিস্থিতির অদল-বদল মানে কখনো চিতাকে রাতে ও চিতা বাঘকে দিনেও শিকার করতে দেখা যায়। চোখের কথা বললে, চিতার চোখ হলুদাভ বাদামি এবং চিতা বাঘের চোখ সবজে নীল।
এদিকে চিতাকে সাধারণত খোলামেলা জায়গা অর্থাৎ সাভানা এলাকায় বিচরণ করতে দেখা যায়, অপর দিকে চিতা বাঘের সাধারণ একটু গভীর জঙ্গল পছন্দ।
চিতার নাকের গর্ত চিতা বাঘের চেয়ে বড়। এটি প্রচণ্ড গতিতে দৌড়ানোর সময় তাদের শ্বাস নিতে সহায়তা করে। তাদের ফুসফুস, হৃৎপিণ্ড এবং অন্যান্য বিভিন্ন অঙ্গ একই কারণে তাদের আকারের তুলনায় বড়।
ঘণ্টায় ৭৫ মাইল বেগে দৌড়ানোর সময়, চিতার চওড়া, চ্যাপ্টা লেজ তাদের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। তাদের পেছনের পা সামনের পায়ের চেয়ে বড়, যা তাদের গতি তিন সেকেন্ডের মধ্যে ঘণ্টায় ৬৪ মাইলে নিয়ে যায়। যদিও চিতা সর্বোচ্চ গতি বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারে না। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের শিকার ধরতে হবে।
চিতাদের তুলনায় অনেক কম গতি সম্পন্ন চিতা বাঘেরা। এদের পেছনের পায়ের তুলনায় সামনের পা বড় থাকে। যা তাদের সামনের ভারী অংশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এর ফলে শিকারের ওপর নিজের ভর চাপিয়ে দিতে পারে। তাদের গতির যে অভাব তারা তা পুষিয়ে দেয় গাছে আরোহণের দক্ষতা এবং নিজের চেয়ে ভারী শিকারকে গাছে টেনে তোলার সক্ষমতার মাধ্যমে।
চিতা বাঘ তাদের শিকারকে কব্জায় আনতে, এর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং পরাস্থ করার জন্য প্রচণ্ড শক্তি ব্যবহার করে। তাদের শিকারকে বলা যেতে পারে ‘অনুসরণ’ ও ঝাঁকুনি’ পদ্ধতি। অতর্কিতে আক্রমণ করে শিকার করে এরা। তারা চিতার চেয়ে বড় শিকার ধরতে সক্ষম।
চিতা বাঘ এমনকি একটি গাছের ডাল-পাতার আড়াল থেকেও শিকারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে। চিতা বাঘের মতো, চিতাও শুরুতে শিকারের কাছাকাছি যায়। তারপর দ্রুতগতিতে তাড়া করে। উভয়েই তাদের ঘাড়ে কামড় দিয়ে শিকারকে হত্যা করে। যদিও চিতা তাদের শিকারকে মারতে করতে কয়েক মিনিট সময় নিতে পারে।
চিতা এবং চিতাবাঘ উভয়ই সুযোগসন্ধানী শিকারি। চিতা ছোট থেকে মাঝারি আকারের স্তন্যপায়ী প্রাণী শিকার করতে পছন্দ করে। প্রধানত ইমপালা এবং স্প্রিংবকের মতো ছোট আকারের অ্যান্টিলোপ শিকার করে। চিতা বাঘ বেশ বড় আকার প্রাণীও শিকার করতে সক্ষম। এর মধ্যে এমনকি নিজের দ্বিগুণ আকারের বড় জাতের হরিণও আছে। অবশ্য ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী এমনকি মওকা মতো পেলে পাখি শিকার করতে দেখা যায় দুটি জন্তুকেই।
চিতা আছে কোথায়
সম্প্রতি ভারতে আফ্রিকার দেশ নামিবিয়া থেকে চিতা আনা নিয়ে বেশ আলোড়ন উঠেছে। দুই দফায় মোট ২০টি প্রাপ্ত বয়স্ক চিতা আনা হয় সেখান থেকে। এগুলো ছাড়া হয় মধ্যপ্রদেশের কুনো ন্যাশনাল পার্কে। মজার ঘটনা এ অরণ্যে চিতা বাঘও আছে। তবে কুনো জাতীয় উদ্যানে আনার পর বিভিন্ন সময় চিতারা বাচ্চাও দিয়েছে। তবে এখানে বেশ কয়েকটি প্রাপ্ত বয়স্ক ও বাচ্চা চিতা মারা যাওয়ায় এই প্রকল্পটি নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে। বর্তমানের কুনোতে ২১টি চিতা আছে। এর মধ্যে ছয়টি মদ্দা, আটটি মাদি ও সাতটি বাচ্চা।
তবে কথা হলো এরা আফ্রিকান চিতা। এশীয় চিতা এখন আছে কেবল পৃথিবীর একটি দেশে, সেটি ইরান। ভারতেও এক সময় এশীয় চিতাদের চমৎকার বিচরণক্ষেত্র ছিল।
ভারত থেকে এশীয় চিতা বিলুপ্ত হওয়ার একটা বড় কারণ বন্য চিতা ধরা। অপর কারণ, বন্দী অবস্থায় এদের বংশ বৃদ্ধি না হওয়া। ১৬১৩ সালে সম্রাট জাহাঙ্গীর প্রথম কোনো পোষা চিতার বাচ্চা দেওয়ার ঘটনা বর্ণনা করেন তার ‘তুজাক-ই-জাহাঙ্গিরি’ বইয়ে।
অ্যান্টিলোপ ধরতে চিতা পোষ মানানোর প্রথম রেকর্ড পাওয়া যায় কালিকিনির রাজার রাজসভার বারো শতকের বিবরণীতে। মধ্যযুগে ভারতজুড়ে দারুণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে স্পোর্টটি। চিতার সাহায্যে কৃষ্ণসার মৃগ শিকারের ধুম পড়ে যায় ওই সময়।
বাদশাহ আকবর তাঁর শাসনামলে আনুমানিক ৯ হাজার চিতা বন্দী করেন। বন্য চিতা ধরার হারটা আঠারো শতকের কোনো এক সময়ে একেবারে চূড়ায় পৌঁছে যায়। জঙ্গল থেকে চিতা ধরে আনতে আনতে সেখানে এদের সংখ্যা একেবারে কমে যায় বিংশ শতকের গোড়ার দিকে। অ্যান্টিলোপ শিকারের খেলাটিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য ভারতীয় রাজারা ১৯১৮-৪৫ সালের মধ্যে আফ্রিকা থেকে চিতা আনার খবর মেলে।
পরিবেশবাদী ঐতিহাসিক মহেশ রানগর্জন ‘জার্নাল অব মুম্বাই ন্যাচারাল হিস্ট্রি’র ১৯৯৮ সালের সংখ্যায় লেখেন, ১৮৭১ সালে প্রাপ্তবয়স্ক ও বাচ্চা চিতা জীবন্ত উদ্ধারের জন্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। উপমহাদেশে চিতার ভাগ্য নির্ধারণে কফিনে শেষ পেরেক হিসেবে কাজ করে এই ঘোষণা।
যতদূর জানা যায় ভারতের শেষ তিনটি চিতা শিকার করেন সারগুজার মহারাজা, ১৯৪৮ সালে। তবে ১৯৫১ সালে ছত্তিশগড়ের উত্তর-পশ্চিমে একটি মাদি চিতা দেখার রেকর্ড আছে। ১৯৫১-৫২ সালের দিকেই ভারত থেকে চিতাকে বিলুপ্ত বলে ঘোষণা করা হয়। তবে এরপরও চিতা দেখার বিশ্বাসযোগ্য তথ্য মেলে, ১৯৬৭ ও ১৯৬৮ সালে মধ্যপ্রদেশের করিয়া এবং সারগুজার জঙ্গলে, তারপর ১৯৭৫-এ হাজারিবাগ জেলার দান্তো কালান গ্রামে।
সর্বশেষ ২০১৩ সালে ওডিশার সিমলাপালের জঙ্গলে চিতা দেখার দাবি করেন টাইগার প্রজেক্টের দুজন কর্মকর্তা। তবে গবেষকেরা এই দাবিকে খুব একটা গুরুত্ব দেননি। তাঁদের ধারণা, অ্যালবিনো চিতাবাঘকেই চিতার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেছেন কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশে কি চিতা ছিল
১৯৩৫ সালে বোম্বাই ন্যাচারাল হিস্ট্রি সোসাইটির এক জার্নালে চিতার এলাকা হিসেবে বাংলা থেকে মধ্যপ্রদেশ, পাঞ্জাব ও রাজপুতানা (বর্তমান রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশ ও গুজরাটের আংশিক) এবং মধ্যপ্রদেশ থেকে ডেকানের (দক্ষিণের ভারতের বড় একটি অংশ ডেকান মালভূমির অংশ) কথা বলা হয়েছে। এর কোনোটির সঙ্গে বাংলাদেশের সীমানা নেই। সে হিসেবে ধরে নেওয়া যায় বাংলাদেশের সীমানায় পড়া কোনো এলাকায় নিকট অতীতে অন্তত এই জন্তুটি ছিল না।
একসময় এশীয় চিতা ছিল মধ্য এশিয়া, আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং আরব উপদ্বীপে। পাকিস্তানে বেলুচিস্তানে ১৯৯০-এর দশকেও ছিল, শেষটি মারা পড়ে ১৯৯৭ সালে চাগাইয়ে। কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান থেকেও ১৯৮০ সালের পরে বিদায় নেয়। তবে ২০১৪ সালে হঠাৎই তুর্কমিনিস্তানের বাধিজ স্টেট ন্যাশনাল পার্কে একটা চিতার দেখা মেলে। হয়তো ওটা ইরান থেকে এসেছে।
ইরানের চিতা
এবার এশীয় চিতার একমাত্র আবাসস্থল ইরানের দিকে নজর দেওয়া যাক। ইরানের বিস্তৃত মালভূমিতে এখন ৫০টির কম চিতা টিকে আছে। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা দ্রুত পদক্ষেপ ছাড়া এদের টিকিয়ে রাখা অসম্ভব। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে কয়েকটি এলাকায় থাকলেও তুরান আর মিয়ানদাশতের আশপাশে বাস করা চিতাগুলোই শেষ আশার আলো হিসেবে টিমটিম করে জ্বলছে।
গত ১৫ বছরে চিতার সংখ্যা দুনিয়াজুড়ে শতকরা ৫৩ ভাগ কমেছে বলে জানিয়েছে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক। বিচরণের এলাকার ৯১ ভাগই হারিয়েছে চিতারা। ইরানের ওই চিতাসহ গোটা পৃথিবীতে এখন সাকল্যে ৭ হাজার ১০০ চিতা আছে। আফ্রিকান চিতারা মহাদেশের অ্যাঙ্গোলা, মোজাম্বিক, দক্ষিণ আফ্রিকা, বতসোয়ানা, জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়া এই ছয়টি দেশে আটকে গেছে।
চিতা না থাকলেও চিতা বাঘ আছে বাংলাদেশে
একটা সময় প্রায় গোটা বাংলাদেশেই ছিল চিতা বাঘেদের বিচরণ। গত শতকের মাঝামাঝি সময়ে, এমনকি উত্তরা ও মিরপুরেও দেখা মিলত এদের। মধুপুর ও ভাওয়ালের গড় তো ছিল চিতা বাঘেদের প্রিয় বিচরণ ভূমি। সিলেট বিভাগের চা বাগানগুলোতেও মহানন্দে চষে বেড়াত তারা। তবে এখন পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, অনেকে বিশ্বাসই করতে চান না বাংলাদেশের বনাঞ্চলে আর বুনো চিতা বাঘ আছে। কিন্তু শত বিপদ মাথায় নিয়ে এখনো এ দেশের প্রকৃতিতে সত্যি আছে এই প্রাণীটি।
পার্বত্য চট্টগ্রামের বন-পাহাড়ে এখনো হঠাৎ হঠাৎ মেলে চিতার খবর। শিকারিদের সঙ্গে লুকোচুরি খেলে এখনো টিকে আছে ওরা। ‘ডিটেকটিং দ্য স্পট: আ রিভিউ অন ল্যাপার্ড অকারেন্সেস ইন বাংলাদেশ’ নামে একটি কাজ করেছেন মুনতাসির আকাশ, স্কট ট্রেগারস, তানিয়া জাকির, শাহরিয়ার সিজার রহমান, ফাতেমা-তুজ-জোহরা খালেক মিলা ও অনিমেষ ঘোষ। চিতা বাঘ নিয়ে বাংলাদেশে এমন গবেষণা এটাই প্রথম। সেখান থেকেও জানা যায় বাংলাদেশে চিতা বাঘদের সাম্প্রতিক বিচরণের নানা খবর। সেখানে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে চিতা বাঘ দেখার পাঁচটি ও কক্সবাজার অঞ্চলে চিতা বাঘ দেখার নিশ্চিত দুটি তথ্যের কথা বলা হয়েছে।
সুপ্রিয় চাকমা, শাহরিয়ার সিজার রহমানদের গবেষণা, ক্যামেরা ট্র্যাপও নিশ্চিত করছে, এখনো পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্তত কয়েকটি এলাকায় চিতা বাঘের আলাদা বসতি আছে। যদিও কোনোখানেই সংখ্যাটি বেশি নয়। রাঙামাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক এবং বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ সুপ্রিয় চাকমা যে গবেষণা করেছিলেন, তার ফলাফল নিশ্চিত করে বান্দরবানের সাঙ্গু এবং রাঙামাটির কাসালং এবং রাইংখং সংরক্ষিত অরণ্যে চিতা বাঘের উপস্থিতি।
বাংলাদেশের বনে এমনকি কালো চিতাও দেখা গেছে। শরীরে মেলানিনের আধিক্যে যেসব চিতাবাঘের গায়ের রং কালো হয়, তারাই পরিচিত কালো চিতা বা ব্ল্যাক প্যান্থার নামে। তবে এরা আলাদা কোনো প্রজাতি নয়। বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞ খসরু চৌধুরী কালো চিতা দেখেছিলেন প্রায় তিন যুগ আগে বান্দরবানের আলীকদম এলাকায়। ২০১১ সালে বড় মোদক যাওয়ার সময় আমাদের মারমা গাইড আংসু মারমার কাছ থেকে জানতে পারলাম, ১৯৯০ সালের দিকে রেমাক্রি এলাকায় একটা কালো চিতা ফাঁদ পেতে মেরেছিল শিকারিরা।
সিলেট বিভাগের কোনো কোনো অরণ্যেও এদের দেখা যাওয়ার কথা শোনা যায় কখনো কখনো। এক সময় বাংলাদেশের উত্তরের জেলা গুলিতে এদের চমৎকার বসতি ছিল। এখনো রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলায়, বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে এদের আনাগোনার খবর মিলছে নিয়মিত বিরতিতেই। বেশির ভাগের ধারণা সীমান্তের ওপার থেকেই আসে এরা। তবে এখানে এলেই সাধারণত মানুষের পিটুনিতে মরতে হয় প্রাণীটিকে। উত্তরের জেলাগুলিতে এমন করুণ পরিণতির শিকার হওয়ার পরও আশার কথা, পূর্বপুরুষের পুরোনো আস্তানাকে এখনো একেবারে ভুলে যায়নি নয়া জমানার চিতা বাঘেরা। এখন জরুরি মানুষের সঙ্গে এদের সংঘাতটা এড়ানো।
চিতা আর চিতা বাঘের পার্থক্য বলতে গিয়ে দুটি প্রাণী নিয়েই বিস্তর আলোচনা হয়ে গেল। আর এটা পরিষ্কার যে দুটো প্রাণীই আছে খুব বিপদে। আর সেটা আমাদের মানুষদের কারণেই। কাজেই আমাদের উচিত এদের রক্ষা করা। না হলে আরও অনেক সুন্দর প্রাণীর মতো এরাও এক সময় হারিয়ে যাবে পৃথিবী থেকে।
তথ্য সূত্র: দ্য হিন্দু, বিবিসি ওয়াইল্ডলাইফ ম্যাগাজিন, উইকিপিডিয়া

অনেকেই চিতা আর চিতা বাঘ নিয়ে ধন্দে পড়ে যান। দুটি যে আলাদা প্রাণী এটিও জানেন না কেউ কেউ। এমনকি কোনো কোনো বইয়ে ডাঙার দ্রুততম জন্তু হিসেবে চিতা বাঘের ছবি ছেপে দেওয়া হয় অবলীলায়।
দুটোরই লম্বা লেজ, অনেকটা একই রকম গায়ের রং ও ফোঁটা বিভ্রান্ত করে মানুষকে। তবে একটু ভালোভাবে খেয়াল করলেই এদের অনেক পার্থক্য দৃশ্যমান হয়ে উঠবে আপনার সামনে। তেমনি আচরণসহ নানা বিষয়ে আছে পার্থক্য।
নানান ধরনের পার্থক্য
চিতার ইংরেজি নাম চিতা (cheetah) ও অপরদিকে চিতা বাঘের ইংরেজি নাম লেপার্ড। তবে ভারতীয় উপমহাদেশে হান্টিং লেপার্ড নামেও বেশ পরিচিতি পায়। এর কারণ, একসময় ভারতীয় অভিজাতরা চিতা পোষ মানিয়ে তা দিয়ে অ্যান্টিলোপ শিকার করতেন। ওই চিতারা মায়ের থেকে আগেই অ্যান্টিলোপ শিকারের বিদ্যা শিখে আসত। স্থলভাগের দ্রুততম প্রাণী কিন্তু চিতা বাঘ নয়, চিতা।
দুটি প্রাণীর মুখমণ্ডলেও পার্থক্য আছে। চিতার নাকের দুই ধার বরাবর চোখ থেকে চোয়াল পর্যন্ত গাঢ় কালো দাগ আছে। চিতা বাঘের এমন কোনো দাগ নেই। চিতার মুখ গোলাকার ও দাঁত ছোট। চিতাবাঘের মুখ একটু লম্বাটে, চোয়াল শক্তিশালী।
চিতার উচ্চতা চিতা বাঘের চেয়ে বেশি। তবে চিতা বাঘের স্বাস্থ্য চিতার তুলনায় ভালো অর্থাৎ ভারী গড়ন এদের। অপর দিকে দ্রুতগতি সম্পন্ন প্রাণী হওয়ায় চিতার শরীর যে একটু পলকা ধরনের এটা বুঝতেই পারছেন।
পাঁচটি বিগ ক্যাট বা বড় বিড়ালের একটি চিতা বাঘ। তবে চিতাকে সাধারণত বিগ ক্যাটের অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। কারণ এরা প্যান্থারা গণের অন্তর্ভুক্ত নয়। চিতার গর্জন করার অক্ষমতাও একে বড় বিড়ালদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত না করার পক্ষে যুক্তি হিসেবে দেখানো হয়।
চিতা ও চিতা বাঘ দুটি প্রাণীরই হলুদ শরীরের কালো ফোঁটা থাকে। তবে এই ফোঁটা বা দাগ একেবারেই আলাদা। চিতা বাঘ আর চিতা দুটোর চামড়ার বেলায় হলদে-বাদামি জমিনে কালো ফোঁটা আছে। তবে একটু ভালোভাবে খেয়াল করলে দেখবেন চিতাবাঘের কালো ফোঁটাগুলো মাঝখানে হলুদ রেখে অনেকটা বলয়ের রূপ নিলেও চিতার বেলায় মাঝখানের হলুদ চিহ্ন ছাড়া কেবলই কালো ফোঁটা।
চিতা বাঘের নখ বিড়ালের মতো। তবে এই ধারালো নখ থাবার আড়ালে ঢুকিয়ে থাকে। শিকার ধরার সময় নখ বার করে তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। কিন্তু, চিতার নখ অনেকটা কুকুরের মতো। তা বাইরের দিকে বের করাই থাকে। চিতার গাছে চড়তে না পারার অন্যতম কারণ হলো নখের এই গড়ন। এই নখের কারণে পায়ের ছাপ থেকে দুটি প্রাণীকে আলাদা করা যায়।
চিতা সাধারণত দিনের আলোতেই শিকার করে। রাতে কম দেখতে পায়। তবে চিতাবাঘ রাতেই শিকার ধরতে পছন্দ করে। এদের চোখের কোষ ওই সময়ই বেশি সংবেদনশীল। অবশ্য পরিস্থিতির অদল-বদল মানে কখনো চিতাকে রাতে ও চিতা বাঘকে দিনেও শিকার করতে দেখা যায়। চোখের কথা বললে, চিতার চোখ হলুদাভ বাদামি এবং চিতা বাঘের চোখ সবজে নীল।
এদিকে চিতাকে সাধারণত খোলামেলা জায়গা অর্থাৎ সাভানা এলাকায় বিচরণ করতে দেখা যায়, অপর দিকে চিতা বাঘের সাধারণ একটু গভীর জঙ্গল পছন্দ।
চিতার নাকের গর্ত চিতা বাঘের চেয়ে বড়। এটি প্রচণ্ড গতিতে দৌড়ানোর সময় তাদের শ্বাস নিতে সহায়তা করে। তাদের ফুসফুস, হৃৎপিণ্ড এবং অন্যান্য বিভিন্ন অঙ্গ একই কারণে তাদের আকারের তুলনায় বড়।
ঘণ্টায় ৭৫ মাইল বেগে দৌড়ানোর সময়, চিতার চওড়া, চ্যাপ্টা লেজ তাদের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। তাদের পেছনের পা সামনের পায়ের চেয়ে বড়, যা তাদের গতি তিন সেকেন্ডের মধ্যে ঘণ্টায় ৬৪ মাইলে নিয়ে যায়। যদিও চিতা সর্বোচ্চ গতি বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারে না। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের শিকার ধরতে হবে।
চিতাদের তুলনায় অনেক কম গতি সম্পন্ন চিতা বাঘেরা। এদের পেছনের পায়ের তুলনায় সামনের পা বড় থাকে। যা তাদের সামনের ভারী অংশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এর ফলে শিকারের ওপর নিজের ভর চাপিয়ে দিতে পারে। তাদের গতির যে অভাব তারা তা পুষিয়ে দেয় গাছে আরোহণের দক্ষতা এবং নিজের চেয়ে ভারী শিকারকে গাছে টেনে তোলার সক্ষমতার মাধ্যমে।
চিতা বাঘ তাদের শিকারকে কব্জায় আনতে, এর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং পরাস্থ করার জন্য প্রচণ্ড শক্তি ব্যবহার করে। তাদের শিকারকে বলা যেতে পারে ‘অনুসরণ’ ও ঝাঁকুনি’ পদ্ধতি। অতর্কিতে আক্রমণ করে শিকার করে এরা। তারা চিতার চেয়ে বড় শিকার ধরতে সক্ষম।
চিতা বাঘ এমনকি একটি গাছের ডাল-পাতার আড়াল থেকেও শিকারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে। চিতা বাঘের মতো, চিতাও শুরুতে শিকারের কাছাকাছি যায়। তারপর দ্রুতগতিতে তাড়া করে। উভয়েই তাদের ঘাড়ে কামড় দিয়ে শিকারকে হত্যা করে। যদিও চিতা তাদের শিকারকে মারতে করতে কয়েক মিনিট সময় নিতে পারে।
চিতা এবং চিতাবাঘ উভয়ই সুযোগসন্ধানী শিকারি। চিতা ছোট থেকে মাঝারি আকারের স্তন্যপায়ী প্রাণী শিকার করতে পছন্দ করে। প্রধানত ইমপালা এবং স্প্রিংবকের মতো ছোট আকারের অ্যান্টিলোপ শিকার করে। চিতা বাঘ বেশ বড় আকার প্রাণীও শিকার করতে সক্ষম। এর মধ্যে এমনকি নিজের দ্বিগুণ আকারের বড় জাতের হরিণও আছে। অবশ্য ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী এমনকি মওকা মতো পেলে পাখি শিকার করতে দেখা যায় দুটি জন্তুকেই।
চিতা আছে কোথায়
সম্প্রতি ভারতে আফ্রিকার দেশ নামিবিয়া থেকে চিতা আনা নিয়ে বেশ আলোড়ন উঠেছে। দুই দফায় মোট ২০টি প্রাপ্ত বয়স্ক চিতা আনা হয় সেখান থেকে। এগুলো ছাড়া হয় মধ্যপ্রদেশের কুনো ন্যাশনাল পার্কে। মজার ঘটনা এ অরণ্যে চিতা বাঘও আছে। তবে কুনো জাতীয় উদ্যানে আনার পর বিভিন্ন সময় চিতারা বাচ্চাও দিয়েছে। তবে এখানে বেশ কয়েকটি প্রাপ্ত বয়স্ক ও বাচ্চা চিতা মারা যাওয়ায় এই প্রকল্পটি নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে। বর্তমানের কুনোতে ২১টি চিতা আছে। এর মধ্যে ছয়টি মদ্দা, আটটি মাদি ও সাতটি বাচ্চা।
তবে কথা হলো এরা আফ্রিকান চিতা। এশীয় চিতা এখন আছে কেবল পৃথিবীর একটি দেশে, সেটি ইরান। ভারতেও এক সময় এশীয় চিতাদের চমৎকার বিচরণক্ষেত্র ছিল।
ভারত থেকে এশীয় চিতা বিলুপ্ত হওয়ার একটা বড় কারণ বন্য চিতা ধরা। অপর কারণ, বন্দী অবস্থায় এদের বংশ বৃদ্ধি না হওয়া। ১৬১৩ সালে সম্রাট জাহাঙ্গীর প্রথম কোনো পোষা চিতার বাচ্চা দেওয়ার ঘটনা বর্ণনা করেন তার ‘তুজাক-ই-জাহাঙ্গিরি’ বইয়ে।
অ্যান্টিলোপ ধরতে চিতা পোষ মানানোর প্রথম রেকর্ড পাওয়া যায় কালিকিনির রাজার রাজসভার বারো শতকের বিবরণীতে। মধ্যযুগে ভারতজুড়ে দারুণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে স্পোর্টটি। চিতার সাহায্যে কৃষ্ণসার মৃগ শিকারের ধুম পড়ে যায় ওই সময়।
বাদশাহ আকবর তাঁর শাসনামলে আনুমানিক ৯ হাজার চিতা বন্দী করেন। বন্য চিতা ধরার হারটা আঠারো শতকের কোনো এক সময়ে একেবারে চূড়ায় পৌঁছে যায়। জঙ্গল থেকে চিতা ধরে আনতে আনতে সেখানে এদের সংখ্যা একেবারে কমে যায় বিংশ শতকের গোড়ার দিকে। অ্যান্টিলোপ শিকারের খেলাটিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য ভারতীয় রাজারা ১৯১৮-৪৫ সালের মধ্যে আফ্রিকা থেকে চিতা আনার খবর মেলে।
পরিবেশবাদী ঐতিহাসিক মহেশ রানগর্জন ‘জার্নাল অব মুম্বাই ন্যাচারাল হিস্ট্রি’র ১৯৯৮ সালের সংখ্যায় লেখেন, ১৮৭১ সালে প্রাপ্তবয়স্ক ও বাচ্চা চিতা জীবন্ত উদ্ধারের জন্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। উপমহাদেশে চিতার ভাগ্য নির্ধারণে কফিনে শেষ পেরেক হিসেবে কাজ করে এই ঘোষণা।
যতদূর জানা যায় ভারতের শেষ তিনটি চিতা শিকার করেন সারগুজার মহারাজা, ১৯৪৮ সালে। তবে ১৯৫১ সালে ছত্তিশগড়ের উত্তর-পশ্চিমে একটি মাদি চিতা দেখার রেকর্ড আছে। ১৯৫১-৫২ সালের দিকেই ভারত থেকে চিতাকে বিলুপ্ত বলে ঘোষণা করা হয়। তবে এরপরও চিতা দেখার বিশ্বাসযোগ্য তথ্য মেলে, ১৯৬৭ ও ১৯৬৮ সালে মধ্যপ্রদেশের করিয়া এবং সারগুজার জঙ্গলে, তারপর ১৯৭৫-এ হাজারিবাগ জেলার দান্তো কালান গ্রামে।
সর্বশেষ ২০১৩ সালে ওডিশার সিমলাপালের জঙ্গলে চিতা দেখার দাবি করেন টাইগার প্রজেক্টের দুজন কর্মকর্তা। তবে গবেষকেরা এই দাবিকে খুব একটা গুরুত্ব দেননি। তাঁদের ধারণা, অ্যালবিনো চিতাবাঘকেই চিতার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেছেন কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশে কি চিতা ছিল
১৯৩৫ সালে বোম্বাই ন্যাচারাল হিস্ট্রি সোসাইটির এক জার্নালে চিতার এলাকা হিসেবে বাংলা থেকে মধ্যপ্রদেশ, পাঞ্জাব ও রাজপুতানা (বর্তমান রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশ ও গুজরাটের আংশিক) এবং মধ্যপ্রদেশ থেকে ডেকানের (দক্ষিণের ভারতের বড় একটি অংশ ডেকান মালভূমির অংশ) কথা বলা হয়েছে। এর কোনোটির সঙ্গে বাংলাদেশের সীমানা নেই। সে হিসেবে ধরে নেওয়া যায় বাংলাদেশের সীমানায় পড়া কোনো এলাকায় নিকট অতীতে অন্তত এই জন্তুটি ছিল না।
একসময় এশীয় চিতা ছিল মধ্য এশিয়া, আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং আরব উপদ্বীপে। পাকিস্তানে বেলুচিস্তানে ১৯৯০-এর দশকেও ছিল, শেষটি মারা পড়ে ১৯৯৭ সালে চাগাইয়ে। কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান থেকেও ১৯৮০ সালের পরে বিদায় নেয়। তবে ২০১৪ সালে হঠাৎই তুর্কমিনিস্তানের বাধিজ স্টেট ন্যাশনাল পার্কে একটা চিতার দেখা মেলে। হয়তো ওটা ইরান থেকে এসেছে।
ইরানের চিতা
এবার এশীয় চিতার একমাত্র আবাসস্থল ইরানের দিকে নজর দেওয়া যাক। ইরানের বিস্তৃত মালভূমিতে এখন ৫০টির কম চিতা টিকে আছে। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা দ্রুত পদক্ষেপ ছাড়া এদের টিকিয়ে রাখা অসম্ভব। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে কয়েকটি এলাকায় থাকলেও তুরান আর মিয়ানদাশতের আশপাশে বাস করা চিতাগুলোই শেষ আশার আলো হিসেবে টিমটিম করে জ্বলছে।
গত ১৫ বছরে চিতার সংখ্যা দুনিয়াজুড়ে শতকরা ৫৩ ভাগ কমেছে বলে জানিয়েছে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক। বিচরণের এলাকার ৯১ ভাগই হারিয়েছে চিতারা। ইরানের ওই চিতাসহ গোটা পৃথিবীতে এখন সাকল্যে ৭ হাজার ১০০ চিতা আছে। আফ্রিকান চিতারা মহাদেশের অ্যাঙ্গোলা, মোজাম্বিক, দক্ষিণ আফ্রিকা, বতসোয়ানা, জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়া এই ছয়টি দেশে আটকে গেছে।
চিতা না থাকলেও চিতা বাঘ আছে বাংলাদেশে
একটা সময় প্রায় গোটা বাংলাদেশেই ছিল চিতা বাঘেদের বিচরণ। গত শতকের মাঝামাঝি সময়ে, এমনকি উত্তরা ও মিরপুরেও দেখা মিলত এদের। মধুপুর ও ভাওয়ালের গড় তো ছিল চিতা বাঘেদের প্রিয় বিচরণ ভূমি। সিলেট বিভাগের চা বাগানগুলোতেও মহানন্দে চষে বেড়াত তারা। তবে এখন পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, অনেকে বিশ্বাসই করতে চান না বাংলাদেশের বনাঞ্চলে আর বুনো চিতা বাঘ আছে। কিন্তু শত বিপদ মাথায় নিয়ে এখনো এ দেশের প্রকৃতিতে সত্যি আছে এই প্রাণীটি।
পার্বত্য চট্টগ্রামের বন-পাহাড়ে এখনো হঠাৎ হঠাৎ মেলে চিতার খবর। শিকারিদের সঙ্গে লুকোচুরি খেলে এখনো টিকে আছে ওরা। ‘ডিটেকটিং দ্য স্পট: আ রিভিউ অন ল্যাপার্ড অকারেন্সেস ইন বাংলাদেশ’ নামে একটি কাজ করেছেন মুনতাসির আকাশ, স্কট ট্রেগারস, তানিয়া জাকির, শাহরিয়ার সিজার রহমান, ফাতেমা-তুজ-জোহরা খালেক মিলা ও অনিমেষ ঘোষ। চিতা বাঘ নিয়ে বাংলাদেশে এমন গবেষণা এটাই প্রথম। সেখান থেকেও জানা যায় বাংলাদেশে চিতা বাঘদের সাম্প্রতিক বিচরণের নানা খবর। সেখানে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে চিতা বাঘ দেখার পাঁচটি ও কক্সবাজার অঞ্চলে চিতা বাঘ দেখার নিশ্চিত দুটি তথ্যের কথা বলা হয়েছে।
সুপ্রিয় চাকমা, শাহরিয়ার সিজার রহমানদের গবেষণা, ক্যামেরা ট্র্যাপও নিশ্চিত করছে, এখনো পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্তত কয়েকটি এলাকায় চিতা বাঘের আলাদা বসতি আছে। যদিও কোনোখানেই সংখ্যাটি বেশি নয়। রাঙামাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক এবং বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ সুপ্রিয় চাকমা যে গবেষণা করেছিলেন, তার ফলাফল নিশ্চিত করে বান্দরবানের সাঙ্গু এবং রাঙামাটির কাসালং এবং রাইংখং সংরক্ষিত অরণ্যে চিতা বাঘের উপস্থিতি।
বাংলাদেশের বনে এমনকি কালো চিতাও দেখা গেছে। শরীরে মেলানিনের আধিক্যে যেসব চিতাবাঘের গায়ের রং কালো হয়, তারাই পরিচিত কালো চিতা বা ব্ল্যাক প্যান্থার নামে। তবে এরা আলাদা কোনো প্রজাতি নয়। বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞ খসরু চৌধুরী কালো চিতা দেখেছিলেন প্রায় তিন যুগ আগে বান্দরবানের আলীকদম এলাকায়। ২০১১ সালে বড় মোদক যাওয়ার সময় আমাদের মারমা গাইড আংসু মারমার কাছ থেকে জানতে পারলাম, ১৯৯০ সালের দিকে রেমাক্রি এলাকায় একটা কালো চিতা ফাঁদ পেতে মেরেছিল শিকারিরা।
সিলেট বিভাগের কোনো কোনো অরণ্যেও এদের দেখা যাওয়ার কথা শোনা যায় কখনো কখনো। এক সময় বাংলাদেশের উত্তরের জেলা গুলিতে এদের চমৎকার বসতি ছিল। এখনো রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলায়, বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে এদের আনাগোনার খবর মিলছে নিয়মিত বিরতিতেই। বেশির ভাগের ধারণা সীমান্তের ওপার থেকেই আসে এরা। তবে এখানে এলেই সাধারণত মানুষের পিটুনিতে মরতে হয় প্রাণীটিকে। উত্তরের জেলাগুলিতে এমন করুণ পরিণতির শিকার হওয়ার পরও আশার কথা, পূর্বপুরুষের পুরোনো আস্তানাকে এখনো একেবারে ভুলে যায়নি নয়া জমানার চিতা বাঘেরা। এখন জরুরি মানুষের সঙ্গে এদের সংঘাতটা এড়ানো।
চিতা আর চিতা বাঘের পার্থক্য বলতে গিয়ে দুটি প্রাণী নিয়েই বিস্তর আলোচনা হয়ে গেল। আর এটা পরিষ্কার যে দুটো প্রাণীই আছে খুব বিপদে। আর সেটা আমাদের মানুষদের কারণেই। কাজেই আমাদের উচিত এদের রক্ষা করা। না হলে আরও অনেক সুন্দর প্রাণীর মতো এরাও এক সময় হারিয়ে যাবে পৃথিবী থেকে।
তথ্য সূত্র: দ্য হিন্দু, বিবিসি ওয়াইল্ডলাইফ ম্যাগাজিন, উইকিপিডিয়া

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
১৬ ঘণ্টা আগে
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল সোমবার ছিল ১৭ দশমিক ১। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৯ শতাংশ।
২ দিন আগে
পৃথিবী ঠিক কতটা উষ্ণ হয়ে উঠেছে—এই প্রশ্নের উত্তর নতুন এক বৈজ্ঞানিক তথ্যভান্ডার সামনে এনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক একদল বিজ্ঞানীর প্রকাশিত নতুন তাপমাত্রা ডেটা-সেট দেখাচ্ছে—শিল্পবিপ্লব শুরুর আগের তুলনায় পৃথিবীর উষ্ণতা হয়তো আমরা এত দিন যতটুকু ভেবেছি, তার চেয়েও বেশি বেড়েছে।
২ দিন আগে
অগ্রহায়ণের শেষ দিন আজ। বাতাসে শীতের আমেজ। তবে শীতল আবহাওয়া নিয়ে আসা শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ঢাকার বাতাসে বেড়ে যায় দূষণের মাত্রা। বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ সোমবার ঢাকার অবস্থান ৮ম।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাজধানী ঢাকায় আকাশ আজ বুধবার ভোর থেকে ছিল হালকা কুয়াশাচ্ছন্ন। তবে হাড়কাঁপানো শীত পড়েনি।
আজ সারা দিন ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলের আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল মঙ্গলবার ছিল ১৬ দশমিক ৬। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮০ শতাংশ।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সকাল ৭টায় পরবর্তী ছয় ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৪ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৫ মিনিটে।

রাজধানী ঢাকায় আকাশ আজ বুধবার ভোর থেকে ছিল হালকা কুয়াশাচ্ছন্ন। তবে হাড়কাঁপানো শীত পড়েনি।
আজ সারা দিন ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলের আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল মঙ্গলবার ছিল ১৬ দশমিক ৬। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮০ শতাংশ।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সকাল ৭টায় পরবর্তী ছয় ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৪ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৫ মিনিটে।

অনেকেই চিতা আর চিতা বাঘ নিয়ে ধন্দে পড়ে যান। দুটি যে আলাদা প্রাণী এটিও জানেন না কেউ কেউ। এমনকি কোনো কোনো বইয়ে ডাঙার দ্রুততম জন্তু হিসেবে চিতা বাঘের ছবি ছেপে দেওয়া হয় অবলীলায়।
০৫ মার্চ ২০২৪
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল সোমবার ছিল ১৭ দশমিক ১। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৯ শতাংশ।
২ দিন আগে
পৃথিবী ঠিক কতটা উষ্ণ হয়ে উঠেছে—এই প্রশ্নের উত্তর নতুন এক বৈজ্ঞানিক তথ্যভান্ডার সামনে এনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক একদল বিজ্ঞানীর প্রকাশিত নতুন তাপমাত্রা ডেটা-সেট দেখাচ্ছে—শিল্পবিপ্লব শুরুর আগের তুলনায় পৃথিবীর উষ্ণতা হয়তো আমরা এত দিন যতটুকু ভেবেছি, তার চেয়েও বেশি বেড়েছে।
২ দিন আগে
অগ্রহায়ণের শেষ দিন আজ। বাতাসে শীতের আমেজ। তবে শীতল আবহাওয়া নিয়ে আসা শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ঢাকার বাতাসে বেড়ে যায় দূষণের মাত্রা। বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ সোমবার ঢাকার অবস্থান ৮ম।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মহান বিজয় দিবসের ছুটির দিনে আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানী ঢাকায় অনুভূত হচ্ছে হালকা শীত। তাপমাত্রাও গতকালের মতো রয়েছে ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল সোমবার ছিল ১৭ দশমিক ১। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৯ শতাংশ।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সকাল ৭টায় পরবর্তী ছয় ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আকাশ পরিষ্কার থাকবে। আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৪ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৫ মিনিটে।

মহান বিজয় দিবসের ছুটির দিনে আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানী ঢাকায় অনুভূত হচ্ছে হালকা শীত। তাপমাত্রাও গতকালের মতো রয়েছে ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল সোমবার ছিল ১৭ দশমিক ১। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৯ শতাংশ।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সকাল ৭টায় পরবর্তী ছয় ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আকাশ পরিষ্কার থাকবে। আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৪ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৫ মিনিটে।

অনেকেই চিতা আর চিতা বাঘ নিয়ে ধন্দে পড়ে যান। দুটি যে আলাদা প্রাণী এটিও জানেন না কেউ কেউ। এমনকি কোনো কোনো বইয়ে ডাঙার দ্রুততম জন্তু হিসেবে চিতা বাঘের ছবি ছেপে দেওয়া হয় অবলীলায়।
০৫ মার্চ ২০২৪
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
১৬ ঘণ্টা আগে
পৃথিবী ঠিক কতটা উষ্ণ হয়ে উঠেছে—এই প্রশ্নের উত্তর নতুন এক বৈজ্ঞানিক তথ্যভান্ডার সামনে এনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক একদল বিজ্ঞানীর প্রকাশিত নতুন তাপমাত্রা ডেটা-সেট দেখাচ্ছে—শিল্পবিপ্লব শুরুর আগের তুলনায় পৃথিবীর উষ্ণতা হয়তো আমরা এত দিন যতটুকু ভেবেছি, তার চেয়েও বেশি বেড়েছে।
২ দিন আগে
অগ্রহায়ণের শেষ দিন আজ। বাতাসে শীতের আমেজ। তবে শীতল আবহাওয়া নিয়ে আসা শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ঢাকার বাতাসে বেড়ে যায় দূষণের মাত্রা। বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ সোমবার ঢাকার অবস্থান ৮ম।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

পৃথিবী ঠিক কতটা উষ্ণ হয়ে উঠেছে—এই প্রশ্নের উত্তর নতুন এক বৈজ্ঞানিক তথ্যভান্ডার সামনে এনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক একদল বিজ্ঞানীর প্রকাশিত নতুন তাপমাত্রা ডেটা-সেট দেখাচ্ছে—শিল্পবিপ্লব শুরুর আগের তুলনায় পৃথিবীর উষ্ণতা হয়তো আমরা এত দিন যতটুকু ভেবেছি, তার চেয়েও বেশি বেড়েছে।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সিএনএন জানিয়েছে, সাধারণত আধুনিক জলবায়ু বিশ্লেষণে ১৮৫০ সালের তাপমাত্রাকে ‘প্রাক-শিল্পযুগ’ বা শিল্পযুগ শুরুর আগের তাপমাত্রা হিসেবে ধরা হয়। সেই হিসেব অনুযায়ী, বিশ্ব এখন প্রাক শিল্প যুগের আগের তুলনায় প্রায় ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতা বৃদ্ধির কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। কিন্তু ‘গ্লোসেট’ (GloSAT) নামে নতুন ডেটা-সেট প্রাক-শিল্পযুগের তাপমাত্রার হিসেবটিকে নিয়ে গেছে আরও পেছনে, ১৭৮১ সাল পর্যন্ত। গবেষকদের মতে, এই বাড়তি সময়কাল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ১৭৫০ থেকে ১৮৫০ সালের মধ্যেই বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ প্রায় ২.৫ শতাংশ বেড়েছিল, যা ওই সময়ের মধ্যেও কিছুটা উষ্ণতা বাড়িয়েছিল।
গ্লোসেট ডেটা দেখাচ্ছে—১৮ শতকের শেষভাগ থেকে ১৮৪৯ সাল পর্যন্ত পৃথিবী ১৮৫০–১৯০০ সময়কালের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে ঠান্ডা ছিল। ফলে সেই সময়ের বিপরীতে বর্তমান উষ্ণতা হিসেব করতে গেলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি আরও বেশি মাত্রায় ঘটেছে। তবে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলছেন, প্রাক শিল্প যুগে যে উষ্ণতাটুকু বেড়েছিল, তার সবটাই মানুষের কারণে নয়। ১৮০০ সালের শুরুর দিকে তাম্বোরা সহ একাধিক বড় আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত পৃথিবীকে সাময়িকভাবে ঠান্ডা করে দিয়েছিল। পরবর্তীকালে সেই শীতলতার প্রভাব কাটিয়ে উঠতে যে প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া বিরাজ করেছে, সেটিও উষ্ণতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে।
জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক প্যানেল (আইপিসিসি) আগেই জানিয়েছিল, ১৭৫০ থেকে ১৮৫০ সালের মধ্যে মানুষের কারণে উষ্ণতা বেড়েছিল ০ থেকে ০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। নতুন গবেষণাগুলো সেই সীমার মাঝামাঝি অবস্থান করছে—প্রায় ০.০৯ থেকে ০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এই গবেষণার বড় দিক হলো—পুরোনো তাপমাত্রা রেকর্ড। ইউরোপের বিভিন্ন শহর যেমন, সুইডেনের উপসালা, জার্মানির হোহেনপাইসেনবার্গের মতো স্থানে শত শত বছর ধরে সংরক্ষিত তথ্য এবং ১৮ শতকের জাহাজযাত্রার সময় নথিভুক্ত সামুদ্রিক বায়ুর তাপমাত্রা একত্র করে তৈরি হয়েছে এই বৈশ্বিক চিত্র। যদিও প্রাচীন তথ্যগুলো অসম্পূর্ণ এবং অনিশ্চয়তা বেশি, তবু বিজ্ঞানীদের মতে একটি বিষয় স্পষ্ট—পৃথিবী তখন আরও ঠান্ডা ছিল।
তাহলে এর অর্থ কী? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন তথ্যের প্রেক্ষাপটে প্যারিস চুক্তির মতো বর্তমান জলবায়ু লক্ষ্যগুলো অর্থাৎ প্রাক শিল্প যুগের তুলনায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ করে রাখার নৈতিক সিদ্ধান্ত অকার্যকর হয়ে যায় না। এই উপলব্ধি ভবিষ্যৎ ঝুঁকি বোঝা ও মোকাবিলায় আরও সতর্ক হওয়ার বার্তাই দিচ্ছে।

পৃথিবী ঠিক কতটা উষ্ণ হয়ে উঠেছে—এই প্রশ্নের উত্তর নতুন এক বৈজ্ঞানিক তথ্যভান্ডার সামনে এনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক একদল বিজ্ঞানীর প্রকাশিত নতুন তাপমাত্রা ডেটা-সেট দেখাচ্ছে—শিল্পবিপ্লব শুরুর আগের তুলনায় পৃথিবীর উষ্ণতা হয়তো আমরা এত দিন যতটুকু ভেবেছি, তার চেয়েও বেশি বেড়েছে।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সিএনএন জানিয়েছে, সাধারণত আধুনিক জলবায়ু বিশ্লেষণে ১৮৫০ সালের তাপমাত্রাকে ‘প্রাক-শিল্পযুগ’ বা শিল্পযুগ শুরুর আগের তাপমাত্রা হিসেবে ধরা হয়। সেই হিসেব অনুযায়ী, বিশ্ব এখন প্রাক শিল্প যুগের আগের তুলনায় প্রায় ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতা বৃদ্ধির কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। কিন্তু ‘গ্লোসেট’ (GloSAT) নামে নতুন ডেটা-সেট প্রাক-শিল্পযুগের তাপমাত্রার হিসেবটিকে নিয়ে গেছে আরও পেছনে, ১৭৮১ সাল পর্যন্ত। গবেষকদের মতে, এই বাড়তি সময়কাল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ১৭৫০ থেকে ১৮৫০ সালের মধ্যেই বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ প্রায় ২.৫ শতাংশ বেড়েছিল, যা ওই সময়ের মধ্যেও কিছুটা উষ্ণতা বাড়িয়েছিল।
গ্লোসেট ডেটা দেখাচ্ছে—১৮ শতকের শেষভাগ থেকে ১৮৪৯ সাল পর্যন্ত পৃথিবী ১৮৫০–১৯০০ সময়কালের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে ঠান্ডা ছিল। ফলে সেই সময়ের বিপরীতে বর্তমান উষ্ণতা হিসেব করতে গেলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি আরও বেশি মাত্রায় ঘটেছে। তবে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলছেন, প্রাক শিল্প যুগে যে উষ্ণতাটুকু বেড়েছিল, তার সবটাই মানুষের কারণে নয়। ১৮০০ সালের শুরুর দিকে তাম্বোরা সহ একাধিক বড় আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত পৃথিবীকে সাময়িকভাবে ঠান্ডা করে দিয়েছিল। পরবর্তীকালে সেই শীতলতার প্রভাব কাটিয়ে উঠতে যে প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া বিরাজ করেছে, সেটিও উষ্ণতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে।
জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক প্যানেল (আইপিসিসি) আগেই জানিয়েছিল, ১৭৫০ থেকে ১৮৫০ সালের মধ্যে মানুষের কারণে উষ্ণতা বেড়েছিল ০ থেকে ০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। নতুন গবেষণাগুলো সেই সীমার মাঝামাঝি অবস্থান করছে—প্রায় ০.০৯ থেকে ০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এই গবেষণার বড় দিক হলো—পুরোনো তাপমাত্রা রেকর্ড। ইউরোপের বিভিন্ন শহর যেমন, সুইডেনের উপসালা, জার্মানির হোহেনপাইসেনবার্গের মতো স্থানে শত শত বছর ধরে সংরক্ষিত তথ্য এবং ১৮ শতকের জাহাজযাত্রার সময় নথিভুক্ত সামুদ্রিক বায়ুর তাপমাত্রা একত্র করে তৈরি হয়েছে এই বৈশ্বিক চিত্র। যদিও প্রাচীন তথ্যগুলো অসম্পূর্ণ এবং অনিশ্চয়তা বেশি, তবু বিজ্ঞানীদের মতে একটি বিষয় স্পষ্ট—পৃথিবী তখন আরও ঠান্ডা ছিল।
তাহলে এর অর্থ কী? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন তথ্যের প্রেক্ষাপটে প্যারিস চুক্তির মতো বর্তমান জলবায়ু লক্ষ্যগুলো অর্থাৎ প্রাক শিল্প যুগের তুলনায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ করে রাখার নৈতিক সিদ্ধান্ত অকার্যকর হয়ে যায় না। এই উপলব্ধি ভবিষ্যৎ ঝুঁকি বোঝা ও মোকাবিলায় আরও সতর্ক হওয়ার বার্তাই দিচ্ছে।

অনেকেই চিতা আর চিতা বাঘ নিয়ে ধন্দে পড়ে যান। দুটি যে আলাদা প্রাণী এটিও জানেন না কেউ কেউ। এমনকি কোনো কোনো বইয়ে ডাঙার দ্রুততম জন্তু হিসেবে চিতা বাঘের ছবি ছেপে দেওয়া হয় অবলীলায়।
০৫ মার্চ ২০২৪
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
১৬ ঘণ্টা আগে
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল সোমবার ছিল ১৭ দশমিক ১। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৯ শতাংশ।
২ দিন আগে
অগ্রহায়ণের শেষ দিন আজ। বাতাসে শীতের আমেজ। তবে শীতল আবহাওয়া নিয়ে আসা শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ঢাকার বাতাসে বেড়ে যায় দূষণের মাত্রা। বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ সোমবার ঢাকার অবস্থান ৮ম।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

অগ্রহায়ণের শেষ দিন আজ। বাতাসে শীতের আমেজ। তবে শীতল আবহাওয়া নিয়ে আসা শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ঢাকার বাতাসে বেড়ে যায় দূষণের মাত্রা। বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ সোমবার ঢাকার অবস্থান ৮ম।
আজ সকাল ৮টা ৪৩ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান আজ ১৫৮, যা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
অন্যদিকে গতকালের মতো আজও শীর্ষস্থানে দিল্লি। শহরটির বায়ুমান ৩৪৬, যা দুর্যোগপূর্ণ বাতাসের নির্দেশক।
শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো— পাকিস্তানের করাচি, কুয়েতের কুয়েত সিটি, মিশরের কায়রো ও পাকিস্তানের লাহোর। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২০১, ১৮৯, ১৮৯ ও ১৮১।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।
বাতাসের এই পরিস্থিতিতে করণীয়
অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।
সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।
যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।
ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।

অগ্রহায়ণের শেষ দিন আজ। বাতাসে শীতের আমেজ। তবে শীতল আবহাওয়া নিয়ে আসা শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ঢাকার বাতাসে বেড়ে যায় দূষণের মাত্রা। বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ সোমবার ঢাকার অবস্থান ৮ম।
আজ সকাল ৮টা ৪৩ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান আজ ১৫৮, যা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
অন্যদিকে গতকালের মতো আজও শীর্ষস্থানে দিল্লি। শহরটির বায়ুমান ৩৪৬, যা দুর্যোগপূর্ণ বাতাসের নির্দেশক।
শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো— পাকিস্তানের করাচি, কুয়েতের কুয়েত সিটি, মিশরের কায়রো ও পাকিস্তানের লাহোর। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২০১, ১৮৯, ১৮৯ ও ১৮১।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।
বাতাসের এই পরিস্থিতিতে করণীয়
অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।
সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।
যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।
ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।

অনেকেই চিতা আর চিতা বাঘ নিয়ে ধন্দে পড়ে যান। দুটি যে আলাদা প্রাণী এটিও জানেন না কেউ কেউ। এমনকি কোনো কোনো বইয়ে ডাঙার দ্রুততম জন্তু হিসেবে চিতা বাঘের ছবি ছেপে দেওয়া হয় অবলীলায়।
০৫ মার্চ ২০২৪
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
১৬ ঘণ্টা আগে
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল সোমবার ছিল ১৭ দশমিক ১। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৯ শতাংশ।
২ দিন আগে
পৃথিবী ঠিক কতটা উষ্ণ হয়ে উঠেছে—এই প্রশ্নের উত্তর নতুন এক বৈজ্ঞানিক তথ্যভান্ডার সামনে এনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক একদল বিজ্ঞানীর প্রকাশিত নতুন তাপমাত্রা ডেটা-সেট দেখাচ্ছে—শিল্পবিপ্লব শুরুর আগের তুলনায় পৃথিবীর উষ্ণতা হয়তো আমরা এত দিন যতটুকু ভেবেছি, তার চেয়েও বেশি বেড়েছে।
২ দিন আগে