কপ-২৭ ডিব্রিফিংয়ে পরিবেশ রক্ষায় সজাগ হওয়ার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২৩: ৩০
Thumbnail image

কপ-২৭ ডিব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার জাতীয় সংসদের পার্লামেন্ট মেম্বার্স ক্লাবের এলডি হলে এ ব্রিফিং হয়। ঢাকার ব্রিটিশ হাইকমিশন ও ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অংশীদারত্বে ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশ এবং দা আর্থ এই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করছে।

ব্রিফিংয়ে বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকায় থাকা দেশের মধ্যে একটি হচ্ছে বাংলাদেশ। গত এক দশকের তুলনায় জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতির বিষয়ে এখন সচেতনতা অনেক বেড়েছে। সরকারের নীতি নির্ধারণেও তার প্রভাব পড়ছে।

অনুষ্ঠানে কি-নোট উপস্থাপন করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান সাবের হোসেন চৌধুরী। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হিমালয়ের হিমবাহগুলোর অন্তত এক-তৃতীয়াংশ গলে যাওয়ার হুমকিতে রয়েছে। কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে যদি বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির হারকে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা যায়, তারপরও হিমালয় অঞ্চলের হিমবাহ গলা থামবে না। উষ্ণতা বৃদ্ধির হার ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে গলে যাবে ৫০ শতাংশ হিমবাহ।

সাবের হোসেন চৌধুরী আরও বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করতে আমাদের যে স্ট্যান্ডিং কমিটি আছে তাঁরা কাজ করে যাচ্ছে। গত ১০ বছর ধরে বর্তমান সরকার জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে যেমন কাজ করছে তা অব্যাহত থাকলে আমরা জলবায়ু সমস্যা থেকে বের হয়ে আসতে পারব।’

ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশের ভাইস চেয়ারপারসন ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকায় থাকা দেশের মধ্যে একটি হচ্ছে বাংলাদেশ। গত এক দশকের তুলনায় জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতির বিষয়ে এখন সচেতনতা অনেক বেড়েছে। সরকারের নীতি নির্ধারণেও তার প্রভাব পড়ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন তাতে আমরা দ্রুত সমাধান পাব।’

বাংলাদেশ সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের পরিচালক অধ্যাপক সালেমুল হক বলেন, ‘বৈশ্বিক উষ্ণায়ন নিয়ে এখন গোটা বিশ্বই চিন্তিত। কারণ এক হিসেবে দেখা গেছে, গত ১৫০ বছরে উষ্ণায়নের কারণে সমুদ্রের পানির স্তর বেড়েছে মাত্রাতিরিক্ত। হিমবাহ ও বরফের চাদর গলে যাচ্ছে, আর সেই পানি গিয়ে মিশছে সমুদ্রে। সম্প্রতি এক তথ্যে প্রকাশ পেয়েছে আগামী দশকের মধ্যে সেই পানির জন্য সমুদ্রের পানির স্তর দ্বিগুণ হবে। সবাইকে নিয়ে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে।’

ব্রিটিশ হাইকমিশনের ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর ম্যাট ক্যানেল বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় কপ-২৭ এবং গ্লাসগো জলবায়ু চুক্তিতে দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলি বাস্তবায়ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যুক্তরাজ্য সরকার ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি বাঁচিয়ে রাখার জন্য জলবায়ু প্রতিশ্রুতিতে বর্ধিত উচ্চাকাঙ্ক্ষা বিকাশে বাংলাদেশসহ সব দেশের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। যুক্তরাজ্য এবং বাংলাদেশের মধ্যে নীতিগত সম্পৃক্ততা, দক্ষতা ভাগাভাগি এবং অর্থায়নের ওপর ভিত্তি করে একটি শক্তিশালী অংশীদারত্ব রয়েছে। একসঙ্গে, আমরা জলবায়ু প্রতিশ্রুতিগুলোকে কাজে পরিণত করছি এবং কপ-২৮ প্রস্তুতির জন্য এখন থেকে সজাগ হওয়ার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’

অনুষ্ঠানে বক্তারা সিএসও এর প্রচেষ্টার সঙ্গে সরকারি উদ্যোগগুলোকে সারিবদ্ধ করার তাৎপর্যর ওপর জোর দেন। কারণ কপ ২৭-এর সময় নির্ধারিত উদ্দেশ্যগুলো এখনো সম্পূর্ণরূপে অর্জিত হয়নি। হতাশা সত্ত্বেও তাঁরা কপ কাঠামোর মধ্যে থাকার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন, যা একমাত্র পথ। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরেন।

কপ ২৭ ডিব্রিফিং অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, তানভীর শাকিল জয়, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, মীর মুস্তাক আহমেদ রবি প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত