বিগত সরকারের চুক্তি বাতিল অত সহজ নয়: রিজওয়ানা হাসান

  • চুক্তি থেকে সরে আসতে হলে হাজার হাজার কোটি টাকা জরিমানা দিতে হবে।
  • অন্তর্বর্তী সরকার চ্যালেঞ্জ নিয়ে অসম চুক্তিগুলো পর্যালোচনা করছে।
  • নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন‍্য ৪০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে।
বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
প্রকাশ : ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮: ৫৭
জ্বালানি সম্মেলনের উদ্বোধনী দিন গতকাল বক্তব্য দেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি: আজকের পত্রিকা

জ্বালানি খাতে গত সরকার দুর্নীতির সুযোগ করে দিয়েছে। এই সুযোগে যেসব কেন্দ্র নির্মাণ ও প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, তা চাইলেই হুট করে বাতিল করা যাবে না। কারণ এসব চুক্তি দীর্ঘমেয়াদি। চুক্তি থেকে সরে আসতে হলে হাজার হাজার কোটি টাকা জরিমানা দিতে হবে। এসবের পরও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চুক্তি পর্যালোচনা করছে।

গতকাল রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ জ্বালানি সমৃদ্ধি-২০৫০’ অনুষ্ঠানে সরকারের পক্ষ থেকে দুই উপদেষ্টা ও একজন বিশেষজ্ঞ এসব কথা বলেন। তিন দিনের এই জ্বালানি সম্মেলনের আয়োজক কয়েকটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার সমন্বিত জোট বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিডব্লিউজিইডি)।

অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা উন্নয়নকর্মীরা উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলে ধরেন। তাঁরা বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য সুন্দরবনের ক্ষতি হচ্ছে। এ কেন্দ্রের সঙ্গে সরকারের দীর্ঘমেয়াদি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি আছে। তাহলে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাঁচতে ২০ বছর অপেক্ষা করতে হবে কি না? বিকল্প থাকার পরও এ প্রকল্পের রাস্তা তৈরি করতে বেশ কিছু পরিবারকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন একজন।

অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বিদ্যুৎ খাতে চুক্তি বাতিলের কথা বলাটা সহজ হলেও তা থেকে বের হয়ে আসাটা অনেক ব্যয়বহুল। চুক্তি বাতিল অতটা সহজ নয়। নাইকো চুক্তি বাতিল করতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যেতে হয়েছে। তবুও অন্তর্বর্তী সরকার চ্যালেঞ্জটা নিয়েছে। এখন চুক্তিগুলো পর্যালোচনার মধ্যে আছে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, জ্বালানি খাতে আওয়ামী লীগ সরকার দুর্নীতির সুযোগ করে দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন‍্য ৪০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। শুরুতে ১০টির জন‍্য দরপত্র ডাকা হচ্ছে। ধাপে ধাপে বাকিগুলোর দরপত্র আহ্বান করা হবে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সমন্বিত মহাপরিকল্পনা নতুন করে তৈরি হবে। এ ছাড়া দেশে সৌরবিদ্যুতের যন্ত্রপাতি তৈরির কারখানা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

বিদ্যুৎ খাতে করা চুক্তি বাতিলের বাস্তবতা নিয়ে কথা বলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার জ্বালানিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ম তামিম। তিনি বলেন, একটি প্রকল্প বন্ধ করতে গেলে ৮ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার জরিমানা দিতে হবে, এটাই চুক্তি। অনেক চুক্তি দীর্ঘমেয়াদি। মেয়াদের আগে বাদ দিতে গেলেই আইনগত ঝামেলা আছে। আর্থিক জরিমানা তো আছেই।

তারা ক্লাইমেট ফাউন্ডেশনের ডেপুটি রিজিওনাল প্রোগ্রাম ডিরেক্টর সাইনান হাউটন বলেন, বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি সম্ভাবনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি নবায়নযোগ্য শক্তির রূপান্তরকে এগিয়ে নিতে আমাদের অবশ্যই একসঙ্গে কাজ করতে হবে, যা রাজনৈতিক ল্যান্ডস্কেপকে নতুন আকার দেবে এবং অন্তর্বর্তী সরকারের নীতিগুলো শক্তিশালী করবে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এশিয়ান পিপলস মুভমেন্ট ফর ডেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এপিএমডিডি) সমন্বয়ক লিডি ন্যাকপিল, বিডব্লিউজিইডির সদস্যসচিব হাসান মেহেদী। সঞ্চালনা করেন কোস্টাল লাইভলিহুড অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল অ্যাকশন নেটওয়ার্কের ক্যাপাসিটি বিল্ডিং উপদেষ্টা বেনজীর আহমেদ ও ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যাপক ফাহমিদা হক।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রামে এস আলম গ্রুপের ২ জনের নামে প্রতারণার মামলা

দক্ষিণী সুপারস্টার আল্লু অর্জুন গ্রেপ্তার, ৭ দিনের পুলিশ হেফাজত

গাজীপুর থেকে ঢাকায় ট্রেনে অফিস, চালু হচ্ছে চার জোড়া কমিউটার

বিশ্বের ১২৬ শহরের মধ্যে বায়ুদূষণের শীর্ষে ঢাকা, দ্বিতীয় দিল্লি, এরপরই লাহোর

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদে সাবরেজিস্ট্রার, গড়েছেন সম্পদের পাহাড়

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত