অনলাইন ডেস্ক
আজ এভারেস্ট জয়ের ৭০ বছর পূর্তি। ১৯৫৩ সালের এই দিনে এডমন্ড হিলারি এবং তেনজিং নোরগে প্রথম মানুষ হিসেবে পৃথিবীর সর্বোচ্চ চূড়াটিতে পা রাখেন। আর পর্বতারোহীদের এভারেস্ট জয়ের অভিযান শুরু হয় বেস ক্যাম্প থেকে। এভারেস্টের বেস ক্যাম্প এখনই কেন সরানো হচ্ছে না তাই জানাব আজ পাঠকদের।
নেপালের পর্যটন বিষয়ক মন্ত্রণালয় গত বছরের জুনে পৃথিবীর সর্বোচ্চ চূড়াটির বেস ক্যাম্প আরও নিচের দিকে সরিয়ে আনার পরিকল্পনার কথা জানায়। কারণ জলবায়ু পরিবর্তন ও মানুষের নানা কর্মকাণ্ড একে অনিরাপদ করে তুলেছে।
ক্যাম্পটির অবস্থান খুম্বু হিমবাহ এলাকায় যেটি ক্রমেই পাতলা হয়ে যাচ্ছে। এটা প্রতি বছর এটি অতিক্রম করা শত শত পর্বতারোহীর জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠছে।
তবে শেরপা ও পর্বতারোহণ নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংস্থার বিরোধিতায় এটি আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। এদিকে শেরপা নেতারা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানিয়েছেন, সরানোর সিদ্ধান্তটি বাস্তবসম্মত নয় এবং এর ভালো কোনো বিকল্প জায়গাও নেই।
পর্বতারোহণ শিল্পের মেরুদণ্ড হিসেবে পরিচিত শেরপাদের চিন্তা–ভাবনাটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। পর্বতারোহণের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সাম্প্রতিক আলোচনায় ৯৫ শতাংশই বেস ক্যাম্পে সরানোর ব্যাপারে আপত্তির কথা জানিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে, নেপালের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা ও নেপাল মাউন্টেনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশন।
অর্থাৎ আপাতত বেস ক্যাম্প সরানোর পরিকল্পনা স্থগিত করা হয়েছে, বিবিসিকে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে একই সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে পর্যবেক্ষণ চলমান আছে বলেও জানানো হয়।
বেস ক্যাম্প সরানোর পরিকল্পনা সমর্থন করেন না শেরপারা
‘আমাদের সম্প্রদায়ের এমন একজনকেও পাইনি যে এভারেস্টের বেস ক্যাম্প সরানোয় পরিকল্পনাকে সমর্থন করে,’ বলেন বেস ক্যাম্পসহ এভারেস্টের বেশির ভাগ অংশ খুম্বু পাসাংলহামু নামের যে অঞ্চলের অংশ তার প্রধান মিনগামা শেরপা, ‘নিকট ভবিষ্যতে বেস ক্যাম্প সরানোর কোনো কারণ আমরা দেখি না।’
নেপাল ন্যাশনাল মাউন্টেন গাইডস অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান আং নরবু শেরপার কণ্ঠেও একই সুর। তিনি বলেন, ‘গত ৭০ বছর ধরে এখানে আছে এটি। তারা কেন এখন এটা সরাবে? আর যদি এটা করতে চায়ও বিকল্প কোনো জায়গার ব্যাপারে কি কোনো সমীক্ষা হয়েছে?’
নেপালের নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যটন মন্ত্রী সুদান কিরাতি জানান, এটা এখনই করার মতো কিছু নয়। ‘বেস ক্যাম্প সরানোর ব্যাপারে কোনো দিক থেকেই কারও আগ্রহ দেখছি না।’ বলেন তিনি।
পাতলা হচ্ছে হিমবাহ, তৈরি হচ্ছে ঝুঁকি
যখন গত বছর সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা পরিকল্পনার কথা জানান, তখন বলেছিলেন নতুন বেস ক্যাম্প বর্তমান বেস ক্যাম্প থেকে ২০০ থেকে ৪০০ মিটার (৬৫৬ থেকে ১৩১২ ফুট) নিচে হবে। বর্তমান বেস ক্যাম্পের উচ্চতা ৫৩৬৪ মিটার (১৭,৫৯৮ ফুট)।
পরিকল্পনা ছিল এটাকে এমন এক জায়গায় সরানো যেখানে কোনো হিমবাহ নেই। তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে হিমবাহ গলার কারণে তৈরি হওয়া ঝুঁকি এড়ানোই ছিল এর উদ্দেশ্য।
বিজ্ঞানীদের গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে হিমালয়ের আরও অনেক হিমবাহের মতো খুম্বু হিমবাহও ক্রমেই গলছে। লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের ২০১৮ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে হিমবাহের বেস ক্যাম্পের কাছের অংশটি প্রতি বছর এক মিটার করে পাতলা হচ্ছে।
মাঠপর্যায়ের পরীক্ষায় আরও দেখা গেছে পৃথিবীর সর্বোচ্চ হিমবাহের পুকুর ও হ্রদগুলো একত্র হচ্ছে এবং ছড়িয়ে পড়ছে। যা পর্বতারোহীদের জন্য নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে।
পর্বতারোহী ও কর্মকর্তারা জানান, বেস ক্যাম্পের পাশ দিয়েই এখন ঝরনাগুলো প্রবাহিত হচ্ছে, আর হিমবাহের ফাটলগুলো দ্রুত ও বিপজ্জনকভাবে চওড়া হচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন হ্রদ ও পুকুরগুলো একটি আরেকটির সঙ্গে জোড়া লাগছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে।
নেপাল মাউন্টেনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নিমা নুরু শেরপা জানান বৈশ্বিক উষ্ণ বৃদ্ধির কারণে যে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে সে সম্পর্কে তিনি সচেতন। ‘তবে সরিয়ে কোথায় আমরা বেস ক্যাম্পটা নেব সে সম্পর্কে পরিষ্কার কোনো ধারণা দেওয়া হয়নি, আর তাই এর পক্ষে সে রকম সারা পাওয়া যাচ্ছে না।’ বলেন তিনি।
খুম্বু হিমবাহ ফ্যাক্টর
শেরপা সম্প্রদায়ের অনেক পর্বতারোহীই বলছেন সকালে যাত্রা শুরুর জন্য হিমবাহের বর্তমান অবস্থানটাই আদর্শ। কারণ এর পাশেই খুম্বু হিমবাহ, এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছানোর অভিযানে যেটি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর একটি।
শেরপা পর্বতারোহীরা বলেন খুম্বু হিমবাহ সকালের দিকে পেরোনোটা জরুরি, কারণ দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সূর্য উত্তাপ ছড়ানোয় হিমবাহ ধস ও পাথর পতনের পরিমাণ বাড়ে।
‘ক্যাম্পটাকে নিচের দিকে নামিয়ে আনা মানে, তার মানে পর্বতারোহীদের আরও তিন ঘণ্টা বাড়তি যাত্রা, অর্থাৎ এটা বিপজ্জনক খুম্বুর দিকে তাদের যাত্রা দেরি করিয়ে দেবে।’ বলেন মিনগামা শেরপা।
গত ১২ এপ্রিল হিমবাহ পতনের কারণে খুম্বু হিমবাহে তিনজন শেরপা মারা যান।
মিনগামা শেরপা বলেন, এমনকি যদি বেস ক্যাম্প নিচে নামানোও হয় বেশিরভাগ অভিযাত্রী দল আগের জায়গাটিকে অ্যাডভান্স ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করবে খুম্বুর দিকে সকালে যাত্রা শুরুর জন্য।
প্রতি বছর এভারেস্টে পর্বতারোহী নিয়ে আসা অস্ট্রিয়ান ট্যুর অপারেটর লুকাস ফার্টেনব্যাচ মন্তব্য করেন, বেস ক্যাম্প সরিয়ে আনাটা যাত্রার প্রথম অংশটি অনেক দীর্ঘ করে ফেলবে।
বেস ক্যাম্পে ভিড়
তবে পর্বতারোহণের সঙ্গে জড়িত সবাই একটি বিষয়ে একমত, তা হলো বেস ক্যাম্পে অতিরিক্ত ভিড় তৈরি হচ্ছে।
এ মৌসুমে নেপাল পৃথিবীর সর্বোচ্চ চূড়ায় আরোহণের জন্য রেকর্ড ৪৭৮টি পারমিট দেয়। তার মানে সাহায্যকারীরাসহ পর্বতের ১৫০০–র বেশি মানুষ থাকবেন। পর্যটন বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন অনুমতি দেওয়ার আগের রেকর্ড ছিল ৪০৩, সেটা ২০২১ সালে। নেপালের সরকার এভারেস্টের চূড়ায় আরোহণের জন্য প্রত্যেক পর্বতারোহী থেকে ১১ হাজার ডলার নেয়। আর এভারেস্টের অভিযান শেরপা সম্প্রদায়ের লোকজন ও পর্বত পর্যটনের সঙ্গে জড়িত অন্যদের আয়ের বড় উৎস।
‘বিগত বছরগুলোতে বেস ক্যাম্পের আকার দ্বিগুণ হয়ে গেছে বলে জানান এক্সপিডিশন অপারেটর’স অ্যাসোসিয়েশন নেপালের প্রেসিডেন্ট দাম্বার পারাজুলি। এটি ইতিমধ্যে নাজুক হয়ে পড়া পরিবেশের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
‘এখানে আধুনিক সব সার্ভিস দেখতে পাবেন এখন, যেমন ম্যাসেজ পার্লারসহ বিনোদনের আরও নানা ব্যবস্থা। এ জন্য বিশাল তাঁবুসহ আরও নানা কাঠামো তৈরি হয়। কিন্তু এটা বিলাসিতার জায়গা নয়। আমরা সরকারকে বলব বেস ক্যাম্পে কোনটা বৈধ আর কোনটা করা যাবে না তার কঠোর গাইড লাইন তৈরি করতে।’ বলেন তিনি।
পর্যটন মন্ত্রী কিরাতি বলেন এ বিষয়গুলো সম্পর্কে তিনি ওয়াকিবহাল। বলেন ‘কাঠমান্ডুতে যেমন দেখি তেমন একটি টুরিস্ট মার্কেটের মতো হয়ে গেছে বেস ক্যাম্প। এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা দ্রুতই যাচাই করে এগুলো বন্ধ করে দেব। এ মুহূর্তে এ বিষয়টিই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’
আজ এভারেস্ট জয়ের ৭০ বছর পূর্তি। ১৯৫৩ সালের এই দিনে এডমন্ড হিলারি এবং তেনজিং নোরগে প্রথম মানুষ হিসেবে পৃথিবীর সর্বোচ্চ চূড়াটিতে পা রাখেন। আর পর্বতারোহীদের এভারেস্ট জয়ের অভিযান শুরু হয় বেস ক্যাম্প থেকে। এভারেস্টের বেস ক্যাম্প এখনই কেন সরানো হচ্ছে না তাই জানাব আজ পাঠকদের।
নেপালের পর্যটন বিষয়ক মন্ত্রণালয় গত বছরের জুনে পৃথিবীর সর্বোচ্চ চূড়াটির বেস ক্যাম্প আরও নিচের দিকে সরিয়ে আনার পরিকল্পনার কথা জানায়। কারণ জলবায়ু পরিবর্তন ও মানুষের নানা কর্মকাণ্ড একে অনিরাপদ করে তুলেছে।
ক্যাম্পটির অবস্থান খুম্বু হিমবাহ এলাকায় যেটি ক্রমেই পাতলা হয়ে যাচ্ছে। এটা প্রতি বছর এটি অতিক্রম করা শত শত পর্বতারোহীর জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠছে।
তবে শেরপা ও পর্বতারোহণ নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংস্থার বিরোধিতায় এটি আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। এদিকে শেরপা নেতারা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানিয়েছেন, সরানোর সিদ্ধান্তটি বাস্তবসম্মত নয় এবং এর ভালো কোনো বিকল্প জায়গাও নেই।
পর্বতারোহণ শিল্পের মেরুদণ্ড হিসেবে পরিচিত শেরপাদের চিন্তা–ভাবনাটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। পর্বতারোহণের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সাম্প্রতিক আলোচনায় ৯৫ শতাংশই বেস ক্যাম্পে সরানোর ব্যাপারে আপত্তির কথা জানিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে, নেপালের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা ও নেপাল মাউন্টেনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশন।
অর্থাৎ আপাতত বেস ক্যাম্প সরানোর পরিকল্পনা স্থগিত করা হয়েছে, বিবিসিকে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে একই সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে পর্যবেক্ষণ চলমান আছে বলেও জানানো হয়।
বেস ক্যাম্প সরানোর পরিকল্পনা সমর্থন করেন না শেরপারা
‘আমাদের সম্প্রদায়ের এমন একজনকেও পাইনি যে এভারেস্টের বেস ক্যাম্প সরানোয় পরিকল্পনাকে সমর্থন করে,’ বলেন বেস ক্যাম্পসহ এভারেস্টের বেশির ভাগ অংশ খুম্বু পাসাংলহামু নামের যে অঞ্চলের অংশ তার প্রধান মিনগামা শেরপা, ‘নিকট ভবিষ্যতে বেস ক্যাম্প সরানোর কোনো কারণ আমরা দেখি না।’
নেপাল ন্যাশনাল মাউন্টেন গাইডস অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান আং নরবু শেরপার কণ্ঠেও একই সুর। তিনি বলেন, ‘গত ৭০ বছর ধরে এখানে আছে এটি। তারা কেন এখন এটা সরাবে? আর যদি এটা করতে চায়ও বিকল্প কোনো জায়গার ব্যাপারে কি কোনো সমীক্ষা হয়েছে?’
নেপালের নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যটন মন্ত্রী সুদান কিরাতি জানান, এটা এখনই করার মতো কিছু নয়। ‘বেস ক্যাম্প সরানোর ব্যাপারে কোনো দিক থেকেই কারও আগ্রহ দেখছি না।’ বলেন তিনি।
পাতলা হচ্ছে হিমবাহ, তৈরি হচ্ছে ঝুঁকি
যখন গত বছর সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা পরিকল্পনার কথা জানান, তখন বলেছিলেন নতুন বেস ক্যাম্প বর্তমান বেস ক্যাম্প থেকে ২০০ থেকে ৪০০ মিটার (৬৫৬ থেকে ১৩১২ ফুট) নিচে হবে। বর্তমান বেস ক্যাম্পের উচ্চতা ৫৩৬৪ মিটার (১৭,৫৯৮ ফুট)।
পরিকল্পনা ছিল এটাকে এমন এক জায়গায় সরানো যেখানে কোনো হিমবাহ নেই। তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে হিমবাহ গলার কারণে তৈরি হওয়া ঝুঁকি এড়ানোই ছিল এর উদ্দেশ্য।
বিজ্ঞানীদের গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে হিমালয়ের আরও অনেক হিমবাহের মতো খুম্বু হিমবাহও ক্রমেই গলছে। লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের ২০১৮ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে হিমবাহের বেস ক্যাম্পের কাছের অংশটি প্রতি বছর এক মিটার করে পাতলা হচ্ছে।
মাঠপর্যায়ের পরীক্ষায় আরও দেখা গেছে পৃথিবীর সর্বোচ্চ হিমবাহের পুকুর ও হ্রদগুলো একত্র হচ্ছে এবং ছড়িয়ে পড়ছে। যা পর্বতারোহীদের জন্য নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে।
পর্বতারোহী ও কর্মকর্তারা জানান, বেস ক্যাম্পের পাশ দিয়েই এখন ঝরনাগুলো প্রবাহিত হচ্ছে, আর হিমবাহের ফাটলগুলো দ্রুত ও বিপজ্জনকভাবে চওড়া হচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন হ্রদ ও পুকুরগুলো একটি আরেকটির সঙ্গে জোড়া লাগছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে।
নেপাল মাউন্টেনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নিমা নুরু শেরপা জানান বৈশ্বিক উষ্ণ বৃদ্ধির কারণে যে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে সে সম্পর্কে তিনি সচেতন। ‘তবে সরিয়ে কোথায় আমরা বেস ক্যাম্পটা নেব সে সম্পর্কে পরিষ্কার কোনো ধারণা দেওয়া হয়নি, আর তাই এর পক্ষে সে রকম সারা পাওয়া যাচ্ছে না।’ বলেন তিনি।
খুম্বু হিমবাহ ফ্যাক্টর
শেরপা সম্প্রদায়ের অনেক পর্বতারোহীই বলছেন সকালে যাত্রা শুরুর জন্য হিমবাহের বর্তমান অবস্থানটাই আদর্শ। কারণ এর পাশেই খুম্বু হিমবাহ, এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছানোর অভিযানে যেটি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর একটি।
শেরপা পর্বতারোহীরা বলেন খুম্বু হিমবাহ সকালের দিকে পেরোনোটা জরুরি, কারণ দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সূর্য উত্তাপ ছড়ানোয় হিমবাহ ধস ও পাথর পতনের পরিমাণ বাড়ে।
‘ক্যাম্পটাকে নিচের দিকে নামিয়ে আনা মানে, তার মানে পর্বতারোহীদের আরও তিন ঘণ্টা বাড়তি যাত্রা, অর্থাৎ এটা বিপজ্জনক খুম্বুর দিকে তাদের যাত্রা দেরি করিয়ে দেবে।’ বলেন মিনগামা শেরপা।
গত ১২ এপ্রিল হিমবাহ পতনের কারণে খুম্বু হিমবাহে তিনজন শেরপা মারা যান।
মিনগামা শেরপা বলেন, এমনকি যদি বেস ক্যাম্প নিচে নামানোও হয় বেশিরভাগ অভিযাত্রী দল আগের জায়গাটিকে অ্যাডভান্স ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করবে খুম্বুর দিকে সকালে যাত্রা শুরুর জন্য।
প্রতি বছর এভারেস্টে পর্বতারোহী নিয়ে আসা অস্ট্রিয়ান ট্যুর অপারেটর লুকাস ফার্টেনব্যাচ মন্তব্য করেন, বেস ক্যাম্প সরিয়ে আনাটা যাত্রার প্রথম অংশটি অনেক দীর্ঘ করে ফেলবে।
বেস ক্যাম্পে ভিড়
তবে পর্বতারোহণের সঙ্গে জড়িত সবাই একটি বিষয়ে একমত, তা হলো বেস ক্যাম্পে অতিরিক্ত ভিড় তৈরি হচ্ছে।
এ মৌসুমে নেপাল পৃথিবীর সর্বোচ্চ চূড়ায় আরোহণের জন্য রেকর্ড ৪৭৮টি পারমিট দেয়। তার মানে সাহায্যকারীরাসহ পর্বতের ১৫০০–র বেশি মানুষ থাকবেন। পর্যটন বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন অনুমতি দেওয়ার আগের রেকর্ড ছিল ৪০৩, সেটা ২০২১ সালে। নেপালের সরকার এভারেস্টের চূড়ায় আরোহণের জন্য প্রত্যেক পর্বতারোহী থেকে ১১ হাজার ডলার নেয়। আর এভারেস্টের অভিযান শেরপা সম্প্রদায়ের লোকজন ও পর্বত পর্যটনের সঙ্গে জড়িত অন্যদের আয়ের বড় উৎস।
‘বিগত বছরগুলোতে বেস ক্যাম্পের আকার দ্বিগুণ হয়ে গেছে বলে জানান এক্সপিডিশন অপারেটর’স অ্যাসোসিয়েশন নেপালের প্রেসিডেন্ট দাম্বার পারাজুলি। এটি ইতিমধ্যে নাজুক হয়ে পড়া পরিবেশের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
‘এখানে আধুনিক সব সার্ভিস দেখতে পাবেন এখন, যেমন ম্যাসেজ পার্লারসহ বিনোদনের আরও নানা ব্যবস্থা। এ জন্য বিশাল তাঁবুসহ আরও নানা কাঠামো তৈরি হয়। কিন্তু এটা বিলাসিতার জায়গা নয়। আমরা সরকারকে বলব বেস ক্যাম্পে কোনটা বৈধ আর কোনটা করা যাবে না তার কঠোর গাইড লাইন তৈরি করতে।’ বলেন তিনি।
পর্যটন মন্ত্রী কিরাতি বলেন এ বিষয়গুলো সম্পর্কে তিনি ওয়াকিবহাল। বলেন ‘কাঠমান্ডুতে যেমন দেখি তেমন একটি টুরিস্ট মার্কেটের মতো হয়ে গেছে বেস ক্যাম্প। এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা দ্রুতই যাচাই করে এগুলো বন্ধ করে দেব। এ মুহূর্তে এ বিষয়টিই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’
এবারের জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনকে ‘কপ অব দ্য ফিন্যান্স’ বা অর্থায়নের কপ বলা হলেও সেটি কেবল কাগজে-কলমেই ঠেকেছে। ক্ষতিপূরণ হিসেবে উন্নয়নশীল দেশগুলো বার্ষিক ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের জলবায়ু ক্ষতিপূরণের যে দাবি জানিয়েছিল, সম্মেলনের ১১তম দিনেও সেই সম্ভাবনা তৈরি হয়নি। এমনকি বিগত বছরগুলোর ক্ষতিপূ
৬ ঘণ্টা আগেকার বাতাসে দূষণের মাত্রা বেড়েছে। বাতাসের মান সূচকে আজ ঢাকা দূষণের মাত্রা ১৯৫, যা অস্বাস্থ্যকর। অন্যদিকে একদিন পরই আবারও বায়ুদূষণের শীর্ষে ভারতের রাজধানী দিল্লি। এর পরে আছে পাকিস্তানের লাহোর। এ ছাড়া শীর্ষ পাঁচ দেশের মধ্যে রয়েছে ইজিপট ও চীন...
৬ ঘণ্টা আগেপাঁচ বছর আগে প্লাস্টিক দূষণ রোধের লক্ষ্যে উচ্চ পর্যায়ের এক জোট গড়ে তুলেছিল বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় তেল ও রাসায়নিক কোম্পানিগুলো। কিন্তু নতুন তথ্য বলছে, এই সময়ের মধ্যে কোম্পানিগুলো যে পরিমাণ নতুন প্লাস্টিক উৎপাদন করেছে, তা তাদের অপসারিত বর্জ্যের তুলনায় ১ হাজার গুণ বেশি।
২১ ঘণ্টা আগেঢাকার বাতাসে দূষণের মাত্রা তুলনামূলক কমলেও অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে রয়েছে। বাতাসের মান সূচকে আজ ঢাকা দূষণের মাত্রা ১৮১, অবস্থান ষষ্ঠ। অন্যদিকে দুদিনের ব্যবধানে আবারও পাকিস্তানের লাহোর বায়ুদূষণের শীর্ষে পাকিস্তানের লাহোর। এরপরে আছে ভারতের রাজধানী দিল্লি। এ ছাড়াও শীর্ষ পাঁচ দেশের মধ্যে রয়েছে মঙ্গোলিয়া ও ই
১ দিন আগে