‘দূষণ তো কমলো না’, সাভারের ট্যানারি বন্ধের সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

দূষণ কমাতে পুরান ঢাকার হাজারীবাগের ট্যানারি সাভারে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু অব্যবস্থাপনা ও অনীহার কারণে সেখানেও দূষণ কমার কোনো লক্ষণ নেই। এ কারণে এই চামড়া শিল্প নগরী বন্ধের সুপারিশ করেছে বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে না করায় ট্যানারি বন্ধের বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে দ্রুত সময়ের মধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশনকে (বিসিক) চিঠি দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে কমিটি। পরিবেশ দূষণ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ার পর যেন এ শিল্প নগরী চালু করা হয় সে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার বিকেলে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানান, আমাদের পক্ষ থেকে সাভারের চামড়া শিল্প নগরী পরিদর্শন করেছিলাম। এ ছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তর একাধিকার পরিদর্শনে গেছে। সেখানে দেখা গেছে, সক্ষমতার চেয়েও বেশি বর্জ্য নিঃসরণ হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় জরিমানা করা হয়। কিন্তু এটা কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। এ জন্য আমরা বন্ধ করে দিতে বলেছি। 

সাবের হোসেন বলেন, সাভারে তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু হেভি মেটাল এবং ক্রোমিয়াম বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কোনো ব্যবস্থাই নেই। দূষণ কমানোর জন্যই হাজারীবাগ থেকে সাভারে ট্যানারি আনা হলো। কিন্তু দূষণ তো কমলো না। তাহলে আমরা এটা করতে গেলাম কেন? 

ট্যানারি পরিচালনার জন্য প্রতিবছর যে পরিবেশ ছাড়পত্র নিতে হয় তা নবায়ন না করতেও কমিটি সুপারিশ করেছে বলে জানান সাবের হোসেন চৌধুরী। 

বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সংসদীয় কমিটিকে জানানো হয়, সাভারের চামড়া শিল্প নগরীতে দৈনিক ৪০ হাজার ঘনমিটার বর্জ্য উৎপাদন হয়। যেখানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা রয়েছে, ২৫ হাজার ঘনমিটারের। অর্থাৎ দৈনিক ১৫ হাজার ঘনমিটার বর্জ্য পরিবেশে মিশছে। গত তিন বছরে ১ কোটি ৬৪ লাখ ঘনমিটার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বাইরে থেকে গেছে। 

চামড়া শিল্পকে আন্তর্জাতিক মানসম্মত করতে ২০০৩ সালে সাভারের হেমায়েতপুরে ট্যানারি গড়ে তোলার কাজে হাত দেয় বিসিক। হাজারীবাগের ট্যানারি মালিকদের অনীহা সত্ত্বেও ২০১৭ সালের এপ্রিলে সেখানে যেতে বাধ্য করা হয়।

তবে বিসিকের চেয়ারম্যান মোশতাক হাসান দাবি করেছেন, ট্যানারিগুলো প্রয়োজনের তুলনায় আড়াইগুণ পানি ব্যবহার করার কারণেই বর্জ্য বেড়ে যায়। তা ছাড়া কোরবানির পরে তিন/চার মাস সমস্যাটা বেশি থাকলেও অন্য সময় নিয়ন্ত্রণে থাকে। 

সাবের হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য পরিবেশমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, জাফর আলম, রেজাউল করিম বাবলু, খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন এবং শাহীন চাকলাদার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত