নতুন অঙ্গ গজায় এসব প্রাণীর, মানুষও পেতে পারে এই ক্ষমতা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ২০: ২৫

বিচিত্র সব প্রাণী ও উদ্ভিদে পরিপূর্ণ আমাদের পৃথিবী নামক গ্রহটি। এমন কিছু প্রাণী রয়েছে যাদের দেহের কোনো অঙ্গ কাটা পড়লে বা খসে গেলে সেগুলো আবার গজিয়ে ওঠে। বিজ্ঞানীরা প্রকৃতিতে এমন সাতটি প্রাণী খুঁজে পেয়েছেন যাদের অঙ্গহানি হলে নতুন করে গজায়। কোন বৈশিষ্ট্যের কারণে প্রাণীগুলো এমন ক্ষমতা পেল, সেটির অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। সেটি জানা গেলে হয়তো মানুষেরও আর অঙ্গহানির ভয় থাকবে না; কাটা হাত আবার নিখুঁতভাবে গজিয়ে যাবে!

নতুন অঙ্গ গজায় এমন সাতটি প্রাণীর তথ্য নিচে তুলে ধরা হলো—

স্যালামান্ডার একটি উভচর প্রাণী। ছবি: গ্রেট প্লেইনস নেচার সেন্টারস্যালামান্ডার
স্যালামান্ডার একটি উভচর প্রাণী। স্যালামান্ডারের ৭০০টি প্রজাতি রয়েছে। লেজ কাটা পড়লে দ্রুতই পূর্ণ লেজ ফিরে পায় প্রাণীটি। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ লেজ গজিয়ে যায়। নতুন লেজ পুরোনো লেজের মতোই কাজ করে। 

ছবি: এনগোঅ্যাক্সোলটল
স্যালামান্ডার জাতীয় প্রাণী অ্যাক্সোলটল। এর বৈজ্ঞানিক নাম Ambystoma mexicanum। হালকা গোলাপি রঙের প্রাণীটি স্যালামান্ডরের চেয়ে দক্ষভাবে নিজের অঙ্গ পুনরুৎপাদন করতে পারে। শুধু লেজই নয়, ত্বকসহ শরীরে যে কোনো অংশই পুনরুৎপাদন করতে পারে এরা। এই প্রাণীর কোনো অঙ্গে বা প্রত্যঙ্গ কেটে ফেললে প্রায় নিখুঁতভাবে অঙ্গটি গজায়। মানুষের অঙ্গ পুনরুৎপাদনের জন্য এই প্রাণী নিয়ে গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। 

ছবি: ফার্স্টপোস্ট স্টারফিশ 
তারকাকৃতির স্টারফিশ দেখতে খুব আকর্ষণীয়। এর পাঁচটি বাহু রয়েছে। মাছটির কেন্দ্রীয় ডিস্ক থেকে কোনো বাহু বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে তা আবার গজিয়ে ওঠে। আবার স্টারফিশের কয়েকটি প্রজাতি একটি অঙ্গ থেকে একটি সম্পূর্ণ শরীরও বিকশিত করতে পারে। মুখ ক্ষতিগ্রস্ত হলে এর পুনরুৎপাদন না হওয়া পর্যন্ত স্টারফিশ বাহুতে পর্যাপ্ত পুষ্টি সঞ্চিত রাখতে পারে। 

ছবি: ইউনিভার্সিটি অব সিডনিসি কিউকাম্বার 
 ‘হলোথুরয়ডি’ শ্রেণিভুক্ত একপ্রকার সামুদ্রিক একাইনোডার্ম হচ্ছে সমুদ্র শসা বা সি কিউকাম্বার। সামুদ্রিক শসা ধীর গতির প্রাণী। এরা নিজেদের শরীর ইচ্ছেমতো সংকোচন ও প্রসারণ করতে পারে। প্রাণীটি খুব অল্প সময়ের মধ্যে শরীরের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পুনরুদ্ধার করতে পারে। আর প্রায় এক সপ্তাহে মধ্যে গভীর ক্ষতও সারিয়ে তুলতে পারে। শত্রুকে প্রতিরোধ করতে এরা এক ধরনের তরল নিক্ষেপ করে। কাঁকড়া বা কচ্ছপ থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য প্রাণীটি প্রায়ই ছদ্মবেশের কৌশল অবলম্বন করে। এই কৌশলে নিজেকে বাঁচাতে অঙ্গ বিসর্জনও দেয় সি কিউকাম্বার। 

ছবি: পেটএমডি মেক্সিকান টেট্রা
মেক্সিকান টেট্রা ফিশ মূলত নদীর মাছ। এরা নিখুঁতভাবে হৃৎপিণ্ডের টিস্যু পুনরুৎপাদন করতে পারে। হৃৎপিণ্ডের রোগ নির্ণয়ের জন্য গবেষকেরা মেক্সিকান টেট্রা নিয়ে গবেষণা করছেন। একইভাবে জেব্রাফিশও প্রায় নিখুঁতভাবে হৃৎপিণ্ড পুনরুৎপাদন করতে পারে। 

ছবি: ব্রিটানিকা হাঙর 
হাঙরের শরীরে অবশ্য নতুন অঙ্গ গজাতে পারে না। তবে পুরো জীবনজুড়ে বারবার নতুন দাঁত পেতে পারে হাঙর। নতুন দাঁত গজাতে কয়েক দিন থেকে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। 

ছবি: উইকিপিডিয়াগিরগিটি
গিরগিটি রং পরিবর্তন করে পরিবেশের সঙ্গে মিশে যেতে পারে। প্রাণীটির এই ক্ষমতার কথা সবাই জানে। এটি মূলত এদের আত্মরক্ষার কৌশল। গিরগিটির অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো লেজ ও পা পুনরুৎপাদনের ক্ষমতা। এই প্রাণী ত্বক ও ক্ষতিগ্রস্ত স্নায়ুও নিরাময় করতে পারে। 

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, দ্য ইকোনমিক টাইমস

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত