Ajker Patrika

কাপ্তাইয়ে পাহাড়ধসের ৫ বছর আজ

কাপ্তাই (রাঙামাটি) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ জুন ২০২২, ০৯: ৩৭
কাপ্তাইয়ে পাহাড়ধসের ৫ বছর আজ

২০১৭ সালের ১৩ জুন রাঙামাটির কাপ্তাইবাসীর জন্য ছিল বিভীষিকাময়। এর আগের দিন (১২ জুন) মধ্যরাত থেকে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। টানা বর্ষণে তখন ঘরবন্দী মানুষ। অতিবৃষ্টিতে সেদিন কাপ্তাইয়ের সব সড়কপথ যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল। সেদিনের পাহাড়ধসে কাপ্তাইয়ে প্রাণ হারায় মোট ১৮ জন। পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে যায় শত শত একর সবজিখেত। বিনষ্ট হয় বহু ঘরবাড়ি। এখনো সেই দিনের কথা কাপ্তাইয়ের মানুষ মনে করে শিহরিত হয়ে ওঠে।

পাহাড়ধসের পাঁচ বছর পার হলেও এখনো অনেক জায়গায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে অনেক পরিবার। বিশেষ করে ৪ নম্বর কাপ্তাই ইউনিয়নের ঢাকাইয়া কলোনিতে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে শত শত পরিবার। এ ছাড়া ওয়াগ্গা ইউনিয়নের মুরালীপাড়া, রাইখালী ইউনিয়নের কারিগরপাড়া, তিনছড়ি, মিতিঙ্গাছড়িসহ দুর্গম অনেক জায়গায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে অসংখ্য পরিবার।

বর্ষা মৌসুমে অতিবৃষ্টি হলে এদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হলেও এসব পরিবারকে স্থায়ীভাবে পুনর্বাসন করা যায়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৩ জুন সকালে কাপ্তাইবাসী শুনল ভয়াবহ পাহাড়ধসের খবর। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসতে লাগল মৃত্যুর তথ্য। সেদিন সকালে প্রথম দুঃসংবাদ আসে ১ নম্বর চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নের মিতিঙ্গাছড়ি থেকে। ভয়াবহ পাহাড়ধসে সেদিন ওই এলাকায় বসবাসরত নূরনবীসহ তাঁর ছেলের গর্ভবতী স্ত্রী এবং তাঁর শিশুপুত্র ঘটনাস্থলে পাহাড়ধসে মারা যায়। ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিসসহ ওই এলাকায় ছুটে যান তখনকার কাপ্তাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দিলদার হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তারিকুল আলম এবং ১ নম্বর চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী বেবী।

এরপর একে একে ওয়াগ্গার মুরালীপাড়া, রাইখালীর কারিগরপাড়া এবং চিৎমরম থেকে পাহাড়ধস ও মৃত্যুর খবর আসতে থাকে। সেদিনের পাহাড়ধসে কাপ্তাইয়ে প্রাণ হারায় সর্বমোট ১৮ জন। পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে যায় শত শত একর সবজিখেত। বিনষ্ট হয় বহু ঘরবাড়ি। এখনো সেই দিনের কথা কাপ্তাইয়ের জনগণ মনে করে শিহরিত হয়ে ওঠে।

এখনো অসংখ্য পরিবারের ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনতাসির জাহান জানান, উপজেলা প্রশাসন সব সময় পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের সতর্ক করে আসছে। অতিবৃষ্টি হলে এদের নিকটস্থ স্কুলে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়, যাতে প্রাণহানি না ঘটে।

ইউএনও জানান, সব সময় কাপ্তাই, রাইখালী ও ওয়াগ্গা ইউনিয়নে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে আসা হয়, যাতে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা না থাকে।

৪ নম্বর কাপ্তাই ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ জানান, প্রতিবছর বর্ষা এলে এখানকার সবাই অজানা আতঙ্কে থাকে। বিশেষ করে তাঁর ইউনিয়নের ঢাকাইয়া কলোনিতে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে শত শত পরিবার।

আব্দুল লতিফ জানান, অতিবৃষ্টি হলে এই বাসিন্দাদের কাপ্তাই উচ্চবিদ্যালয়ে এনে আশ্রয় দিয়ে তাদের খাবার পরিবেশন করা হয়। কিন্তু এটা কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। তাই পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের স্থায়ীভাবে কোনো নিরাপদ জায়গায় পুনর্বাসন করার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান তিনি।

কাপ্তাই জেলা নৌ স্কাউটসের জেলা স্কাউট লিডার এম জাহাঙ্গীর আলম আজকের পত্রিকাকে জানান, সেই দিন ২০১৭ সালের ১২ জুন দুপুর ২টার দিকে যখন কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়কের শিলছড়ি এলাকায় পাহাড়ধসে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, সে সময় সড়কের উভয় পাশে শত শত যান আটকে পড়ে। নৌ স্কাউটসের ৪০ জন সদস্য নিয়ে সড়ক চলাচল উপযোগী করা হয়। এ ছাড়া পাহাড়ধসে নিহতের লাশ উদ্ধারে সহায়তা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

টিআইএন নেওয়ার পরে কিন্তু ঘুমাইতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত