Ajker Patrika

লাগাম টেনে ধরা হোক

সম্পাদকীয়
লাগাম টেনে ধরা হোক

কদিন পর পর গণমাধ্যমে একেকজনের ফেঁসে যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। যাঁরা চাকরিতে আছেন, তাঁরা কিছুটা নিরাপদে থাকলেও ততটা নিরাপদ যে নয়, সেটা প্রকাশ পাচ্ছে ছাগলকাণ্ডে। মূলত অবসরে যাওয়ার পর হাটে হাঁড়ি ভাঙার যদি হিড়িক পড়ে যায়, তাহলে পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা বলা মুশকিল। এর মধ্যেই সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আমলাদের একটি অংশ দুর্নীতিপরায়ণ হয়ে উঠেছে এবং তাতে জনগণের হয়রানি বাড়ছে! সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম বলেছেন, দেশ থেকে বছরে প্রায় ৯২ হাজার কোটি টাকা পাচার হয় বলেই ডলার-সংকট। 

দেশে দুর্নীতি বেড়েছে, সরকারের প্রশ্রয়ে কিছু মানুষ যেভাবে পারছে, সেভাবেই সম্পদ বাড়িয়ে যাচ্ছে, দেশ থেকে দেদার অর্থ পাচার হচ্ছে—এ কথাগুলো এত দিন সরকারের বাইরে থেকে বলা হতো। সরকার এগুলোকে ‘বিরোধী দলের অপপ্রচার’ বলে উড়িয়ে দিত। এখন কথাগুলো সরকারের ঘনিষ্ঠ লোকজনেরাই বলছেন। এতে সরকার কতটুকু বিব্রত হচ্ছে, কতটুকু সতর্ক হচ্ছে, সেটা আমরা বলতে পারব না। তবে যেসব খবর ইদানীং শোনা যাচ্ছে, তাতে এটা বলা যায় যে অবস্থা ভালো না। যেভাবে দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে, তাতে কারও এটা মনে হতেই পারে যে বড় ধরনের ভাঙনের আশঙ্কার মধ্যেই আমরা আছি? সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ ও সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদের কেচ্ছা ফাঁস হওয়ার পর অবৈধ উপায়ে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়া কারও কারও মধ্যে নাকি ‘ফাঁস’ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার উৎকণ্ঠাও তাড়া করছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার স্ত্রী, সন্তান, আত্মীয়স্বজনের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পদের খবরও বেরিয়ে আসছে। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কতজন কত সম্পদের মালিক হয়েছেন, তা এখন প্রকৃতপক্ষেই অনুসন্ধান ও গবেষণার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এর মধ্যে আবার সামনে এসেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআরের কর্মকর্তা ড. মতিউর রহমানের নাম। তাঁর সম্পদের পরিমাণ নিয়েও ছাপা শুরু হয়েছে আকর্ষণীয় সব খবর। শুক্রবার আজকের পত্রিকায় ‘বংশীয় এক ছাগলের দোষে আজ “বাবা-হারা” ইফাত’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, তরুণ মুশফিকুর রহমান ইফাতের স্কুল-কলেজের নথি বলছে, তাঁর বাবার নাম মতিউর রহমান। সমাজ ও স্বজনেরাও বলছেন, তাঁরা বাবা-ছেলে। কিন্তু ইফাতকে নিজের ছেলে বলে স্বীকার করছেন না মতিউর। মতিউর রহমানের ১৯ বছর বয়সী পুত্র মুশফিকুর রহমান ইফাত ঈদের আগে ১২ লাখ টাকা দিয়ে ছাগল কিনে বড় খবর হয়েছেন আর এখন শুরু হয়েছে মতিউরের সম্পদের উৎস সন্ধান।

জানা যাচ্ছে, এনবিআরের সদস্য মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, দেশে একটি গ্রুপ অব কোম্পানিতে দুই হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ এবং কানাডায় বাড়ি, দুবাই, সিঙ্গাপুর ও যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ রয়েছে।

সরকারি চাকরিজীবীরা কীভাবে এত সম্পদের মালিক হচ্ছেন, তা খুঁজে দেখা এবং প্রতিকারের ব্যবস্থা নেওয়া এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

মুসলিম থেকে খ্রিষ্টান হওয়া ইরানি নারী এখন পানামার জঙ্গলে

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারীর পক্ষে নামা ‘তৌহিদী জনতার’ আড়ালে এরা কারা

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত