জাহীদ রেজা নূর
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনকে দুভাগে ভাগ করা যায়। একটি তাঁর সংগ্রাম পর্ব, অন্যটি তাঁর শাসন পর্ব। প্রথম পর্বে বঙ্গবন্ধুর যে ক্যারিশমাটিক নেতৃত্ব, তার তুলনা বিশ্ব ইতিহাসেই বিরল। পুরো জাতির প্রতিনিধি হতে পারেন, এ রকম নেতা বিরল। বঙ্গবন্ধু সেই বিরলদেরই একজন ছিলেন। অসম সাহসী ছিলেন তিনি। জেল-জুলুমকে তিনি পরোয়া করতেন না, মৃত্যুকেও না। নানা সময় নানা মত তাঁকে প্রভাবিত করলেও নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির পথ কখনোই ছাড়েননি তিনি।
রাজনীতির এই প্রথম পর্বে তিনি পাকিস্তানি কাঠামোর মধ্যেই স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন করেছেন। ছয় দফা বাস্তবায়ন হলে পূর্ব বাংলা পূর্ণ স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশের মর্যাদা পেত। দূরবর্তী লক্ষ্য ছিল পূর্ণ স্বাধীনতা। ইয়াহিয়া-ভুট্টো চক্রের কারণে দূরবর্তী লক্ষ্যটাই কাছে এগিয়ে এল। ফলে
১৯৭১ সালে স্বাধীন হলো দেশ। পঁচাত্তরের পটপরিবর্তনের পর বঙ্গবন্ধুকে হেয় করার সব ধরনের প্রস্তুতি সেরেছিল খুনিরা এবং তাদের সঙ্গে গলা মিলিয়েছিল সুবিধাভোগীরা। তারা প্রমাণ করতে সচেষ্ট হলো যে স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর শাসনামল ছিল কুশাসন। পরবর্তী ২১ বছর এই প্রচারণাই চলেছে। এমনকি পাঠ্যপুস্তকেও মিথ্যা তথ্যের সন্নিবেশ করা হয়েছিল।
এই মিথ্যাকে জায়েজ করার জন্য আওয়ামী শাসনের নেতিবাচক দিকগুলোকেই তুলে আনা হয়েছে। সযত্নে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে জাসদ ও গণবাহিনীর ‘কীর্তি’, ধর্ম-ব্যবসায়ীদের দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র, চীনপন্থীদের একাংশের পেয়ারে পাকিস্তানের সঙ্গে মিলিত হওয়ার বাসনা এবং ভুট্টোর পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা, গ্রামাঞ্চলে উগ্র বামদের খুনোখুনির মহড়ার কথা। তবে এ ক্ষেত্রে যোগ করতে হবে, আওয়ামী লীগের মধ্যেও সুবিধাবাদীদের নড়াচড়া পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যাচ্ছিল।
মূল প্রশ্নগুলো থেকে মানুষের মনোযোগ সরিয়ে দেওয়ার জন্য যেসব প্রশ্ন সামনে আনা হলো, তার প্রতিটির আলাদা উত্তর আছে। প্রশ্নগুলো হলো, কেন বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানিদের হাতে ধরা দিলেন, স্বাধীনতার পর সেনাবাহিনীকে অবহেলা কেন করলেন, কেন রক্ষীবাহিনী গড়লেন, কেন চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে একদলীয় শাসনব্যবস্থার জন্ম দিলেন?
পাকিস্তানিদের হাতে বঙ্গবন্ধু কেন ধরা দিলেন, সে প্রশ্ন করার আগে এরা ভাবে না যে বঙ্গবন্ধু যে ঝুঁকিটা নিয়েছিলেন, সেটার নাম মৃত্যুঝুঁকি। ইয়াহিয়ার উদ্দেশ্যই ছিল বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে বঙ্গবন্ধুকে নিকেশ করে দেওয়া। ৯ মাস সেভাবেই শেখ মুজিবুর রহমানকে অন্ধকারে রাখা হয়েছিল। আন্তর্জাতিক চাপ না থাকলে তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যাই করত। যিনি মৃত্যুঝুঁকি নিয়েছেন, তাঁর সদিচ্ছাকে এ রকম প্রশ্নের মুখে ফেলা হাস্যকর। জেলখানায় থাকার সময় কিংবা ভুট্টোর সঙ্গে কথোপকথনের সময় বঙ্গবন্ধু যদি আপস করতেন, তাহলে তাঁকে আপসকামী হিসেবে নিন্দা করা যেত। বঙ্গবন্ধু কি ভুট্টোর সঙ্গে আপস করেছিলেন? নিন্দাকারীদের তো সে সুযোগ তিনি দেননি। সেনাবাহিনীতে পদোন্নতি দেওয়া, পাকিস্তানে আটকে পড়া সেনাদের সেনাবাহিনীতে রাখা, রক্ষীবাহিনী তৈরি করা—এ সবকিছুরই সমাধানযোগ্য ব্যাখ্যা নেই। অন্য রকম আরও কিছু হয়তো হতে পারত। সামরিক বাহিনীতে সিনিয়র-জুনিয়র-সংকট নিয়েও অন্য ব্যবস্থা হয়তো নেওয়া যেত, কিন্তু সে সময়ের মানসিকতা ছিল, কেউ দেশদ্রোহী না হলে সে দেশপ্রেমিক—এই সরল বিশ্বাসটি অনেক সংকটও তৈরি করেছিল। এই সংকটগুলোই বঙ্গবন্ধুর জনপ্রিয়তা কমিয়েছিল বললে অন্যায় হবে না। বাকশাল বিষয়েও রয়েছে বিতর্কের অবকাশ।
কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ব্যাপারে যে বিষয়টি বিতর্কহীন, সেটির কথা না বললে সত্যের কাছাকাছি পৌঁছানো যাবে না। বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির জন্য একটি জাতিরাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। ইতালির যেমন গ্যারিবল্ডি, জার্মানির বিসমার্ক, তেমনি বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। একটি জনগোষ্ঠীকে জাতি হিসেবে সংগঠিত করা, জাতিরাষ্ট্র গঠনের সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দেওয়া একজন মহানায়কের কাজ। শেখ মুজিবুর রহমান সে রকমই একজন মহানায়ক।
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনকে দুভাগে ভাগ করা যায়। একটি তাঁর সংগ্রাম পর্ব, অন্যটি তাঁর শাসন পর্ব। প্রথম পর্বে বঙ্গবন্ধুর যে ক্যারিশমাটিক নেতৃত্ব, তার তুলনা বিশ্ব ইতিহাসেই বিরল। পুরো জাতির প্রতিনিধি হতে পারেন, এ রকম নেতা বিরল। বঙ্গবন্ধু সেই বিরলদেরই একজন ছিলেন। অসম সাহসী ছিলেন তিনি। জেল-জুলুমকে তিনি পরোয়া করতেন না, মৃত্যুকেও না। নানা সময় নানা মত তাঁকে প্রভাবিত করলেও নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির পথ কখনোই ছাড়েননি তিনি।
রাজনীতির এই প্রথম পর্বে তিনি পাকিস্তানি কাঠামোর মধ্যেই স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন করেছেন। ছয় দফা বাস্তবায়ন হলে পূর্ব বাংলা পূর্ণ স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশের মর্যাদা পেত। দূরবর্তী লক্ষ্য ছিল পূর্ণ স্বাধীনতা। ইয়াহিয়া-ভুট্টো চক্রের কারণে দূরবর্তী লক্ষ্যটাই কাছে এগিয়ে এল। ফলে
১৯৭১ সালে স্বাধীন হলো দেশ। পঁচাত্তরের পটপরিবর্তনের পর বঙ্গবন্ধুকে হেয় করার সব ধরনের প্রস্তুতি সেরেছিল খুনিরা এবং তাদের সঙ্গে গলা মিলিয়েছিল সুবিধাভোগীরা। তারা প্রমাণ করতে সচেষ্ট হলো যে স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর শাসনামল ছিল কুশাসন। পরবর্তী ২১ বছর এই প্রচারণাই চলেছে। এমনকি পাঠ্যপুস্তকেও মিথ্যা তথ্যের সন্নিবেশ করা হয়েছিল।
এই মিথ্যাকে জায়েজ করার জন্য আওয়ামী শাসনের নেতিবাচক দিকগুলোকেই তুলে আনা হয়েছে। সযত্নে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে জাসদ ও গণবাহিনীর ‘কীর্তি’, ধর্ম-ব্যবসায়ীদের দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র, চীনপন্থীদের একাংশের পেয়ারে পাকিস্তানের সঙ্গে মিলিত হওয়ার বাসনা এবং ভুট্টোর পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা, গ্রামাঞ্চলে উগ্র বামদের খুনোখুনির মহড়ার কথা। তবে এ ক্ষেত্রে যোগ করতে হবে, আওয়ামী লীগের মধ্যেও সুবিধাবাদীদের নড়াচড়া পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যাচ্ছিল।
মূল প্রশ্নগুলো থেকে মানুষের মনোযোগ সরিয়ে দেওয়ার জন্য যেসব প্রশ্ন সামনে আনা হলো, তার প্রতিটির আলাদা উত্তর আছে। প্রশ্নগুলো হলো, কেন বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানিদের হাতে ধরা দিলেন, স্বাধীনতার পর সেনাবাহিনীকে অবহেলা কেন করলেন, কেন রক্ষীবাহিনী গড়লেন, কেন চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে একদলীয় শাসনব্যবস্থার জন্ম দিলেন?
পাকিস্তানিদের হাতে বঙ্গবন্ধু কেন ধরা দিলেন, সে প্রশ্ন করার আগে এরা ভাবে না যে বঙ্গবন্ধু যে ঝুঁকিটা নিয়েছিলেন, সেটার নাম মৃত্যুঝুঁকি। ইয়াহিয়ার উদ্দেশ্যই ছিল বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে বঙ্গবন্ধুকে নিকেশ করে দেওয়া। ৯ মাস সেভাবেই শেখ মুজিবুর রহমানকে অন্ধকারে রাখা হয়েছিল। আন্তর্জাতিক চাপ না থাকলে তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যাই করত। যিনি মৃত্যুঝুঁকি নিয়েছেন, তাঁর সদিচ্ছাকে এ রকম প্রশ্নের মুখে ফেলা হাস্যকর। জেলখানায় থাকার সময় কিংবা ভুট্টোর সঙ্গে কথোপকথনের সময় বঙ্গবন্ধু যদি আপস করতেন, তাহলে তাঁকে আপসকামী হিসেবে নিন্দা করা যেত। বঙ্গবন্ধু কি ভুট্টোর সঙ্গে আপস করেছিলেন? নিন্দাকারীদের তো সে সুযোগ তিনি দেননি। সেনাবাহিনীতে পদোন্নতি দেওয়া, পাকিস্তানে আটকে পড়া সেনাদের সেনাবাহিনীতে রাখা, রক্ষীবাহিনী তৈরি করা—এ সবকিছুরই সমাধানযোগ্য ব্যাখ্যা নেই। অন্য রকম আরও কিছু হয়তো হতে পারত। সামরিক বাহিনীতে সিনিয়র-জুনিয়র-সংকট নিয়েও অন্য ব্যবস্থা হয়তো নেওয়া যেত, কিন্তু সে সময়ের মানসিকতা ছিল, কেউ দেশদ্রোহী না হলে সে দেশপ্রেমিক—এই সরল বিশ্বাসটি অনেক সংকটও তৈরি করেছিল। এই সংকটগুলোই বঙ্গবন্ধুর জনপ্রিয়তা কমিয়েছিল বললে অন্যায় হবে না। বাকশাল বিষয়েও রয়েছে বিতর্কের অবকাশ।
কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ব্যাপারে যে বিষয়টি বিতর্কহীন, সেটির কথা না বললে সত্যের কাছাকাছি পৌঁছানো যাবে না। বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির জন্য একটি জাতিরাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। ইতালির যেমন গ্যারিবল্ডি, জার্মানির বিসমার্ক, তেমনি বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। একটি জনগোষ্ঠীকে জাতি হিসেবে সংগঠিত করা, জাতিরাষ্ট্র গঠনের সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দেওয়া একজন মহানায়কের কাজ। শেখ মুজিবুর রহমান সে রকমই একজন মহানায়ক।
বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
৩ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪দেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২০ নভেম্বর ২০২৪