জাহীদ রেজা নূর, ঢাকা
দরজা খুললেই দেখা যেত, পরম আগ্রহ চোখেমুখে জড়িয়ে তিনি অপেক্ষা করছেন। মুর্তজা বশীরকে দেখলে কখনোই মনে হতো না, বর্ষীয়ান কোনো মানুষের সঙ্গে মোলাকাত হচ্ছে। তিনি সদাই তরুণ। কখনো কখনো মনে হতো, তাঁর সামনে থাকা আমরাই যেন ক্রমে বার্ধক্যের দিকে অগ্রসর হচ্ছি আর তিনি থেকে যাচ্ছেন সবুজ এক বিশাল প্রান্তর বুকের মধ্যে নিয়ে।
প্রতিবারই জানতে চাইতেন, ‘আমি মরে গেলে মানুষ আমাকে মনে রাখবে তো?’
মণিপুরিপাড়ার সেই ফ্ল্যাটটাতেই তো ঢুকলাম, এবং ঢুকে মনেও হলো না তিনি নেই। মুনীরা বশীর ও মুনিজা বশীর—মুর্তজা বশীরের দুই যোগ্য কন্যা বাবার ফ্ল্যাটটাকে এমনভাবে সাজিয়েছেন, যেন মনে হচ্ছিল চাইলেও মুর্তজা বশীর হারিয়ে যাবেন না। দেয়ালজুড়ে শিল্পীর আত্মপ্রতিকৃতি। তাতে তাঁর চোখগুলো যেন আমাদের দিকেই তাক করা—তাঁকে ভুলব, সাধ্য আছে কার?
গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল শিল্পী মুর্তজা বশীরের ৯১তম জন্মদিন। শিল্পীর দুই মেয়ে দিনটিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন কাছের মানুষদের। যাঁদের জীবনে মুর্তজা বশীর কোনো না কোনোভাবে জড়িত আছেন, তাঁরাই সন্ধ্যায় হাজির হয়েছিলেন শিল্পীর মণিপুরিপাড়ার বাড়িতে।
অনেকেরই মনে পড়েছে, দেখা হলে কতবার শিল্পী বলেছেন ডাকটিকিট সংগ্রহের কথা। তাঁর সেই সংগ্রহের খাতাগুলো ছড়িয়ে ছিল টেবিলে। যে কেউ চাইলেই উল্টেপাল্টে দেখতে পারে তা। আর কয়েন? হ্যাঁ, অতি মূল্যবান কয়েনগুলো তো আছেই, কাছাকাছি রয়েছে তাঁর আংটিগুলো। রয়েছে বেনসন অ্যান্ড হেজেসের প্যাকেট এবং পাইপ। টেরাকোটা কিংবা লক্ষ্মীর পটও দৃষ্টির বাইরে থাকবে না।
অটোগ্রাফ খাতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অটোগ্রাফটি জ্বলজ্বল করছে। আর নিচের দিকে এক সারিতে রাখা ছিল তাঁর ‘ন্যুড’ সিরিজ।
মুনীরা বলছিলেন বাবার শেষ দিনগুলোর কথা। বাবার মৃত্যুর ২৮ দিন পরই তিনি স্বামীহারা হন। সে সময় এই পরিবারটির ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে গিয়েছিল, তা তাঁর কথায় মূর্ত হতে থাকে। সব কষ্ট সামলে উঠে এখন যাঁরা বাবার স্মৃতি সংরক্ষণের চেষ্টায় আছেন, তাঁরা অনেকেই এসেছিলেন। হাসনাত আবদুল হাই, মতিউর রহমান, লুভা নাহিদ চৌধুরী, নিসার হোসেন, নাসির আলী মামুন, মোস্তফা জামান ছাড়াও কথা বললেন ডাকটিকিট সংগ্রহকারীদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক। আলোচকেরা মুর্তজা বশীরের নিজেকে ভেঙেচুরে আবার নতুন করে গড়ার কথা বললেন। প্রতিষ্ঠিত বাবার ছেলে হিসেবেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারতেন মুর্তজা বশীর। কিন্তু সে পরিচয় ছাপিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন সারা জীবন এবং সফল হয়েছেন। ১০৮টি আত্মপ্রতিকৃতির ছবি তুলেছিলেন নাসির আলী মামুন। সেগুলো কাগজে প্রিন্ট করে শিল্পীর স্বাক্ষর নিয়েছিলেন। মোস্তফা জামান স্মরণ করিয়ে দিলেন, কত দ্রুত স্কেচ করতে পারতেন শিল্পী।
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ তাঁর সাত ছেলের মধ্যে কনিষ্ঠতম মুর্তজা বশীর সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘আধুনিক চিত্রের মতোই আমার ছেলে দুর্বোধ্য।’ মুর্তজা বশীর দুর্বোধ্য কি না, সেটা বড় প্রশ্ন নয়। বড় প্রশ্ন হলো, তাঁর জানার তৃষ্ণা ছিল প্রবল। চিত্রকলার বাইরে কবিতা, উপন্যাস, গবেষণাসহ কত বিষয়ে যে তাঁর আগ্রহ ছিল! উপস্থিত সবাই শুনছিলেন কথা আর দেখছিলেন শিল্পীর আঁকা ছবি। দেখতে দেখতে মনে হলো, শিল্পী আর যাবেন কোথায়। এখানেই তো আছেন!
দরজা খুললেই দেখা যেত, পরম আগ্রহ চোখেমুখে জড়িয়ে তিনি অপেক্ষা করছেন। মুর্তজা বশীরকে দেখলে কখনোই মনে হতো না, বর্ষীয়ান কোনো মানুষের সঙ্গে মোলাকাত হচ্ছে। তিনি সদাই তরুণ। কখনো কখনো মনে হতো, তাঁর সামনে থাকা আমরাই যেন ক্রমে বার্ধক্যের দিকে অগ্রসর হচ্ছি আর তিনি থেকে যাচ্ছেন সবুজ এক বিশাল প্রান্তর বুকের মধ্যে নিয়ে।
প্রতিবারই জানতে চাইতেন, ‘আমি মরে গেলে মানুষ আমাকে মনে রাখবে তো?’
মণিপুরিপাড়ার সেই ফ্ল্যাটটাতেই তো ঢুকলাম, এবং ঢুকে মনেও হলো না তিনি নেই। মুনীরা বশীর ও মুনিজা বশীর—মুর্তজা বশীরের দুই যোগ্য কন্যা বাবার ফ্ল্যাটটাকে এমনভাবে সাজিয়েছেন, যেন মনে হচ্ছিল চাইলেও মুর্তজা বশীর হারিয়ে যাবেন না। দেয়ালজুড়ে শিল্পীর আত্মপ্রতিকৃতি। তাতে তাঁর চোখগুলো যেন আমাদের দিকেই তাক করা—তাঁকে ভুলব, সাধ্য আছে কার?
গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল শিল্পী মুর্তজা বশীরের ৯১তম জন্মদিন। শিল্পীর দুই মেয়ে দিনটিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন কাছের মানুষদের। যাঁদের জীবনে মুর্তজা বশীর কোনো না কোনোভাবে জড়িত আছেন, তাঁরাই সন্ধ্যায় হাজির হয়েছিলেন শিল্পীর মণিপুরিপাড়ার বাড়িতে।
অনেকেরই মনে পড়েছে, দেখা হলে কতবার শিল্পী বলেছেন ডাকটিকিট সংগ্রহের কথা। তাঁর সেই সংগ্রহের খাতাগুলো ছড়িয়ে ছিল টেবিলে। যে কেউ চাইলেই উল্টেপাল্টে দেখতে পারে তা। আর কয়েন? হ্যাঁ, অতি মূল্যবান কয়েনগুলো তো আছেই, কাছাকাছি রয়েছে তাঁর আংটিগুলো। রয়েছে বেনসন অ্যান্ড হেজেসের প্যাকেট এবং পাইপ। টেরাকোটা কিংবা লক্ষ্মীর পটও দৃষ্টির বাইরে থাকবে না।
অটোগ্রাফ খাতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অটোগ্রাফটি জ্বলজ্বল করছে। আর নিচের দিকে এক সারিতে রাখা ছিল তাঁর ‘ন্যুড’ সিরিজ।
মুনীরা বলছিলেন বাবার শেষ দিনগুলোর কথা। বাবার মৃত্যুর ২৮ দিন পরই তিনি স্বামীহারা হন। সে সময় এই পরিবারটির ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে গিয়েছিল, তা তাঁর কথায় মূর্ত হতে থাকে। সব কষ্ট সামলে উঠে এখন যাঁরা বাবার স্মৃতি সংরক্ষণের চেষ্টায় আছেন, তাঁরা অনেকেই এসেছিলেন। হাসনাত আবদুল হাই, মতিউর রহমান, লুভা নাহিদ চৌধুরী, নিসার হোসেন, নাসির আলী মামুন, মোস্তফা জামান ছাড়াও কথা বললেন ডাকটিকিট সংগ্রহকারীদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক। আলোচকেরা মুর্তজা বশীরের নিজেকে ভেঙেচুরে আবার নতুন করে গড়ার কথা বললেন। প্রতিষ্ঠিত বাবার ছেলে হিসেবেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারতেন মুর্তজা বশীর। কিন্তু সে পরিচয় ছাপিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন সারা জীবন এবং সফল হয়েছেন। ১০৮টি আত্মপ্রতিকৃতির ছবি তুলেছিলেন নাসির আলী মামুন। সেগুলো কাগজে প্রিন্ট করে শিল্পীর স্বাক্ষর নিয়েছিলেন। মোস্তফা জামান স্মরণ করিয়ে দিলেন, কত দ্রুত স্কেচ করতে পারতেন শিল্পী।
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ তাঁর সাত ছেলের মধ্যে কনিষ্ঠতম মুর্তজা বশীর সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘আধুনিক চিত্রের মতোই আমার ছেলে দুর্বোধ্য।’ মুর্তজা বশীর দুর্বোধ্য কি না, সেটা বড় প্রশ্ন নয়। বড় প্রশ্ন হলো, তাঁর জানার তৃষ্ণা ছিল প্রবল। চিত্রকলার বাইরে কবিতা, উপন্যাস, গবেষণাসহ কত বিষয়ে যে তাঁর আগ্রহ ছিল! উপস্থিত সবাই শুনছিলেন কথা আর দেখছিলেন শিল্পীর আঁকা ছবি। দেখতে দেখতে মনে হলো, শিল্পী আর যাবেন কোথায়। এখানেই তো আছেন!
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
২ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
২ দিন আগে