Ajker Patrika

মন্দ ঋণের ফাঁদে ব্যাংক

জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা
আপডেট : ১৬ অক্টোবর ২০২২, ১০: ২০
মন্দ ঋণের ফাঁদে ব্যাংক

খেলাপি ঋণ কমাতে ব্যাংকগুলোর ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাপ রয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যাংকগুলো পদক্ষেপও নিচ্ছে। কিন্তু কোনো কৌশলই যেন কাজে লাগছে না। এমনকি খেলাপি না কমে উল্টো বেড়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে কু ঋণ বা মন্দ ঋণের লাগাম টেনে ধরতে হিমশিম খাচ্ছে ব্যাংকগুলো। আর মন্দ ঋণের বিপরীতে শতভাগ সঞ্চিতি রক্ষায় বাড়তি চাপে পড়েছে অধিকাংশ ব্যাংক। সব মিলিয়ে মন্দ ঋণে হাবুডুবু খাচ্ছে ব্যাংকগুলো।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের জুন শেষে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা। তার মধ্যে মন্দ ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ১২ হাজার ২১৯ কোটি টাকা, যা মোট খেলাপি ঋণের প্রায় ৮৯ দশমিক ৫৯ শতাংশের বেশি। আর মন্দ ঋণের পরিমাণ গত জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে ছিল ১ লাখ ৩৭৪ কোটি টাকা। একই সময়ে মোট খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। সেই হিসাবেই তিন মাসে মন্দ ঋণ বৃদ্ধি পেয়েছে ১১ হাজার ৮৪৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বা ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ। এ ছাড়া গত জুন শেষে ৯টি ব্যাংক সঞ্চিতি রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মন্দ ঋণ ব্যাংকের জন্য সব সময় বড় দুশ্চিন্তার কারণ। কারণ, মন্দ ঋণ বাড়লে ব্যাংকগুলোর জন্য বাড়তি চাপ ও ঝুঁকি সৃষ্টি হয়। যা গ্রাহকের আস্থার সংকটের ক্ষেত্র তৈরি করে। এ ছাড়া মন্দ মানের ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে শতভাগ সঞ্চিতি রাখতে হয়। এর সরাসরি চাপ পড়ে প্রতিষ্ঠানের আয়ের ওপর। ঋণ দেওয়ার সময় যোগ্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বাছাই করলে খেলাপি কমত। আর ব্যাংকগুলো যদি ঋণ আদায় না করে অবলোপন কৌশলে ব্যালেন্স পরিষ্কার করে, তবে একটা সময় পর তা ব্যাংকের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিধি অনুযায়ী, খেলাপি ঋণ তিনটি পর্যায় বিভক্ত। প্রথম পর্যায় হলো নিম্নমানের ঋণ বা সাব স্ট্যান্ডার্ড (এসএস) ঋণ। সাধারণত ঋণের কিস্তি তিন মাসের বেশি ও ৯ মাসের কম অনাদায়ি থাকলে তা সাব স্ট্যান্ডার্ড বা নিম্নমানের খেলাপি ঋণ। দ্বিতীয়ত, সন্দেহজনক ঋণ বা ডাউটফুল (ডিএফ) ঋণ। মূলত ৯ মাসের বেশি ও ১২ মাসের কম অনাদায়ি থাকলে তা ডাউটফুল বা সন্দেহজনক খেলাপি ঋণ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বিদায়ী অর্থবছরে ব্যাংকগুলো ২ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ অবলোপন করে ব্যালেন্স শিট থেকে তা বাদ দিয়েছে। এর আগের বছরে অবলোপন করা হয়েছিল ২ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা।

একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, যাচাই ছাড়া ঋণ অনুমোদন ও ঋণ পুনঃ তফসিলে বিশেষ ছাড় এবং সুশাসনের অভাবে খেলাপি ঋণ বাড়ছে। আর অধিকাংশ ব্যাংক ক্ষতিকর জেনেও ব্যালেন্স শিট পরিষ্কার রাখতে ঋণ অবলোপন করছে। এমনটা কেন হচ্ছে, তা অনেকের জানা। এটি যেকোনো উপায়ে বন্ধ করা উচিত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আ. লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তারাই সিদ্ধান্ত নেবে: বিবিসিকে প্রধান উপদেষ্টা

‘মবের হাত থেকে বাঁচাতে’ পলকের বাড়ি হয়ে গেল অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প

স্বাধীনতা পদক পাচ্ছেন এম এ জি ওসমানীসহ ৮ জন

কনের বাড়িতে প্রবেশের আগমুহূর্তে হৃদ্‌রোগে বরের মৃত্যু

বগুড়ায় মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় ছাদ থেকে পড়ে নার্সিং শিক্ষার্থীর মৃত্যু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত