পৌরসভা নির্বাচন: কাটাখালীতে লড়বেন জামায়াত নেতাও

রিমন রহমান, রাজশাহী
প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ১১: ১৮

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত নেই। তবে রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার উপনির্বাচনে মেয়র পদে লড়তে চান দলটির পৌর শাখার সাবেক আমির আবদুল হাই। তিনি বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত তাঁর ব্যক্তিগত। দলের হাইকমান্ড থেকে তিনি এখনো সমর্থন পাননি। তবে স্থানীয় জামায়াত নেতারা সবুজসংকেত দিয়েছেন বলে দাবি  সদ্য কারামুক্ত এ নেতার। আগামী ৯ মার্চ পবা উপজেলার এ পৌরসভায় মেয়র পদে ভোট। 

পৌর সূত্রে জানা গেছে, কাটাখালী পৌরসভায় পরপর দুবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে মেয়র হয়েছিলেন দলের নেতা আব্বাস আলী। ২০২১ সালের শেষের দিকে তাঁর একটি আপত্তিকর বক্তব্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর জের ধরে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়, তিনি গ্রেপ্তার হন। পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ হারান। কাউন্সিলররাও তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। ২০২২ সালের ২ অক্টোবর মেয়রের পদ থেকে স্থায়ীভাবে অপসারণ করা হয়। এরপর দীর্ঘ সময় ধরেই একজন কাউন্সিলর ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

জামায়াত নেতা আবদুল হাই ছাড়াও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু সামা, সাধারণ সম্পাদক জহিরুল আলম রিপন ও সাবেক মেয়র আব্বাসের স্ত্রী রাবেয়া সুলতানার ভোটে অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

বিএনপি এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে জানিয়েছেন দলটির জেলা শাখার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মামুন। এ পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীরও সিদ্ধান্ত একই। তবে আবদুল হাইয়ের প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। আবদুল হাই স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। পৌর জামায়াতের সাবেক এ আমির সম্প্রতি নাশকতার মামলায় জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। 

আবদুল হাই বলেন, ‘আমাদের দলের মহানগরের শুরা সদস্য মাজেদুর রহমান কাটাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। পৌরসভা গঠন হলে প্রশাসক ছিলেন তিনি। পরে এক মেয়াদে মেয়রও ছিলেন। সব মিলিয়ে ১৭ বছর কাটাখালী ছিল জামায়াতের নিয়ন্ত্রণে। সেটি আমরা হারিয়েছি। সেই কারণেই আমি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হতে চাচ্ছি। স্থানীয় জামায়াত আমাকে সবুজসংকেত দিয়েছে। তবে হাইকমান্ড এখনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। আমি অপেক্ষায় আছি।’ 

এদিকে সাবেক মেয়র আব্বাস আলী অপসারিত হলেও এবার নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কি না সে ব্যাপারে আইনগত বিষয়গুলো খোঁজখবর নিচ্ছেন। তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে না পারলে তাঁর স্ত্রী রাবেয়া সুলতানা মিতুরই প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এ ছাড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু সামা এবং সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম রিপন প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। 

আবু সামা বলেন, ‘মেয়র পদে নির্বাচনের জন্য ২৭ বছর ধরে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। জনগণের সেবা করতে চাই। সে জন্যই এবার মেয়র পদে নির্বাচনে অংশ নিতে চাই।’ 

জহিরুল আলম বলেন, ‘জনগণের সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক। আমি সব সময় জনগণের সঙ্গে থাকি। তাদের জন্য কাজ করতে চাই বলেই প্রার্থী হব।’ 

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সাবেক এমপি আয়েন উদ্দিনের অনুসারী আবু সামা। আর বর্তমান এমপি আসাদুজ্জামান আসাদের অনুসারী আব্বাস আলী। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ কাউকে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও এমপির আশীর্বাদ গুরুত্বপূর্ণ। সে হিসাবে ভোটের মাঠে এগিয়ে থাকবে আব্বাস পরিবার। 

এমপি আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ তো কাউকে মনোনয়ন দেবে না। তারপরও প্রার্থিতার ব্যাপারে স্থানীয়ভাবে নেতাদের মধ্যে সমঝোতা হলে ভালো। না হলে যাঁর জনপ্রিয়তা বেশি, তিনিই নির্বাচিত হয়ে আসবেন।’ 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত