খান রফিক, বরিশাল
কাকডাকা ভোরে বরিশাল আবদুর রব সেরনিয়াবাত সেতু দিয়ে বাইসাইকেল টেনে কীর্তনখোলা পার হচ্ছেন জহিরুল। একই সারিতে অন্তত আরও ২০ জন বাইসাইকেলে হরেক রকম মালামাল নিয়ে ছুটছেন গ্রামগঞ্জে। সেতুতে উঠতে টপ টপ করে ঘাম ঝরলেও তাঁদের এতটুকু ক্লান্তি নেই। এর ঠিক ১০ মিনিট আগে নগরের সাগরদী সেতুর নিচে দেখা গেল শ্রম বিক্রির হাট। সেখানে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছেন একদল যুবক।
সংশ্লিষ্টদের মতে, নগরীতে যুবক শ্রেণির দিনমজুর বাড়ছে। একদিকে বেকারত্ব, অন্যদিকে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে দিনমজুরদের সংসার টিকিয়ে রাখাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বরিশাল জেলা পরিসংখান কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. সফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বেকারের সংখ্যা নির্ধারণে আমাদের সার্ভে চলমান। তবে ২০১৬-১৭ বর্ষের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে বেকারত্বের হার ৪ দশমিক ২। এর মধ্যে শহরে বেকারত্বের হার ৪ দশমিক ৯ এবং গ্রামে ৪ শতাংশ।
বরিশাল নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ড জিয়ানগরে শতাধিক চাঁপাইনবাবগঞ্জের লোক থাকেন। এঁদের অধিকাংশ যুবক। প্রতিদিন ভোরে বাইসাইকেলে করে হরেক রকম মালামাল নিয়ে গ্রামগঞ্জে বিক্রি করেন। কথা হয় ভাসমান ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো. জহিরুল, জাহিদুল ইসলাম ও আমির হোসেনের সঙ্গে। তাঁদের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে। তাঁরা জানান, আয়ের তেমন পথ না থাকায় দল বেঁধে বরিশালে এসে হরেক মালামাল বেচাকেনা করছেন। জিয়ানগরে থাকেন ১২০ জন। তাঁদের বড় অংশই বেকার। জহিরুলের ভাষ্যমতে, হরেক রকম পণ্যের দাম বাড়ে না; কিন্তু তেল, চাল, ডাল, লবণ চিনির দাম তো বাড়ছেই। তাতে দিনে যে আয় হয়, তা দিয়ে সংসার টেকানোই বেশ কঠিন।
সাগরদী সেতুর নিচে মাটি কাটা, বেড়া বাঁধা, গাছ ছাঁটাসহ নানা কাজের জন্য দৈনিক দাঁড়িয়ে থাকেন দিনমজুর রবিউল হোসেন। তিনি জানান, এখানে প্রতিদিন ২৬-৩০ জন মজুর আসেন। দিন দিন মজুরের সংখ্যা বাড়ায় অনেকে কাজও পান না। দিনে ৫০০-৬০০ টাকা মজুরি দেওয়া হয়। সন্ধ্যায় ৪০০-৫০০ টাকা নিয়ে বাজারে ঢুকে চোখে অন্ধকার দেখেন তিনি। নগরীর চৌমাথা এবং মড়কখোলার পুল এলাকায়ও প্রতিদিন শ্রমিকের হাট বসে।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) জেলা সম্পাদক এবং উন্নয়ন সংগঠন রানের নির্বাহী প্রধান মো. রফিকুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘করোনায় চাকরির বাজারে ঘাটতি দেখা দেওয়ায় শিক্ষিত তরুণ-তরুণীরা হকারি করছেন। আর একশ্রেণির যুবক দৈনিক মজুর হিসেবে নিজের শ্রম বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। কিন্তু কেউ উদ্যোক্তা হতে চান না কিংবা সুযোগও কম।’ তিনি বলেন, ‘দেশে বেসরকারি সংস্থাগুলো ৩০ ভাগ জনবল নিয়োগ দিত। কিন্তু মধ্যম আয়ের দেশ ঘোষণায় ধস নেমেছে সেই সেক্টরে। বরিশালের ২০০ বেসরকারি সংস্থার মধ্যে এখন ১৪-১৫টি চলমান। এই বিশাল যুবক শ্রেণির বর্তমান বাজারদরের সঙ্গে জীবিকা নির্বাহ কঠিন হয়ে পড়ছে।’
বরিশাল যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক আ. কাদের জানান, দেশে ৩৩ ভাগ যুবক রয়েছে। বাবুগঞ্জ উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আ. রহমান সন্যামত বলেন, ‘আমাদের শিক্ষিত যুবক শ্রেণি সাধারণত ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ। তাঁদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য নানা খাতে সহযোগিতা করে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর।’
এ বিষয়ে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের বরিশালের সাধারণ সম্পাদক রণজিৎ দত্ত আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘করোনা-পরবর্তী শহর ও গ্রামে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে না তেমন। শিক্ষিত বেকারদের বড় অংশ অন্তত বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করে রুটিরুজি চালাত। কিন্তু ফান্ড না থাকায় সেখানে কর্মসংস্থানের পথও অনেকটা বন্ধ। এ কারণে বরিশালে এখন বহু শিক্ষিত বেকার যুবকও অটোচালক, ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতা এমনকি দিনমজুরের কাজ করছেন। কিন্তু এখন বাজারে সবকিছুর দাম চড়া। এই স্বল্প আয়ের মানুষ আয়ের সঙ্গে ব্যয় মেটাতে বাজারে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন।’
কাকডাকা ভোরে বরিশাল আবদুর রব সেরনিয়াবাত সেতু দিয়ে বাইসাইকেল টেনে কীর্তনখোলা পার হচ্ছেন জহিরুল। একই সারিতে অন্তত আরও ২০ জন বাইসাইকেলে হরেক রকম মালামাল নিয়ে ছুটছেন গ্রামগঞ্জে। সেতুতে উঠতে টপ টপ করে ঘাম ঝরলেও তাঁদের এতটুকু ক্লান্তি নেই। এর ঠিক ১০ মিনিট আগে নগরের সাগরদী সেতুর নিচে দেখা গেল শ্রম বিক্রির হাট। সেখানে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছেন একদল যুবক।
সংশ্লিষ্টদের মতে, নগরীতে যুবক শ্রেণির দিনমজুর বাড়ছে। একদিকে বেকারত্ব, অন্যদিকে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে দিনমজুরদের সংসার টিকিয়ে রাখাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বরিশাল জেলা পরিসংখান কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. সফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বেকারের সংখ্যা নির্ধারণে আমাদের সার্ভে চলমান। তবে ২০১৬-১৭ বর্ষের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে বেকারত্বের হার ৪ দশমিক ২। এর মধ্যে শহরে বেকারত্বের হার ৪ দশমিক ৯ এবং গ্রামে ৪ শতাংশ।
বরিশাল নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ড জিয়ানগরে শতাধিক চাঁপাইনবাবগঞ্জের লোক থাকেন। এঁদের অধিকাংশ যুবক। প্রতিদিন ভোরে বাইসাইকেলে করে হরেক রকম মালামাল নিয়ে গ্রামগঞ্জে বিক্রি করেন। কথা হয় ভাসমান ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো. জহিরুল, জাহিদুল ইসলাম ও আমির হোসেনের সঙ্গে। তাঁদের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে। তাঁরা জানান, আয়ের তেমন পথ না থাকায় দল বেঁধে বরিশালে এসে হরেক মালামাল বেচাকেনা করছেন। জিয়ানগরে থাকেন ১২০ জন। তাঁদের বড় অংশই বেকার। জহিরুলের ভাষ্যমতে, হরেক রকম পণ্যের দাম বাড়ে না; কিন্তু তেল, চাল, ডাল, লবণ চিনির দাম তো বাড়ছেই। তাতে দিনে যে আয় হয়, তা দিয়ে সংসার টেকানোই বেশ কঠিন।
সাগরদী সেতুর নিচে মাটি কাটা, বেড়া বাঁধা, গাছ ছাঁটাসহ নানা কাজের জন্য দৈনিক দাঁড়িয়ে থাকেন দিনমজুর রবিউল হোসেন। তিনি জানান, এখানে প্রতিদিন ২৬-৩০ জন মজুর আসেন। দিন দিন মজুরের সংখ্যা বাড়ায় অনেকে কাজও পান না। দিনে ৫০০-৬০০ টাকা মজুরি দেওয়া হয়। সন্ধ্যায় ৪০০-৫০০ টাকা নিয়ে বাজারে ঢুকে চোখে অন্ধকার দেখেন তিনি। নগরীর চৌমাথা এবং মড়কখোলার পুল এলাকায়ও প্রতিদিন শ্রমিকের হাট বসে।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) জেলা সম্পাদক এবং উন্নয়ন সংগঠন রানের নির্বাহী প্রধান মো. রফিকুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘করোনায় চাকরির বাজারে ঘাটতি দেখা দেওয়ায় শিক্ষিত তরুণ-তরুণীরা হকারি করছেন। আর একশ্রেণির যুবক দৈনিক মজুর হিসেবে নিজের শ্রম বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। কিন্তু কেউ উদ্যোক্তা হতে চান না কিংবা সুযোগও কম।’ তিনি বলেন, ‘দেশে বেসরকারি সংস্থাগুলো ৩০ ভাগ জনবল নিয়োগ দিত। কিন্তু মধ্যম আয়ের দেশ ঘোষণায় ধস নেমেছে সেই সেক্টরে। বরিশালের ২০০ বেসরকারি সংস্থার মধ্যে এখন ১৪-১৫টি চলমান। এই বিশাল যুবক শ্রেণির বর্তমান বাজারদরের সঙ্গে জীবিকা নির্বাহ কঠিন হয়ে পড়ছে।’
বরিশাল যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক আ. কাদের জানান, দেশে ৩৩ ভাগ যুবক রয়েছে। বাবুগঞ্জ উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আ. রহমান সন্যামত বলেন, ‘আমাদের শিক্ষিত যুবক শ্রেণি সাধারণত ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ। তাঁদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য নানা খাতে সহযোগিতা করে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর।’
এ বিষয়ে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের বরিশালের সাধারণ সম্পাদক রণজিৎ দত্ত আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘করোনা-পরবর্তী শহর ও গ্রামে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে না তেমন। শিক্ষিত বেকারদের বড় অংশ অন্তত বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করে রুটিরুজি চালাত। কিন্তু ফান্ড না থাকায় সেখানে কর্মসংস্থানের পথও অনেকটা বন্ধ। এ কারণে বরিশালে এখন বহু শিক্ষিত বেকার যুবকও অটোচালক, ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতা এমনকি দিনমজুরের কাজ করছেন। কিন্তু এখন বাজারে সবকিছুর দাম চড়া। এই স্বল্প আয়ের মানুষ আয়ের সঙ্গে ব্যয় মেটাতে বাজারে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন।’
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে