কোষ্ঠকাঠিন্য হলে করণীয়

ডা. মো. নাজমুল হক মাসুম 
প্রকাশ : ০২ অক্টোবর ২০২২, ০৮: ০০
আপডেট : ০২ অক্টোবর ২০২২, ১৪: ২৮

কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন না এমন লোক হয়তো খুঁজে পাওয়া মুশকিল। সাধারণত কারও যদি সপ্তাহে তিনবারের কম মলত্যাগ হয়, সেটাকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলে ধরে নেওয়া হয়। অনেকেই বলে থাকেন, পায়খানা পরিষ্কার হয় না, চিকন নালে বাথরুম হয়। বাথরুম করতে গেলে দেখা যায়, খুব শক্ত গুটলি গুটলি হচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঔষধ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।

কোষ্ঠকাঠিন্য হলে কী করণীয়

প্রাথমিক অবস্থায় কারও যদি কোষ্ঠকাঠিন্য হয়, তিনি যদি প্রচুর পরিমাণে পানি, শাকসবজি খেয়ে থাকেন এবং নিয়মিত সকালে মলত্যাগের অভ্যাস করেন; তাহলে অনেক ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য পরিহার করা সম্ভব। অনেক ক্ষেত্রে পায়খানা নরম করার জন্য ল্যাকটোলোজ-জাতীয় ওষুধ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।

এতেও যদি কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণে রাখা না যায়, তাহলে ‘ইসবগুলের ভুসি’ দিনে তিন চামচ করে দুইবার খেতে পারেন। এর সঙ্গে পূর্ণবয়স্করা প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান এবং নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করবেন।

প্রতিদিন নিয়মিত ঘুম ও পরিপূর্ণ বিশ্রাম নিলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন। 

কোষ্ঠকাঠিন্য ভালো না হলে

এত কিছুর পরও যদি কোষ্ঠকাঠিন্য ভালো না হয়, অনেক সময় শক্ত পায়খানা এসে আটকে থাকে, সে ক্ষেত্রে মলদ্বারে গ্লিসারিন-জাতীয় ওষুধ দিতে বলা হয়। তাতেও যদি কাজ না হয়, সে ক্ষেত্রে বলা হয় এনেমা দিতে।

কিন্তু এই কোষ্ঠকাঠিন্যকে শুধু ‘কোষ্ঠকাঠিন্য’ ভেবে বসে থাকবেন না। চিকিৎসকের কাছে যান।

যেসব সতর্কতা মেনে চলতে হবে

  • শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য এমন একটি রোগ, যাকে আমরা বলে থাকি হাসপ্রাঙ্ক ডিজিজ। এ ক্ষেত্রে দেখা যায়, মলদ্বারের মাংসপেশিতে বিভিন্ন রকমের স্নায়ু থাকে, যা সংকোচন-প্রসারণের মাধ্যমে মলদ্বার থেকে মল বের হতে সাহায্য করে। সেই স্নায়ুগুলো যদি না থাকে, অর্থাৎ শুকিয়ে যায়; তাহলে হাসপ্রাঙ্ক ডিজিজ নামের এই রোগ হয়ে থাকে। কাজেই শিশু যদি দীর্ঘদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগতে থাকে, তাহলে অবশ্যই একজন শিশু সার্জন বা কোলন ও রেকটাল সার্জন বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হবেন। 
  • অনেকের দেখা যায়, আগে স্বাভাবিক পায়খানা হতো, হঠাৎ করে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিয়েছে, আবার নরম পায়খানা হচ্ছে। এ রকম সমস্যা থেকে ক্ষেত্রবিশেষে কোলন বা রেকটাল ক্যানসার হতে পারে। কাজেই কোষ্ঠকাঠিন্য ভেবে কারও এই রোগটিকে হেলাফেলা করা উচিত নয়। 
  • কোষ্ঠকাঠিন্য হলেই আপনার ক্যানসার হবে না। কিন্তু কোষ্ঠকাঠিন্য দীর্ঘদিন চলতে থাকলে যদি স্বাভাবিক নিয়মকানুনে ভালো না হয়, তাহলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। চিকিৎসক রোগীদের রোগের বিবরণ শুনে, বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে; কী কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হচ্ছে সেটি শনাক্ত করে যথাযথ চিকিৎসা দেবেন। 

লেখক: জেনারেল ও কোলোরেকটাল সার্জন, সহযোগী অধ্যাপক, ঢাকা মেডিকেল কলেজ

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত