Ajker Patrika

কার্যালয়েই বাড়তি দায়িত্ব মাঠের খোঁজের সময় নেই

মো. আ. রহিম রেজা, ঝালকাঠি
আপডেট : ০২ জুন ২০২২, ১১: ০৩
কার্যালয়েই বাড়তি দায়িত্ব মাঠের খোঁজের সময় নেই

ঝালকাঠির জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়সহ চারটি উপজেলা কার্যালয়ের ৬০ পদের মধ্যে ২২টি দীর্ঘদিন শূন্য রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ১৬টি পদই পশু চিকিৎসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এতে জনবল-সংকটে গবাদিপশুর চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে।

এদিকে কোরবানি সামনে রেখে প্রাণিসম্পদ কার্যালয়গুলোতে জনবল-সংকটে বিপাকে পড়েছেন গরু-ছাগলের খামারিরা। সঠিক পরামর্শ পাচ্ছেন না তাঁরা। কোনো গবাদিপশু অসুস্থ হলে চিন্তায় পড়তে হয়। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জনবল-সংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান হতে পারে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানায়, জেলা কার্যালয়সহ চারটি উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে শূন্য ২২টি পদ। এগুলোর মধ্যে ১৬টি পশু চিকিৎসায়। জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে ১৬ পদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ৬টি শূন্য। এগুলোর মধ্যে জেলা অতিরিক্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা, উপসহকারী কৃত্রিম প্রজনন কর্মকর্তা, ভান্ডাররক্ষক, উচ্চমান সহকারী ও কোষাধ্যক্ষের পদ শূন্য। সদর উপজেলায় ১১টি পদের মধ্যে ৫টি শূন্য। এগুলোর মধ্যে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার পদ এক বছর ধরে শূন্য। এ ছাড়া উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (সম্প্রসারণ), উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (প্রশাসন), উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (স্বাস্থ্য) ও অফিস সহকারীর পদ শূন্য রয়েছে।

জানা গেছে, কাঠালিয়া উপজেলায় ১১টি পদের মধ্যে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার পদ এক বছর ধরে শূন্য রয়েছে। এ ছাড়া ভেটেরিনারি সার্জন, উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (সম্প্রসারণ), উপসহকারী কৃত্রিম প্রজনন কর্মকর্তা, একটি এমএলএসএসসহ পাঁচটি পদ শূন্য। নলছিটি উপজেলায় ১১টি পদের মধ্যে উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (সম্প্রসারণ), উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (প্রশাসন), উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (স্বাস্থ্য), একটি এমএলএসএসসহ চারটি পদ শূন্য। রাজাপুরে ১১টি পদের মধ্যে উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার (সম্প্রসারণ) দুটি পদ শূন্য।

জানা যায়, চারটি উপজেলার বিভিন্ন কর্মকর্তাদের একাধিক পদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁদের অনেকেই দাপ্তরিক কাজ করে মাঠের খামারিদের খোঁজ নিতে পারেন না। ফলে খামারিরা রোগাক্রান্ত গবাদিপশুর চিকিৎসাসেবা নিতে পারছেন না। জেলায় ৪৫২টি গরু ও ৫৭টি ছাগলের খামার রয়েছে। এসব খামারে ১ লাখ ৮০ হাজার ৫৫১টি গরু ও ৮২ হাজার ৫৯৬টি ছাগল রয়েছে। এত গবাদিপশুর চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের। প্রতিদিন চারটি উপজেলা কার্যালয়ে অসংখ্য লোক তাঁদের গরু-ছাগল-ভেড়া ও হাঁস-মুরগি নিয়ে এসে বিনা চিকিৎসায় ফিরে যাচ্ছেন।

খামারিদের অভিযোগ, আগে রোগাক্রান্ত গবাদিপশুর চিকিৎসার জন্য খামারে বা বাড়িতে গিয়ে ভেটেরিনারি সার্জন বা অফিসের লোকজন গিয়ে চিকিৎসা দিতেন। এখন লোকবল-সংকটে প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে এসেও আক্রান্ত গবাদিপশুর চিকিৎসা করাতে পারছেন না।

কাঠালিয়ার আওরাবুনিয়া এলাকার খামারি ইউসুফ হোসেন জানান, গবাদিপশুর রোগ দেখা দিলে হাসপাতালে চিকিৎসক পাওয়া যায় না। সামনের ঈদুল আজহার আগে প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঠিক পরামর্শ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন খামারিরা। এতে অনেকের লোকসান হতে পারে।

রাজাপুরের খামারি আলমগীর, আজিজুল, কবিরসহ একাদিক খামারি জানান, কোরবানি ঘিরে গরু মোটাতাজাকরণ জরুরি। এতে প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঠিক পরামর্শ দরকার। এ ছাড়া উন্নত জাতের গরুর জন্য নানা পরামর্শ লাগে; যা সঠিকভাবে পাওয়া যাচ্ছে না।

ঝালকাঠি জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ছাহেব আলী জানান, জেলা কার্যালয়সহ চার উপজেলায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদ শূন্য রয়েছে। এতে খামারিদের সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে। তবে প্রতি মাসেই শূন্য পদের তালিকাসহ প্রতিবেদন অধিদপ্তরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আশা করা যাচ্ছে, শিগগির এসব শূন্য পদ পূরণ হবে। লোকজল পেলে এ সমস্যার সমাধান হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আমিনুল ইসলাম নন, শিক্ষা উপদেষ্টা হচ্ছেন অধ্যাপক আবরার

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোঁড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

বিএনপির দুই পেশাজীবী সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত

বসুন্ধরায় ছিনতাইকারী সন্দেহে ২ বিদেশি নাগরিককে মারধর

উপদেষ্টা হচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত