সরকারের চাওয়া না মানায় বন্ধ ফেসবুক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৪, ১০: ৫১

টানা ১০ দিন বন্ধ থাকার পর গতকাল আবার চালু হয়েছে মোবাইল নেটওয়ার্ক ফোর-জি। তবে ফোনে ইন্টারনেট ফিরে এলেও চালানো যাচ্ছে না ফেসবুক, টিকটকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। হোয়াটসঅ্যাপের ক্ষেত্রেও ব্যবহারকারীরা ভোগান্তিতে পড়ছে।

মোবাইলে হোয়াটসঅ্যাপে ধীরগতি পাওয়া যাচ্ছে। জানা গেছে, ফেসবুক, টিকটকসহ জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে কিছু বিষয়ে জানতে চেয়ে গত শনিবার চিঠি দিয়েছে বিটিআরসি। তারা যৌক্তিক ও সন্তোষজনক জবাব দিলে খুলে দেওয়া হবে মাধ্যমগুলো।
এদিকে ফেসবুক বন্ধ থাকায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন এফ-কমার্স উদ্যোক্তারা। ফেসবুক পেজই ব্যবসার প্ল্যাটফর্ম হওয়ায় বন্ধ হওয়ার পথে তাঁদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম। 

বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী যাঁরা রয়েছেন, বিশেষ করে এফ-কমার্স এবং পোস্টিং ও বিজ্ঞাপন প্রচারকারীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম না থাকার কারণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কারণ, তাঁরা এগুলোর জন্য টাকা পরিশোধ করেছেন।

তবে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক দাবি করেছেন, সরকার কোনো অ্যাপ বন্ধ করেনি। গতকাল রোববার রাজধানীর বিটিআরসি ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘অনেকেই অনেকভাবে অনেক অ্যাপ ব্যবহার করছেন।

সরকার সম্পূর্ণভাবে কখনোই কোনো অ্যাপ বন্ধ করেনি। এটা নির্ভর করছে তাদের আচরণের ওপর। তারা যদি দেশের আইন, বিধিবিধান, সংবিধান ও নিরাপত্তা বিবেচনায় রেখে দায়িত্বশীল আচরণ করে, তাহলে বাংলাদেশে সবার সহযোগিতা পাবে।’

তবে প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং বিটিআরসি থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, সরকার ফেসবুককে নিজেদের আজ্ঞাবাহী প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখতে চাইছে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ধারণা, ফেসবুকের কারণেই কোটা সংস্কার আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল এবং সর্বস্তরের মানুষ এ সম্পর্কে জানতে পেরেছিল। সরকার-সমর্থিত পেজ ও অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে ফেসবুক খড়্গহস্ত হলেও সরকারবিরোধীদের বিষয়ে তারা নমনীয়। 

এ বিষয়ে পলক বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সমর্থনে কাজ করত এমন ৫০টি পেজ ও অ্যাকাউন্ট ফেসবুক বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু একই ধরনের কাজ বিএনপির পেজ থেকে বা সাজাপ্রাপ্ত আসামি, উগ্রপন্থীরা যেসব কনটেন্ট প্রচার করছে, সেগুলো কেন বন্ধ করছে না? আবার শিশুদের অ্যাবিউজ, নারীদের প্রতি আক্রমণ, সহিংসতা, সন্ত্রাস, অগ্নিসংযোগ, গুজব প্রসঙ্গে তারা কোনো দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখেনি। আমরা যে কনটেন্টগুলো মুছতে বলেছি, তার খুব কমই তারা মুছেছে।’

পলক দাবি করেন, মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো গুজব ছড়াচ্ছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দুজন শিক্ষার্থীর মৃত্যুসংবাদের পোস্ট ফেসবুকে ছড়ানো হয়। এই পোস্টগুলোর কারণে সহিংসতা তৈরি হয়; যার ফলে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়। তিনি ইঙ্গিত করেন, মূলত গুজব প্রতিরোধে ফেসবুক ডাউন রাখা হয়েছে। 

ফেসবুক-টিকটককে চিঠি
ফেসবুক, টিকটকসহ জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে গত শনিবার বিটিআরসি থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী। চিঠিতে গত এক মাসে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন সহিংসতা ও গুজব ছড়িয়ে যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে, সেগুলো সরাতে অনুরোধ করা হয়েছে। যতটুকু সরানো হয়েছে, তা নগণ্য ও অগ্রহণযোগ্য। আইন মেনে তারা বাংলাদেশে সাইবার জগৎ ব্যবহার করতে চায় কি না, সে ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়েছে। ৩১ জুলাই ঢাকায় এসে লিখিত এবং মৌখিকভাবে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। তারা যৌক্তিক ও সন্তোষজনক জবাব দিলে মাধ্যমগুলো খুলে দেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত