জাহীদ রেজা নূর, ঢাকা
আগস্ট মাসটি শুধু শোকের মাস নয়, আত্মজিজ্ঞাসারও মাস। বাঙালির বিশ্বাসঘাতকতা শুধু পলাশীর যুদ্ধের সময়েই ঘটেনি, ঘটেছে তার পরেও। ১৫ আগস্ট তেমনই বিশ্বাসঘাতকতার শোকাবহ দিন। যাঁর নামে স্বাধীনতার যুদ্ধ হয়েছে, হয়েছে মুক্তিসংগ্রাম, সেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকেই হত্যা করেছিল একদল ঘৃণিত বিশ্বাসঘাতক।
আগস্ট মাস এলেই একটি প্রশ্ন প্রকট হয়ে ওঠে–একটি দেশের রাষ্ট্রপতি কেন এ রকম অরক্ষিত অবস্থায় থাকবেন? অবশ্য সেই প্রশ্নের উত্তর তিনি নিজেই দিয়েছিলেন একবার সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্টকে। বলেছিলেন, তাঁর সবচেয়ে বড় শক্তি এই যে তিনি দেশের মানুষকে ভালোবাসেন। এবং তাঁর সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হচ্ছে, দেশের মানুষকে তিনি খুব বেশি ভালোবাসেন। এই ‘খুব বেশি’ ভালোবাসাই কাল হলো তাঁর। বাংলাদেশের একদল বিপথগামী ঘৃণ্য সেনাসদস্য দেশি-বিদেশি চক্রান্তের মাধ্যমে হত্যা করল বঙ্গবন্ধুকে। পেছনে ফিরলে দেখা যাবে, স্বাধীন হওয়ার পরপরই দেশটি বিভ্রান্ত হচ্ছিল নানাভাবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেখতে পাচ্ছিলেন, অনেকেই সরে গেছে তাঁর পাশ থেকে। পাকিস্তানি দালালদের তৎপরতা বাড়ছিল, জাসদ ও গণবাহিনী তখন বিভিন্নভাবে সৃষ্টি করছিল অরাজকতা, আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশবিরোধী চক্রান্ত চলছিল, আওয়ামী লীগের মধ্যেও দেখা গিয়েছিল দোদুল্যমানতা। সে সময় বঙ্গবন্ধু যে ভাষণগুলো দিচ্ছিলেন, তাতেও বোঝা যাচ্ছিল, যে দেশটি গড়তে চাইছিলেন তিনি, সে দেশ গড়া কঠিন হয়ে উঠছে।
আরও একটু পেছনের দিকে তাকানো যাক। শেখ মুজিবুর রহমানকে তাঁর কালের গণ্ডিতে রেখে দেখা যাক। তাঁর কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য কী ছিল, সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া যাক।
জাতীয়তাবাদী চেতনার জাগরণ ঘটিয়ে তিনি পাকিস্তান ভেঙে জন্ম দিয়েছিলেন একটি দেশের—বাংলাদেশ যার নাম। বাঙালি জাতিকে অসাম্প্রদায়িক করতে চেয়েছিলেন তিনি। চেয়েছিলেন প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতির অবসান। ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদকে ধ্বংস করে তিনি জন্ম দিয়েছিলেন সংস্কৃতিভিত্তিক জাতীয়তাবাদের। তাই তাঁর দেশি-বিদেশি শত্রু ছিল অসংখ্য। তাই সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার ঘটনাকে সাধারণ ঘটনা হিসেবে ব্যাখ্যা করা যাবে না।
শুধু কি অল্প কয়েকজন পথভ্রান্ত সৈনিকের ষড়যন্ত্রের কারণে শহীদ হলেন বঙ্গবন্ধু? এ রকম ভাবলে ভুল করা হবে। এটা ছিল এক বড় আন্তর্জাতিক চক্রান্ত। আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়াশীলদের সঙ্গে আপস করলে বঙ্গবন্ধুর এই পরিণতি হতো না।
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামের প্রথম পর্ব সমাপ্ত হয়েছিল। দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়েছিল দেশ গড়ার স্বপ্নে। এই ঐতিহাসিক তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশ গড়ার সময়টিতে কেমন ছিল বাংলাদেশ? বাংলাদেশের কোনো বৈদেশিক মুদ্রা ছিল না। গোল্ড রিজার্ভ ছিল না। গুদামে ছিল না খাদ্য। সেতুগুলো ছিল বিধ্বস্ত। পুরো দেশটাই তখন রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে। সেই চরম প্রতিকূলতার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু চেষ্টা করেছিলেন ঘুরে দাঁড়ানোর। মাত্র ৯ মাসের মধ্যে তৈরি হয়েছিল সংবিধান। গড়ে তোলা হয়েছিল প্রতিরক্ষা বাহিনী। মুক্তিযুদ্ধের পরপরই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল মাত্র দুটি দেশ—ভারত আর ভুটান। ১৯৭৫ সালের শুরুতে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়া দেশের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ১৩৪টিতে। ১৯৭৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ পেয়েছিল জাতিসংঘের সদস্যপদ।
যে ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেছিল, সেই রাজনীতি শেখ মুজিবের শরীরকে হত্যা করতে পেরেছিল বটে, কিন্তু যে আগুনের শিখা, যে সংগ্রামের নায়ক হয়ে তিনি ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছিলেন, তা অমর হয়ে রইল। ১৫ আগস্টের সেই শোকাবহ দিনটির কাছাকাছি হওয়ার আগে সে বিষয়েও কিছু কথা বলে নেওয়া সমীচীন—নইলে ইতিহাসের এই মহানায়ককে ঠিকভাবে চিনে নেওয়া যাবে না।
আগস্ট মাসটি শুধু শোকের মাস নয়, আত্মজিজ্ঞাসারও মাস। বাঙালির বিশ্বাসঘাতকতা শুধু পলাশীর যুদ্ধের সময়েই ঘটেনি, ঘটেছে তার পরেও। ১৫ আগস্ট তেমনই বিশ্বাসঘাতকতার শোকাবহ দিন। যাঁর নামে স্বাধীনতার যুদ্ধ হয়েছে, হয়েছে মুক্তিসংগ্রাম, সেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকেই হত্যা করেছিল একদল ঘৃণিত বিশ্বাসঘাতক।
আগস্ট মাস এলেই একটি প্রশ্ন প্রকট হয়ে ওঠে–একটি দেশের রাষ্ট্রপতি কেন এ রকম অরক্ষিত অবস্থায় থাকবেন? অবশ্য সেই প্রশ্নের উত্তর তিনি নিজেই দিয়েছিলেন একবার সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্টকে। বলেছিলেন, তাঁর সবচেয়ে বড় শক্তি এই যে তিনি দেশের মানুষকে ভালোবাসেন। এবং তাঁর সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হচ্ছে, দেশের মানুষকে তিনি খুব বেশি ভালোবাসেন। এই ‘খুব বেশি’ ভালোবাসাই কাল হলো তাঁর। বাংলাদেশের একদল বিপথগামী ঘৃণ্য সেনাসদস্য দেশি-বিদেশি চক্রান্তের মাধ্যমে হত্যা করল বঙ্গবন্ধুকে। পেছনে ফিরলে দেখা যাবে, স্বাধীন হওয়ার পরপরই দেশটি বিভ্রান্ত হচ্ছিল নানাভাবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেখতে পাচ্ছিলেন, অনেকেই সরে গেছে তাঁর পাশ থেকে। পাকিস্তানি দালালদের তৎপরতা বাড়ছিল, জাসদ ও গণবাহিনী তখন বিভিন্নভাবে সৃষ্টি করছিল অরাজকতা, আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশবিরোধী চক্রান্ত চলছিল, আওয়ামী লীগের মধ্যেও দেখা গিয়েছিল দোদুল্যমানতা। সে সময় বঙ্গবন্ধু যে ভাষণগুলো দিচ্ছিলেন, তাতেও বোঝা যাচ্ছিল, যে দেশটি গড়তে চাইছিলেন তিনি, সে দেশ গড়া কঠিন হয়ে উঠছে।
আরও একটু পেছনের দিকে তাকানো যাক। শেখ মুজিবুর রহমানকে তাঁর কালের গণ্ডিতে রেখে দেখা যাক। তাঁর কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য কী ছিল, সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া যাক।
জাতীয়তাবাদী চেতনার জাগরণ ঘটিয়ে তিনি পাকিস্তান ভেঙে জন্ম দিয়েছিলেন একটি দেশের—বাংলাদেশ যার নাম। বাঙালি জাতিকে অসাম্প্রদায়িক করতে চেয়েছিলেন তিনি। চেয়েছিলেন প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতির অবসান। ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদকে ধ্বংস করে তিনি জন্ম দিয়েছিলেন সংস্কৃতিভিত্তিক জাতীয়তাবাদের। তাই তাঁর দেশি-বিদেশি শত্রু ছিল অসংখ্য। তাই সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার ঘটনাকে সাধারণ ঘটনা হিসেবে ব্যাখ্যা করা যাবে না।
শুধু কি অল্প কয়েকজন পথভ্রান্ত সৈনিকের ষড়যন্ত্রের কারণে শহীদ হলেন বঙ্গবন্ধু? এ রকম ভাবলে ভুল করা হবে। এটা ছিল এক বড় আন্তর্জাতিক চক্রান্ত। আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়াশীলদের সঙ্গে আপস করলে বঙ্গবন্ধুর এই পরিণতি হতো না।
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামের প্রথম পর্ব সমাপ্ত হয়েছিল। দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়েছিল দেশ গড়ার স্বপ্নে। এই ঐতিহাসিক তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশ গড়ার সময়টিতে কেমন ছিল বাংলাদেশ? বাংলাদেশের কোনো বৈদেশিক মুদ্রা ছিল না। গোল্ড রিজার্ভ ছিল না। গুদামে ছিল না খাদ্য। সেতুগুলো ছিল বিধ্বস্ত। পুরো দেশটাই তখন রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে। সেই চরম প্রতিকূলতার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু চেষ্টা করেছিলেন ঘুরে দাঁড়ানোর। মাত্র ৯ মাসের মধ্যে তৈরি হয়েছিল সংবিধান। গড়ে তোলা হয়েছিল প্রতিরক্ষা বাহিনী। মুক্তিযুদ্ধের পরপরই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল মাত্র দুটি দেশ—ভারত আর ভুটান। ১৯৭৫ সালের শুরুতে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়া দেশের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ১৩৪টিতে। ১৯৭৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ পেয়েছিল জাতিসংঘের সদস্যপদ।
যে ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেছিল, সেই রাজনীতি শেখ মুজিবের শরীরকে হত্যা করতে পেরেছিল বটে, কিন্তু যে আগুনের শিখা, যে সংগ্রামের নায়ক হয়ে তিনি ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছিলেন, তা অমর হয়ে রইল। ১৫ আগস্টের সেই শোকাবহ দিনটির কাছাকাছি হওয়ার আগে সে বিষয়েও কিছু কথা বলে নেওয়া সমীচীন—নইলে ইতিহাসের এই মহানায়ককে ঠিকভাবে চিনে নেওয়া যাবে না।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে