নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে বিলে মাছ ধরা নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে নারীসহ অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার কুলপতাক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহতদের মধ্যে ৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে আদর্শনগর তদন্তকেন্দ্রের পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মোহনগঞ্জ থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সংঘর্ষে আহতরা হলেন উপজেলার মহরা গ্রামের আ. রাজ্জাক (৭০), তাঁর ছেলে মতিউর (৪০) ও রেজাউল (৩৫), ভাগনি পারভিন আক্তার (৪০), ঊষা আক্তার (৫০), নাতি রুমা আক্তার (৩৫)। এ ছাড়া এই পক্ষের আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে ঊষা আক্তারের মাথায় গুরুতর জখম রয়েছে। তাঁর মাথায় বেশ কয়েকটি সেলাই লেগেছে।

অপর পক্ষের পাইলাটি গ্রামের আহত দুর্লভকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া হাবিবল মিয়া ও জাহাঙ্গীরসহ আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষই থানায় অভিযোগ করেছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মহরা গ্রামের পাশে নত্তি বিল ইজারা নেয় কয়রাপাড়া মৎস্যজীবী সমিতি। এই সমিতির মালিক পাইলাটি গ্রামের হাবিবুল, চান মিয়া, মুখলেছসহ আরও বেশ কয়েকজন। পাশের মহরা গ্রামের রেজাউল ইসলাম ও তাঁর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে মাছ ধরা নিয়ে সংঘর্ষ হয়।

এ ঘটনায় মহরা গ্রামের রেজাউল ইসলাম বাদী হয়ে অপর পক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। এতে পাইলাটি গ্রামের মাসুম মিয়া, হাবুল্লা, চান মিয়াসহ ৮ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ১০-১৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করেছেন তিনি। এদিকে এ ঘটনায় পাইলাটি গ্রামের হাবিবুল মিয়া বাদী হয়ে মহরা গ্রামের রেজাউল ইসলামসহ ৮-১০ জনের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ দায়ের করেছেন।

মহরা গ্রামের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘নত্তি বিলে নয়, আমরা মাছ ধরতে গিয়েছিলাম আমাদের জমিতে। ওই পক্ষ নত্তি বিল ইজারা নিয়ে পাশের সব ছোট বিল নিজেরদের দাবি করছে। পাশে কস্তর বিলে আমাদের জমিতে মাছ ধরতে গেলে এটি ইজারার বিল দাবি করে কয়েক শ লোক মিলে রামদা, বল্লমসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমাদের পরিবারের ১০ জনকে আহত করে। এর মধ্যে নারীসহ ৬ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।’

এদিকে নত্তি বিলের দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা পাইলাটি গ্রামের হাবিবুল মিয়া বলেন, ‘গত বুধবার রাত তিনটার দিকে রেজাউল তাঁর লোকজন নিয়ে এসে বিলে মাছ ধরা শুরু করে। আমি বাধা দিলে আমাকে মারধর করে নৌকা থেকে ফেলে দেয়। এ সময় আমার সঙ্গে থাকা জাহাঙ্গীর ও দুর্লভকেও মারধর করে। পরে ঘটনাটি বাড়িতে গিয়ে বললে সকালে লোকজন এসে তাদের বাধা দেয়। পরে রেজাউলদের লোকজন আমাদের ফের মারধর করে। আহত দুর্লভ হাসপাতালে ভর্তি আছেন।’

মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দুপক্ষই অভিযোগ দিয়েছে। ইজারা নেওয়া পক্ষকে বিলের ইজারার কাগজপত্র নিয়ে আসতে বলেছি। তদন্ত করে সবকিছু দেখে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’