নালায় আটকে সড়কের কাজ

শরীফ হাসান, দোহার (ঢাকা)
প্রকাশ : ০৯ জুন ২০২২, ০৭: ০০
আপডেট : ০৯ জুন ২০২২, ০৯: ২৪

ঢাকার দোহার পৌরসভার নালা (ড্রেনেজ) ব্যবস্থার কাজ চলায় কোথাও বছর আবার কোথাও কয়েক মাস ধরে বেশ কয়েকটি সড়ক খুঁড়ে রাখা হয়েছে। কয়েকটি সড়কে কাজ শেষও হয়েছে অনেক দিন, কিন্তু নালার পাশ দিয়ে রাস্তা ভেঙে ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে। এই রাস্তাগুলো যান চলাচলের জন্য সংস্কার না করায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দা ও রাস্তায় চলাচলকারীদের।

সরেজমিনে দেখা যায়, পৌরসভার গাঙপাড় এলাকা থেকে খারাকান্দা পশু হাসপাতাল পর্যন্ত প্রায় দুই বছর রাস্তা খুঁড়ে ফেলে রাখা হয়েছে নালাব্যবস্থার জন্য। এ ছাড়া খারাকান্দা মাঝিবাড়ি থেকে আবেদ আলী মেম্বারবাড়ি পর্যন্ত রাস্তাটিও প্রায় এক বছর খুঁড়ে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে উত্তর জয়পাড়া কুটিবাড়ি থেকে সাহেববাজার পর্যন্ত রাস্তারও একই অবস্থা। এই রাস্তাগুলোয় দীর্ঘদিন ধরে নালাব্যবস্থার জন্য পাইপ ফেলে রাখা হয়েছে, কোথাও পাইপ স্থাপনও করা হয়েছে। তবে পাইপ বসানো শেষ হলেও রাস্তা যান চলাচলের জন্য উপযোগী করা হয়নি। ধুলাবালুতে পরিবেশ যেমন দূষিত হচ্ছে, তেমনি বৃষ্টি হলে পানি জমে মশার প্রজনন হচ্ছে। এতে ভোগান্তির শেষ নেই স্থানীয় বাসিন্দাদের।

পৌরসভার মাঝিবাড়ি থেকে আবেদ আলী মেম্বারবাড়ি পর্যন্ত রাস্তার বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় বাসিন্দা রফিক বলেন, ‘এই রাস্তায় প্রায় এক বছর ধরে নালাব্যবস্থার কাজ চলছে। নালাব্যবস্থার জন্য পাইপ বসালেও রাস্তাটি এখনো ঠিক করা হয়নি। ডাক্তারের কাছে রোগী নিতে অনেক কষ্ট হয়। এই রাস্তার জন্য আমাদের অনেক সমস্যা হচ্ছে।’

মোজ্জাফর ও দোলাল বলেন, ‘এই রাস্তাটি ঠিক করা হচ্ছে না। পৌরসভার উন্নয়ন এখন আমাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পৌরসভা বলছে, এই রাস্তাটি ২০ ফুট চওড়া হবে। এতে আমাদের অনেক ক্ষতি হবে, বাড়িঘর ভাঙতে হবে। আমাদের অল্প জমি, কিছু অংশ রাস্তার জন্য নিলে, আমরা কী করে থাকব। রাস্তা বড় না করার জন্য পৌরসভার কাছে আমরা আবেদন করেছি। কিন্তু মাঝিবাড়ি থেকে খারাকান্দা মোড় পর্যন্ত ঘরবাড়ি ভেঙে রাস্তা বড় করা হয়েছে। এখন আমরা চাই, আমাদের এই পাশে যতটুকু রাস্তা আছে, সেটুকুই থাক। আমাদের বড় রাস্তা লাগবে না।’

কুটিবাড়ির এলাকার হারুনুর রশীদ (৩৮) বলেন, ‘হাঁটার জন্য আমরা নিজেদের জমি দিয়ে এই রাস্তাটি নির্মাণ করেছিলাম। পরে রাস্তাটি ৯ ফুট করা হয়। নালা নির্মাণের সময় পৌরসভা থেকে আমাদের বলা হয়েছিল, রাস্তা বড় হবে না। পরে তারা বলে, রাস্তা ২০ ফুট হবে। আমরা আগে জানলে এই রাস্তা দিয়ে নালা নিতে দিতাম না। তা ছাড়া, যেখানে প্রধান সড়ক ১৩ ফুট, সেখানে এই রাস্তা কী করে ২০ ফুট হয়, এটাই আমার প্রশ্ন? আমরা ঘরবাড়ি বিলীন করে রাস্তা ও নালার উন্নয়ন চাই না।’

এ বিষয়ে দোহার পৌরসভার মেয়র আমজাদ হোসেন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে কাজ করে যাচ্ছি এবং আমার মেয়াদ অল্প দিনের জন্য। কিছু রাজনৈতিক সমস্যা ছিল। তা ছাড়া, আগের মেয়র অসুস্থ থাকার কারণে ঘটনাস্থলে যেতে পারেননি, তাই তদারকি না থাকায় এত দিন ধরে পড়ে আছে নালাব্যবস্থার উন্নয়ন।’

পৌরমেয়র আরও বলেন, ‘আমরা ঠিকাদারদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা বলছেন, রাস্তার মধ্যে যেসব ঘর পড়েছে, সেগুলো ভেঙে দিলেই তাঁরা কাজ দ্রুত করে দেবেন।’ রাস্তা বড় না করার জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা যে আবেদন করেছেন, সে বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা আবার সবার সঙ্গে বসব, যেটা ভালো হয় সেটাই করব।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত