কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে মালচিং পদ্ধতির চাষে

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, সিরাজদিখান (মুন্সিগঞ্জ)
প্রকাশ : ০৯ এপ্রিল ২০২২, ১১: ০৪

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে মালচিং পেপার পদ্ধতিতে সবজি চাষে দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষকেরা। অধিক লাভজনক হওয়ায় এ পদ্ধতি বেছে নিচ্ছেন অনেক কৃষক।

গতকাল শুক্রবার উপজেলার জৈনসার ইউনিয়নের চম্পকদী গ্রামে দেখা যায়, মালচিং পেপার পদ্ধতিতে টমেটো, বেগুন ও ক্যাপসিকাম চাষ করা হয়েছে। এ ছাড়া মধ্যপাড়া, ইছাপুরা, বালুচর ইউনিয়নেও বেড়েছে মালচিং পেপার পদ্ধতিতে সবজি চাষ। বিভিন্ন ধরনের সুবিধা পাওয়ায় এবং উৎপাদন ভালো হওয়ায় কৃষকেরা দিন দিন মালচিং পেপার পদ্ধতির দিকে ঝুঁকছেন।

জানা যায়, জমির মাঝখানে দুই পাশ থেকে কেটে দেড় ফুট চওড়া করে ও ৮-১২ ইঞ্চি পরিমাণ উঁচু করে মাটির সঙ্গে সার মিশিয়ে বেড তৈরি করা হয়। তৈরি বেডগুলো মালচিং পেপার দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। প্লাস্টিকের মালচিং পেপারের কালো রঙের দিকটা থাকে নিচের দিকে আর রুপালি রঙের দিকটা থাকে ওপরের দিকে অর্থাৎ সূর্যের দিকে। এ পদ্ধতি সূর্যের আলো ও তাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে মাটিকে রাখে ফসলের উপযোগী। পরে মালচিং পেপারের দুই পাশে নির্দিষ্ট দূরত্বে গোল গোল করে কেটে নেওয়া হয়। আর এরপর কেটে নেওয়া জায়গায় রোপণ করা হয় বীজ বা চারা। এরপর তিন ফুট উঁচুতে বাঁশ ও সুতা দিয়ে তৈরি করা হয় মাচা।

পদ্ধতিটি তৈরিতে শুরুতে একসঙ্গে কিছুটা খরচ বেশি হলেও পরবর্তীকালে খরচ খুবই কমে যায়। এ ছাড়া এই পদ্ধতিতে আগাছা হয় না বলে তা পরিষ্কারের কোনো ঝামেলা নেই। দফায় দফায় সার দেওয়ারও ঝামেলাও নেই। আর গাছ দীর্ঘজীবী হওয়ায় উৎপাদন হয় দীর্ঘসময় ধরে। ফলে অতিরিক্ত উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করে আশানুরূপ লাভ পাচ্ছেন কৃষক। মালচিং পেপার পদ্ধতি গ্রহণ করে খুশি উপজেলার কৃষকেরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মধ্যপাড়া, ইছাপুরা, জৈনসার, বালুচর ইউনিয়নে মালচিং পেপার পদ্ধতিতে এক থেকে দেড় হেক্টর জমিতে সবজি চাষ করা হয়েছে।

চম্পকদী গ্রামের কৃষক রমজান শেখ বলেন, ‘আমি এক একর জমিতে টমেটো ও ক্যাপসিকাম চাষ করেছি। ফলন খুব সুন্দর হয়েছে। মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষ দেখতে অনেকেই আমার জমিতে আসেন। এ পদ্ধতিতে প্রথম দিকে একটু বেশি খরচ হলেও, পরে আর তেমন খরচ নেই।’ 
কুসুমপুর গ্রামের কৃষক প্রণব বলেন, ‘আমি এই প্রথম মালচিং পদ্ধতিতে ৭০ শতাংশ জমিতে টমেটো চাষ করেছি। এই পদ্ধতিতে আমার খরচ কম হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। প্রথমে মনে করছিলাম এ পদ্ধতিতে চাষ করলে অনেক টাকা খরচ হয়। পরে দেখলাম এই পদ্ধতিতেই খরচ কম হয়। বেশি লাভবান হওয়া যায়।’

আরেক স্থানীয় কৃষক এ বিষয়ে জানান, এ পদ্ধতিতে সব মিলিয়ে খরচ খুব কম হয়। আগাছা কম হওয়ায়, তাতে শ্রম ও খরচ বাঁচে। সার কম দেওয়া লাগে। কিন্তু ফলন হয় সাধারণ চাষের চেয়ে বেশি। মালচিং একটি আধুনিক ও সময়োপযোগী চাষ পদ্ধতি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রোজিনা আক্তার এ বিষয়ে বলেন, ‘মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষ সিরাজদিখানে নতুন। এই পদ্ধতি ব্যবহার করলে সার পানি কম লাগে, ফসল ভালো পাওয়া যায়। আমরা এ পদ্ধতিটি কৃষকের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য কাজ করছি।’ 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত