শিক্ষা বোর্ডের ৭ কোটি টাকা আত্মসাতে আলোড়ন

যশোর প্রতিনিধি
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২১, ১০: ৫৭
Thumbnail image

যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে চেক জালিয়াতির মাধ্যমে প্রায় সাত কোটি টাকা আত্মসাৎ ছিল চলতি বছরের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা।

তদন্তে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার দায়ে বোর্ড চেয়ারম্যান ও সচিবকে অপসারণও করা হয় বোর্ড থেকে।

চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বাদী হয়ে মামলা করেছে। তবে ঘটনার প্রায় দুই মাস অতিবাহিত হতে চললেও জড়িত কেউ গ্রেপ্তার হননি এখনো।

বিভিন্ন সূত্র ও তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, যশোর শিক্ষা বোর্ডে ২০১৭ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত একটি চক্র অপতৎপরতা চালায়। বোর্ডের অপসারিত চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোল্লা আমির হোসেন সচিব থাকাকালেই শুরু হয় জালিয়াতির ঘটনা।

এ সময়ে বোর্ডের অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত অসাধু চক্রের মাধ্যমে সব মিলে মোট ৩৮টি চেকের মাধ্যমে প্রায় সাত কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়।

এর আগে টাকা আত্মসাতের ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর গত ১৮ অক্টোবর দুদকের সমন্বিত যশোর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাহফুজ ইকবাল বাদী হয়ে মামলা করেন। একই সঙ্গে চলতে থাকে দুদক ও শিক্ষা বোর্ড গঠিত তদন্ত কমিটির অনুসন্ধান। সেখানে যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মোল্লা আমির হোসেন ও সচিব আলী আর রেজার সম্পৃক্ততা পাওয়ায় ২২ নভেম্বর তাঁদের ওএসডি করে প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে তাঁদের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক অধিদপ্তরে সংযুক্তির আদেশ দেওয়া হয়।

জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে সরকারি কোষাগারে জমার জন্য আয়কর ও ভ্যাট বাবদ ১০ হাজার ৩৬ টাকার নয়টি চেক ইস্যু করে বোর্ড কর্তৃপক্ষ। যার বিপরীতে বিভিন্ন সময়ে নয়টি চেক দিয়ে ২ কোটি ৫০ লাখ ৪৪ হাজার ১০ টাকা উত্তোলন করেন ভেনাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং এবং শাহী লাল স্টোর নামে দুটি প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা।

২০২১ সালের ৭ অক্টোবর এ ঘটনা প্রকাশ পাওয়ার পর বোর্ডের হিসাব ও অডিট বিভাগ তাঁদের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা অব্যাহত রাখেন। যার ফলে গত ১৮ অক্টোবর পাঁচটি চেকে ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৭৬৪ টাকার পরিবর্তে ২১ লাখ ৯৮ হাজার ৯২৯ টাকা উত্তোলনের তথ্য মেলে। এর পর গত ২১ অক্টোবর ১১টি চেকের বিপরীতে ১০ লাখ ১৫ হাজার ২৬৬ টাকার পরিবর্তে ২ কোটি ২১ লাখ ৮ হাজার ৯৪৯ টাকা উত্তোলনের তথ্য পাওয়া যায়। পরে বিষয়টি হিসাব শাখা থেকে বোর্ডের সচিবকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়। ওই দিনই বোর্ডের সচিব দুদকের যশোর কার্যালয়ে নতুন করে ২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ দাখিল করেন।

যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র বলেন, ‘বোর্ড কর্তৃপক্ষ টাকা আত্মসাতের ঘটনাটি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে এবং তদন্ত করেছে। আমার জানামতে তদন্তের প্রতিবেদনও দুদককে দেওয়া হয়েছে। এখন দুদক এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।’

দুর্নীতি দমন কমিশন যশোর কার্যালয়ের সদ্য বিদায়ী উপপরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত বলেন, ‘দুদকের তদন্ত কমিটি এখনো পর্যন্ত ৩৮টি চেকের মাধ্যমে সাত কোটি টাকা আত্মসাতের তথ্য পেয়েছে। এখনো তদন্ত কার্যক্রম চলছে, যা শেষ হলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত