Ajker Patrika

অযত্নে পরিত্যক্ত মুলাদীর একমাত্র স্টেডিয়াম

মুলাদী প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২১, ১১: ৫৬
অযত্নে পরিত্যক্ত মুলাদীর একমাত্র স্টেডিয়াম

অযত্ন অবহেলায় পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে মুলাদী উপজেলার একমাত্র স্টেডিয়ামটি। বছরের বেশির ভাগ সময় পানি জমে থাকায় কোনো খেলাধুলা হয় না এখানে। যেখানে স্টেডিয়ামটি খেলার মৌসুমে খেলোয়াড়-দর্ষকদের কথা-চিৎকারে মুখরিত থাকার কথা, সেখানে জরাজীর্ণ অবস্থায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তদারকি না থাকায় স্টেডিয়ামের জমি বেদখল হওয়ার আশঙ্কা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

জানা গেছে, উপজেলা সদরে থানার পূর্ব দিকে মুলাদী সরকারি মাহমুদজান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রায় পৌনে ২ একর জমি রয়েছে। জমিটি বিদ্যালয় থেকে ৫০০ মিটার দূরত্বে অবস্থিত। বিদ্যালয়ের সব সময় কাজে না লাগায় ১৯৮০ সালের দিকে তৎকালীন সাংসদ ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী সিরাজুল হক মন্টু সেখানে স্টেডিয়াম নির্মাণ করেন। এরপর থেকে এটি বিদ্যালয়ের মাঠের বদলে স্টেডিয়াম মাঠ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। থানার পাশে হওয়ায় কেউ কেউ এটাকে থানার মাঠও বলে থাকেন।

স্টেডিয়াম হওয়ার পর থেকে মুলাদী মাহমুদজান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, উপজেলার আন্ত ইউনিয়ন প্রতিযোগিতা, শীতকালীন খেলাধুলা এখানেই অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু ১৯৯৪ সালের পর থেকে বড় কোনো আয়োজন হয়নি এখানে। বিগত এক যুগ ধরে কোনো ক্রীড়া অনুষ্ঠান হয়নি স্টেডিয়ামটিতে। ফলে মাঠ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি গ্যালারিটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে এবং ভেঙে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

মুলাদী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আলী আকবর মুন্সী জানান, আশির দশকে স্টেডিয়াম নির্মাণের পর উপজেলার বিভিন্ন খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা এখানেই অনুষ্ঠিত হতো। দর্শকদের বসার সুব্যবস্থা থাকায় জমির মালিক মুলাদী মাহমুদজান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠান হতো স্টেডিয়ামে। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে এখানে খেলাধুলা হচ্ছে না। সংস্কার না করায় মাঠের গ্যালারিটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে। তিন দিক দিয়ে রাস্তা হয়ে মাঠটি ছোট হয়েছে। স্টেডিয়ামের জমি বেদখল হওয়ার আশঙ্কা।

মুলাদী গ্রামের আল মামুন আলমাছ বলেন, স্টেডিয়ামটি অনেক বড় এবং খেলাধুলার উপযুক্ত স্থান। ১৯৯৪ সালে তৎকালীন সাংসদ মোশাররফ হোসেন মঙ্গু ফুটবলসহ কয়েকটি ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলেন। এরপর আর বড় কোনো ক্রীড়া অনুষ্ঠান এখানে অনুষ্ঠিত হয়নি। মাঠটি সংস্কার না হওয়ায় পরিত্যক্ত হয়ে যাচ্ছে। গ্যালারিটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে।

উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য দিদারুল আহসান খান জানান, উপজেলার সব খেলাধুলা মুলাদী সরকারি কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। কলেজ খোলা থাকলে অনেক সময় সমস্যা দেখা দেয়। খেলাধুলার মান উন্নয়নের জন্য স্টেডিয়ামের গ্যালারি সংস্কার ও মাঠটি সমতল করা প্রয়োজন। স্টেডিয়ামটি খেলাধুলার উপযোগী করার জন্য উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অনুরোধ করা হয়েছে।

মুলাদী সরকারি মাহমুদজান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নাসির উদ্দীন হাওলাদার বলেন, ‘জমির মালিক বিদ্যালয় হলেও মাঠটি দূরে হওয়ায় তেমন কাজে আসে না। বিদ্যালয়ের সামনে মাঠ বড় হওয়ার পরে নিরাপত্তার স্বার্থে বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠান স্টেডিয়ামে করা হচ্ছে না। সরকারিভাবে স্টেডিয়ামটি সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিদ্যালয় থেকে অনাপত্তি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেন সংস্কার হচ্ছে না আমার জানা নাই।’

উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ হোসাইনী বলেন, ‘স্টেডিয়ামটি সংস্কার ও গ্যালারি পুনর্নির্মাণের সরকারি উদ্যোগের বিষয়টি আমার জানা নাই। তবে ক্রীড়াবিদদের স্বার্থে এবং খেলাধুলার মান উন্নয়নের জন্য খোঁজ নিয়ে স্টেডিয়ামটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র-এর ওপর নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ মার্কিন ফেডারেল সংস্থার

ভারত নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে রিকশাচালকের সঙ্গে তর্ক, বাংলাদেশিকে ফেরত

আকরামদের প্রথম খবর দেওয়া হয়েছিল, তামিম আর নেই

‘মদের বোতল’ হাতে বৈষম্যবিরোধী নেতা-নেত্রীর ভিডিও, সদস্যপদ স্থগিত

চীনের আগে ভারত সফরে যেতে চেয়েছিলেন ড. ইউনূস: দ্য হিন্দুকে প্রেস সচিব

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত