Ajker Patrika

বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি

ইয়াহ্ইয়া মারুফ, সিলেট
আপডেট : ২২ জুন ২০২২, ১৪: ০৮
বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি

সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে এখনো সুরমা ও কুশিয়ারার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে পানিবন্দী মানুষকে উদ্ধারে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

জানা গেছে, প্রথম দিকে কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছিল ধীর গতিতে। কিন্তু গত রোববার থেকে অস্বাভাবিক গতিতে পানি বাড়া শুরু হয়। গত সোমবার কুশিয়ারা তীরবর্তী উপজেলাগুলোর বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। এক মাস আগে বন্যার সময় যেসব স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছিল, তার পাশাপাশি নতুন নতুন স্থানে ভাঙন শুরু হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে ডাইকের ওপর দিয়ে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে। ফলে কুশিয়ারা তীরবর্তী উপজেলাগুলোতে লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এসব উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, গত সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার ৩৯টি স্থান দিয়ে পানি প্রবেশ করছিল। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভাঙন দেখা দিয়েছে সুলতানপুর ইউনিয়নের ভক্তিপুর, সদর ইউনিয়নের রারাই, বীরশ্রীর সুপ্রাকান্দি, কাজলসারের বড়বন্দ এলাকায়। বর্তমানে উপজেলার লাখো মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন। ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা সদরসহ ৬০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

জেলা সদরের সঙ্গে এখনো বিয়ানীবাজার উপজেলার সড়ক যোগাযোগ ঠিকে থাকলেও যে কোনো সময় তা বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার চারখাই, আলীনগর, শেওলা, দুবাগ, কুড়ারবাজার ও থানাবাজারসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।

এদিকে, সুরমা তীরবর্তী সিলেট নগরী, সদর, বিশ্বনাথ, কানাইঘাট ও সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, মধ্যনগর, ধর্মপাশা ও জামালগঞ্জ উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির দিন দিন উন্নতি হয়েছে। সিলেট নগরীর উঁচু এলাকা থেকে পানি নেমে গেছে। নদী তীরবর্তী এলাকায় এখনো লাখো মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন। বাকি উপজেলাগুলোতেও লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন। ধলাই, পিয়াইন, সারি ও লোভা নদীর পানি কমায় জেলার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার বন্যা কবলিত এলাকার পানি কমেছে। তবে পানি কমার গতি খুবই ধীর বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মঙ্গলবার সকাল ১০টার সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টে বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার সেখানে পানি ১১ দশমিক ২১ সেন্টিমিটার, কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার সেখানে পানি ১৩ দশমিক ৮৪ সেন্টিমিটার, সুনামগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমা ৭ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার সেখানে পানি ৮ দশমিক ০৭ সেন্টিমিটার পানি রয়েছে। কমছে কুশিয়ারা নদীর পানিও। কুশিয়ারার অমলসীদ পয়েন্টে বিপৎসীমা ১৫ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার সেখানে পানি ১৭ দশমিক ২৪ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার সেখানে পানি ১০ দশমিক ৫৩ সেন্টিমিটার, শেওলা পয়েন্টের পয়েন্টের বিপৎসীমা ১৩ দশমিক ০৫ সেন্টিমিটার সেখানে পানি ১৩ দশমিক ৬৮ সেন্টিমিটার, শেরপুর পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচে। সিলেট-সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হচ্ছে। একই অবস্থা সিলেট নগরীরও। তবে কিছু জায়গা থেকে পানি দু-এক হাত নেমে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টা পর্যন্ত সুরমা নদীর সব পয়েন্টে ও কুশিয়ারার তিনটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট বিভাগীয় অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এস এম শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সিলেট-সুনামগঞ্জ দুই জেলাতেই পানি কমতে শুরু করেছে। কুশিয়ারার পানি গত দুদিন বাড়লেও আজ থেকে সেটাও কমতে শুরু করেছে। তবে এখনো সুরমা নদীর সব পয়েন্ট ও কুশিয়ারার তিনটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চার মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের সেবা ডিজিটাইজ করার নির্দেশ দিল সরকার

গত দশ বছর ভিসা না পাওয়ার কারণে বাংলাদেশে আসতে পারিনি: মাইলাম

মাগুরার শিশুটি এখনো অচেতন, চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান

ঈদে পুলিশের সহযোগী ফোর্স হবে বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী, পাবে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা

তিন নারী আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ: তারেক রহমান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত