রাহুল শর্মা, ঢাকা
সিরাজগঞ্জের সরকারি কলেজের এক শিক্ষক ২০১২ সালে প্রভাষক হিসেবে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে যোগ দেন। চাকরিজীবনের ১১ বছরের বেশি সময় পার হলেও তিনি এখনো পদোন্নতি পাননি। এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, তিনি যে বিষয়ের শিক্ষক সে বিষয়ে পদোন্নতি দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত পদ খালি নেই।
৩০তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে যোগ দেওয়া আরবি বিষয়ের এক শিক্ষক বলেন, ‘চাকরিজীবনের প্রায় ১২ বছরেও একটিও পদোন্নতি পাইনি। অথচ ৩৪ ব্যাচের অন্য বিষয়ের সহকর্মীরা সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। বিষয়টি বিব্রতকর ও লজ্জারও।’
শুধু শিক্ষা ক্যাডার নয়, সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাও সময়মতো পদোন্নতি পাচ্ছেন না। এ ছাড়া সিলেকশন গ্রেড জটিলতা নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে শিক্ষকদের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের প্রায় ১০ হাজার কর্মকর্তা সহকারী, সহযোগী ও অধ্যাপক পদে পদোন্নতির যোগ্যতা অর্জন করেছেন। তা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা একই পদে চাকরি করছেন। এর বাইরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৩০ হাজার সহকারী শিক্ষকের পদোন্নতি আটকে আছে মামলাসংক্রান্ত জটিলতায়। সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও প্রায় ১ হাজার ৮০০ শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতির অপেক্ষায় আছেন। সব মিলিয়ে প্রায় ৪২ হাজার শিক্ষক পদোন্নতি বঞ্চনায় আছেন।
জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ৮ মার্চ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শিক্ষা ক্যাডারে কিছুদিন আগে সাত শ জনের বেশি শিক্ষকের পদোন্নতি হয়েছে। আর মাধ্যমিক পর্যায়ে শিগগির পদোন্নতি হবে। সেখানে আমাদের জনবলের অনেক ঘাটতি আছে।’
লাল ফিতায় আটকে ১২ হাজার পদ সৃষ্টি
জানা যায়, নিয়মিত পদোন্নতি না হওয়া এবং প্রত্যাশা অনুযায়ী নতুন পদ সৃষ্টি না হওয়ার কারণেই শিক্ষা ক্যাডারে নিয়মিত পদোন্নতি হচ্ছে না। ২০১৪ সালে নতুন করে সাড়ে ১২ হাজার শিক্ষকের পদ সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে সেই উদ্যোগ।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা। পদোন্নতিবঞ্চিত অন্তত ২০ জন শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের মধ্যে চাপা ক্ষোভের বিষয়টি জানা গেছে। শিক্ষা ক্যাডারের এই কর্মকর্তারা বলেন, প্রশাসন, পুলিশ, পররাষ্ট্রসহ কয়েকটি ক্যাডার বাদে অন্যান্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সময়মতো পদোন্নতি হয় না। অথচ জনপ্রশাসনসহ আরও কয়েকটি ক্ষেত্রে পদের বাইরেও পদোন্নতি দেওয়া হয়। কিছুদিন আগে প্রশাসন ক্যাডারের পদ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। আগে প্রশাসনে ক্যাডারে পদ ছিল ৩ হাজার ৯৭ টি, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৭৬ টি।
শিক্ষা ক্যাডারে আগে প্রতিবছর কলেজভিত্তিক কিছু পদ সৃজন করত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কিন্তু কয়েক বছর ধরে এ প্রক্রিয়াটি বন্ধ। এতে দিন দিন বাড়ছে পদোন্নতিজট। ফলে শিক্ষকদের মধ্যে হতাশার পাশাপাশি চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
কয়েক মাস আগে পদ সৃজনের তথ্য পাঠাতে সব সরকারি কলেজকে চিঠি দিয়েছিল মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। কলেজগুলোও প্রয়োজনীয় তথ্য পাঠায়। কিন্তু হঠাৎ করেই সে প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়।
মাউশি সূত্রে জানা যায়, শিক্ষা ক্যাডারে ১২ হাজার ৫১৯ পদ সৃষ্টির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালে। ২০১৫ সালে ২৩টি কর্ম-এলাকায় ২৩ জন কর্মকর্তা নিয়োগের মাধ্যমে একটি সমীক্ষা কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালে অধ্যাপক ১ হাজার ৩৭৭, সহযোগী অধ্যাপক ৩ হাজার ৩৪৮, সহকারী অধ্যাপক ৪ হাজার ৩২৬ এবং প্রভাষকের ৩ হাজার ৪৬৮টি পদ সৃষ্টি করার প্রস্তাব পাঠানো হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে।
কর্মকর্তার সংখ্যার দিক দিয়ে সবচেয়ে বড় দুটি ক্যাডারের একটি হলো শিক্ষা। বর্তমানে এই ক্যাডারে মোট পদ আছে ১৬ হাজার ১৩২টি। এর মধ্যে কর্মরত আছেন ১৩ হাজারের কিছু বেশি কর্মকর্তা।
জানতে চাইলে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির মহাসচিব শওকত হোসেন মোল্যা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পদোন্নতিবঞ্চিত শিক্ষা ক্যাডার সদস্যদের পদোন্নতি দেওয়া হলেও সরকারের বাড়তি কোনো অর্থের প্রয়োজন হবে না। কারণ, তাঁরা পদোন্নতিযোগ্য পদের বেতন গ্রেডের সমান আর্থিক সুবিধা পাচ্ছেন। তাই পদোন্নতিযোগ্য সব কর্মকর্তার দ্রুত পদোন্নতি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, একই সঙ্গে পদসোপানের ওপরের স্তরে অর্থাৎ অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক স্তরে প্রয়োজনীয় নতুন পদ সৃজনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
মামলায় আটকে প্রাথমিকের পদোন্নতি
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতিযোগ্য শূন্য পদ আছে প্রায় ৩০ হাজার। ১৪ বছর পর গত আগস্টে শুরু হয়েছিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি কার্যক্রম। কিন্তু মাত্র ছয় মাসের মাথায় মামলাসংক্রান্ত জটিলতায় তা আটকে গেছে। এতে পদোন্নতিবঞ্চিত হচ্ছেন প্রায় ৩০ হাজার সহকারী শিক্ষক।
পদোন্নতি বন্ধ থাকায় অন্তত ১০ জন শিক্ষক ক্ষুব্ধ প্রক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তাঁদের ভাষ্য, পদোন্নতি না হওয়ায় তাঁরা সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হচ্ছেন। একই সঙ্গে স্বাভাবিক পাঠদান প্রক্রিয়াও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত আজকের পত্রিকাকে বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশে সহকারী শিক্ষকদের প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
দীর্ঘদিন মাধ্যমিকেও পদোন্নতি হয় না
জানা যায়, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ১ হাজার ৮০০ জন শিক্ষক বিভিন্ন পদে পদোন্নতির অপেক্ষায় রয়েছেন। এর মধ্যে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে ৫৩৩টি, সিনিয়র শিক্ষক পদে ১ হাজার ২০০ টি, সহকারী পরিচালক পদে ২টি, বিদ্যালয় পরিদর্শক/পরিদর্শিকা পদে ১৮টি ও উপপরিচালক পদে ১০টি পদ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এসব পদে পদোন্নতি বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের টাইম স্কেল না পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। প্রায় ৬ হাজার শিক্ষক ১৯ বছর ধরে টাইম স্কেল পাচ্ছেন না।
মাউশি সূত্র জানায়, মামলাসংক্রান্ত জটিলতা, পদের নাম পরিবর্তনসহ নানা জটিলতায় মাধ্যমিকের বেশ কিছু পদে পদোন্নতি আটকে আছে।
নানা সমস্যায় শিক্ষকেরা হতাশ বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহাব উদ্দীন মাহমুদ সালমী। তিনি বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের মূল কারিগর শিক্ষকদের চাওয়া-পাওয়ার বিষয়গুলোর প্রতি নজর দিতে হবে। শিক্ষকগণের প্রাপ্য বকেয়া সিলেকশন গ্রেড সমস্যার সমাধান, পদোন্নতি, বিধিমালা সংশোধন এবং এন্ট্রিপদ নবম গ্রেড ধরে পদসোপান সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। না হলে মেধাবীরা এ পেশায় আসবেন না। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে পুরো জাতি।
জানতে চাইলে মাউশির পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক সৈয়দ জাফর আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি কিছুদিন আগে যোগদান করেছি। মাধ্যমিকে পদোন্নতিসহ যেসব সমস্যা আছে, তা চিহ্নিত করে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করব।’
সিরাজগঞ্জের সরকারি কলেজের এক শিক্ষক ২০১২ সালে প্রভাষক হিসেবে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে যোগ দেন। চাকরিজীবনের ১১ বছরের বেশি সময় পার হলেও তিনি এখনো পদোন্নতি পাননি। এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, তিনি যে বিষয়ের শিক্ষক সে বিষয়ে পদোন্নতি দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত পদ খালি নেই।
৩০তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে যোগ দেওয়া আরবি বিষয়ের এক শিক্ষক বলেন, ‘চাকরিজীবনের প্রায় ১২ বছরেও একটিও পদোন্নতি পাইনি। অথচ ৩৪ ব্যাচের অন্য বিষয়ের সহকর্মীরা সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। বিষয়টি বিব্রতকর ও লজ্জারও।’
শুধু শিক্ষা ক্যাডার নয়, সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাও সময়মতো পদোন্নতি পাচ্ছেন না। এ ছাড়া সিলেকশন গ্রেড জটিলতা নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে শিক্ষকদের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের প্রায় ১০ হাজার কর্মকর্তা সহকারী, সহযোগী ও অধ্যাপক পদে পদোন্নতির যোগ্যতা অর্জন করেছেন। তা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা একই পদে চাকরি করছেন। এর বাইরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৩০ হাজার সহকারী শিক্ষকের পদোন্নতি আটকে আছে মামলাসংক্রান্ত জটিলতায়। সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও প্রায় ১ হাজার ৮০০ শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতির অপেক্ষায় আছেন। সব মিলিয়ে প্রায় ৪২ হাজার শিক্ষক পদোন্নতি বঞ্চনায় আছেন।
জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ৮ মার্চ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শিক্ষা ক্যাডারে কিছুদিন আগে সাত শ জনের বেশি শিক্ষকের পদোন্নতি হয়েছে। আর মাধ্যমিক পর্যায়ে শিগগির পদোন্নতি হবে। সেখানে আমাদের জনবলের অনেক ঘাটতি আছে।’
লাল ফিতায় আটকে ১২ হাজার পদ সৃষ্টি
জানা যায়, নিয়মিত পদোন্নতি না হওয়া এবং প্রত্যাশা অনুযায়ী নতুন পদ সৃষ্টি না হওয়ার কারণেই শিক্ষা ক্যাডারে নিয়মিত পদোন্নতি হচ্ছে না। ২০১৪ সালে নতুন করে সাড়ে ১২ হাজার শিক্ষকের পদ সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে সেই উদ্যোগ।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা। পদোন্নতিবঞ্চিত অন্তত ২০ জন শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের মধ্যে চাপা ক্ষোভের বিষয়টি জানা গেছে। শিক্ষা ক্যাডারের এই কর্মকর্তারা বলেন, প্রশাসন, পুলিশ, পররাষ্ট্রসহ কয়েকটি ক্যাডার বাদে অন্যান্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সময়মতো পদোন্নতি হয় না। অথচ জনপ্রশাসনসহ আরও কয়েকটি ক্ষেত্রে পদের বাইরেও পদোন্নতি দেওয়া হয়। কিছুদিন আগে প্রশাসন ক্যাডারের পদ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। আগে প্রশাসনে ক্যাডারে পদ ছিল ৩ হাজার ৯৭ টি, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৭৬ টি।
শিক্ষা ক্যাডারে আগে প্রতিবছর কলেজভিত্তিক কিছু পদ সৃজন করত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কিন্তু কয়েক বছর ধরে এ প্রক্রিয়াটি বন্ধ। এতে দিন দিন বাড়ছে পদোন্নতিজট। ফলে শিক্ষকদের মধ্যে হতাশার পাশাপাশি চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
কয়েক মাস আগে পদ সৃজনের তথ্য পাঠাতে সব সরকারি কলেজকে চিঠি দিয়েছিল মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। কলেজগুলোও প্রয়োজনীয় তথ্য পাঠায়। কিন্তু হঠাৎ করেই সে প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়।
মাউশি সূত্রে জানা যায়, শিক্ষা ক্যাডারে ১২ হাজার ৫১৯ পদ সৃষ্টির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালে। ২০১৫ সালে ২৩টি কর্ম-এলাকায় ২৩ জন কর্মকর্তা নিয়োগের মাধ্যমে একটি সমীক্ষা কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালে অধ্যাপক ১ হাজার ৩৭৭, সহযোগী অধ্যাপক ৩ হাজার ৩৪৮, সহকারী অধ্যাপক ৪ হাজার ৩২৬ এবং প্রভাষকের ৩ হাজার ৪৬৮টি পদ সৃষ্টি করার প্রস্তাব পাঠানো হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে।
কর্মকর্তার সংখ্যার দিক দিয়ে সবচেয়ে বড় দুটি ক্যাডারের একটি হলো শিক্ষা। বর্তমানে এই ক্যাডারে মোট পদ আছে ১৬ হাজার ১৩২টি। এর মধ্যে কর্মরত আছেন ১৩ হাজারের কিছু বেশি কর্মকর্তা।
জানতে চাইলে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির মহাসচিব শওকত হোসেন মোল্যা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পদোন্নতিবঞ্চিত শিক্ষা ক্যাডার সদস্যদের পদোন্নতি দেওয়া হলেও সরকারের বাড়তি কোনো অর্থের প্রয়োজন হবে না। কারণ, তাঁরা পদোন্নতিযোগ্য পদের বেতন গ্রেডের সমান আর্থিক সুবিধা পাচ্ছেন। তাই পদোন্নতিযোগ্য সব কর্মকর্তার দ্রুত পদোন্নতি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, একই সঙ্গে পদসোপানের ওপরের স্তরে অর্থাৎ অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক স্তরে প্রয়োজনীয় নতুন পদ সৃজনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
মামলায় আটকে প্রাথমিকের পদোন্নতি
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতিযোগ্য শূন্য পদ আছে প্রায় ৩০ হাজার। ১৪ বছর পর গত আগস্টে শুরু হয়েছিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি কার্যক্রম। কিন্তু মাত্র ছয় মাসের মাথায় মামলাসংক্রান্ত জটিলতায় তা আটকে গেছে। এতে পদোন্নতিবঞ্চিত হচ্ছেন প্রায় ৩০ হাজার সহকারী শিক্ষক।
পদোন্নতি বন্ধ থাকায় অন্তত ১০ জন শিক্ষক ক্ষুব্ধ প্রক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তাঁদের ভাষ্য, পদোন্নতি না হওয়ায় তাঁরা সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হচ্ছেন। একই সঙ্গে স্বাভাবিক পাঠদান প্রক্রিয়াও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত আজকের পত্রিকাকে বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশে সহকারী শিক্ষকদের প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
দীর্ঘদিন মাধ্যমিকেও পদোন্নতি হয় না
জানা যায়, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ১ হাজার ৮০০ জন শিক্ষক বিভিন্ন পদে পদোন্নতির অপেক্ষায় রয়েছেন। এর মধ্যে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে ৫৩৩টি, সিনিয়র শিক্ষক পদে ১ হাজার ২০০ টি, সহকারী পরিচালক পদে ২টি, বিদ্যালয় পরিদর্শক/পরিদর্শিকা পদে ১৮টি ও উপপরিচালক পদে ১০টি পদ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এসব পদে পদোন্নতি বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের টাইম স্কেল না পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। প্রায় ৬ হাজার শিক্ষক ১৯ বছর ধরে টাইম স্কেল পাচ্ছেন না।
মাউশি সূত্র জানায়, মামলাসংক্রান্ত জটিলতা, পদের নাম পরিবর্তনসহ নানা জটিলতায় মাধ্যমিকের বেশ কিছু পদে পদোন্নতি আটকে আছে।
নানা সমস্যায় শিক্ষকেরা হতাশ বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহাব উদ্দীন মাহমুদ সালমী। তিনি বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের মূল কারিগর শিক্ষকদের চাওয়া-পাওয়ার বিষয়গুলোর প্রতি নজর দিতে হবে। শিক্ষকগণের প্রাপ্য বকেয়া সিলেকশন গ্রেড সমস্যার সমাধান, পদোন্নতি, বিধিমালা সংশোধন এবং এন্ট্রিপদ নবম গ্রেড ধরে পদসোপান সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। না হলে মেধাবীরা এ পেশায় আসবেন না। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে পুরো জাতি।
জানতে চাইলে মাউশির পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক সৈয়দ জাফর আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি কিছুদিন আগে যোগদান করেছি। মাধ্যমিকে পদোন্নতিসহ যেসব সমস্যা আছে, তা চিহ্নিত করে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করব।’
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
২ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
২ দিন আগে