এস কে সিনহার মামলার রায় ৫ অক্টোবর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৮: ৫৪
আপডেট : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯: ৫৭

ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) ঋণের টাকা আত্মসাতের মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায় আগামী ৫ অক্টোবর ঘোষণা করা হবে। গতকাল রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এই দিন ধার্য করেন।

আসামিদের পক্ষে যুক্তিতর্ক শুনানি করেন আইনজীবী বোরহান উদ্দিন, শাহীনুর ইসলাম অনিসহ কয়েকজন। তাঁরা বিচারের মুখোমুখি হওয়া সাত আসামির খালাস চান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে দুদকের আইনজীবী মীর আহমেদ আলী সালাম আসামিদের সর্বোচ্চ সাজার আবেদন করেন। দণ্ডবিধি, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের যেসব ধারায় এ মামলার অভিযোগ গঠন করা হয়েছে, এতে অপরাধ প্রমাণিত হলে তাদের সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন শাস্তি হতে পারে। মৃত্যুদণ্ডের কোনো ধারা না থাকায় এস কে সিনহাসহ পলাতক আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবীকে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

যাদের নিয়ে শুনানি হয়েছে সেই সাত আসামি হলেন ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেডের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশতী (বাবুল চিশতী), ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক এমডি এ কে এম শামীম, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুৎফুল হক, সাবেক এসইভিপি গাজী সালাহউদ্দিন, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মো. শাহজাহান ও একই এলাকার বাসিন্দা নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা।

সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা, ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারী, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা রণজিৎ চন্দ্র সাহা ও তাঁর স্ত্রী সান্ত্রী রায়কে পলাতক দেখিয়ে এ মামলার বিচারকাজ চলছে।

এর আগে গত ২৯ আগস্ট আদালতে উপস্থিত আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। একই সঙ্গে তাঁরা লিখিতভাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে চান। পরে ৬ সেপ্টেম্বরও উপস্থিত আসামিরা লিখিতভাবে নির্দোষ দাবি করেছেন। এরপর আদালত যুক্তিতর্ক শুনানির দিন ধার্য করেন।

২০১৯ সালের ৯ ডিসেম্বর এস কে সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। এর আগে ১০ জুলাই সাবেক প্রধান বিচারপতিসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন। মামলায় বলা হয়, আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে চার কোটি টাকা ভুয়া ঋণ নিয়ে একই দিনে পে-অর্ডারের মাধ্যমে ব্যক্তিগত হিসাবে স্থানান্তর করেন। পরে ওই টাকা ব্যক্তিগত হিসাব থেকে অস্বাভাবিকভাবে নগদে এবং চেক ও পে-অর্ডারের মাধ্যমে অন্য হিসাবে হস্তান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন। পাশাপাশি ওই টাকার উৎস ও অবস্থান গোপনের মাধ্যমে পাচারের চেষ্টায় সম্পৃক্ত ছিলেন তাঁরা।

চার্জশিটে বলা হয়, জনৈক মো. শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখায় আলাদা দুটি চলতি হিসাব খোলেন। এর পরদিনই তাঁরা দুই কোটি করে চার কোটি টাকা ঋণের আবেদন করেন। ব্যাংকে হিসাব খোলা এবং ঋণ আবেদনপত্রে দুজনই তাঁদের ঠিকানা বাড়ি নম্বর ৫১, সড়ক নম্বর ১২, সেক্টর ১০, উত্তরা আবাসিক এলাকা উল্লেখ করেন। দুদক অনুসন্ধান করে জানতে পারে বাড়িটি বিচারপতি এস কে সিনহার ব্যক্তিগত বাড়ি।

চার্জশিটে আরও বলা হয়, ঋণসংক্রান্ত আবেদন দুটি কোনো রকম যাচাই-বাছাই, রেকর্ডপত্র বিশ্লেষণ এবং ব্যাংকের কোনো নিয়মনীতি না মেনেই শুধু গ্রাহকের আবেদনের ওপর ব্যাংকের কর্মকর্তারা ঋণ প্রস্তাব তৈরি করে তা অনুমোদন দেন। এরপর দ্রুত পে-অর্ডার ইস্যু করেন। ওই টাকা বিচারপতি এস কে সিনহার ব্যাংক হিসাবে জমা হয় ও তিনি ওই টাকা তুলে নেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত