বাঁশির কোনো কাজ নেই অন্য পেশায় বাঁশিওয়ালা

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
Thumbnail image

বাঁশির সুর মানেই ছিল অন্যরকম এক অনুভূতি। গ্রামবাংলায় বিনোদনের অন্যতম মাধ্যমও ছিল এই বাঁশি। যারা বাঁশি বাজাতে পারত, তাদের কদর ছিল বেশ; কিন্তু প্রযুক্তির ছোঁয়ায় এখন মানুষের বিনোদনের মাধ্যম বদলে গেছে। এতে পরিবর্তন এসেছে বাঁশির কারিগর ও বাঁশিওয়ালাদের জীবনে। অনেকে এ পেশা ছেড়ে অন্য কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

জানা গেছে, আগে বাঁশি তৈরি করতে দম ফেলার সময় পেতেন না যেসব বাঁশির কারিগর, এখন তাঁরা দিন কাটান অনাহার-অর্ধাহারে। দু-একজন ঐতিহ্য ও বাপ-দাদার পেশা ধরে থাকলেও তাঁদের অবস্থাও করুণ।

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর শহরের নিমতলা মোড়ে সম্প্রতি কথা হয় বাঁশিওয়ালা ব্রজেন্দ্রনাথ রায়ের (৫৮) সঙ্গে। তিনি জানান, তাঁর বাড়ি নীলফামারী জেলার তরণীবাড়ি বাবুপাড়ায়। ৪০ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি। ব্রজেন্দ্রনাথ বলেন, ‘এক সময় পাইকারি ব্যবসায়ীরা বাড়িত অগ্রিম টাকা দিয়া আসিত। হামরা কাম করিবার উকাশ পাই নাই। ইচ্ছা না হইলে কত্ত অর্ডার ঘুরি দিছি! অ্যালা আর সেদিন নাই রে বাও। হামরা এইঠে ওইঠে বাঁশি বেচিয়ার নাগছি।’

ব্রজেন্দ্রনাথ জানান, আগে তাঁর বংশের সবাই বাঁশি তৈরির পেশায় থাকলেও এখন শুধু তাঁর পরিবারই এই পেশায় টিকে আছে। স্ত্রীসহ দুই ছেলে-মেয়ে বাড়িতে বাঁশি তৈরি করেন। আর তিনি বাস-ট্রেনে ও হাটবাজারে ঘুরে ঘুরে বাঁশি বাজিয়ে তা বিক্রি করেন। তাঁর কাছে ২০ থেকে ৪০০ টাকার দামে বাঁশি পাওয়া যায়।

পুরোনো দিনের কথা তুলে ধরে কয়েকজন বাঁশিপ্রেমিক বলেন, আধুনিকতা মানুষের জীবনকে সুন্দর ও সহজ করেছে সত্যি কিন্তু কেড়ে নিয়েছে সোনালি অতীত। অতীত আর কখনো ফিরে আসবে না। তবে যথাযথ উদ্যোগ নিলে নতুন প্রজন্ম সুস্থ বিনোদন পেতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত