১৩৮ কো‌টি টাকার রপ্তানি আদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৭: ১৫
আপডেট : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১০: ২০

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার এবারের আসরে ১৩৮ কোটি টাকার পণ্যের রপ্তানি আদেশ পাওয়া গেছে। আর গত এক মাসে মেলায় পণ্য বিক্রি হয়েছে ৪০ কোটি টাকার এবং ভ্যাট আদায় হয়েছে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

গতকাল পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান আয়োজকেরা। মেলায় এ বছর নারী উদ্যোক্তাসহ ১৪টি ক্যাটাগরিতে মোট ৪২ জনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

গতকাল মেলার শেষ দিনে প্রচুর ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপস্থিতি দেখা যায়। গতকাল দুপুরের পর থেকেই মেলায় সব প্যাভিলিয়ন এবং স্টলে ভিড় বেড়ে যায়। বিশেষ করে আসবাব, মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, কাপড়, হাঁড়ি-পাতিল, কসমেটিকস ও রেস্টুরেন্টগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। মেলার শেষ দিন বিবেচনায় বিক্রেতারাও পণ্যমূল্যে সর্বোচ্চ ছাড় দেন। আর ছাড় পাওয়ায় ক্রেতারাও সুযোগ হাতছাড়া করেননি। সব মিলে শেষ দিনে কেনাকাটায় খুশি বিক্রেতারাও।

মেলা ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি প্যাভিলিয়ন ও স্টলের বিক্রেতারা ক্রেতা-দর্শনার্থীর ভিড়ে হিমশিম খাচ্ছিলেন। কোনো কোনো স্টলে লাইন ধরে পণ্য কিনেছেন ক্রেতারা। খাবারের দোকানগুলো বসার জায়গা না পেয়ে অনেকে দাঁড়িয়ে খাবার খেয়েছেন।

রাজধানীর উত্তরা থেকে আসা রাকিবুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি মেলায় সারি ধরে টিকিট সংগ্রহ করেছি এবং একইভাবে সারি ধরে প্রবেশ করেছি। মেলায় লোক সমাগম বেশি হবে বিবেচনা করে দ্রুত কেনাকাটা করি। একটি ব্লেজার ৫০০ টাকা ছাড়ে ১ হাজার টাকায় কিনেছি। আর একটি অলিভ ওয়েল ৫০০ টাকায় কিনেছি। এটার ওপর ছাড় ছিল ৩০০ টাকা।’

উম্মে সালমা সুইটি নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, ‘মেলায় ইটালিয়ানো স্টলে ক্রোকারিজ পণ্য ৪০ শতাংশ ছাড়ে বিক্রি করছে। আর মান ভালো হওয়ায় ১ হাজার ২০০ টাকার পণ্য কিনেছি।

মগবাজারের বাসিন্দা দুলু মিয়া বলেন, ‘মেলায় বিভিন্ন ব্যবহারিক পণ্যে প্যাকেজভিত্তিক ছাড়ের ছড়াছড়ি ছিল। আমি কনফেকশনারি আইটেমের ৮০০ টাকার পণ্য ৪৫০ টাকায় কিনেছি।’

এবারের নারী ক্যাটাগরিতে পুরস্কার অর্জনকারী এবং পিপসর ফুটওয়্যার অ্যান্ড লেদার গুডসের স্বত্বাধিকারী রেজবিন হাফিজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি নারী উদ্যোক্তার পুরস্কার পেয়েছি। এটা আমার জন্য একটা বড় সম্মানের বিষয়। মেলায় প্রচার ও ব্যবসা আমাকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে।’

রেজবিন হাফিজ বলেন, ‘এবার মেলায় আমাদের বিক্রয়ের লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। আমরা ২ হাজার টাকার জুতা ছাড়ে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করছি। কোনো কোনো পণ্যে ৫০ শতাংশ ছাড় দিয়েছি। অনেক নতুন অর্ডার পেয়েছি। মেলায় অনেক ভালো ব্যবসা হয়েছে।’

মেলায় বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে ওয়েলকাম গ্রুপের টার্কি স্টলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী ছোটন বলেন, ‘আমরা অলিভ ওয়েল, ভিনেগারসহ ৬৫টি পণ্য মেলায় নিয়ে এসেছি। এবার আমাদের বিক্রি অনেক ভালো হয়েছে। আমাদের পণ্যে সর্বনিম্ন ২৫০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ১ হাজার ৬৫০ টাকা পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হয়েছে। আমরা ক্রেতার চাপ সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছি। বিকেলের পরেই কয়েকটি পণ্য সরবরাহ শেষ হয়ে গেছে।’

ইটালিয়ানোর সেলস এক্সিকিউটিভ ইমন বলেন, ‘আমরা অল্প লাভ রেখে পণ্য ছেড়ে দেওয়ায় বেচাকেনাও বেশ ভালো হয়েছে।’

র‍্যাভেঞ্জ প্যাভিলিয়নের ব্যবস্থাপক সালাউদ্দিন বলেন, ‘চার দিন ধরে বেচাকেনা খুব ভালো। শেষ দিনে বিক্রির রেকর্ড হয়েছে।’

উল্লেখ্য, ঢাকার বাইরে প্রথমবারের মতো গত ১ জানুয়ারি থেকে পূর্বাচলে বাণিজ্য মেলা শুরু হয়। এবারের বাণিজ্য মেলায় ১১টি দেশের ২২৭টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরির ২৩টি প্যাভিলিয়ন, ২৭টি মিনি প্যাভিলিয়ন, ১৬২টি স্টল এবং ১৫টি খাবারের দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত